যার আমল নামায় সবচেয়ে বেশী ইস্তেগফার যোগ হবে, কেবল সেই ব্যক্তিই দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা দিনে রাতে ৭০ বার, অন্যত্র বলেন, ১০০ বার ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
উক্ত বর্ণনা অনুসারে যে সমস্ত ব্যক্তি ফরয ছালাতের প্রতি রাকা‘আতে ১০ বার, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তে ফরয ছালাতে মোট ১৭ রাকা‘আতে ১৭০ বার নিম্নের দো‘আগুলি পাঠ করে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থণা করে থাকে।
সিজদার দো‘আ (তিনবার) :
(متفق عليه) سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنا وَبِحَمْدِكَ، اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِيْ
(সুবহ-নাকা আল্লা-হুম্মা রব্বানা ওয়া বিহাম্দিকা, আল্লা-হুম্মাগ্ফিরলী)
অর্থ:‘হে আল্লাহ হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার প্রশংসার সাথে আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন!’(বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৮৭১)।
দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দো‘আ (একবার) :
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاجْبُرْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ-
(আল্লা-হুম্মাগ্ফিরলী ওয়ারহাম্নী ওয়াজ্বুরনী ওয়াহ্দিনী ওয়া ‘আ-ফেনী ওর্য়াঝুক্বনী)।
অর্থ:‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার উপরে রহম করুন, আমার অবস্থার সংশোধন করুন, আমাকে সৎপথ প্রদর্শন করুন, আমাকে সুস্থতা দান করুন ও আমাকে রূযী দান করুন’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, আবুদাউদ, মিশকাত হা/৯০০)।
মহান আল্লাহর বাণী, إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ (অন্তর থেকে) তাওবাকারী ও ( দৈহিকভাবে) পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন’ (বাক্বারহা ২/২২২)। অন্যত্র বলেন, আর বলেছি, ‘তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল’। ‘তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন,। ‘আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা’ (নূহ ৭১/১০-১২)।
উমার (রাঃ)ও একদা ইস্তিসক্বার নামাযের জন্য মিম্বরে আরোহণ করে কেবলমাত্র ইস্তিগফারের আয়াতগুলি (যাতে এই আয়াতও ছিল) পড়ে মিম্বর হতে নেমে গেলেন এবং বললেন, বৃষ্টির সেই পথসমূহ থেকে বৃষ্টি কামনা করেছি, যা আসমানে রয়েছে এবং যেগুলো হতে বৃষ্টি যমীনে বর্ষিত হয়। (ইবনে কাসীর) হাসান বাসরী (রঃ) এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তাঁর কাছে এসে কেউ অনাবৃষ্টির অভিযোগ জানালে, তিনি তাকে ইস্তিগফার করার কথা শিক্ষা দিতেন। আর একজন তাঁর কাছে দরিদ্রতার অভিযোগ জানালে, তাকেও তিনি এই (ইস্তিগফার করার) কথাই বাতলে দিলেন। অন্য একজন তার বাগান শুকিয়ে যাওয়ার অভিযোগ জানালে, তাকেও তিনি ইস্তিগফার করতে বললেন। এক ব্যক্তি বলল যে, আমার সন্তান হয় না, তাকেও তিনি ইস্তিগফার করতে বললেন। যখন কেউ তাঁকে প্রশ্ন করল যে, আপনি সবাইকে কেবল ইস্তিগফারই করতে কেন বললেন? তখন তিনি এই আয়াতই তেলাঅত করে বললেন, ‘আমি নিজের পক্ষ থেকে এ কথা বলিনি, বরং উল্লিখিত সমস্ত ব্যাপারে এই ব্যবস্থাপত্র মহান আল্লাহই দিয়েছেন।’ (ইবন কাসীর; কুরতুবী, আইসারুত তাফাসীর]
এবার বলুন! মহান আল্লাহ আমাদের ক্ষমা না করে থাকতে পারেন, তিনি তো সর্বোত্তম ক্ষমাকারী ও দয়ালু। তাই আসুন! আমরা ফরয ছালাতের প্রতি যত্নশীল। মহার আল্লাহ আমাদের কবুল করুন, আমীন।