(ফযীলতপূর্ণ দো‘আ ও যিকির’ বই থেকে নেয়া)
আযানের জবাব শেষে প্রথমে রাসূল (ছাঃ)-এর ওপর দরূদ পাঠ করতে হবে এবং এর পরে নিচের দো‘আগুলো। হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমার ইবনে ‘আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ، فَقُوْلُوْا مِثْلَ مَا يَقُوْلُ ثُمَّ صَلُّوْا عَلَيَّ، ‘যখন তোমরা আযান শুনবে, তখন আযানের জবাবে তাই বলবে যা মুওয়ায্যিন বলে থাকেন। অতঃপর আমার উপর দরূদ পাঠ করতে হবে’। মুসলিম হা/৩৮৪; মিশকাত হা/৬৫৭। দরূদ পাঠের পর নিচের দো‘আগুলো পাঠ করতে হবে।
দো‘আ-১
(১) أَللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ القَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الوَسِيْلَةَ وَالفَضِيْلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا الَّذِيْ وَعَدْتَهُ، .
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা রব্বা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্ তা-ম্মাতি ওয়াছ্ ছালা-তিল ক্বাইমাতি, আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলাতা, ওয়াব্‘আছহু মাক্বা-মাম্ মাহ্মূদানিল্লাযী ওয়া ‘আদ্তাহ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! (তাওহীদের) এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠিত ছালাতের তুমি প্রভু। মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে তুমি দান কর ‘অসীলা’ নামক (জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) ও মর্যাদা এবং তাকে পৌঁছে দাও প্রশংসিত স্থান মাক্বামে মাহমূদে যার ওয়াদা তুমি তাকে দিয়েছ’। বুখারী হা/৬১৪; মিশকাত হা/৬৫৯।
ফযীলত : আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি,
إِذَا سَمِعْتُمْ الْمُؤَذِّنَ فَقُوْلُوْا مِثْلَ مَا يَقُوْلُ ثُمَّ صَلُّوْا عَلَيَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلاَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا، ثُمَّ سَلُوا اللهَ عَزَّ وَجَلَّ لِي الْوَسِيْلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِيْ إِلاَّ لِعَبْدٍ مِّنْ عِبَادِ اللهِ تَعَالَى وَأَرْجُو أَنْ أَكُوْنَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ اللهَ لِي الْوَسِيْلَةَ حَلَّتْ عَلَيْهِ الشَّفَاعَةُ.
‘যখন তোমরা মুওয়ায্যিনকে আযান দিতে শুনবে, তখন তার জওয়াবে বলো মুওয়ায্যিন যা বলে। অতঃপর আমার উপর দরূদ পড়। কেননা যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পড়ে আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন। তারপর আমার জন্য আল্লাহর নিকট ‘ওয়াসীলা’ চাও। আর তা হচ্ছে জান্নাতের একটি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন স্থান। যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে মাত্র একজন বান্দার জন্য উপযোগী। আমি আশা করি আমিই সেই বান্দা। যে ব্যক্তি আমার জন্য ‘ওয়াসীলা’ চাইবে তার জন্য আমার শাফা‘আত যরূরী হয়ে যাবে’। মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭।
দো‘আ-২
(২) أَشْهَدُ أَنْ لَّآ إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِمُحَمَّدٍ رَّسُوْلًا، وَبِالْإِسْلَامِ دِيْنًا.
উচ্চারণ : ‘আশ্হাদু আল্ লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু। রাযীতু বিল্লা-হি রাব্বান, ওয়া বিমুহাম্মাদির রাসূলান, ওয়া বিল ইসলা-মি দ্বীনান।
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, কোন ইলাহ নেই আল্লাহ ব্যতীত। তিনি একক। তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। আমি আল্লাহর প্রতি রব রূপে এবং মুহাম্মাদের প্রতি রাসূল হিসাবে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে সন্তুষ্ট হ’লাম’। মুসলিম হা/৩৮৬; মিশকাত হা/৬৬১।
ফযীলত : আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لاَ يُرَدُّ الدُّعَاءُ بَيْنَ الأَذَانِ وَالإِقَامَةِ. ‘আযান ও ইক্বামতের মধ্যকার সময়ের দো‘আ আল্লাহ্র দরবার হ’তে ফেরত দেওয়া হয় না’ অর্থাৎ এটা দো‘আ কবুলের সময়। আবূদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৬৭১। অন্যত্র বলেন, যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শুনে এই দো‘আ পড়বে, «مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ الْمُؤَذِّنَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا غُفِرَ لَهُ ذَنبه» এর উপর আমি সন্তুষ্ট, তাহলে তার সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৬১)।