জাহান্নামের অধিবাসী ও আযাবের স্তর

জাহান্নামের স্তর হবে ৭টি, যার ভয়াবহতার বর্ণনা ছিল এরূপ – ধাবমান ৭০-গুণ ক্ষমতাধর, জ্বলন্ত আগুন, বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছু, কণ্টকময় বিষাক্ত জাক্কুম ফল, খাবার হিসেবে পুঁজ-রক্ত, অদ্ভুদদর্শন কদাকার ভয়াবহ ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম, আগুনের মুগুর-কাঁচি, অনন্ত মৃত্যুহীন যন্ত্রণাময় ধারাবাহিক অগ্নিময় দহনীয় শাস্তি ইত্যাদি। দোযখবাসীর দু’পায়ের তালুতে অঙ্গার রাখা হবে। সূত্রঃ পবিত্র বুখারী শরীফঃ হাদিস শরীফ ৬১০৭।

এবং প্রত্যেকঃ পাপীকে কবরে ৭০টি অজগর সাপ খামচাতে-কামড়াতে থাকবে। সূত্রঃ পবিত্র তিরমিজি শরীফঃ হাদিস শরীফ ২৪০২।

ওদের জামা হবে দাহ্য আলকাতরার (পবিত্র আল কোরআন উল কারিমঃ আয়াত শরীফ ১৪:৫০)। আরঃ পবিত্র আল কোরআন অবিশ্বাসের কারণে একজন মানুষকে জাহান্নামে পুড়িয়ে পূঁজ খাওয়ানো হবে’ (পবিত্র আল কোরআন উল কারিমঃ আয়াত শরীফ ১৪:১৭)। ‘জাহান্নামী পাবে ফুটন্ত পানি ও পুঁজ’ (পবিত্র আল কোরআন উল কারিমঃ আয়াত শরীফ ৭৮:২৬)।
পবিত্র আল কোরআন উল কারিম উনার মধ্যে অবিশ্বাসীদের শাস্তি হিসেবে আগুনের পোশাক, মাথায় গরম পানি ঢালা ও লোহার মুগুর দিয়ে পেটানো হবে’ (পবিত্র আল কোরআন উল কারিমঃ আয়াত শরীফ ২২:১৯)। পবিত্র আল কোরআন উল কারিম উনাকে অবিশ্বাসকারি কেউ মারা গেলে তার প্রতি কোরাআন উল কারিম উনার বাণীঃ ‘‘ধর ওকে। গলায় বেড়ি পড়াও এবং নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। আর শৃঙ্খলিত কর ৭০-গজ দীর্ঘ শৃঙ্খলে। এর খাবার ক্ষত নিঃসৃত পুঁজ’’ (পবিত্র আল কোরআন উল কারিমঃ আয়াত শরীফ ৬৯:৩০-৩৫)। আরঃ জাহান্নামে ১টি পাথর ৭০-বছর পড়তে থাকলেও জাহান্নামের তলদেশে পৌঁছতে পারবে না, লৌহনির্মিত ডাণ্ডা, ‘সাউদ’ নামে আগুনের পাহাড় যা উঠতে ৭০-বছর ও গড়াতে ৭০-বছর লাগবে, অধিবাসীদের দাঁত, উরু ও পাছা হবে বিভিন্ন পাহাড়ের সমান, শরীরের চামড়া হবে ৪২-গজ পুরু, পানীয় হবে গলিত তামার মতো গাদ সদৃশ্য, গরম পানিতে নাড়িভূঁড়ি বের হবে, গলিত পুঁজ পান করবে, যাক্কুম ফল খাদ্য হিসেবে খাবে যা গলায় আটকে যাবে, গাধার ন্যায় চিৎকার করবে, বিছিয়ে রাখা জিহবা লোকেরা পদদলিত করবে, অধিকাংশ বাসিন্দা হবে নারী (সূত্রঃ পবিত্র তিরমিজি শরীফঃ হাদিস শরীফ ২৫১৩-২৪, ২৬০৩৬)।

মোমিনগন ব্যতীত সবাই জাহান্নামি এমনকি আজীবন পবিত্র নামাজ রোজা হজ্জ জাকাত শতভাগ পালনকারী ব্যক্তিও জাহান্নামি যদি তার আক্বিদা ঠিক না থাকে অথবা সে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত উনার অনুসারী না হয়, আবার আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত এর আক্বিদা পোষণকারি হলেও জাহান্নামি যদি তার মধ্যে কুফরি বদ আক্বিদা থাকে যেমনঃ হারাম কাজে জড়িত থেকে নিজেকে খাটি মুসলিম ভাবে, হারাম কে হালাল মনে করা যেমনঃ ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, টিভি দেখা, নারি পুরুষ মিলে গান বাজনা উরুস, মাজারে বসে মদ গাজা খাওয়া, মাজারে সেজদা দেওয়া সহ ভণ্ড বাতিল পিরদের হাক্কানি অলি-আল্লাহ মনেকরা এবং খাটি হোক বা ভণ্ড হোক তাদের তাজিমি সেজদা করা সহ যাবতিও কুফরি আক্বিদা পোষণকারী মুসলিম নামধারী মনাফিক মুসলমানেরা কোরআন সুন্নাহ অনুসারে জাহান্নামি। গুনাহগার মুসলমানদের পরে খ্রিস্ট ও ইহুদী ধর্মাবলম্বীরা ইসলামের অনেক নিকটে অবস্থান করে, কিন্তু হিন্দু ও বৌদ্ধরা ইসলামের ধারেকাছেও নেই। মুসলিমদের পর খ্রিস্টানদের মর্যাদাই সবচেয়ে বেশি। আর এটা নিশ্চয়ই জানেন যে জাহান্নামে রয়েছে ৭টি স্তর। কিন্তু কোন ধর্মাবলম্বীরা কোন স্তরে শাস্তিভোগ করবে তা অনেকেই জানেন না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি এরশাদ মোবারক করেছেন,” যখন প্রচন্ড গরম শুরু হয়, তখন তোমরা জোহরের পবিত্র নামাজ বিলম্ব করে পড়ো। কেননা, গরমের প্রচন্ডতা দোযখের উত্তাপের ফলে হয়ে থাকে। দোযখ মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে এরূপ নালিশ করে যে , আমার উত্তাপ অত্যাধিক বেড়ে গেছে । এতে আমার এক অংশ অন্য অংশ কে খেয়ে ফেলছে । অতএব, আমাকে অনুমতি প্রদান করা হোক যাতে কোন প্রকারে আমি এ উত্তাপ হালকা করতে পারি । মহান আল্লাহ পাক তখন দোযখকে একবার শ্বাস নেয়ার এবং আরেকবার শ্বাস ছাড়ার অনুমতি দেন । ফলে দোযখ যখন শ্বাস ছাড়ে, তখন দুনিয়া প্রচন্ড গরম হয়ে পড়ে এবং যখন শ্বাস নেয়, তখন প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ে।” অঞ্চল ভেদে এরকম অত্যাধিক গরম ও ঠান্ডা ভিন্ন হয়ে থাকে । পবিত্র মুসলিম শরীফ উনার হাদিস শরিফে বলা আছে, প্রত্যহ দুপুরে দোযখের আগুনকে একটু বাড়িয়ে দেয়া হয় । এর ফলে বোঝা যায় যে, দোযখে যেমন প্রচন্ড উত্তাপ দ্বারা শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা আছে , ঠিক তেমনি প্রচন্ড ঠান্ডা দ্বারাও শাস্তি প্রদান করা হবে । দোযখে ৭টি দরজা থাকবে । মানে দাড়ায়, দোযখ হবে ৭ ধরনের । এক এক দোযখে এক এক রকম শাস্তি প্রদান করা হবে । দোযখবাসীদেরকেও বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করে তাদের বিভিন্ন দোযখে নিক্ষেপ করা হবে। হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি দোযখের ব্যাপারে হাতের ইশারা দ্বারা বুঝিয়েছিলেন যে, দোযখ একটির নীচে আরেকটি বিদ্যমান । অর্থাত্‍, দোযখ পর্যায়ক্রমে উপর থেকে নীচে স্তরে স্তরে বিন্যস্ত করা।

সবচেয়ে উপরের স্তরে থাকবে মুসলমানরা (যারা কবীরা গুনাহ করেছে কিন্তু তাওবা করেনি)
২য় স্তরে থাকবে খ্রিস্টানরা।
৩য় স্তরে থাকবে ইহুদীরা।
৪র্থ স্তরে শয়তান ও তার অনুসারীরা।
৫ম স্তরে নাস্তিক/সেক্যুলাররা।
৬ষ্ঠ স্তরে থাকবে মুশরিক, অর্থ্যাৎ হিন্দু, বৌদ্ধ প্রভৃতি।
৭ম অর্থাৎ সবচেয়ে নিচের স্তরে থাকবে মুসলমান নামধারী মুনাফিকরা।

যতো নিচের স্তরে নামবেন শাস্তির মাত্রা ততই বাড়তে থাকবে। আর এই ৭টি স্তরের ঠিক উপরে থাকবে পুলসিরাত।

মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,”নিশ্চয়ই মোনাফেক দের স্থান দোযখের নিম্ন স্তরে।” পবিত্র ইসলামী চিন্তাবিদগণ পবিত্র আল কোরআন ও হাদীস শরীফ উনাদের আলোকে বর্ণনা করেছেন যে, কোন কোন দোযখ কাদের জন্য ঠিক করা হয়েছে যেমনঃ ফেরাউন ও তার অনুসারী এবং মোনাফিকদের জন্য যে দোযখ নির্ধারণ করা হয়েছে, তার নাম ‘হাবিয়া’। এটি সবচেয়ে নিম্নস্তরের দোযখ । মোশরেকদের জন্য নির্ধারিত দোযখের নাম ‘জাহীম’ । ধর্মহীন যেসব কপট সমাজ ব্যবস্থাপক আছে, তাদের জন্য ঠিক করা হয়েছে ‘সাকার’ দোযখ । ইবলিশ ও তার অনুসারীদের জন্য অপেক্ষা করছে ‘লাযা’ দোযখ । ইহুদীর জন্য নির্ধারিত করা আছে ‘হুতামা’ দোযখ । নাসারা ও খৃষ্টানদের জন্য রয়েছে ‘সা’ঈর’ দোযখ । আর সবচেয়ে উপরে অবস্থিত হচ্ছে ‘জাহান্নাম’ দোযখ, যা পাপী মুসলমানদের জন্য তৈরী করা হয়েছে । এই জাহান্নামের উপরই পুলসিরাত কায়েম করা থাকবে। বর্ণিত আছে, দোযখের এক দরজা বা স্তর থেকে অন্য দরজা বা স্তরের পথ হচ্ছে ৭০০ বছরের!

এই কঠিন দোযখের সাতটি স্তরের প্রত্যেক স্তরের শাস্তি অন্য স্তরের শাস্তি থেকে কঠোর। আমল অনুসারে প্রত্যেক স্তরের জন্য পৃথক পৃথক লোক রয়েছে। মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে। এর শাস্তি সর্বাপেক্ষা কঠোর। কাফেরদের শাস্তি দোযখে অব্যাহত থাকবে, বন্ধ হবে না। বরং যত বারই জ্বলে পুড়ে যাবে পুনরায় অধিকতর শাস্তি ভোগ করার জন্য চামড়া পরিবর্তন করা হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি এরশাদ মোবারক করেন, “যারা আমার আয়াত শরীফ সমূহ অস্বীকার করেছে তাদের আমি অচিরেই জাহান্নামের আগুনে পুড়িয়ে দেবো, অতঃপর (পুড়ে যখন) তাদের দেহের চামড়া গলে যাবে তখন আমি তার বদলে নতুন চামড়া বানিয়ে দেবো, যাতে করে তারা আযাব ভোগ করতে পারে, অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালা মহা পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ কুশলী।” [ পবিত্র সূরা আন নিসা শরীফঃ আয়াত শরীফ ৪:৫৬]

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ভয়ঙ্কর দোযখ সম্পর্কে যে সমস্ত আয়াত শরিফদ্বয় নাজিল করা হয়েছে নিম্নে তা বর্ণনা করা হলোঃ

জাহান্নামীরা অবরুদ্ধ অগ্নিতে পরিবেষ্টিত হবেঃ জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপের পর তার দরজাসমূহ এমনভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে যা হতে বের হওয়ার কোন অবকাশ থাকবে না। “তারা পরিবেষ্টিত হবে অবরুদ্ধ অগ্নিতে” [ পবিত্র সূরা বালাদ শরিফঃ আয়াত শরীফঃ ৯-২০] জাহান্নামের ইন্ধনঃ জাহান্নামের ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। [পবিত্র সূরা আত-তাহরীম শরিফঃ আয়াত শরিফঃ ৬] জাহান্নামে নিয়োজিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের বৈশিষ্ট্যঃ জাহান্নামে নিয়োজিত আছেন নির্মমহৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ, উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি যা আদেশ করেন তারা তাই করেন, কখনো আদেশ অমান্য করেন না। [পবিত্র সূরা আত-তাহরীম শরিফঃ আয়াত শরীফঃ ৬] জাহান্নামে নিয়োজিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের সংখ্যা সম্পর্কে জানা যায় যেঃ জাহান্নামের প্রহরী হিসাবে নিয়োজিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের সংখ্যা ১৯ জন। [পবিত্র সূরা মুদ্দাছছির শরিফঃ আয়াত শরীফঃ ৩০ ] জাহান্নামবাসীদের করুণ অবস্থাঃ জাহান্নামবাসীরা মরবেও না, আবার জীবত অবস্থায়ও থাকবে না। [পবিত্র সূরা মুদ্দাছছির শরিফঃ আয়াত শরীফ ২৮]
আরঃ সর্বদিক হতে জাহান্নামীর নিকট আসবে মৃত্যু যন্ত্রণা কিন্তু তার মৃত্যু ঘটবে না এবং সে কঠোর শাস্তি ভোগ করতেই থাকবে’ [ পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরিফঃ আয়াত শরীফ ১৬-১৭] মহান আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা‘আলা তিনি বলেন, জাহান্নামবাসীরা জাহান্নামের অগ্নি ও ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটাছুটি করবে। [ পবিত্র সূরা আর-রাহমান শরিফঃ আয়াত শরীফ ৪৪] জাহান্নাম এতো বিশাল যে, ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এমন অবস্থায় উপস্থিত করা হবে, যার ৭০ টি লাগাম হবে এবং প্রতিটি লাগামের সাথে ৭০ হাজার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা থাকবেন, উনারা তা টেনে আনবেন। [পবিত্র মুসলিম শরিফঃ হাদিস শরীফ ২৮৪২, মিশকাতঃ ৫৪২২]

জাহান্নামের গভীরতাঃ একটি বড় পাথর খন্ডকে যদি জাহান্নামের কিনারা দিয়ে তার ভিতরে নিক্ষেপ করা যায়, তবে ৭০ বছরেও সে তলা পাবে না। [পবিত্র মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ শরিফঃ পবিত্র হাদিস শরীফ ৩৫২৮৪, আল-জামেঃ পবিত্র হাদিস শরীফ ৫২১৪]

জাহান্নামের আবহাওয়াঃ জাহান্নামীরা থাকবে তীব্র গরম হাওয়া এবং প্রচন্ড উত্তপ্ত পানিতে, আর প্রচন্ড কালো ধোঁয়ার ছাঁয়ায়, যা শীতলও নয়, সুখকরও নয়’ [সূরা ওয়াকি‘আহঃ ৪১-৪৪]

জাহান্নামের আগুনের প্রখরতাঃ দুনিয়ার আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ মাত্র। অর্থাৎ দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের আগুনের তাপ আরো উনসত্তর গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সমপরিমাণ উত্তাপ রয়েছে। [পবিত্র বুখারী শরীফঃ হাদিস শরীফ ৩২৬৫, পবিত্র মিশকাত শরীফঃ হাদিস শরীফ ৫৪২১] জাহান্নামের আগুনের তাপ দিনে দিনে শুধু বৃদ্ধিই পাবেঃ মহান আল্লাহ পাক সুবাহানাহু ওয়া তা‘আলা তিনি বলেন, ‘অতঃপর তোমরা আস্বাদ গ্রহণ করো, আমি তো তোমাদের শাস্তিই শুধু বৃদ্ধি করব’ [পবিত্র সূরা নাবা শরিফঃ আয়াত শরীফ ৩০] এমনকি মহান আল্লাহ পাক সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা তিনি আরও বলেন, ‘যখনই উহা (জাহান্নামের আগুন) স্তিমিত হবে আমি তখনই তাদের জন্য অগ্নিশিখা বৃদ্ধি করে দেবো। [পবিত্র সূরা বানী ইসরাঈলঃ আয়াত শরীফ ৯৭]

জাহান্নামীদের দেহের আকৃতিঃ জাহান্নামীদের দু’কাধের মাঝের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণপথের সমান হবে। [পবিত্র বুখারী শরিফঃ হাদিস শরীফ ৬৫৫১] আর জাহান্নামীদের দাঁতের আকৃতি এবং শরীরের চামড়ার পুরুত্তঃ জাহান্নামীদের এক একটি দাঁত হবে উহুদ পাহাড়ের সমান এবং শরীরের চামড়া হবে তিন দিনের সফরের দূরত্ব পরিমাণ মোটা। [পবিত্র মুসলিম শরিফঃ হাদিস শরীফ ৭৩৬৪, পবিত্র মিশকাত শরিফঃ হাদিস শরীফঃ ৫৪২৮] আর অন্য হাদীছ শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি বলেছেন, জাহান্নামীদের মধ্যে কাফিরের শরীরের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ হাত মোটা, দাঁত হবে উহুদ পাহাড়ের সমান এবং জাহান্নামে তার বসার স্থান হবে মক্কা শরীফ-মদীনা শরীফ উনাদের মধ্যবর্তী ব্যবধান পরিমাণ। [ পবিত্র তিরমিযী শরীফঃ হাদিস শরীফ ২৫৭৭, পবিত্র মিশকাত শরীফঃ হাদিস শরীফ ৫৪৩১]

জাহান্নামীদের বীভৎস চেহারাঃ ‘অগ্নি তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তথায় থাকবে বীভৎস চেহারায়’ [পবিত্র সূরা মু’মিনুন শরিফঃ আয়াত শরীফ ১০৪]। এবং মহান আল্লাহ পাক সুবাহানাহু ওয়া’তায়ালা তিনি আরও বলেন, ‘যেদিন তাদের মুখমণ্ডল অগ্নিতে উলট পালট করা হবে সে দিন তারা বলবে, হায়! আমরা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য করতাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার আনুগত্য করতাম’! [পবিত্র সূরা আল আহযাব শরিফঃ আয়াত শরীফ ৬৬]।

আসুন সবাই মিলে সপত করি আজ থেকে আর কুনো গুনাহ করবোনা এবং সমস্থ হারাম কাজ পরিত্যাগ করবো এবং বদ আক্বিদা পরিত্যগ করে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার খাঁটি আকিদা পোষণ করে দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি হাসিল করবো এবং হক্বের উপর ইস্তিক্মাত থাকবো। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে এই ৭টি স্তরের দোযখ থেকে রক্ষা করুন আর আসুন প্রতিদিন আমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচার দোয়া যত বেশি সম্ভব পাট করি এবং মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে জাহান্নামের ভয়াবহতা থেকে পানাহ চাই। দোয়াঃ আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান’নার । আমিন। (সংগৃহীত)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loader-image

Scroll to Top