__ মুহাম্মাদ লিলবর আল-বারাদী
৬. অধিকাংশ মানুষ মূর্খ ও পথভ্রষ্ট :
সমাজটা দিনে দিনে সুশিক্ষার অভাবে বিবেক বর্জিত হয়ে খোঁড়া সমাজে পরিণত হচ্ছে। মানুষ মানুষকে সম্মান বা অসম্মান করে তার জ্ঞান ও বিবেকের মানদন্ডের ওপর। কিন্তু বর্তমানে বিবেক বর্জিত ও জ্ঞান খর্বিত জাতি মূর্খদের মত ক্ষমতা, সম্পদ ও সুন্দর ত্বকের মূল্যায়ন করে যাচ্ছে। মানুষের জ্ঞান ও বিবেক যেভাবে লোপ পাচ্ছে, ঠিক সেভাবেই জ্ঞানের ধারাবাহিকতা পরিহার করে মূর্খতাকে তালাশ করছে। মানুষ যখন শয়তানের বশীকরণ শৃংখলে আবদ্ধ হয়ে যায়, তখন তাদের সামনে যতই দ্বীনের মু‘জিযা দেখানো হোক না কেন, তবুও তারা মূর্খতা প্রকাশ করবে। আল্লাহ বলেন,وَلَوْ أَنَّنَا نَزَّلْنَا إِلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةَ وَكَلَّمَهُمُ الْمَوْتَى وَحَشَرْنَا عَلَيْهِمْ كُلَّ شَيْءٍ قُبُلًا مَا كَانُوا لِيُؤْمِنُوا إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ يَجْهَلُونَ ‘আর যদি আমি তাদের নিকট ফেরেশতা নাযিল করতাম এবং মৃতরা তাদের সাথে কথা বলত। আর সবকিছু সরাসরি তাদের সামনে সমবেত করতাম, তাহ’লেও তারা ঈমান আনত না, যদি না আল্লাহ চাইতেন; কিন্তু তাদের অধিকাংশই মূর্খ’ (আনআম ৬/১১১)। পৃথিবীর অধিবাসীদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট (ইবন কাছীর)। অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الْأَوَّلِينَ ‘আর এদের পূর্বে প্রাথমিক যুগের অধিকাংশ মানুষ পথভ্রষ্ট হয়েছিল’ (ছাফফাত ৩৭/৭১)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ ‘আর তুমি আকাঙ্খা করলেও অধিকাংশ মানুষ মুমিন হবার নয়’ (ইউসুফ ১২/১০৩)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি আপনি যমীনের অধিকাংশ লোকের কথামত চলেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে’ (আন‘আম ৬/১১৬)। সুতরাং অধিকাংশ মানুষ ঈমান না আনলে আপনার কিছু করার নেই। আপনি চাইলেই কাউকে হিদায়াত দিতে পারবেন না’ (কুরতুবী)।
ক্বিয়ামতের পূর্বে সুশিক্ষার হার কমে যাবে এবং মূর্খদের দ্বারা সমাজ ভরে যাবে। আর এই ধরনের অজ্ঞ ব্যক্তিরাই সমাজের নেতৃত্ব দিবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ أَيَّامُ الْهَرْجِ، يَزُولُ الْعِلْمُ، وَيَظْهَرُ فِيهَاالْجَهْلُ- ‘ক্বিয়ামতের পূর্বে হারজ অর্থাৎ হত্যাকান্ড শুরু হবে। তখন ইলম বিলুপ্ত হবে এবং মূর্খতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে’।[1]
মূর্খতা এমনভাবে বেড়ে যাবে যে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব মূর্খ লোকদের হাতে চলে যাওয়া ক্বিয়ামতের অন্যতম আলামত হয়ে দাঁড়াবে। নবী করীম (ছাঃ) কা‘ব বিন ঊজরাকে বলেন, أَعَاذَكَ اللهُ مِنْ إِمَارَةِ السُّفَهَاءِ قَالَ : مَا إِمَارَةُ السُّفَهَاءِ قَالَ :أُمَرَاءُ يَكُونُونَ بَعْدِى لاَ يَقْتَدُونَ بِهَدْيِى وَلاَ يَسْتَنُّونَ بِسُنَّتِى فَمَنْ صَدَّقَهُمْ بِكَذِبِهِمْ وَأَعَانَهُمْ عَلَى ظُلْمِهِمْ فَأُولَئِكَ لَيْسُوا مِنِّى وَلَسْتُ مِنْهُمْ ‘আমি তোমার জন্য আল্লাহর নিকট মূর্খদের নেতৃত্ব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তিনি বললেন, মূর্খদের নেতৃত্ব কি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, আমার পরে এমন কিছু লোক নেতৃত্বে আসবে, যারা আমার নির্দেশনা দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে না। আমার সুন্নাতকে বাস্তবায়ন করবে না। যারা তাদের মিথ্যাকে সত্যায়ন করবে এবং তাদের অত্যাচারে সহায়তা করবে, এরা আমার দলভুক্ত নয় এবং আমিও তাদের দলভুক্ত নই’।[2] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَا عَمَّرَ الْمُسْلِمُ كَانَ خَيْراً لَهُ، قَالَ بَلَى وَلَكِنِّى أَخَافُ سِتًّا إِمَارَةَ السُّفَهَاءِ وَبَيْعَ الْحُكْمِ وَكَثْرَةَ الشُّرَطِ وَقَطِيعَةَ الرَّحِمِ وَنَشَأً يَنْشَئُونَ يَتَّخِذُونَ الْقُرْآنَ مَزَامِيرَ وَسَفْكَ الدَّمِ ‘মুসলিম যত বেশীদিন বেঁচে থাকবে সেটি তার জন্য কল্যাণকর। তিনি বললেন, হ্যাঁ। কিন্তু ছয়টি বিষয়ের আশঙ্কা করছি। মূর্খদের নেতৃত্ব, বিচার-ফায়ছালা ক্রয়-বিক্রয় করা, পুলিশের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা, কুরআনকে বাজনা হিসাবে গ্রহণ করবে এমন একদল লোকের আবির্ভাব হওয়া ও রক্ত প্রবাহিত করা তথা মানুষ হত্যা’।[3]
যে সকল ব্যক্তি শুধু কুরআনকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করে রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছকে উপেক্ষা করবে, তারাও মূর্খ ও পথভ্রষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত। আবু রাফে‘ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,لاَ أُلْفِيَنَّ أَحَدَكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى أَرِيكَتِهِ يَأْتِيهِ الأَمْرُ مِمَّا أَمَرْتُ بِهِ أَوْ نَهَيْتُ عَنْهُ فَيَقُولُ لاَ أَدْرِى مَا وَجَدْنَا فِى كِتَابِ اللَّهِ اتَّبَعْنَاهُ، رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُوْ دَاؤُدَ وَالتِّرْمِذِىُّ.‘আমি যেন তোমাদের কাউকে এরূপ না দেখি যে, সে তার গদীতে ঠেস দিয়ে বসে থাকবে, আর তার কাছে আমার কোন আদেশ বা নিষেধাজ্ঞা পৌঁছলে সে বলবে যে, আমি এসব কিছু জানিনা। যা আল্লাহর কিতাবে পাব, তারই আমরা অনুসরণ করব’।[4]
বছরার অন্যতম শ্রেষ্ঠ তাবেঈ বিদ্বান আইয়ূব সাখতিয়ানী (৬৮- ১৩১ হিঃ) নিজ শহরের লোকদের চূড়ান্তভাবে বলে দেন যে, إِذَا حَدَّثْتَ الرَّجُلَ بِالسُّنَّةِ فَقَالَ: دَعْنَا مِنْ هَذَا وَحَدِّثْنَا مِنَ الْقُرْآنِ فَاعْلَمْ أَنَّهُ ضَآلٌّ وَمُضِلٌّ- ‘যখন তুমি কোন ব্যক্তিকে হাদীছ শুনাবে, তখন সে যদি বলে যে, ছাড় এসব, আমাদেরকে কুরআন শুনাও, তখন তুমি জেনো যে, ঐ লোকটি নিজে পথভ্রষ্ট এবং অন্যকে পথভ্রষ্টকারী’।[5]
৭. অধিকাংশ মানুষ প্রকৃত সত্য জানে না ও বোঝে না :
অনেক মানুষ প্রকৃত সত্য বা হক্ব জানার চেষ্টা করে না বা জানে না ও বোঝে না। আল্লাহ বলেন, وَقَالُوا لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِنْ رَبِّهِ قُلْ إِنَّ اللَّهَ قَادِرٌ عَلَى أَنْ يُنَزِّلَ آيَةً وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ‘আর তারা বলে, ‘কেন তার উপর তার রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন নাযিল করা হয়নি’? বল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ যে কোন নিদর্শন নাযিল করতে সক্ষম। কিন্তু তাদের অধিকাংশ জানে না’ (আনআম ৬/৩৭)।
আল্লাহ বলেন,وَلَكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَأَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ ‘কিন্তু যারা কুফরী করেছে তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে। আর তাদের অধিকাংশই বুঝে না’ (মায়েদা ৫/১০৩)।
মানুষের স্বভাব ধর্ম অন্যকে দোষারোপ করা। ভালোটা নিজের জন্য এবং মন্দটা অন্যের জন্য এমন কল্পনা করা মানুষের স্বভাব।
আল্লাহ বলেন,فَإِذَا جَاءَتْهُمُ الْحَسَنَةُ قَالُوا لَنَا هَذِهِ وَإِنْ تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَطَّيَّرُوا بِمُوسَى وَمَنْ مَعَهُ أَلَا إِنَّمَا طَائِرُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ ‘অতঃপর যখন তাদের কাছে কল্যাণ আসত, তখন তারা বলত, ‘এটা আমাদের জন্য।’ আর যখন তাদের কাছে অকল্যাণ পৌঁছাতো, তখন তারা মূসা ও তার সঙ্গীদেরকে অলুক্ষুণে মনে করত। তাদের কল্যাণ-অকল্যাণ তো আল্লাহর কাছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশ জানে না’ (আরাফ ৭/১৩১)। অন্যত্র বলেন, ‘বল, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকট আছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না’ (ইউনুস ১০/৬০)।
সর্বশক্তিমান আল্লাহর অসীম কুদরত সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরও গভীরতর বিচার-বিশ্লেষণের অভাবে একটা বৃহৎ দল ধর্মদ্বেষী হয়ে ক্বিয়ামতে অবিশ্বাসী হয়ে পড়ে। ফলে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী উভয় দলের মধ্যে বৈপরীত্য দেখা দেয়। সর্বজ্ঞ আল্লাহ তা‘আলা এদের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ করে প্রত্যাদেশ করেন যে, إِنَّ السَّاعَةَ لَآتِيَةٌ لاَّ رَيْبَ فِيْهَا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يُؤْمِنُوْنَ ‘ক্বিয়ামত অবশ্যই আসবে, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ লোক বিশ্বাস স্থাপন করে না’ (মুমিন ৪০/৫৯)। অন্যত্র এরশাদ করেন,يَسْأَلُوْنَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ رَبِّيْ لاَ يُجَلِّيْهَا لِوَقْتِهَا إِلاَّ هُوَ ثَقُلَتْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لاَ تَأْتِيْكُمْ إِلاَّ بَغْتَةً يَسْأَلُوْنَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنْهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللهِ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُوْنَ ‘আপনাকে জিজ্ঞেস করে, ক্বিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন, এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা যথাসময়ে প্রকাশ করবেন। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয় হবে। তোমাদের উপর আকস্মিকভাবেই তা এসে যাবে। তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ শুধু আল্লাহর নিকটেই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা জানে না’ (আ‘রাফ ১৮৭)।
পার্থিব জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বহু বিষয়ে মানুষের কোন জ্ঞান নেই, যেমন কে কোথায় জন্মগ্রহণ করবে ও মৃত্যুবরণ করবে, আগামী কাল কি ঘটবে, কে ধনী হবে আর কে হবে দরিদ্র, কে হবে ভাগ্যবান আর কে হতভাগ্য, কে হবে অন্ধ, পঙ্গু আর কে হবে সর্বাঙ্গ সুন্দর, আর কখন হবে প্রচন্ড ঝড় ও বৃষ্টি, ভূকম্পন ও ভূমিধ্বস ইত্যাদি, কোন মানুষের পক্ষে তা জানা একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু ক্বিয়ামতের মতই এগুলো আল্লাহর জানা। তাঁর পক্ষে অসম্ভব বলতে কোন কিছুই নেই। এ মর্মে আল্লাহ বলেন,إِنَّ اللهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَداً وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوْتُ إِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছেই ক্বিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত’ (লোকমান ৩৪)।
কাফেরদের ভুল ধারণা ও সন্দেহ দূর করা হচ্ছে যে, রিযিকের প্রশস্ততা ও সংকীর্ণতা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং তার সম্পর্ক আল্লাহর ইচ্ছা ও হিকমতের সাথে। এই জন্য তিনি সম্পদ যাকে পছন্দ করেন তাকে দেন এবং যাকে অপছন্দ করেন তাকেও দেন। তিনি যাকে চান ধনী করেন এবং যাকে চান গরীব করেন। আল্লাহ বলেন,قُلْ إِنَّ رَبِّي يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِرُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ (হে রাসূল! আপনি) বলুন, ‘আমার প্রতিপালক যার জন্য ইচ্ছা তার রিযিক বাড়িয়ে দেন অথবা তা সীমিত করেন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটি বোঝে না’ (সাবা ৩৪/৩৬)।
৮. অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ :
অধিকাংশ মানুষ মানুষের প্রতি এবং তার সৃষ্টিকর্তা রবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। শুকরিয়া না করার জন্য মানুষ প্রতিপালকের কৃপা থেকে বঞ্চিত হয়। আল্লাহ বলেন,إِنَّ اللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ ‘নিশ্চয়ই আললাহ তো মানুষের উপর অনুগ্রহশীল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শুকরিয়া আদায় করে না’ (বাক্বারাহ ২/২৪৩)। অন্যত্র বলেন, ‘আল্লাহ রাতকে তোমাদের বিশ্রামের জন্য এবং দিনকে আলোকোজ্জ্বল করে সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না’ (মুমিন ২৩/৬১)। তিনি আরো বলেন, لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيْدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذابِيْ لَشَدِيْدٌ. ‘তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা আদায় কর তাহ’লে আমি অবশ্যই তোমাদেরকে আরও বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অস্বীকার কর তাহ’লে আমার আযাব অবশ্যই কঠিন’ (ইবরাহীম ১৪/৭)।
বান্দার প্রতি শুকরিয়া আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া স্বরূপ। আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ لَمْ يَشْكُرِ النَّاسَ لَمْ يَشْكُرِ اللَّهَ ‘যে ব্যক্তি মানুষের শুকরিয়া করেনা সে আল্লাহরও শুকরিয়া করেনা’।[6] এই হাদীছের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মানুষের অনুগ্রহকে অস্বীকার করা এবং তাদের সৎকাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা যার স্বভাব ও অভ্যাসে পরিণত হবে সে মহান আল্লাহর অনুগ্রহকেও অস্বীকার করা এবং তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করাও তার অভ্যাসে পরিণত হবে। বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের ব্যাপারে বান্দার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নিঃসন্দেহে তিনি গ্রহণ করবেন না যতক্ষণ বান্দা মানুষের অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করবে এবং তাদের সদাচরণকে অস্বীকার করবে। এটা মূলত দু’টি বিষয়ের একটি অপরটির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে’।[7]
দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ। আল্লাহ বলেন, ثُمَّ لَآتِيَنَّهُمْ مِنْ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَانِهِمْ وَعَنْ شَمَائِلِهِمْ وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شَاكِرِينَ ‘তারপর অবশ্যই তাদের নিকট উপস্থিত হব, তাদের সামনে থেকে ও তাদের পেছন থেকে এবং তাদের ডান দিক থেকে ও তাদের বাম দিক থেকে। আর আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না’ (আরাফ ৭/১৭)।
অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর নে’মতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে না, আর না তা স্বীকার করে। হয়তো বা তা কুফরী ও অস্বীকার করার কারণ। যেমনটি কাফেরদের অভ্যাস। নতুবা অনুগ্রহকারীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন যে ওয়াজিব এ ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে। যেমনটি মূর্খদের আচরণ।
৯. অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামী :
পৃথিবীতে মানুষের কর্মকান্ডের উপরে ভিত্তি করেই ক্বিয়ামতের মাঠে বিচার ফয়সালা করা হবে এবং তার পরকালীন জীবনের চূড়ান্ত ঠিকানা নির্ধারিত হবে। তবে তাদের কর্মকান্ডের ভিত্তিতে জাহান্নামের আযাবের তারতম্য হবে। যেমন মুনাফিক্বদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিমণ স্তরে হবে (নিসা ৪/১৪৫)। আবার জাহান্নামের জ্বলন্ত হুতাশন কারো টাখনু পর্যন্ত, কারো হাঁটু পর্যস্ত, কারো কোমর পর্যন্ত আবার কারো মাথা পর্যন্ত পৌঁছবে।[8] কারো দু’পায়ের নিচে আগুনের দু’টি অঙ্গার রাখা হবে, যাতে তার মাথার মগয টগবগ করে ফুটতে থাকবে।[9] কাউকে আবার আগুনের ফিতা সহ দু’খানা জুতা পরিয়ে দেওয়া হবে।[10] এভাবে জাহান্নামে পাপীদের আযাব দেয়া হবে।
জাহান্নামীদের চেহারাকে জ্বলন্ত অগ্নিশিখা আবৃত করে রাখবে এবং বিদগ্ধ চেহারায় তাদেরকে আলকাতরার মত কালো পোশাক পরিধান করানো হবে। আল্লাহ বলেন,يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوْهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُوْلُوْنَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُوْلاَ ‘যেদিন তাদের মুখমন্ডল জাহান্নামের আগুনে ওলট-পালট করা হবে, সেদিন তারা বলবে, হায়! আমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অনুসরণ করতাম’ (আহযাব ৩৩/৬৬)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন,وَتَرَى الْمُجْرِمِيْنَ يَوْمَئِذٍ مُقَرَّنِيْنَ فِيْ الْأَصْفَادِ، سَرَابِيْلُهُمْ مِنْ قَطِرَانٍ وَتَغْشَى وُجُوْهَهُمُ النَّارُ ‘সেদিন তুমি অপরাধীদের দেখবে শৃঙ্খলিত অবস্থায়, তাদের জামা হবে আলকাতরার এবং আগুন দগ্ধিভূত করবে তাদের মুখমন্ডলকে’ (ইবরাহীম ১৪/৪৯-৫০)। যাহ্হাক (রহঃ) বলেন, জাহান্নাম এমন একটি ভয়ংকর আবাসস্থল। সেখানকার অধিবাসীরা এবং সকল কিছুই হবে কৃষ্ণবর্ণের। যেমন খাবার, পানি ও গাছ হবে কালো বর্ণের’।[11]
ক. অধিকাংশ ধনী ব্যক্তি :
ধনী ব্যক্তিদের পঞ্চাশ হাযার বছর পূর্বে গরীব মানুষ জান্নাতে যাবে। আর ধনী ব্যক্তিরা তাদের মালের হিসাব দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। আর ধনী ব্যক্তির যাকাত আদায় না করার ভয়াবহ শাস্তির কথা কুরআন-হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ – يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُونَ- ‘হে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই বহু (ইহূদী-নাছারা) পন্ডিত ও দরবেশ মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এবং লোকদের আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখে। বস্ত্ততঃ যারা স্বর্ণ-রৌপ্য সঞ্চিত রাখে, অথচ তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে তুমি মর্মান্তিক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে সেগুলিকে উত্তপ্ত করা হবে। অতঃপর তা দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশ সমূহ দাগানো হবে, (আর বলা হবে) এগুলো হ’ল সেইসব স্বর্ণ-রৌপ্য, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করেছিলে। এক্ষণে তোমরা যা কিছু সঞ্চয় করে রেখেছিলে তার স্বাদ আস্বাদন কর’ (তওবাহ ৯/৩৪-৩৫)।
যে সকল ধনী ব্যক্তি সম্পদের যাকাত প্রদান করেনি, তাদের মাল আগুনে পরিণত হবে এবং সারা শরীরে ছ্যাকা দেয়া হবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَا مِنْ صَاحِبِ ذَهَبٍ وَلَا فِضَّةٍ، لَا يُؤَدِّي مِنْهَا حَقَّهَا، إِلَّا إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ، صُفِّحَتْ لَهُ صَفَائِحُ مِنْ نَارٍ، فَأُحْمِيَ عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ، فَيُكْوَى بِهَا جَنْبُهُ وَجَبِينُهُ وَظَهْرُهُ، كُلَّمَا بَرَدَتْ أُعِيدَتْ لَهُ، فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ، حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ الْعِبَادِ، فَيَرَى سَبِيلَهُ، إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ، وَإِمَّا إِلَى النَّارِ. ‘যে ব্যক্তি স্বর্ণ ও রৌপ্যের মালিক অথচ তার হক (যাকাত) আদায় করে না, ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য তা আগুনের পাত্ররূপে পেশ করা হবে এবং জাহান্নামের আগুনে তা গরম করে তার কপালে, পার্শ্বদেশে ও পৃষ্ঠদেশে সেক দেয়া হবে। যখন উহা ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন পুনরায় গরম করা হবে। এ অবস্থা ক্বিয়ামতের পুরো দিন চলতে থাকবে, যার দৈর্ঘ্য পঞ্চাশ হাযার বছরের সমান হবে। অতঃপর বান্দাদের মাঝে বিচার করা হবে, তখন সে দেখবে তার পথ কি জান্নাতের দিকে, না জাহান্নামের দিকে’।[12]
যারা তাদের সম্পদকে যাকাত প্রদানের মাধ্যমে পবিত্র করেনি, তাদের মাল একটি বিষাক্ত সাপে পরিণত হবে এবং গলায় পেচিয়ে শাস্তি দিতে থাকবে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ لَهُ مَالُهُ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَأْخُذ بِلِهْزِمَتَيْهِ – يَعْنِي بشدقيه – يَقُولُ: أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ . ثُمَّ تَلَا هَذِه الْآيَة: وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ من فَضله ‘আল্লাহ যাকে ধন-সম্পদ দান করেছেন অথচ সে তার যাকাত দেয়নি, ক্বিয়ামতের দিন তার সমস্ত মাল মাথায় টাক পড়া সাপের আকৃতি ধারণ করবে। যার চোখের উপর দু’টি কালো চক্র থাকবে। ঐ সাপটি তার গলা পেচিয়ে ধরে শাস্তি দিতে থাকবে আর বলবে, আমি তোমার মাল, আমি তোমার সঞ্চিত সম্পদ’।[13]
দুনিয়ার বিত্তবান ব্যক্তিদের জন্য দুর্ভোগ যারা সম্পদ ভোগ বিলাসের জন্য অপচয় করেছে।[14] আর তাদের মধ্যকার প্রভাবশালী, ক্ষমতাধর, অহংকারী, বিলাসপ্রিয়, সম্পদশালী ও পাপিষ্ঠ ব্যক্তিরা সেদিন জাহান্নামের তীব্র দহনে প্রবেশ করবে। তারা জাহান্নামে প্রবেশের সাথে সাথেই দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ বিলাসী জীবনের কথা ভুলে যাবে। আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, يُؤْتَى بِأَنْعَمِ أَهْلِ الدُّنْيَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُصْبَغُ فِي النارِ صَبْغَةً ثمَّ يُقَال: يَا ابْنَ آدَمَ هَلْ رَأَيْتَ خَيْرًا قَطُّ؟ هَلْ مَرَّ بِكَ نَعِيمٌ قَطُّ؟ فَيَقُولُ: لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ وَيُؤْتَى بِأَشَدِّ النَّاسِ بُؤْسًا فِي الدُّنْيَا مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيُصْبَغُ صَبْغَةً فِي الْجَنَّةِ فَيُقَالُ لَهُ: يَا ابْنَ آدَمَ هَلْ رَأَيْتَ بُؤْسًا قَطُّ؟ وَهَلْ مَرَّ بِكَ شِدَّةٌ قَطُّ. فَيَقُولُ: لَا وَاللَّهِ يَا رَبِّ مَا مَرَّ بِي بُؤْسٌ قَطُّ وَلَا رَأَيْتُ شدَّة قطّ ‘ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য হ’তে এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, যে দুনিয়াতে সবচেয়ে সুখী ও বিলাসী ছিল। অতঃপর তাকে জাহান্নামে একবার চুবানো হবে, তারপর তাকে বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনো কল্যাণ দেখেছ? তোমার নিকটে কি কখনো সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে? সে বলবে, না, আল্লাহর কসম হে প্রভু! অপরদিকে জান্নাতীদের মধ্য হ’তে এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, যে পৃথিবীতে সবচেয়ে দুঃখী ও অভাবী ছিল। তাকে জান্নাতে ঢুকানোর পর বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনো কষ্ট দেখেছ? তোমার উপরে কি কখনো বিপদ অতিক্রম করেছে? সে বলবে, না, আল্লাহর কসম! আমার উপর কোনদিন কোন কষ্ট আসেনি এবং আমি কখনো কোন বিপদও দেখিনি’।[15]
আল্লাহ আমাদের সকলকে পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের মধ্যে দাখিল করুন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে জান্নাতী বান্দা হিসাবে করুন- আমীন!
(ক্রমশঃ)
————————————
[1]. বুখারী হা/৭০৬৬; আহমাদ হা/৪১৮৩।
[2]. আহমাদ হা/১৪১৮১; ইবনু হিববান হা/৪৫১৪; ছহীহ আত-তারগীব হা/২২৪২; হাকেম হা/২৬৪; ।
[3]. আহমাদ হা/২৪০১৬; মু‘জামুল কাবীর হা/৬০; ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৮৯০১; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৬৯।
[4]. আহমাদ হা/২৩৯১২; আবুদাঊদ হা/৪৬০৫; তিরমিযী হা/২৬৬৩; ইবনু মাজাহ হা/১৩; বায়হাক্বী দালায়েল হা/২৯৩৪; সনদ ছহীহ।
[5]. ছালাহুদ্দীন মকবূল আহমাদ, জাওয়াবে’ ফী ওয়াজহিস সুন্নাহ (রিয়াদ : দার আলমিল কুতুব) তাবি, পৃ: ৪৬।
[6]. তিরমিযী হা/১৯৫৫; ছহীহুল জামি‘ হা/৬৫৪১; মিশকাত হা/৩০২৫।
[7]. তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৯৫৫।
[8]. মুসলিম হা/৭৩৪৯।
[9]. বুখারী হা/৬৫৬২।
[10]. মুসলিম হা/৫৩৯; মিশকাত হা/৫৪২৩।
[11]. তাফসীরে কুরতুবী ১০/৩৯৪ পৃঃ ‘সূরা কাহফ-এর ব্যাখ্যা দৃষ্টব্য।
[12]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৭৩; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৬৮১ ‘যাকাত’ অধ্যায়।
[13]. আলে ইমরান ১৮০; বুখারী, মিশকাত হা/১৭৭৪; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৬৮২ ‘যাকাত’ অধ্যায়।
[14]. ইবনু মাজাহ হা/৪১২৯, সনদ হাসান; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪১২।
[15]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৬৯।