(সংকলিত)
‘মাযহাব’ (مذهب)
শব্দের অর্থ মত, পথ,
মতবাদ, আদর্শ, বিশ্বাস ইত্যাদি। পরিভাষায় মাযহাব বলতে আক্বীদা, ফিক্বহ, উছূলে ফিক্বহ, ইলমে হাদীছ, আরবী সাহিত্য
ও অন্যান্য শারঈ বিষয়ে কোন বিদ্বানের অভিমতকে বুঝায়। এ মাযহাব হ’ল দ্বীন ইসলামের মধ্যে নতুন সংযোজন। চতুর্থ হিজরীর পূর্বে
যার কোন অস্তিত্ব ছিল না। ভারতগুরু নামে খ্যাত বিশিষ্ট হানাফী আলেম শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী (রহঃ) তাঁর
জগদ্বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা’–তে অকপটেই স্বীকার করেছেন যে, ‘চতুর্থ হিজরীর
পূর্বে লোকেরা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির মাযহাবের মুক্বাল্লিদ ছিলেন না’।[1]
শব্দের অর্থ মত, পথ,
মতবাদ, আদর্শ, বিশ্বাস ইত্যাদি। পরিভাষায় মাযহাব বলতে আক্বীদা, ফিক্বহ, উছূলে ফিক্বহ, ইলমে হাদীছ, আরবী সাহিত্য
ও অন্যান্য শারঈ বিষয়ে কোন বিদ্বানের অভিমতকে বুঝায়। এ মাযহাব হ’ল দ্বীন ইসলামের মধ্যে নতুন সংযোজন। চতুর্থ হিজরীর পূর্বে
যার কোন অস্তিত্ব ছিল না। ভারতগুরু নামে খ্যাত বিশিষ্ট হানাফী আলেম শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী (রহঃ) তাঁর
জগদ্বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা’–তে অকপটেই স্বীকার করেছেন যে, ‘চতুর্থ হিজরীর
পূর্বে লোকেরা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির মাযহাবের মুক্বাল্লিদ ছিলেন না’।[1]
যেহেতু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), ছাহাবায়ে কেরাম ও
তাবেঈনে এযামের কোন যুগে মাযহাবের অস্তিত্ব ছিল না। সুতরাং এটা দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি বা বিদ‘আত।
তাবেঈনে এযামের কোন যুগে মাযহাবের অস্তিত্ব ছিল না। সুতরাং এটা দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি বা বিদ‘আত।
যে সকল মুহাক্কিক্ব মুজতাহিদ আল্লাহভীরু ইমামগণের নামে তাঁদের মৃত্যুর পরে ‘মাযহাব’ তৈরী করা
হয়েছে। ইমাম চতুষ্টয়ের কেউই
মাযহাব মানতে বলে যাননি। বরং তাঁরা সকলেই বলেছেন, আমাদের রায়ের বিপক্ষে
হাদীছ পাওয়া গেলে আমাদের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে হাদীছ মেনে নিবে। যেমন-
হয়েছে। ইমাম চতুষ্টয়ের কেউই
মাযহাব মানতে বলে যাননি। বরং তাঁরা সকলেই বলেছেন, আমাদের রায়ের বিপক্ষে
হাদীছ পাওয়া গেলে আমাদের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে হাদীছ মেনে নিবে। যেমন-
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর অভিমত :
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) তাঁর অনুসরণের ব্যাপারে বিভিন্ন উক্তি করেছেন। তিনি বলেন,
(1) إِذا صَحَّ الْحَدِيثُ فَهُوَ مَذْهَبِي–
১. ‘যখন ছহীহ হাদীছ পাওয়া যাবে, (জেনো) সেটাই আমার
মাযহাব’।[2]
মাযহাব’।[2]
(2) حرام على من لم يعرف دليلى أن يفتى بكلامي–
২. ‘যে ব্যক্তি আমার দলীল অবগত নয়, আমার কথা
দ্বারা ফৎওয়া দেয়া তার জন্য হারাম’।[3]
দ্বারা ফৎওয়া দেয়া তার জন্য হারাম’।[3]
(3) لاَ يَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَأْخُذَ بِقَوْلِنَا
مَالَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ–
مَالَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ–
৩. ‘ঐ ব্যক্তির জন্য আমাদের কোন বক্তব্য গ্রহণ করা হালাল হবে না, যে ব্যক্তি জানে না আমরা তা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি’।[4]
(4) إذا قلتُ قولاً يخالف كتاب الله تعالى، وخبر الرسول
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؛ فاتركوا قولي–
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؛ فاتركوا قولي–
৪. ‘আমি যদি এমন কথা বলি যা আল্লাহর কিতাব ও রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছের পরিপন্থী হয়, তাহ’লে আমার কথাকে ছুঁড়ে ফেলে দিও’।[5]
(৫) إننا بشر نقول
القول اليوم ونرجع عند غدًا–
القول اليوم ونرجع عند غدًا–
৫. ‘নিশ্চয়ই আমরা মানুষ, আজ আমরা যা বলি, আগামীকাল তা থেকে ফিরে আসি’।[6]
(6) ويحك يا يعقوب! لا تكتب كل ما تسمع منى فإني قد أرى
الرأي اليوم وأتركه غداً، وأرى الرأي غداً وأتركه بعد غدٍ–
الرأي اليوم وأتركه غداً، وأرى الرأي غداً وأتركه بعد غدٍ–
৬. ‘হে ইয়াকূব (আবু ইউসুফ) সাবধান! তুমি আমার নিকট থেকে যা কিছু শোন তা সবই লিখে
রেখো না। কারণ আজ আমি যে
সিদ্ধান্ত প্রদান করি, আগামীকাল তা পরিত্যাগ করি। আবার আগামীকাল যে সিদ্ধান্ত প্রদান করি, তার পরের দিন তা পরিত্যাগ করি’।[7]
রেখো না। কারণ আজ আমি যে
সিদ্ধান্ত প্রদান করি, আগামীকাল তা পরিত্যাগ করি। আবার আগামীকাল যে সিদ্ধান্ত প্রদান করি, তার পরের দিন তা পরিত্যাগ করি’।[7]
(৭) اياكم والقول فى
دين الله بالراى، وعليكم باتباع السنة، فمن خرج عنها قل–
دين الله بالراى، وعليكم باتباع السنة، فمن خرج عنها قل–
৭. ‘সাবধান! তোমরা আল্লাহর দ্বীনে নিজেদের অভিমত প্রয়োগ করা হ’তে বিরত থাক। তোমাদের উচিত
সুন্নাতের অনুসরণ করা। যে ব্যক্তি সুন্নাহ হ’তে বের হবে সে পথভ্রষ্ট হবে’।[8]
সুন্নাতের অনুসরণ করা। যে ব্যক্তি সুন্নাহ হ’তে বের হবে সে পথভ্রষ্ট হবে’।[8]
ইমাম মালেক (রহঃ)-এর অভিমত :
ইমাম মালেক বিন আনাস (রহঃ) নিজের ও অন্যের অনুসরণের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ
মতামত পেশ করেছেন। তিনি বলেন,
মতামত পেশ করেছেন। তিনি বলেন,
(1) ليس أحد بعد النبي صلى الله عليه وسلم إلا يؤخذ من قوله
ويترك إلا النبي صلى الله عليه وسلم–
ويترك إلا النبي صلى الله عليه وسلم–
১. ‘নবী করীম (ছাঃ)-এর পরে এমন কোন ব্যক্তি নেই যার সকল কথা গ্রহণীয় ও বর্জনীয় হ’তে পারে। একমাত্র নবী করীম
(ছাঃ)-এর সকল কথাই গ্রহণীয় ও বর্জনীয়’।[9] অর্থাৎ
একমাত্র তাঁর সকল নির্দেশই পালনযোগ্য এবং সকল নিষেধ বর্জনযোগ্য।
(ছাঃ)-এর সকল কথাই গ্রহণীয় ও বর্জনীয়’।[9] অর্থাৎ
একমাত্র তাঁর সকল নির্দেশই পালনযোগ্য এবং সকল নিষেধ বর্জনযোগ্য।
(2) إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أُخْطِئُ وَأُصِيبُ؛ فَانْظُرُوا
فِي رَأْيِي؛ فَكُلُّ مَا وَافَقَ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ فَخُذُوا بِهِ، وَكُلُّ
مَا لَمْ يُوَافِقْ ذَلِكَ فَاتْرُكُوهُ–
فِي رَأْيِي؛ فَكُلُّ مَا وَافَقَ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ فَخُذُوا بِهِ، وَكُلُّ
مَا لَمْ يُوَافِقْ ذَلِكَ فَاتْرُكُوهُ–
২. ‘আমি একজন মানুষ। আমি আমার সিদ্ধান্তে ভুলও করি আবার ঠিকও করি। অতএব আমার সিদ্ধান্তগুলো যাচাই করে দেখ। যেগুলো কুরআন ও
সুন্নাহর অনুকূলে হয় তা গ্রহণ কর। আর যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহর প্রতিকূলে হয় তা বর্জন কর’।[10]
সুন্নাহর অনুকূলে হয় তা গ্রহণ কর। আর যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহর প্রতিকূলে হয় তা বর্জন কর’।[10]
(3) مَنِ ابْتَدَعَ فِي الْإِسْلاَمِ بِدْعَةً يَرَاهَا
حَسَنَةً، زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَانَ
الرِّسَالَةَ، لِأَنَّ اللهَ يَقُولُ : {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ}
[المائدة: 3]، فَمَا لَمْ يَكُنْ يَوْمَئِذٍ دِينًا، فَلاَ يَكُونُ الْيَوْمَ
دِينًا.
حَسَنَةً، زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَانَ
الرِّسَالَةَ، لِأَنَّ اللهَ يَقُولُ : {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ}
[المائدة: 3]، فَمَا لَمْ يَكُنْ يَوْمَئِذٍ دِينًا، فَلاَ يَكُونُ الْيَوْمَ
دِينًا.
৩. ‘যে ব্যক্তি কোন বিদ‘আত চালু করে এবং মনে করে এটা ভাল কাজ, সে যেন ধারণা করে যে, মুহাম্মাদ
(ছাঃ) রিসালাতে খিয়ানত করেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম
এবং তোমাদের প্রতি আমার নে‘মতকে পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন
হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদাহ ৫/৩)। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় যা দ্বীন বলে গণ্য
হয়নি আজও তা দ্বীন হিসাবে গণ্য হবে না’।[11]
(ছাঃ) রিসালাতে খিয়ানত করেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম
এবং তোমাদের প্রতি আমার নে‘মতকে পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন
হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদাহ ৫/৩)। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় যা দ্বীন বলে গণ্য
হয়নি আজও তা দ্বীন হিসাবে গণ্য হবে না’।[11]
ইমাম শাফেঈ (রহঃ)-এর অভিমত :
অন্যান্য ইমামগণের ন্যায় ইমাম শাফেঈ (রহঃ)ও বলেছেন,
(1) إِذا صَحَّ الْحَدِيثُ فَهُوَ مَذْهَبِي–
১. ‘(আমার সিদ্ধান্তের বিপরীত) ছহীহ হাদীছ পাওয়া গেলে সেটাই আমার
মাযহাব’।[12]
মাযহাব’।[12]
(2) إذَا وَجَدْتُمْ فِي كِتَابِي خِلاَفَ سُنَّةِ رَسُولِ
اللهِ- صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- فَقُولُوا بِسُنَّةِ رَسُولِ اللهِ-
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- وَدَعُوا مَا قُلْت وفي رواية : فاتبعوها ولا
تلتفتوا إلى قول أحد–
اللهِ- صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- فَقُولُوا بِسُنَّةِ رَسُولِ اللهِ-
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- وَدَعُوا مَا قُلْت وفي رواية : فاتبعوها ولا
تلتفتوا إلى قول أحد–
‘যদি তোমরা আমার কিতাবে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাহ বিরোধী কিছু পাও, তাহ’লে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী বল এবং আমার কথাকে পরিত্যাগ কর’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কথারই অনুসরণ কর
এবং অন্য কারো কথার দিকে দৃকপাত কর না’।[13]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাহ বিরোধী কিছু পাও, তাহ’লে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী বল এবং আমার কথাকে পরিত্যাগ কর’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কথারই অনুসরণ কর
এবং অন্য কারো কথার দিকে দৃকপাত কর না’।[13]
(3) كُلُّ حَدِيثٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَهُوَ قَوْلِي، وَإِنْ لَمْ تَسْمَعُوهُ مِنِّي–
وَسَلَّمَ فَهُوَ قَوْلِي، وَإِنْ لَمْ تَسْمَعُوهُ مِنِّي–
৩. ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রত্যেকটি হাদীছই আমার কথা, যদিও আমার নিকট থেকে তোমরা তা না শুনে থাক’।[14]
ইমাম শাফেঈ (রহঃ) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন,
(4) أَنْتُمْ فَأَعْلَمُ بِالْحَدِيثِ وَالرِّجَالِ مِنِّي
فَإِذَا كَانَ الحَدِيث صَحِيحا فأعلمونى أَنْ يَكُونَ كُوفِيًّا أَوْ بَصْرِيًّا
أَوْ شَامِيًّا أَذْهَبُ إِلَيْهِ إِذَا كَانَ صَحِيحًا–
فَإِذَا كَانَ الحَدِيث صَحِيحا فأعلمونى أَنْ يَكُونَ كُوفِيًّا أَوْ بَصْرِيًّا
أَوْ شَامِيًّا أَذْهَبُ إِلَيْهِ إِذَا كَانَ صَحِيحًا–
৪. ‘আপনারা আমার চেয়ে হাদীছ এবং সনদ সম্পর্কে বেশী অবগত আছেন। অতএব কোন ছহীহ হাদীছের সন্ধান পেলে আমাকে
জানাবেন কূফী, বাছরী ও শামী যেই হোক না কেন, ছহীহ হাদীছের জন্য আমি তার কাছে যেতে প্রস্ত্তত’।[15]
জানাবেন কূফী, বাছরী ও শামী যেই হোক না কেন, ছহীহ হাদীছের জন্য আমি তার কাছে যেতে প্রস্ত্তত’।[15]
(5) كُلُّ مَا قُلْتُ، وَكَانَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِلافُ قَوْلِي، مِمَّا يَصِحُّ، فَحَدِيثُ النَّبِيِّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْلَى، وَلا تُقَلِّدُونِي–
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِلافُ قَوْلِي، مِمَّا يَصِحُّ، فَحَدِيثُ النَّبِيِّ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْلَى، وَلا تُقَلِّدُونِي–
৫. ‘যখন আমি কোন কথা বলি এবং তা যদি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছহীহ হাদীছের বিপরীত হয়, তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে বর্ণিত ছহীহ হাদীছই অগ্রগণ্য। অতএব তোমরা আমার
তাক্বলীদ করো না’।[16]
তাক্বলীদ করো না’।[16]
(6) كل مسألة صح فيها الخبر عن رسول الله صلى الله عليه
وسلم عند أهل النقل بخلاف ما قلت؛ فأنا راجع عنها في حياتي وبعد موتي–
وسلم عند أهل النقل بخلاف ما قلت؛ فأنا راجع عنها في حياتي وبعد موتي–
৬. ‘আমার জীবদ্দশায় অথবা মৃত্যুর পর যে সকল মাসআলায় আমার কথার বিপরীত
মুহাদ্দিছগণের নিকট ছহীহ হাদীছ প্রমাণিত হয়েছে বা হবে ঐসব মাস‘আলায় আমার
অভিমত প্রত্যাহার করে নিলাম’।[17]
মুহাদ্দিছগণের নিকট ছহীহ হাদীছ প্রমাণিত হয়েছে বা হবে ঐসব মাস‘আলায় আমার
অভিমত প্রত্যাহার করে নিলাম’।[17]
(7) إذا رأيتم كلامي يخالف السنة فخذوا بالسنة واضربوا
بكلامي الحائط–
بكلامي الحائط–
৭. ‘যখন আমার কোন কথা হাদীছের বিপরীত দেখবে তখন হাদীছ অনুযায়ী আমল করবে এবং আমার
কথাকে দেয়ালে ছুঁড়ে মারবে’।[18]
কথাকে দেয়ালে ছুঁড়ে মারবে’।[18]
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর অভিমত :
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)ও অন্যান্য ইমামগণের ন্যায় তাক্বলীদের বিরুদ্ধে
জোরালো বক্তব্য পেশ করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।-
জোরালো বক্তব্য পেশ করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল।-
(1) لاَ تقلدني وَلاَ تقلدن مَالِكًا وَلاَ الْأَوْزَاعِيّ
وَلاَ النَّخعِيّ وَلاَ غَيرهم وَخذ الْأَحْكَام من حَيْثُ أخذُوا من الْكتاب
وَالسّنة–
وَلاَ النَّخعِيّ وَلاَ غَيرهم وَخذ الْأَحْكَام من حَيْثُ أخذُوا من الْكتاب
وَالسّنة–
১. ‘তুমি আমার তাক্বলীদ করো না এবং ইমাম মালেক আওযাঈ, ইব্রাহীম, নাখঈ এবং অন্য কারো
তাক্বলীদ করো না। বরং শরী‘আতের
বিধি-বিধান গ্রহণ কর সেভাবে, তারা যেভাবে
কুরআন-সুন্নাহ থেকে গ্রহণ করেছেন’।[19]
তাক্বলীদ করো না। বরং শরী‘আতের
বিধি-বিধান গ্রহণ কর সেভাবে, তারা যেভাবে
কুরআন-সুন্নাহ থেকে গ্রহণ করেছেন’।[19]
(2) رَأْي الْأَوْزَاعِيّ ورأي مَالك ورأي أبي حنيفَة كُله
رَأْي وَهُوَ عِنْدِي سَوَاء وَإِنَّمَا الْحجَّة فِي الْآثَار–
رَأْي وَهُوَ عِنْدِي سَوَاء وَإِنَّمَا الْحجَّة فِي الْآثَار–
২. ‘ইমাম আওযাঈ, ইমাম মালেক, ইমাম আবু
হানীফার অভিমত সবই মতামত মাত্র। আমার নিকট এসব অভিমত সবই সমান অর্থাৎ এগুলোর একটাও শরী‘আতের দলীল হ’তে পারে না। শরী‘আতের দলীল
শুধু মাত্র (রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবীদের) হাদীছ থেকেই হবে’।[20]
হানীফার অভিমত সবই মতামত মাত্র। আমার নিকট এসব অভিমত সবই সমান অর্থাৎ এগুলোর একটাও শরী‘আতের দলীল হ’তে পারে না। শরী‘আতের দলীল
শুধু মাত্র (রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবীদের) হাদীছ থেকেই হবে’।[20]
(3) من رد حديث رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؛
فهو على شفا هَلَكة–
فهو على شفا هَلَكة–
৩. ‘যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হাদীছ প্রত্যাখ্যান করল, সে ধ্বংসের প্রান্তসীমায় পৌঁছে গেল’।[21]
(4) عَجِبْتُ لِقَوْمٍ عَرَفُوا الإِسْنَادَ وَصِحَّتَهُ؛
وَيَذْهَبُوْنَ إِلَى رَأْيِ سُفْيَانَ! وَاَللهُ تَعَالَى يَقُوْلُ:
{فَلْيَحْذَرِ الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِهِ
وَيَذْهَبُوْنَ إِلَى رَأْيِ سُفْيَانَ! وَاَللهُ تَعَالَى يَقُوْلُ:
{فَلْيَحْذَرِ الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِهِ
أَنْ تُصِيْبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيْبَهُمْ عَذَابٌ
أَلِيْمٌ} (النُّوْر:63)-
أَلِيْمٌ} (النُّوْر:63)-
৪. ‘আমি আশ্চর্য হই তাদের আচরণে যারা ছহীহ হাদীছ জানা সত্ত্বেও ইমাম সুফিয়ানের
অভিমত গ্রহণ করতে চায়, অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘অতএব যারা
তাঁর আদেশের (রাসূলের হাদীছের) বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা যেন সতর্ক হয় যে, তাদেরকে ফিৎনা পেয়ে বসবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক
আযাব তাদেরকে গ্রাস করবে’ (নূর ২৪/৬৩)।[22]
অভিমত গ্রহণ করতে চায়, অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘অতএব যারা
তাঁর আদেশের (রাসূলের হাদীছের) বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা যেন সতর্ক হয় যে, তাদেরকে ফিৎনা পেয়ে বসবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক
আযাব তাদেরকে গ্রাস করবে’ (নূর ২৪/৬৩)।[22]
(5) لاَ تُقَلِّدْ دِينَك الرِّجَالَ فَإِنَّهُمْ لَنْ
يَسْلَمُوا أَنْ يَغْلَطُوا–
يَسْلَمُوا أَنْ يَغْلَطُوا–
৫. ‘তুমি তোমার দ্বীনের ব্যাপারে (নবী ছাঃ ছাড়া) কোন ব্যক্তির তাক্বলীদ করো না। কারণ তারা কখনও
ত্রুটিমুক্ত নয়’।[23]
ত্রুটিমুক্ত নয়’।[23]
মহামতি ইমাম চতুষ্টয়ের উল্লিখিত বক্তব্যগুলো থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, তাঁরা কেউই মাযহাব প্রতিষ্ঠিত করেননি বা মাযহাব প্রতিষ্ঠিত
করতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনভাবেই ইঙ্গিত পর্যন্ত করেননি। বরং মাযহাব ও তাক্বলীদ তথা অন্ধানুকরণের
বিরুদ্ধে ছিল তাঁদের সুদৃঢ় অবস্থান। তাঁদের সকলের বক্তব্যের মর্মার্থ ছিল একই। আর তা হ’ল হাদীছ না
পাওয়ায় উদ্ভূদ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যে রায় দিয়ে গেলাম কখনও যদি এর বিপরীত
ছহীহ হাদীছ পাওয়া যায়, তাহ’লে আমাদের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ছহীহ
হাদীছকেই মেনে নিবে। উল্লেখ্য যে, ইমাম চতুষ্টয়ের যামানায় হাদীছ সহজলভ্য ছিল না। কেননা তখন হাদীছ সমূহ
কিতাব আকারে সংকলিত হয়নি। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর যামানায় হাদীছের কোন কিতাবই সংকলিত ছিল না। সর্বপ্রথম ইমাম মালেক
(রহঃ) ‘মুওয়াত্ত্বা’ সংকলন করেন। যার হাদীছ সংখ্যা স্বল্প। ‘কুতুবে সিত্তাহ’র সবগুলো কিতাব ইমাম চতুষ্টয়ের পরে হিজরী তৃতীয় শতকে সংকলিত
হয়েছে।
করতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনভাবেই ইঙ্গিত পর্যন্ত করেননি। বরং মাযহাব ও তাক্বলীদ তথা অন্ধানুকরণের
বিরুদ্ধে ছিল তাঁদের সুদৃঢ় অবস্থান। তাঁদের সকলের বক্তব্যের মর্মার্থ ছিল একই। আর তা হ’ল হাদীছ না
পাওয়ায় উদ্ভূদ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যে রায় দিয়ে গেলাম কখনও যদি এর বিপরীত
ছহীহ হাদীছ পাওয়া যায়, তাহ’লে আমাদের রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ছহীহ
হাদীছকেই মেনে নিবে। উল্লেখ্য যে, ইমাম চতুষ্টয়ের যামানায় হাদীছ সহজলভ্য ছিল না। কেননা তখন হাদীছ সমূহ
কিতাব আকারে সংকলিত হয়নি। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর যামানায় হাদীছের কোন কিতাবই সংকলিত ছিল না। সর্বপ্রথম ইমাম মালেক
(রহঃ) ‘মুওয়াত্ত্বা’ সংকলন করেন। যার হাদীছ সংখ্যা স্বল্প। ‘কুতুবে সিত্তাহ’র সবগুলো কিতাব ইমাম চতুষ্টয়ের পরে হিজরী তৃতীয় শতকে সংকলিত
হয়েছে।
মহামতি ইমাম চতুষ্টয় তাঁদের তাক্বলীদ না করে ছহীহ হাদীছ মেনে নেয়ার জন্য বার
বার তাকীদ দিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাদের অনুসারীগণ
কোনরূপ তোয়াক্কা না করে তাঁদের ফৎওয়ার বিপরীতে ছহীহ হাদীছ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের
সেই রায় বা ফৎওয়াই মেনে চলছে অবিরত। তাদের মতাদর্শের বিপরীতে ছহীহ হাদীছ প্রদর্শন করলে তারা
বলেন,
হাদীছ ছহীহ হ’লেও এটি আমাদের মাযহাবে নেই, বিধায় আমরা এ হাদীছ মানতে পারবো না।
বার তাকীদ দিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাদের অনুসারীগণ
কোনরূপ তোয়াক্কা না করে তাঁদের ফৎওয়ার বিপরীতে ছহীহ হাদীছ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের
সেই রায় বা ফৎওয়াই মেনে চলছে অবিরত। তাদের মতাদর্শের বিপরীতে ছহীহ হাদীছ প্রদর্শন করলে তারা
বলেন,
হাদীছ ছহীহ হ’লেও এটি আমাদের মাযহাবে নেই, বিধায় আমরা এ হাদীছ মানতে পারবো না।
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নামে মিথ্যাচার :
মাযহাবের অনুসারী ভাইগণ তাদের স্ব স্ব ইমামকে সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য দিলেও
ক্ষেত্রবিশেষে তাদের নিজস্ব মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে তারা তাদের অনুসরণীয়
ইমামের নামে মিথ্যাচার করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। যেমন ঈমানের সংজ্ঞা ও হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়ে ইমাম
আবু হানীফা (রহঃ)-এর নামে চরম মিথ্যাচার করা হয়েছে।
ক্ষেত্রবিশেষে তাদের নিজস্ব মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে তারা তাদের অনুসরণীয়
ইমামের নামে মিথ্যাচার করতেও দ্বিধাবোধ করেন না। যেমন ঈমানের সংজ্ঞা ও হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়ে ইমাম
আবু হানীফা (রহঃ)-এর নামে চরম মিথ্যাচার করা হয়েছে।
ঈমানের সংজ্ঞার বিষয়ে তারা সর্বত্রই লিখেন যে, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেছেন, الْإِيمَانُ هُوَ التَّصْدِيقُ بِالْقَلْبِ وَحْدَه ‘শুধু আন্তরিক বিশ্বাসকেই ঈমান বলা হয়’।[24]
অথচ ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) الإِيْمَانُ هُوَ الإِقْرَارُ وَالتَّصْدِيْقُ ‘আন্তরিক বিশ্বাস ও মৌখিক স্বীকৃতির নাম ঈমান’।[25] ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) আরও স্পষ্ট করে বলেছেন,
الإيمان إقرار باللسان، وتصديق بالجنان، والإقرار وحده
لا يكون إيماناً لأنه لو كان إيماناً لكان المنافقون كلهم مؤمنين، وكذلك المعرفة
وحدها أي مجرد التصديق لا يكون إيماناً لأنها لو كانت إيماناً لكان أهل الكتاب
كلهم مؤمنين–
لا يكون إيماناً لأنه لو كان إيماناً لكان المنافقون كلهم مؤمنين، وكذلك المعرفة
وحدها أي مجرد التصديق لا يكون إيماناً لأنها لو كانت إيماناً لكان أهل الكتاب
كلهم مؤمنين–
‘মৌখিক স্বীকৃতি ও আন্তরিক
বিশ্বাসকে ঈমান বলে। শুধু মৌখিক স্বীকৃতি ঈমান হ’তে পারে না। কেননা শুধু মৌখিক স্বীকৃতির নাম ঈমান হ’লে মুনাফিকদের
প্রত্যেকেই মুমিন হিসাবে গণ্য হ’ত। অনুরূপভাবে শুধু আন্তরিক বিশ্বাসও ঈমান হ’তে পারে না। যদি শুধু আন্তরিক বিশ্বাসের নাম ঈমান হ’ত, তাহ’লে আহলে কিতাবদের প্রত্যেকেই মুমিন হিসাবে গণ্য হ’ত’।[26]
বিশ্বাসকে ঈমান বলে। শুধু মৌখিক স্বীকৃতি ঈমান হ’তে পারে না। কেননা শুধু মৌখিক স্বীকৃতির নাম ঈমান হ’লে মুনাফিকদের
প্রত্যেকেই মুমিন হিসাবে গণ্য হ’ত। অনুরূপভাবে শুধু আন্তরিক বিশ্বাসও ঈমান হ’তে পারে না। যদি শুধু আন্তরিক বিশ্বাসের নাম ঈমান হ’ত, তাহ’লে আহলে কিতাবদের প্রত্যেকেই মুমিন হিসাবে গণ্য হ’ত’।[26]
ঈমানে হ্রাস-বৃদ্ধি সম্পর্কে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেছেন যে,إيمان أهل السماء والأرض لا يزيد
ولا ينقص من جهة المؤمن بها ويزيد وينقص من جهة اليقين والتصديق– ‘আল্লাহর প্রতি সাধারণ বিশ্বাসের ক্ষেত্রে
আসমানবাসী ও যমীনবাসী কারো ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না তবে আন্তরিক বিশ্বাস ও দৃঢ়
বিশ্বাসের ক্ষেত্রে ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়’।[27]
ولا ينقص من جهة المؤمن بها ويزيد وينقص من جهة اليقين والتصديق– ‘আল্লাহর প্রতি সাধারণ বিশ্বাসের ক্ষেত্রে
আসমানবাসী ও যমীনবাসী কারো ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধি হয় না তবে আন্তরিক বিশ্বাস ও দৃঢ়
বিশ্বাসের ক্ষেত্রে ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়’।[27]
অথচ হানাফীগণ ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি সংক্রান্ত আলোচনায় সর্বত্রই লিখে থাকেন, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেছেন, الْإِيمَانُ لاَ يَزِيدُ وَلاَ
يَنْقُصُ ‘ঈমান বাড়েও না
কমেও না’। বরং ঈমান সর্বাবস্থায় একই রকম থাকে।
يَنْقُصُ ‘ঈমান বাড়েও না
কমেও না’। বরং ঈমান সর্বাবস্থায় একই রকম থাকে।
দলীল : (১) ঈমান হচ্ছে تَصْدِيق بِالْقَلْبِ ‘আন্তরিক বিশ্বাস’–এর নাম, এটা বিভক্তিকে
গ্রহণ করে না।
গ্রহণ করে না।
(২) الايمان بسيط
والبسيط لا يزيدُ ولاينقص অর্থাৎ ঈমান নিরেট অবিভাজ্য স্থুল বিষয়’।[28] এভাবে তারা ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর অভিমতকে পুরোপুরি
উল্লেখ না করে আংশিক ও বিকৃতিভাবে উপস্থাপন পূর্বক ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-কে
সরাসরি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতিকূলে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
والبسيط لا يزيدُ ولاينقص অর্থাৎ ঈমান নিরেট অবিভাজ্য স্থুল বিষয়’।[28] এভাবে তারা ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর অভিমতকে পুরোপুরি
উল্লেখ না করে আংশিক ও বিকৃতিভাবে উপস্থাপন পূর্বক ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-কে
সরাসরি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতিকূলে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
অথচ পবিত্র কুরআনের একাধিক আয়াত ও অসংখ্য ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত যে, ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। যেমন আল্লাহর বাণী,إِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ
الَّذِيْنَ إِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ
آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيْمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ– ‘নিশ্চয়ই মুমিন তারাই, যখন তাদের নিকট আল্লাহকে স্মরণ করা হয়, তখন তাদের অন্তরসমূহ ভয়ে কেঁপে ওঠে। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপর
ভরসা করে’ (আনফাল ৮/২)।
الَّذِيْنَ إِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ
آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيْمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ– ‘নিশ্চয়ই মুমিন তারাই, যখন তাদের নিকট আল্লাহকে স্মরণ করা হয়, তখন তাদের অন্তরসমূহ ভয়ে কেঁপে ওঠে। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপর
ভরসা করে’ (আনফাল ৮/২)।
তিনি বলেন,هُوَ الَّذِيْ أَنْزَلَ السَّكِيْنَةَ فِيْ قُلُوْبِ الْمُؤْمِنِيْنَ
لِيَزْدَادُوْا إِيْمَانًا مَعَ إِيْمَانِهِمْ ‘তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়’ (ফাতহ ৪৮/৪)।
لِيَزْدَادُوْا إِيْمَانًا مَعَ إِيْمَانِهِمْ ‘তিনি মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়’ (ফাতহ ৪৮/৪)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
لاَ يَزْنِى الزَّانِى حِيْنَ يَزْنِىْ وَهْوَ
مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِيْنَ يَشْرَبُ وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ
يَسْرِقُ حِيْنَ يَسْرِقُ وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ
النَّاسُ إِلَيْهِ فِيْهَا أَبْصَارَهُمْ حِيْنَ يَنْتَهِبُهَا وَهْوَ مُؤْمِنٌ- وَلاَ
يَغُلُّ أَحَدُكُمْ حِيْنَ يَغُلُّ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَإِيَّاكُمْ إِيَّاكُمْ–
مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِيْنَ يَشْرَبُ وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ
يَسْرِقُ حِيْنَ يَسْرِقُ وَهْوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ
النَّاسُ إِلَيْهِ فِيْهَا أَبْصَارَهُمْ حِيْنَ يَنْتَهِبُهَا وَهْوَ مُؤْمِنٌ- وَلاَ
يَغُلُّ أَحَدُكُمْ حِيْنَ يَغُلُّ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَإِيَّاكُمْ إِيَّاكُمْ–
যিনাকারী যখন যিনা করে তখন আর সে ঈমানদার থাকে না, মদ্যপ যখন মদ পান করে তখন তার আর ঈমান থাকে না, চোর যখন চুরি করে তখন সে ঈমানদার থাকে না। যখন ডাকাত এভাবে
ডাকাতি করে যে, মানুষ তার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে তখন তার
ঈমান থাকে না। এভাবে কেউ যখন
গনীমতের মালে খিয়ানত করে, তখন তার ঈমান থাকে না। অতএব সাবধান!’ (এসব গুনাহ হ’তে দূরে থাকবে)।[29]
ডাকাতি করে যে, মানুষ তার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে তখন তার
ঈমান থাকে না। এভাবে কেউ যখন
গনীমতের মালে খিয়ানত করে, তখন তার ঈমান থাকে না। অতএব সাবধান!’ (এসব গুনাহ হ’তে দূরে থাকবে)।[29]
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
إِذَا زَنَى الْعَبْدُ خَرَجَ مِنْهُ الإِيمَانُ كَانَ
عَلَيْهِ كَالظُّلَّةِ فَإِذَا انْقَطَعَ رَجَعَ إِلَيْهِ الإِيمَانُ–
عَلَيْهِ كَالظُّلَّةِ فَإِذَا انْقَطَعَ رَجَعَ إِلَيْهِ الإِيمَانُ–
‘যখন কোন বান্দা ব্যভিচারে লিপ্ত
হয় তখন তার থেকে (তার অন্তর থেকে) ঈমান বেরিয়ে যায় এবং তা তার মাথার উপর ছায়ার
ন্যায় অবস্থিত থাকে। অতঃপর যখন সে এ অসৎকাজ থেকে বিরত হয় তখন ঈমান তার নিকট প্রত্যাবর্তন করে’।[30]
হয় তখন তার থেকে (তার অন্তর থেকে) ঈমান বেরিয়ে যায় এবং তা তার মাথার উপর ছায়ার
ন্যায় অবস্থিত থাকে। অতঃপর যখন সে এ অসৎকাজ থেকে বিরত হয় তখন ঈমান তার নিকট প্রত্যাবর্তন করে’।[30]
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ঈমানের
হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। এ বিষয়ে ইমাম আবু
হানীফা (রহঃ) এই অভিমত পোষণ করলেও তাঁর অনুসারীগণ তাঁর নামে মিথ্যাচার করছে।
হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। এ বিষয়ে ইমাম আবু
হানীফা (রহঃ) এই অভিমত পোষণ করলেও তাঁর অনুসারীগণ তাঁর নামে মিথ্যাচার করছে।
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)-এর বিরুদ্ধাচরণ :
ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)-এর অনুসারী তাঁর অভিমত কোন কোন ক্ষেত্রে মেনে নিলেও
সর্বক্ষেত্রে মানেন না। এমন কিছু বিষয় আছে, যা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বিরুদ্ধাচরণ তো বটেই
তাদের অনুসরণীয় অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর অভিমত, আক্বীদা-বিশ্বাসেরও স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরণ। যেমন কুরআন ও ছহীহ
হাদীছের বর্ণনানুযায়ী ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ নিরাকার নন, অবশ্যই
আল্লাহর আকার আছে তবে তা কোন কিছুর সাথে তুলনীয় নয়। তাঁর স্বরূপ আমদের জ্ঞানের বাইরে। ‘আল-ফিক্বহুল আকবার’ গ্রন্থে এ বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)-এর
আক্বীদা উল্লেখ আছে যে,
সর্বক্ষেত্রে মানেন না। এমন কিছু বিষয় আছে, যা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বিরুদ্ধাচরণ তো বটেই
তাদের অনুসরণীয় অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর অভিমত, আক্বীদা-বিশ্বাসেরও স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরণ। যেমন কুরআন ও ছহীহ
হাদীছের বর্ণনানুযায়ী ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ নিরাকার নন, অবশ্যই
আল্লাহর আকার আছে তবে তা কোন কিছুর সাথে তুলনীয় নয়। তাঁর স্বরূপ আমদের জ্ঞানের বাইরে। ‘আল-ফিক্বহুল আকবার’ গ্রন্থে এ বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ)-এর
আক্বীদা উল্লেখ আছে যে,
وَله يَد وَوجه وَنَفس كَمَا ذكره الله تَعَالَى فِي
الْقُرْآن فَمَا ذكره الله تَعَالَى فِي الْقُرْآن من ذكر الْوَجْه وَالْيَد
وَالنَّفس فَهُوَ لَهُ صِفَات بِلاَ كَيفَ وَلاَ يُقَال إِن يَده قدرته اَوْ
نعْمَته لِأَن فِيهِ إبِْطَال الصّفة وَهُوَ قَول أهل الْقدر والاعتزال وَلَكِن
يَده صفته بِلاَ كَيفَ وغضبه وَرضَاهُ صفتان من صِفَات الله تَعَالَى بِلاَ كَيفَ–
الْقُرْآن فَمَا ذكره الله تَعَالَى فِي الْقُرْآن من ذكر الْوَجْه وَالْيَد
وَالنَّفس فَهُوَ لَهُ صِفَات بِلاَ كَيفَ وَلاَ يُقَال إِن يَده قدرته اَوْ
نعْمَته لِأَن فِيهِ إبِْطَال الصّفة وَهُوَ قَول أهل الْقدر والاعتزال وَلَكِن
يَده صفته بِلاَ كَيفَ وغضبه وَرضَاهُ صفتان من صِفَات الله تَعَالَى بِلاَ كَيفَ–
‘আল্লাহ তা‘আলার হাত, চেহারা ও নফস রয়েছে যেমনভাবে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল
কারীমে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ কুরআনে যেভাবে তাঁর হাত, চেহারা ও
নফসের বর্ণনা দিয়েছেন। এগুলো আল্লাহর গুণাবলী কোন অবস্থা বর্ণনা ব্যতীত। আর এমনটিও বলা যাবে না যে, আল্লাহর হাত অর্থ তাঁর কুদরতি হাত বা নে‘মতের হাত। কেননা এতে আল্লাহর
ছিফাত বাতিল গণ্য হয়। আল্লাহর হাত অর্থ তাঁর কুদরতি হাত বা দানের হাত এমন বক্তব্য ক্বাদরিয়া ও মু‘তাযিলাদের। বরং আল্লাহর হাত তাঁর
ছিফাত কোন অবস্থা বর্ণনা ব্যতীত। তাঁর ক্রোধ ও সন্তুষ্টি তাঁর গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম দু’টি গুণাবলী
কোন অবস্থা বর্ণনা ব্যতীত।[31]
কারীমে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ কুরআনে যেভাবে তাঁর হাত, চেহারা ও
নফসের বর্ণনা দিয়েছেন। এগুলো আল্লাহর গুণাবলী কোন অবস্থা বর্ণনা ব্যতীত। আর এমনটিও বলা যাবে না যে, আল্লাহর হাত অর্থ তাঁর কুদরতি হাত বা নে‘মতের হাত। কেননা এতে আল্লাহর
ছিফাত বাতিল গণ্য হয়। আল্লাহর হাত অর্থ তাঁর কুদরতি হাত বা দানের হাত এমন বক্তব্য ক্বাদরিয়া ও মু‘তাযিলাদের। বরং আল্লাহর হাত তাঁর
ছিফাত কোন অবস্থা বর্ণনা ব্যতীত। তাঁর ক্রোধ ও সন্তুষ্টি তাঁর গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম দু’টি গুণাবলী
কোন অবস্থা বর্ণনা ব্যতীত।[31]
‘মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ)
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর উল্লিখিত অভিমতের স্বপক্ষে কুরআনুল কারীম থেকে প্রমাণ
পেশ করেছেন। যেমন কুরআনুল কারীমে
আল্লাহর চেহারা সম্পর্কে এসেছে- كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ ‘প্রত্যেক বস্ত্তই ধ্বংস হবে তাঁর চেহারা ব্যতীত’ (ক্বাছাছ ২৮/৮৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, فَأَيْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللهِ ‘অতএব যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও সেদিকেই রয়েছে আল্লাহর চেহারা’ (বাক্বারাহ ২/১১৫)। তিনি আরো বলেন,كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ- وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ
ذُو الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ–
‘ভূ-পৃষ্ঠে সবকিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালনকর্তার চেহারা তথা
সত্তা ব্যতীত’ (আর-রহমান ৫৫/২৬-২৭)।
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর উল্লিখিত অভিমতের স্বপক্ষে কুরআনুল কারীম থেকে প্রমাণ
পেশ করেছেন। যেমন কুরআনুল কারীমে
আল্লাহর চেহারা সম্পর্কে এসেছে- كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ ‘প্রত্যেক বস্ত্তই ধ্বংস হবে তাঁর চেহারা ব্যতীত’ (ক্বাছাছ ২৮/৮৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, فَأَيْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللهِ ‘অতএব যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও সেদিকেই রয়েছে আল্লাহর চেহারা’ (বাক্বারাহ ২/১১৫)। তিনি আরো বলেন,كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ- وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ
ذُو الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ–
‘ভূ-পৃষ্ঠে সবকিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালনকর্তার চেহারা তথা
সত্তা ব্যতীত’ (আর-রহমান ৫৫/২৬-২৭)।
কুরআনুল কারীমে আল্লাহর হাতের বর্ণনা : আল্লাহ বলেন, يَدُ اللهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ ‘আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর রয়েছে’ (ফাতহ ৪৮/১০)। তিনি আরো বলেন, قَالَ يَاإِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ
بِيَدَيَّ ‘আল্লাহ বলেন, হে ইবলীস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি তাকে সিজদা করতে
তোমাকে কিসে বাধা দিল’? (ছোয়াদ ৩৮/৭৫)।
بِيَدَيَّ ‘আল্লাহ বলেন, হে ইবলীস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি তাকে সিজদা করতে
তোমাকে কিসে বাধা দিল’? (ছোয়াদ ৩৮/৭৫)।
তিনি অন্যত্র বলেন, وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا
قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ– ‘তারা যথার্থরূপে আল্লাহর ক্ষমতা নিরূপণ করতে
পারেনি। ক্বিয়ামতের দিন গোটা
পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোয় এবং আসমানসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান
হাতে’ (যুমার ৩৯/৬৭)।
قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ– ‘তারা যথার্থরূপে আল্লাহর ক্ষমতা নিরূপণ করতে
পারেনি। ক্বিয়ামতের দিন গোটা
পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোয় এবং আসমানসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান
হাতে’ (যুমার ৩৯/৬৭)।
আল্লাহর নফসের বর্ণনা : আল্লাহ বলেন, تَعْلَمُ مَا فِيْ نَفْسِيْ وَلَا أَعْلَمُ مَا فِيْ
نَفْسِكَ إِنَّكَ أَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ–
‘আপনি আমার মনের কথা জানেন, কিন্তু আমি আপনার
মনের কথা জানি না। নিশ্চয়ই আপনি অদৃশ্য
বিষয় সমূহে সর্বাধিক অবগত’ (মায়েদাহ ৫/১১৬)।
نَفْسِكَ إِنَّكَ أَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ–
‘আপনি আমার মনের কথা জানেন, কিন্তু আমি আপনার
মনের কথা জানি না। নিশ্চয়ই আপনি অদৃশ্য
বিষয় সমূহে সর্বাধিক অবগত’ (মায়েদাহ ৫/১১৬)।
কুরআনে আল্লাহর অবস্থানের বর্ণনা : আল্লাহ বলেন, الرَّحْمَنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوَى ‘দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমুন্নীত’ (ত্বোয়াহা ২০/৫)।
উপরোল্লিখিত আলোচনা হ’তে প্রতীয়মান হয় যে, মাযহাবী
ভাইদের অবস্থান পবিত্র কুরআন, ছহীহ হাদীছ থেকে অনেক
দূরে এমনকি ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর আদর্শ ও আক্বীদা-বিশ্বাস থেকেও দূরে। সুতরাং তারাمَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِى এবংعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِىْ
وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الْمَهْدِيِّينَ হাদীছদ্বয় অনুযায়ী যথার্থ অবস্থানে
নেই। আজকাল পীরপূজা, কবরপূজা, মাযারপূজা, খানকাপূজাসহ বিভিন্ন রকমের শিরক-বিদ‘আতের
লালনক্ষেত্র হয়ে ওঠেছে মাযহাব। যা নিতান্তই দুঃখজনক। আল্লাহ আমাদেরকে ছহীহ আক্বীদার ওপরে দৃঢ় রাখুন-আমীন!
ভাইদের অবস্থান পবিত্র কুরআন, ছহীহ হাদীছ থেকে অনেক
দূরে এমনকি ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর আদর্শ ও আক্বীদা-বিশ্বাস থেকেও দূরে। সুতরাং তারাمَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِى এবংعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِىْ
وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الْمَهْدِيِّينَ হাদীছদ্বয় অনুযায়ী যথার্থ অবস্থানে
নেই। আজকাল পীরপূজা, কবরপূজা, মাযারপূজা, খানকাপূজাসহ বিভিন্ন রকমের শিরক-বিদ‘আতের
লালনক্ষেত্র হয়ে ওঠেছে মাযহাব। যা নিতান্তই দুঃখজনক। আল্লাহ আমাদেরকে ছহীহ আক্বীদার ওপরে দৃঢ় রাখুন-আমীন!
[চলবে]
[1]. হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ, ১/১২৩ পৃঃ।
[2]. ইবনু আবেদীন, শামী (বৈরূত ছাপা) ১/৬৭ পৃঃ; আব্দুল ওয়াহহাব শা‘রানী, মীযানুল কুবরা
(দিল্লী ছাপা, ১২৮৬ হিঃ), ১/৩০ পৃঃ।
(দিল্লী ছাপা, ১২৮৬ হিঃ), ১/৩০ পৃঃ।
[3]. ড. অছিউল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আববাস, আত-তাক্বলীদ
ওয়া হুকমুহু ফী যূইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, পৃঃ ২০।
ওয়া হুকমুহু ফী যূইল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, পৃঃ ২০।
[4]. হাফিয ইবনুল ক্বাইয়্যিম, ইলামুল মুওয়াক্কিঈন
(বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, ১৯৯৩/১৪১১ হিঃ), ২/৩০৯ পৃঃ; মুহাম্মাদ
নাছিরুদ্দীন আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ) (রিয়ায : মাকতাবাতুল
মা‘আরিফ, ১৯৯১/১৪১১ হিঃ), পৃঃ ৪৬।
(বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, ১৯৯৩/১৪১১ হিঃ), ২/৩০৯ পৃঃ; মুহাম্মাদ
নাছিরুদ্দীন আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ) (রিয়ায : মাকতাবাতুল
মা‘আরিফ, ১৯৯১/১৪১১ হিঃ), পৃঃ ৪৬।
[5]. শায়খ আল-ফুল্লানী, ইকাযুল হিমাম, পৃঃ ৫০।
[6]. আত-তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু, পৃঃ ২০।
[7]. ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৪৭; আত-তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু, পৃঃ ২০।
[8]. মীযানুল কুবরা ১/৯ পৃঃ।
[9]. ইবনু আব্দিল বার্র, আল-জামি‘ ২/৯১ পৃঃ; ইমাম ইবনু
হাযম,
আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম, ৬/১৪৯ পৃঃ।
হাযম,
আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম, ৬/১৪৯ পৃঃ।
[10]. ইকাযুল হিমাম পৃঃ ৭২; আল-ইহকাম ফী উছূলিল আহকাম ৬/১৪৯; আল-জামি‘ ২/৩২।
[11]. মানহাজু ইমাম মালিক ফী ইছবাতিল আক্বীদাহ, পৃঃ ৯৯; ইমাম শাতেবী, আল-ই‘তিছাম, ১/৩৩ পৃঃ।
[12]. আশ-শা‘রানী, মীযানুল কুবরা ১/৫৭
পৃঃ;
ইমাম নববী, আল-মাজমূ‘ ১/৬৩, ইকামুল হিমাম, পৃঃ ১০৭।
পৃঃ;
ইমাম নববী, আল-মাজমূ‘ ১/৬৩, ইকামুল হিমাম, পৃঃ ১০৭।
[13]. আল-মাজমূ‘ ১/৬৩ পৃঃ, ইকাযুল হিমাম, পৃঃ ১০০; আল-খত্বীব, ইহতিজাজ বিশশাফেঈ ২/৮ পৃঃ, ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন ২/৩৬১।
[14]. ইবনু আবী হাতেম, আদাবুশ শাফেঈ, পৃঃ ৯৩, সনদ ছহীহ।
[15]. ইবনু আব্দিল বার্র, আল-ইনতিফা, পৃঃ ৭৫, আবু নাঈম, আল-হিলইয়াহ, ৯/১০৬, আল-খত্বীব, আল-ইহতিজাজ ১/৮ পৃঃ, ছিফাতু
ছালাতিন নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৫১।
ছালাতিন নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৫১।
[16]. আদাবুশ শাফেঈ, পৃঃ ৯৩; আল-মাজমূ‘ ১/৬৩ পৃঃ; আল-হিলইয়াহ, ৯/১০৬, ছিফাতু ছালাতিল নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৫২।
[17]. আল-হিলইয়াহ ৯/১০৬ পৃঃ; আদাবুশ শাফেঈ, পৃঃ ৯৩; ছিফাতু ছালাতিল নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৫২।
[18]. মীযানুল কুবরা ১/৬৩ পৃঃ।
[19]. শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী, ইকদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদি ওয়াত তাক্বলীদ
(লাহোর : ছিদ্দীকী প্রেস, তাবি), পৃঃ ৮৬; ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন ২/৩০২ পৃঃ; ইকাযুল হিমাম, পৃঃ ১১৩; মাজমূ‘ ফাতাওয়া
২০/২১২ পৃঃ।
(লাহোর : ছিদ্দীকী প্রেস, তাবি), পৃঃ ৮৬; ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন ২/৩০২ পৃঃ; ইকাযুল হিমাম, পৃঃ ১১৩; মাজমূ‘ ফাতাওয়া
২০/২১২ পৃঃ।
[20]. ইবনু আব্দিল বার্র, আল-জামি‘ ৩/১৪৯ পৃঃ।
[21]. ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ), পৃঃ ৪৬-৫৩।
[22]. তাইসীরুল আযীযিল হামীদ, পৃঃ ৫৪৫; ই‘লামুল
মুওয়াক্কিঈন ২/২৭১ পৃঃ; ফাতহুল মাজীদ, পৃঃ ৩২২।
মুওয়াক্কিঈন ২/২৭১ পৃঃ; ফাতহুল মাজীদ, পৃঃ ৩২২।
[23]. ইবনু তায়মিয়া, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২০/২১২ পৃঃ।
[24]. মাওলানা মোঃ মোহিববুল্লাহ আযাদ গং, সুনানু আবী
দাঊদ ওয়া মুস্তালাহুল হাদীছ (ঢাকা : আল-ফাতাহ পাবলিকেশন্স, তাবি), পৃঃ ৫৩৩।
দাঊদ ওয়া মুস্তালাহুল হাদীছ (ঢাকা : আল-ফাতাহ পাবলিকেশন্স, তাবি), পৃঃ ৫৩৩।
[25]. শারহু আল-ফিকহুল আকবার, পৃঃ ১৪১।
[26]. ঐ,
পৃঃ ১৪১-১৪২।
পৃঃ ১৪১-১৪২।
[27]. ঐ,
পৃঃ ১৪৪।
পৃঃ ১৪৪।
[28]. আল-আকাঈদুল ইসলামিয়্যা, পৃঃ ৪৭-৪৮; মুহাম্মাদ
হেলাল উদ্দীন ও আ.জ.ম. ছালেহ আহমদ, এম.এ ফাইনাল
ইসলামিক স্টাডিজ (ঢাকা : প্রিন্সিপ্যাল পাবলিশার্স, ৩য় সংস্করণ, মার্চ ২০০৪ ইং), পৃঃ ১১০; মাওলানা মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ মুনীর ও অন্যান্য
সুনানু আবি দাঊদ ও মুস্তালাহুল হাদীছ (ঢাকা : আল-বারাকা লাইব্রেরী তাবি), পৃঃ ৪১৭।
হেলাল উদ্দীন ও আ.জ.ম. ছালেহ আহমদ, এম.এ ফাইনাল
ইসলামিক স্টাডিজ (ঢাকা : প্রিন্সিপ্যাল পাবলিশার্স, ৩য় সংস্করণ, মার্চ ২০০৪ ইং), পৃঃ ১১০; মাওলানা মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ মুনীর ও অন্যান্য
সুনানু আবি দাঊদ ও মুস্তালাহুল হাদীছ (ঢাকা : আল-বারাকা লাইব্রেরী তাবি), পৃঃ ৪১৭।
[29]. বুখারী হা/২৪৭৫ ‘অত্যাচার, ক্বিছাছ ও লুণ্ঠন’ অধ্যায়; মুসলিম হা/৫৭ ‘ঈমান’ অধ্যায়; মিশকাত হা/৫৩।
[30]. তিরমিযী হা/২৬২৫ ‘ঈমান’ অধ্যায়; আবূ দাঊদ হা/৪৬৯০; সিলসিলা ছাহীহাহ হা/৫০৯, ছহীহুল জামে‘ হা/৫৮৬, ছহীহ আত-তারগীব হা/২৩৯৪; মিশকাত হা/৬০।
[31]. শারহুল ফিকহুল আকবার, পৃঃ ৬৬-৬৮।