শরীফা বিনতে আব্দুল মতীন
‘যিকর’ (ذِكْرٌ ) শব্দের অর্থ স্মরণ করা, মনে করা। স্মরণ
বা মনে করা দ্বারা আল্লাহকে স্মরণ করা বুঝায়। আল্লাহকে
স্মরণ হ’তে পারে
যিকর-আযকার, তাসবীহ-তাহলীলের
মাধ্যমে। হ’তে
পারে ছালাত-ছিয়াম, হজ্জ-যাকাত
প্রভৃতি ইবাদতের মাধ্যমে। অথবা দ্বীনী কোন মজলিসে বসার
মাধ্যমে। কিংবা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-গবেষণার
মাধ্যমে। মোটকথা আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক যেকোন বিষয়
নিয়ে মনে মনে চিন্তা করা;
মুখে প্রকাশ করা এবং কাজে বাস্তবায়ন করা- সবকিছুই যিকর বা আল্লাহকে স্মরণ করার
অন্তর্ভুক্ত। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় যিকরের প্রতি সমধিক
গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যিকরকে মানব জীবনের সর্বাপেক্ষা
মূল্যবান অঙ্গ হৃদযন্ত্রের সাথে তুলনা করা যায়। হৃদযন্ত্র
বিকল হ’লে মানুষ
যেমন মৃত্যুর দুয়ারে উপনীত হয়, যিকরবিহীন মানুষ তেমনি জীবিত থেকেও মৃতপ্রায়
হয়ে যায়। কারণ সদাসর্বদা যিকর করা একান্তই তাক্বওয়ার
ব্যাপার। অন্তরজগত যখন আল্লাহর ভালোবাসাপূর্ণ ভয়ে ভীত
থাকে তখনই কেবল তা সম্ভব হয়। আর ব্যক্তি তাক্বওয়াশীল হ’লেই তার যাবতীয় আমল-আখলাক সংযত হয়। মনে
যখন যা চায় তা সে লাগামহীনভাবে করতে পারে না। আলোচ্য
প্রবন্ধে আমরা যিকরের গুরুত্ব, ফযীলত, পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করার প্রায়স পাব
ইনশাআল্লাহ।-
বা মনে করা দ্বারা আল্লাহকে স্মরণ করা বুঝায়। আল্লাহকে
স্মরণ হ’তে পারে
যিকর-আযকার, তাসবীহ-তাহলীলের
মাধ্যমে। হ’তে
পারে ছালাত-ছিয়াম, হজ্জ-যাকাত
প্রভৃতি ইবাদতের মাধ্যমে। অথবা দ্বীনী কোন মজলিসে বসার
মাধ্যমে। কিংবা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-গবেষণার
মাধ্যমে। মোটকথা আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক যেকোন বিষয়
নিয়ে মনে মনে চিন্তা করা;
মুখে প্রকাশ করা এবং কাজে বাস্তবায়ন করা- সবকিছুই যিকর বা আল্লাহকে স্মরণ করার
অন্তর্ভুক্ত। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় যিকরের প্রতি সমধিক
গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যিকরকে মানব জীবনের সর্বাপেক্ষা
মূল্যবান অঙ্গ হৃদযন্ত্রের সাথে তুলনা করা যায়। হৃদযন্ত্র
বিকল হ’লে মানুষ
যেমন মৃত্যুর দুয়ারে উপনীত হয়, যিকরবিহীন মানুষ তেমনি জীবিত থেকেও মৃতপ্রায়
হয়ে যায়। কারণ সদাসর্বদা যিকর করা একান্তই তাক্বওয়ার
ব্যাপার। অন্তরজগত যখন আল্লাহর ভালোবাসাপূর্ণ ভয়ে ভীত
থাকে তখনই কেবল তা সম্ভব হয়। আর ব্যক্তি তাক্বওয়াশীল হ’লেই তার যাবতীয় আমল-আখলাক সংযত হয়। মনে
যখন যা চায় তা সে লাগামহীনভাবে করতে পারে না। আলোচ্য
প্রবন্ধে আমরা যিকরের গুরুত্ব, ফযীলত, পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করার প্রায়স পাব
ইনশাআল্লাহ।-
যিকরের গুরুত্ব ও ফযীলত :
পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছে যিকরের বহু গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। মানুষ
আল্লাহকে স্মরণ করলে আল্লাহও মানুষকে স্মরণ করেন। আল্লাহ
বলেন, فَاذْكُرُوْنِيْ أَذْكُرْكُمْ ‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদেরকে স্মরণ
করব’ (বাক্বারাহ ২/১৫২)। বেশী
বেশী আল্লাহর যিকর করলে সফলকাম হওয়া যায়। আল্লাহ বলেন,وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيْراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ‘তোমরা অধিকহারে আল্লাহকে স্মরণ কর, যাতে তোমরা
সফলকাম হ’তে পার’
(জুম‘আ ১০)।
কুরআন ও ছহীহ হাদীছে যিকরের বহু গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। মানুষ
আল্লাহকে স্মরণ করলে আল্লাহও মানুষকে স্মরণ করেন। আল্লাহ
বলেন, فَاذْكُرُوْنِيْ أَذْكُرْكُمْ ‘তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমিও তোমাদেরকে স্মরণ
করব’ (বাক্বারাহ ২/১৫২)। বেশী
বেশী আল্লাহর যিকর করলে সফলকাম হওয়া যায়। আল্লাহ বলেন,وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيْراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ‘তোমরা অধিকহারে আল্লাহকে স্মরণ কর, যাতে তোমরা
সফলকাম হ’তে পার’
(জুম‘আ ১০)।
আরও
করুণার হাত বাড়িয়ে তিনি বলেন, وَالذَّاكِرِيْنَ
اللهَ كَثِيْرًا وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللهُ لَهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا
عَظِيمًا-‘আল্লাহকে
বেশী বেশী স্মরণকারী নারী ও পুরুষের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা প্রতিদান’
(আহযাব ৩৩/৩৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَثَلُ الَّذِىْ يَذْكُرُ رَبَّهُ وَالَّذِىْ لاَ يَذْكُرُ مَثَلُ
الْحَىِّ وَالْمَيِّتِ- ‘যে
তার প্রতিপালকের যিকর করে ও যে করে না, তাদের তুলনা জীবিত ও মৃতের ন্যায়’।[1] হাদীছের
ভাষায় যিকরহীন ব্যক্তি সমাজের জন্য ক্ষতিকর। কারণ সে
কারো উপকার করতে পারে না;
বরং সে মানুষকে দুঃখই দিয়ে থাকে।
করুণার হাত বাড়িয়ে তিনি বলেন, وَالذَّاكِرِيْنَ
اللهَ كَثِيْرًا وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللهُ لَهُمْ مَغْفِرَةً وَأَجْرًا
عَظِيمًا-‘আল্লাহকে
বেশী বেশী স্মরণকারী নারী ও পুরুষের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা প্রতিদান’
(আহযাব ৩৩/৩৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَثَلُ الَّذِىْ يَذْكُرُ رَبَّهُ وَالَّذِىْ لاَ يَذْكُرُ مَثَلُ
الْحَىِّ وَالْمَيِّتِ- ‘যে
তার প্রতিপালকের যিকর করে ও যে করে না, তাদের তুলনা জীবিত ও মৃতের ন্যায়’।[1] হাদীছের
ভাষায় যিকরহীন ব্যক্তি সমাজের জন্য ক্ষতিকর। কারণ সে
কারো উপকার করতে পারে না;
বরং সে মানুষকে দুঃখই দিয়ে থাকে।
অন্যত্র
রাসূল (ছাঃ) বলেন, لاَ يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُوْنَ اللهَ عَزَّ
وَجَلَّ إِلاَّ حَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَنَزَلَتْ
عَلَيْهِمُ السَّكِيْنَةُ وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيْمَنْ عِنْدَهُ ‘যখন কিছু মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করতে বসে
(দ্বীনি বৈঠক, কুরআন
শিক্ষার আসর, ধর্মীয়
ক্লাস ইত্যাদিতে) তখন ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে নেয়, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে ফেলে, তাদের উপর
শান্তি বর্ষিত হয় এবং আল্লাহ তার নিকটস্থদের (অর্থাৎ ফেরেশতাদের) কাছে তাদের কথা
উল্লেখ করেন’।[2]
রাসূল (ছাঃ) বলেন, لاَ يَقْعُدُ قَوْمٌ يَذْكُرُوْنَ اللهَ عَزَّ
وَجَلَّ إِلاَّ حَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَنَزَلَتْ
عَلَيْهِمُ السَّكِيْنَةُ وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيْمَنْ عِنْدَهُ ‘যখন কিছু মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করতে বসে
(দ্বীনি বৈঠক, কুরআন
শিক্ষার আসর, ধর্মীয়
ক্লাস ইত্যাদিতে) তখন ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে নেয়, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে ফেলে, তাদের উপর
শান্তি বর্ষিত হয় এবং আল্লাহ তার নিকটস্থদের (অর্থাৎ ফেরেশতাদের) কাছে তাদের কথা
উল্লেখ করেন’।[2]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِى
بِىْ، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِىْ، فَإِنْ ذَكَرَنِى فِىْ نَفْسِهِ
ذَكَرْتُهُ فِىْ نَفْسِىْ، وَإِنْ ذَكَرَنِىْ فِىْ مَلأٍ ذَكَرْتُهُ فِىْ مَلأٍ
خَيْرٍ مِنْهُمْ ‘আল্লাহ
বলেন, আমি
আমার বান্দার নিকটে সেরূপ, যেরূপ সে আমাকে ভাবে। আমি
তার সাথে থাকি, যখন
সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে তার মনে আমাকে স্মরণ করে, আমিও তাকে
আমার মনে স্মরণ করি। যদি সে আমাকে মানুষের দলে স্মরণ
করে, আমি
তাকে তাদের অপেক্ষা উত্তম দলে (ফেরেশতাদের দলে) স্মরণ করি’।[3]
(ছাঃ) বলেন, يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِى
بِىْ، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِىْ، فَإِنْ ذَكَرَنِى فِىْ نَفْسِهِ
ذَكَرْتُهُ فِىْ نَفْسِىْ، وَإِنْ ذَكَرَنِىْ فِىْ مَلأٍ ذَكَرْتُهُ فِىْ مَلأٍ
خَيْرٍ مِنْهُمْ ‘আল্লাহ
বলেন, আমি
আমার বান্দার নিকটে সেরূপ, যেরূপ সে আমাকে ভাবে। আমি
তার সাথে থাকি, যখন
সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে তার মনে আমাকে স্মরণ করে, আমিও তাকে
আমার মনে স্মরণ করি। যদি সে আমাকে মানুষের দলে স্মরণ
করে, আমি
তাকে তাদের অপেক্ষা উত্তম দলে (ফেরেশতাদের দলে) স্মরণ করি’।[3]
‘আমি আমার বান্দার নিকটে সেরূপ, যেরূপ সে
আমাকে ভাবে’ এর অর্থ হ’ল-
বান্দা যেভাবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে আল্লাহ তাকে সেভাবে আশ্রয় দেন। যেমন
কেউ রাতে বাড়ি থেকে বের হ’ল। সে
মনে মনে ভাবল, হায়!
এই রাতে কিভাবে যাই?
রাস্তায় কিসের খপ্পরে না জানি পড়ি? কোন সমস্যা হোক বা না হোক- সারা রাস্তা
নিশ্চিত সে অস্থিরভাবে পার হবে। পক্ষান্তরে যদি সে নিরেট ভরসা
নিয়ে বের হয়, আর
মানুষ, জিন
বা অন্য জন্তুর খপ্পরে পড়েও যায়, তথাপিও সে অধৈর্য, অস্থির হয়
না। বরং সাহসের সাথে মোকাবিলা করে এবং বিপদকে
তুচ্ছ মনে করে।
আমাকে ভাবে’ এর অর্থ হ’ল-
বান্দা যেভাবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে আল্লাহ তাকে সেভাবে আশ্রয় দেন। যেমন
কেউ রাতে বাড়ি থেকে বের হ’ল। সে
মনে মনে ভাবল, হায়!
এই রাতে কিভাবে যাই?
রাস্তায় কিসের খপ্পরে না জানি পড়ি? কোন সমস্যা হোক বা না হোক- সারা রাস্তা
নিশ্চিত সে অস্থিরভাবে পার হবে। পক্ষান্তরে যদি সে নিরেট ভরসা
নিয়ে বের হয়, আর
মানুষ, জিন
বা অন্য জন্তুর খপ্পরে পড়েও যায়, তথাপিও সে অধৈর্য, অস্থির হয়
না। বরং সাহসের সাথে মোকাবিলা করে এবং বিপদকে
তুচ্ছ মনে করে।
এক
দীর্ঘ হাদীছে যিকরকারীর ফযীলত সম্পর্কে এক চমৎকার ও মনোলোভা বিবরণ বিধৃত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর একদল ফেরেশতা আছেন, যারা
রাস্তায় রাস্তায়
ঘুরে আল্লাহর যিকরকারীদের অনুসন্ধান করেন। যখন তাঁরা
কোন দলকে আল্লাহর স্মরণ করতে দেখেন, তখন তাঁরা একে অপরকে বলেন, আস! তোমাদের
কাম্য বস্ত্ত এখানেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, অতঃপর তারা
তাদেরকে নিজ নিজ ডানা দ্বারা ঘিরে নেন দুনিয়ার আকাশ পর্যন্ত। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তখন
তাদের প্রতিপালক তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন অথচ তিনি তাদের অবস্থা অধিক অবগত, আমার
বান্দারা কি বলছে? রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণ
বলেন, তারা
তোমার পবিত্রতা বর্ণনা,
বড়ত্ব ঘোষণা, প্রশংসা
ও মর্যাদা বর্ণনা করছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তখন আল্লাহ
বলেন, তারা
কি আমাকে দেখেছে? রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তারা
বলেন, তোমার
কসম, তারা
কখনো তোমাকে দেখেনি। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তখন আল্লাহ
বলেন, যদি
তারা আমাকে দেখত, তবে
কেমন হ’ত? রাসূল (ছাঃ)
বলেন, তখন
ফেরেশতাগণ বলেন, যদি
তারা আপনাকে দেখত, তবে
তারা আপনার আরো বেশী ইবাদত করত এবং আরো বেশী মর্যাদা ও পবিত্রতা ঘোষণা করত। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন,
তারা কি চায়? ফেরেশতাগণ
বলেন, তারা
তোমার নিকট জান্নাত চায়?
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
তখন আল্লাহ বলেন,
তারা কি এটা দেখেছে?
ফেরেশতাগণ বলেন,
হে প্রতিপালক! আপনার কসম, তারা কখনো এটি দেখেনি। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ বলেন, যদি
তারা এটিকে দেখত তবে কেমন হ’ত? রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণ
উত্তর দেন, যদি
তারা এটিকে দেখত তবে প্রচন্ড লোভ করত, এটা পাওয়ার অধিক প্রার্থনা করত এবং এটি
পাওয়ার বেশী আগ্রহ প্রকাশ করত। তখন আল্লাহ বলেন, তারা কোন
জিনিস হ’তে আশ্রয়
চায়? রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণ
উত্তর দেন, জাহান্নাম
হ’তে। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন,
তারা কি উহা দেখেছে?
ফেরেশতাগণ জবাব দেন,
হে আমার রব! আপনার কসম, তারা উহা দেখেনি। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, কেমন
হত, যদি
তারা উহা দেখত? ফেরেশতাগণ
বলেন, যদি
তারা উহা দেখত তাহ’লে উহা হ’তে বেশী পলায়ন করত এবং বেশী ভয় করত। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তখন
তিনি বলেন, আমি
তোমাদেরকে সাক্ষী করছি যে, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণের
একজন তখন বলে উঠেন, অমুক
ব্যক্তি তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। সে শুধু তার নিজের কোন কাজে
এসেছে। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা এমন একদল লোক যাদের কেউই হতভাগ্য হয় না’।[4]
দীর্ঘ হাদীছে যিকরকারীর ফযীলত সম্পর্কে এক চমৎকার ও মনোলোভা বিবরণ বিধৃত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর একদল ফেরেশতা আছেন, যারা
রাস্তায় রাস্তায়
ঘুরে আল্লাহর যিকরকারীদের অনুসন্ধান করেন। যখন তাঁরা
কোন দলকে আল্লাহর স্মরণ করতে দেখেন, তখন তাঁরা একে অপরকে বলেন, আস! তোমাদের
কাম্য বস্ত্ত এখানেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, অতঃপর তারা
তাদেরকে নিজ নিজ ডানা দ্বারা ঘিরে নেন দুনিয়ার আকাশ পর্যন্ত। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তখন
তাদের প্রতিপালক তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন অথচ তিনি তাদের অবস্থা অধিক অবগত, আমার
বান্দারা কি বলছে? রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণ
বলেন, তারা
তোমার পবিত্রতা বর্ণনা,
বড়ত্ব ঘোষণা, প্রশংসা
ও মর্যাদা বর্ণনা করছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তখন আল্লাহ
বলেন, তারা
কি আমাকে দেখেছে? রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তারা
বলেন, তোমার
কসম, তারা
কখনো তোমাকে দেখেনি। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তখন আল্লাহ
বলেন, যদি
তারা আমাকে দেখত, তবে
কেমন হ’ত? রাসূল (ছাঃ)
বলেন, তখন
ফেরেশতাগণ বলেন, যদি
তারা আপনাকে দেখত, তবে
তারা আপনার আরো বেশী ইবাদত করত এবং আরো বেশী মর্যাদা ও পবিত্রতা ঘোষণা করত। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন,
তারা কি চায়? ফেরেশতাগণ
বলেন, তারা
তোমার নিকট জান্নাত চায়?
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
তখন আল্লাহ বলেন,
তারা কি এটা দেখেছে?
ফেরেশতাগণ বলেন,
হে প্রতিপালক! আপনার কসম, তারা কখনো এটি দেখেনি। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ বলেন, যদি
তারা এটিকে দেখত তবে কেমন হ’ত? রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণ
উত্তর দেন, যদি
তারা এটিকে দেখত তবে প্রচন্ড লোভ করত, এটা পাওয়ার অধিক প্রার্থনা করত এবং এটি
পাওয়ার বেশী আগ্রহ প্রকাশ করত। তখন আল্লাহ বলেন, তারা কোন
জিনিস হ’তে আশ্রয়
চায়? রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণ
উত্তর দেন, জাহান্নাম
হ’তে। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, তখন
আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন,
তারা কি উহা দেখেছে?
ফেরেশতাগণ জবাব দেন,
হে আমার রব! আপনার কসম, তারা উহা দেখেনি। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, কেমন
হত, যদি
তারা উহা দেখত? ফেরেশতাগণ
বলেন, যদি
তারা উহা দেখত তাহ’লে উহা হ’তে বেশী পলায়ন করত এবং বেশী ভয় করত। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, তখন
তিনি বলেন, আমি
তোমাদেরকে সাক্ষী করছি যে, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, ফেরেশতাগণের
একজন তখন বলে উঠেন, অমুক
ব্যক্তি তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। সে শুধু তার নিজের কোন কাজে
এসেছে। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা এমন একদল লোক যাদের কেউই হতভাগ্য হয় না’।[4]
আলোচ্য
হাদীছে যে বৈঠকে আল্লাহর যিকর হয়, সে বৈঠকে উপস্থিতদের অনুপম ক্ষমা ঘোষিত হ’ল। শুধু তাই নয়, যারা নিজের
কোন প্রয়োজনে উক্ত বৈঠকে শরীক হবে তারাও ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে বলে জানা গেল। অতএব
নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহর স্মরণ এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
হাদীছে যে বৈঠকে আল্লাহর যিকর হয়, সে বৈঠকে উপস্থিতদের অনুপম ক্ষমা ঘোষিত হ’ল। শুধু তাই নয়, যারা নিজের
কোন প্রয়োজনে উক্ত বৈঠকে শরীক হবে তারাও ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে বলে জানা গেল। অতএব
নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহর স্মরণ এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আবুদ্দারদা
(রাঃ) বলেন, রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন, أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ
وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيْكِكُمْ وَأَرْفَعِهَا فِىْ دَرَجَاتِكُمْ وَخَيْرٌ
لَكُمْ مِنْ إِنْفَاقِ الذَّهَبِ وَالْوَرِقِ وَخَيْرٌ لَكُمْ مِنْ أَنْ تَلْقَوْا
عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ‘আমি কি তোমাদের বলব না তোমাদের আমল সমূহের
মধ্যে কোনটি উত্তম, তোমাদের
মালিকের নিকট অধিক পবিত্র, তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য অধিক কার্যকর, এমনকি
সোনা-রূপা দান করার চেয়েও এবং তোমাদের এই আমল থেকেও উত্তম যে, তোমরা
শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তোমরা তাদের গলা কাটবে এবং তারা তোমাদের গলা
কাটবে (অর্থাৎ জিহাদ করবে)? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘অবশ্যই বলুন’। রাসূল
(ছাঃ) বললেন, ذِكْرُ اللهِ تَعَالَى ‘তা হ’ল
আল্লাহর যিকর’।[5]
(রাঃ) বলেন, রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন, أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ
وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيْكِكُمْ وَأَرْفَعِهَا فِىْ دَرَجَاتِكُمْ وَخَيْرٌ
لَكُمْ مِنْ إِنْفَاقِ الذَّهَبِ وَالْوَرِقِ وَخَيْرٌ لَكُمْ مِنْ أَنْ تَلْقَوْا
عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ‘আমি কি তোমাদের বলব না তোমাদের আমল সমূহের
মধ্যে কোনটি উত্তম, তোমাদের
মালিকের নিকট অধিক পবিত্র, তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য অধিক কার্যকর, এমনকি
সোনা-রূপা দান করার চেয়েও এবং তোমাদের এই আমল থেকেও উত্তম যে, তোমরা
শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তোমরা তাদের গলা কাটবে এবং তারা তোমাদের গলা
কাটবে (অর্থাৎ জিহাদ করবে)? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘অবশ্যই বলুন’। রাসূল
(ছাঃ) বললেন, ذِكْرُ اللهِ تَعَالَى ‘তা হ’ল
আল্লাহর যিকর’।[5]
অন্যত্র
এসেছে এক বেদুঈন নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ؟ ‘সর্বাপেক্ষা উত্তম ব্যক্তি কে?’ রাসূল (ছাঃ)
বলেন, طُوْبَى لِمَنْ طَالَ عُمْرُهُ وَحَسُنَ عَمَلُهُ ‘সুসংবাদ সেই ব্যক্তির জন্য, যে ব্যক্তি
দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং সুন্দর আমল করেছে’। অতঃপর
লোকটি বলল, أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ ‘কোন আমল সবচেয়ে ভাল’?
রাসূল (ছাঃ) বলেন, أَنْ تَفَارَقَ الدُّنْيَا وَلِسَانُكَ رَطْبٌ مِنْ
ذِكْرِ اللهِ ‘তুমি
দুনিয়া থেকে বিদায় নেবে এমতাবস্থায় যে, তোমার জিহবা আল্লাহর যিকরে সজীব থাকবে’।[6]
এসেছে এক বেদুঈন নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ؟ ‘সর্বাপেক্ষা উত্তম ব্যক্তি কে?’ রাসূল (ছাঃ)
বলেন, طُوْبَى لِمَنْ طَالَ عُمْرُهُ وَحَسُنَ عَمَلُهُ ‘সুসংবাদ সেই ব্যক্তির জন্য, যে ব্যক্তি
দীর্ঘ জীবন পেয়েছে এবং সুন্দর আমল করেছে’। অতঃপর
লোকটি বলল, أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ ‘কোন আমল সবচেয়ে ভাল’?
রাসূল (ছাঃ) বলেন, أَنْ تَفَارَقَ الدُّنْيَا وَلِسَانُكَ رَطْبٌ مِنْ
ذِكْرِ اللهِ ‘তুমি
দুনিয়া থেকে বিদায় নেবে এমতাবস্থায় যে, তোমার জিহবা আল্লাহর যিকরে সজীব থাকবে’।[6]
হাদীছে
বলা হয়েছে, যে
ব্যক্তি দীর্ঘ জীবন পেয়ে জীবনকে ভাল কাজে ব্যয় করেছে সে ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম। তেমনি
মৃত্যুর সময় মুখে আল্লাহর যিকর থাকবে এই আমল সবচেয়ে ভাল। অন্য
হাদীছে এসেছে, ‘রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الْجَنَّةِ فَارْتَعُوا ‘যখন তোমরা জান্নাতের বাগানে পৌঁছবে তখন উহার
ফল খাবে। ছাহাবীগণ বলেন, জান্নাতের বাগান কি? রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, সেটা
হ’ল- حِلَقُ الذِّكْرِ‘যিকরের
মজলিস’।[7]
বলা হয়েছে, যে
ব্যক্তি দীর্ঘ জীবন পেয়ে জীবনকে ভাল কাজে ব্যয় করেছে সে ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম। তেমনি
মৃত্যুর সময় মুখে আল্লাহর যিকর থাকবে এই আমল সবচেয়ে ভাল। অন্য
হাদীছে এসেছে, ‘রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الْجَنَّةِ فَارْتَعُوا ‘যখন তোমরা জান্নাতের বাগানে পৌঁছবে তখন উহার
ফল খাবে। ছাহাবীগণ বলেন, জান্নাতের বাগান কি? রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, সেটা
হ’ল- حِلَقُ الذِّكْرِ‘যিকরের
মজলিস’।[7]
ছাওবান
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ)-এর জনৈক ছাহাবী বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমরা জানতে পারতাম কোন
সম্পদ উত্তম, তবে
তা জমা করতাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَفْضَلُهُ لِسَانٌ ذَاكِرٌ وَقَلْبٌ شَاكِرٌ وَزَوْجَةٌ
مُؤْمِنَةٌ تُعِينُهُ عَلَى إِيْمَانِهِ ‘তোমাদের কারো শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো যিকরকারী
জিহবা, অল্পে
তুষ্ট অন্তর এবং ঈমানদার স্ত্রী যে তার স্বামীকে দ্বীনের ব্যাপারে সহযোগিতা করে’।[8]
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ)-এর জনৈক ছাহাবী বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমরা জানতে পারতাম কোন
সম্পদ উত্তম, তবে
তা জমা করতাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَفْضَلُهُ لِسَانٌ ذَاكِرٌ وَقَلْبٌ شَاكِرٌ وَزَوْجَةٌ
مُؤْمِنَةٌ تُعِينُهُ عَلَى إِيْمَانِهِ ‘তোমাদের কারো শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো যিকরকারী
জিহবা, অল্পে
তুষ্ট অন্তর এবং ঈমানদার স্ত্রী যে তার স্বামীকে দ্বীনের ব্যাপারে সহযোগিতা করে’।[8]
হাদীছে
কুদসীতে আল্লাহ বলেন, أَنَا مَعَ عَبْدِى حَيْثُمَا ذَكَرَنِىْ
وَتَحَرَّكَتْ بِىْ شَفَتَاهُ ‘আমি
আমার বান্দার নিকট থাকি যখন সে আমার যিকর করে এবং আমার জন্য তার ঠোঁটদ্বয় নড়ে ওঠে’।[9]
কুদসীতে আল্লাহ বলেন, أَنَا مَعَ عَبْدِى حَيْثُمَا ذَكَرَنِىْ
وَتَحَرَّكَتْ بِىْ شَفَتَاهُ ‘আমি
আমার বান্দার নিকট থাকি যখন সে আমার যিকর করে এবং আমার জন্য তার ঠোঁটদ্বয় নড়ে ওঠে’।[9]
উপরোক্ত
আলোচনা থেকে আমরা যিকরের নানাবিধ ফযীলতের কথা জানতে পারলাম। আমরা
যারা পরকালে নিজের বাসস্থানকে উন্নত দেখতে চাই তাদের উচিত হবে অধিক পরিমাণে
আল্লাহর যিকর করা এবং অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
আলোচনা থেকে আমরা যিকরের নানাবিধ ফযীলতের কথা জানতে পারলাম। আমরা
যারা পরকালে নিজের বাসস্থানকে উন্নত দেখতে চাই তাদের উচিত হবে অধিক পরিমাণে
আল্লাহর যিকর করা এবং অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
যিকরের প্রকারভেদ :
যিকর
দুই ধরনের। (১) বিশেষ (২) সাধারণ। বিশেষ
ধরনের যে যিকর রয়েছে সেগুলো সময় সাপেক্ষে আমল করতে হয়। যেমন-
ঘুমানোর দো‘আ, ঘুম থেকে
জাগার দো‘আ, ভয় পেলে দো‘আ, চিন্তা দূর করার দো‘আ, বিপদের দো‘আ, ঋণ মুক্তির
দো‘আ ইত্যাদি। সময়
ও কাজ বিবেচনায় এগুলো পাঠ করতে হয়। আর এমন কিছু যিকর রয়েছে যেগুলো
শরীর পবিত্র থাকুক চাই না থাকুক সব সময় পাঠ করা যায়। যতক্ষণ
স্মরণে থাকে ততক্ষণ আমাদের এসব যিকর করা উচিত।
দুই ধরনের। (১) বিশেষ (২) সাধারণ। বিশেষ
ধরনের যে যিকর রয়েছে সেগুলো সময় সাপেক্ষে আমল করতে হয়। যেমন-
ঘুমানোর দো‘আ, ঘুম থেকে
জাগার দো‘আ, ভয় পেলে দো‘আ, চিন্তা দূর করার দো‘আ, বিপদের দো‘আ, ঋণ মুক্তির
দো‘আ ইত্যাদি। সময়
ও কাজ বিবেচনায় এগুলো পাঠ করতে হয়। আর এমন কিছু যিকর রয়েছে যেগুলো
শরীর পবিত্র থাকুক চাই না থাকুক সব সময় পাঠ করা যায়। যতক্ষণ
স্মরণে থাকে ততক্ষণ আমাদের এসব যিকর করা উচিত।
সবসময় আমল করা যায় এমন কিছু যিকর নিম্নরূপ :
রাসূল
(ছাঃ) বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ বাক্য চারটি।سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ অর্থাৎ ‘আল্লাহ পবিত্র, আল্লাহর জন্য প্রশংসা, আল্লাহ
ব্যতীত কোন ইলাহ নেই ও আল্লাহ সর্বাপেক্ষা মহান’। এই
বাক্যগুলোর যেকোন একটি দিয়ে শুরু করা যায়, তাতে কোন সমস্যা নেই’।[10]
(ছাঃ) বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ বাক্য চারটি।سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ অর্থাৎ ‘আল্লাহ পবিত্র, আল্লাহর জন্য প্রশংসা, আল্লাহ
ব্যতীত কোন ইলাহ নেই ও আল্লাহ সর্বাপেক্ষা মহান’। এই
বাক্যগুলোর যেকোন একটি দিয়ে শুরু করা যায়, তাতে কোন সমস্যা নেই’।[10]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ
الشَّمْسُ সুবহা-নাল্লাহ, ওয়াল
হাম্দুলিল্লা-হি, ওয়া
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লাহু আকবার’ বলা আমার
নিকট পৃথিবী অপেক্ষা অধিক প্রিয়’।[11]
(ছাঃ) বলেন, سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ
الشَّمْسُ সুবহা-নাল্লাহ, ওয়াল
হাম্দুলিল্লা-হি, ওয়া
লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লাহু আকবার’ বলা আমার
নিকট পৃথিবী অপেক্ষা অধিক প্রিয়’।[11]
অন্যত্র
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ. فِىْ
يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ حُطَّتْ خَطَايَاهُ، وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ
الْبَحْرِ ‘যে
ব্যক্তি দৈনিক একশত বার বলবে, ‘সুবহা-নাল্লাহি
ওয়া বিহামদিহি’ (আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাঁর প্রশংসার
সাথে) তার গুনাহ সমূহ ক্ষমা করা হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়’।[12]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ. فِىْ
يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ حُطَّتْ خَطَايَاهُ، وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ
الْبَحْرِ ‘যে
ব্যক্তি দৈনিক একশত বার বলবে, ‘সুবহা-নাল্লাহি
ওয়া বিহামদিহি’ (আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাঁর প্রশংসার
সাথে) তার গুনাহ সমূহ ক্ষমা করা হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়’।[12]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন,كَلِمَتَانِ خَفِيْفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ،
ثَقِيْلَتَانِ فِى الْمِيْزَانِ، حَبِيْبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ ‘দু’টি
বাক্য যা বলতে সহজ, মীযানের
পাল্লায় ভারী এবং আল্লাহর নিকট প্রিয়, তা হচ্ছে سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ ‘সুবহা-নাল্লাহি, ওয়া
বিহাম্দিহি, ওয়া
সুবহা-নাল্লাহিল আযীম’ (প্রশংসার
সাথে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি, পবিত্রতা বর্ণনা করি আল্লাহর, যিনি মহান)।[13]
(ছাঃ) বলেন,كَلِمَتَانِ خَفِيْفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ،
ثَقِيْلَتَانِ فِى الْمِيْزَانِ، حَبِيْبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ ‘দু’টি
বাক্য যা বলতে সহজ, মীযানের
পাল্লায় ভারী এবং আল্লাহর নিকট প্রিয়, তা হচ্ছে سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ ‘সুবহা-নাল্লাহি, ওয়া
বিহাম্দিহি, ওয়া
সুবহা-নাল্লাহিল আযীম’ (প্রশংসার
সাথে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি, পবিত্রতা বর্ণনা করি আল্লাহর, যিনি মহান)।[13]
সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, আমরা একদিন
রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে ছিলাম। তিনি আমাদেরকে বলেন, তোমাদের কেউ
কি প্রতিদিন এক হাযার নেকী উপার্জন করতে সক্ষম? এক ছাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, কেমন করে
আমাদের কেউ (দৈনিক) এক হাযার নেকী উপার্জন করতে পারবে? রাসূল (ছাঃ)
বললেন, সে
প্রতিদিন একশত বার ‘সুবহানাল্লাহ’
বলবে। এতে তার জন্য (একবারের জন্য দশ নেকী) এক
হাযার নেকী লেখা হবে এবং এক হাযার গুনাহ মাফ করা হবে’।[14]
রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে ছিলাম। তিনি আমাদেরকে বলেন, তোমাদের কেউ
কি প্রতিদিন এক হাযার নেকী উপার্জন করতে সক্ষম? এক ছাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, কেমন করে
আমাদের কেউ (দৈনিক) এক হাযার নেকী উপার্জন করতে পারবে? রাসূল (ছাঃ)
বললেন, সে
প্রতিদিন একশত বার ‘সুবহানাল্লাহ’
বলবে। এতে তার জন্য (একবারের জন্য দশ নেকী) এক
হাযার নেকী লেখা হবে এবং এক হাযার গুনাহ মাফ করা হবে’।[14]
উম্মুল
মুমিনীন জুওয়ায়রিয়া (রাঃ) বলেন, একদিন খুব ভোরে নবী করীম (ছাঃ) ফজরের ছালাত
আদায় করে তাঁর নিকট থেকে বের হ’লেন, তখন
জুওয়ায়রিয়া (রাঃ) স্বীয় ছালাতের জায়গায় বসা ছিলেন। অতঃপর
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ফিরে আসলেন তখন সূর্য উপরে উঠল আর তখনও জুওয়ায়রিয়া (রাঃ) সেখানে
বসে আছেন। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি কি সে
অবস্থায় আছ যে অবস্থায় আমি তোমাকে ছেড়ে গেছি? তিনি বললেন, হ্যাঁ! রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমার পরে
আমি মাত্র চারটি বাক্য তিনবার বলেছি। তুমি এ পর্যন্ত যা বলেছ এগুলোকে
যদি আমার বাক্যগুলোর সাথে ওযন দেয়া হয়, তাহ’লে
এ বাক্যগুলোর ওযন বেশী হবে। তা হ’ল سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ
وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ‘প্রশংসার
সাথে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি, তাঁর সৃষ্টির সংখ্যা পরিমাণ, তাঁর সন্তোষ
পরিমাণ, তাঁর
আরশের ওযন পরিমাণ ও তাঁর বাক্য সমূহের সংখ্যা পরিমাণ’।[15]
মুমিনীন জুওয়ায়রিয়া (রাঃ) বলেন, একদিন খুব ভোরে নবী করীম (ছাঃ) ফজরের ছালাত
আদায় করে তাঁর নিকট থেকে বের হ’লেন, তখন
জুওয়ায়রিয়া (রাঃ) স্বীয় ছালাতের জায়গায় বসা ছিলেন। অতঃপর
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ফিরে আসলেন তখন সূর্য উপরে উঠল আর তখনও জুওয়ায়রিয়া (রাঃ) সেখানে
বসে আছেন। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি কি সে
অবস্থায় আছ যে অবস্থায় আমি তোমাকে ছেড়ে গেছি? তিনি বললেন, হ্যাঁ! রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমার পরে
আমি মাত্র চারটি বাক্য তিনবার বলেছি। তুমি এ পর্যন্ত যা বলেছ এগুলোকে
যদি আমার বাক্যগুলোর সাথে ওযন দেয়া হয়, তাহ’লে
এ বাক্যগুলোর ওযন বেশী হবে। তা হ’ল سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ
وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ‘প্রশংসার
সাথে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি, তাঁর সৃষ্টির সংখ্যা পরিমাণ, তাঁর সন্তোষ
পরিমাণ, তাঁর
আরশের ওযন পরিমাণ ও তাঁর বাক্য সমূহের সংখ্যা পরিমাণ’।[15]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) বলেন, যে
ব্যক্তি দৈনিক একশত বার বলবে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ
الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই, তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা এবং তিনি সমস্ত বিষয়ের উপর
ক্ষমতাবান’, ঐ ব্যক্তির দশটি গোলাম আযাদ করার সমান ছওয়াব
হবে, তার
জন্য একশত নেকী লেখা হবে,
একশত গুনাহ ক্ষমা করা হবে। এটি তার ঐ দিনের জন্য শয়তান
থেকে রক্ষাকবচ হবে যতক্ষণ না সন্ধ্যা হয়। আর সে যা
করেছে তার চেয়ে উত্তম আর কেউ করতে পারবে না ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যে তার চেয়ে
বেশী এ আমল করবে’।[16]
(ছাঃ) বলেন, যে
ব্যক্তি দৈনিক একশত বার বলবে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ
الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই, তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা এবং তিনি সমস্ত বিষয়ের উপর
ক্ষমতাবান’, ঐ ব্যক্তির দশটি গোলাম আযাদ করার সমান ছওয়াব
হবে, তার
জন্য একশত নেকী লেখা হবে,
একশত গুনাহ ক্ষমা করা হবে। এটি তার ঐ দিনের জন্য শয়তান
থেকে রক্ষাকবচ হবে যতক্ষণ না সন্ধ্যা হয়। আর সে যা
করেছে তার চেয়ে উত্তম আর কেউ করতে পারবে না ঐ ব্যক্তি ব্যতীত, যে তার চেয়ে
বেশী এ আমল করবে’।[16]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) আবূ মূসা আশ‘আরী
(রাঃ)-কে বলেন, আমি
কি তোমাকে জান্নাতের ভান্ডার সমূহের একটি ভান্ডারের সন্ধান দিব না? তিনি বলেন, নিশ্চয়ই!
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
তা হ’ল, لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ ‘আল্লাহ ব্যতীত আমার কোন উপায় নেই, কোন শক্তি
নেই’।[17]
(ছাঃ) আবূ মূসা আশ‘আরী
(রাঃ)-কে বলেন, আমি
কি তোমাকে জান্নাতের ভান্ডার সমূহের একটি ভান্ডারের সন্ধান দিব না? তিনি বলেন, নিশ্চয়ই!
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
তা হ’ল, لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ ‘আল্লাহ ব্যতীত আমার কোন উপায় নেই, কোন শক্তি
নেই’।[17]
রাসূল
(ছাঃ) বলেন,مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ وَبِحَمْدِهِ
غُرِسَتْ لَهُ نَخْلَةٌ فِى الْجَنَّةِ ‘যে
ব্যক্তি বলবে ‘সুবহানাল্লাহিল
আযীমি ওয়া বিহামদিহি’ তার জন্য
জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হবে।[18] তিনি আরো
বলেন,أَفْضَلُ الذِّكْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَفْضَلُ
الدُّعَاءِ الْحَمْدُ لِلَّهِ ‘সর্বশ্রেষ্ঠ
যিকর হল ‘লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ’ আর সর্বশ্রেষ্ঠ দো‘আ হল ‘আল
হামদুলিল্লাহ’।[19]
(ছাঃ) বলেন,مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ وَبِحَمْدِهِ
غُرِسَتْ لَهُ نَخْلَةٌ فِى الْجَنَّةِ ‘যে
ব্যক্তি বলবে ‘সুবহানাল্লাহিল
আযীমি ওয়া বিহামদিহি’ তার জন্য
জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হবে।[18] তিনি আরো
বলেন,أَفْضَلُ الذِّكْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَفْضَلُ
الدُّعَاءِ الْحَمْدُ لِلَّهِ ‘সর্বশ্রেষ্ঠ
যিকর হল ‘লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ’ আর সর্বশ্রেষ্ঠ দো‘আ হল ‘আল
হামদুলিল্লাহ’।[19]
রাসূল
(ছাঃ) বলেন, মি‘রাজের রাতে ইবরাহীম (আঃ)-এর সাথে আমার দেখা হ’ল। তিনি বললেন, হে
মুহাম্মাদ! আপনি আপনার উম্মতকে আমার সালাম বলবেন এবং তাদেরকে সংবাদ দিবেন যে, সুগন্ধ মাটি
এবং সুমিষ্ট পানি বিশিষ্ট স্থান। এতে কোন গাছপালা নেই। উক্ত
গাছ হ’ল سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ।[20]
(ছাঃ) বলেন, মি‘রাজের রাতে ইবরাহীম (আঃ)-এর সাথে আমার দেখা হ’ল। তিনি বললেন, হে
মুহাম্মাদ! আপনি আপনার উম্মতকে আমার সালাম বলবেন এবং তাদেরকে সংবাদ দিবেন যে, সুগন্ধ মাটি
এবং সুমিষ্ট পানি বিশিষ্ট স্থান। এতে কোন গাছপালা নেই। উক্ত
গাছ হ’ল سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ।[20]
আসুন!
উক্ত যিকর পাঠ করার মাধ্যমেই আমরা আমাদের চিরস্থায়ী বাসস্থানটিকে নিজ হাতে সাজিয়ে
নেই।
উক্ত যিকর পাঠ করার মাধ্যমেই আমরা আমাদের চিরস্থায়ী বাসস্থানটিকে নিজ হাতে সাজিয়ে
নেই।
অন্য
হাদীছে এসেছে, একদিন
আরবপল্লীর জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে বলল, আমাকে এমন একটি বাক্য শিখিয়ে দিন, যা আমি পড়তে
পারি। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তুমি বল لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ
اللهُ أَكْبَرُ كَبِيْرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ
الْعَالَمِيْنَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ الْعَزِيْزِ الْحَكِيْمِ লোকটি
বলল, এটি
তো আমার প্রতিপালকের জন্য। আমার জন্য কি? রাসূল (ছাঃ)
বললেন, তুমি
বল- قُلِ اللَّهُمَّ
اغْفِرْلِىْ وَارْحَمْنِىْ وَاهْدِنِىْ وَارْزُقْنِىْ ‘হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি
দয়া কর, আমাকে
পথ প্রদর্শন কর, রিযিক
দাও এবং শান্তিতে রাখ’।[21]
হাদীছে এসেছে, একদিন
আরবপল্লীর জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে বলল, আমাকে এমন একটি বাক্য শিখিয়ে দিন, যা আমি পড়তে
পারি। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তুমি বল لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ
اللهُ أَكْبَرُ كَبِيْرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ
الْعَالَمِيْنَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ الْعَزِيْزِ الْحَكِيْمِ লোকটি
বলল, এটি
তো আমার প্রতিপালকের জন্য। আমার জন্য কি? রাসূল (ছাঃ)
বললেন, তুমি
বল- قُلِ اللَّهُمَّ
اغْفِرْلِىْ وَارْحَمْنِىْ وَاهْدِنِىْ وَارْزُقْنِىْ ‘হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি
দয়া কর, আমাকে
পথ প্রদর্শন কর, রিযিক
দাও এবং শান্তিতে রাখ’।[21]
যখন
কোন লোক মুসলমান হ’ত, তখন রাসূল
(ছাঃ) সর্বপ্রথম তাকে ছালাত শিক্ষা দিতেন। অতঃপর তাকে
উপরোক্ত বাক্যসমূহ (আল্লাহুম্মাগ ফিরলী) দ্বারা দো‘আ করতে
বলতেন।[22] এরূপ
বহু দো‘আ পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছে রয়েছে।
কোন লোক মুসলমান হ’ত, তখন রাসূল
(ছাঃ) সর্বপ্রথম তাকে ছালাত শিক্ষা দিতেন। অতঃপর তাকে
উপরোক্ত বাক্যসমূহ (আল্লাহুম্মাগ ফিরলী) দ্বারা দো‘আ করতে
বলতেন।[22] এরূপ
বহু দো‘আ পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছে রয়েছে।
যিকির না করার পরিণাম :
কুরআন
ও হাদীছের বহু স্থানে বিভিন্নভাবে যিকর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আল্লাহর
যিকর করার পুরস্কার যেমন ঘোষিত হয়েছে তেমনি না করারও পরিণাম বর্ণনা করা হয়েছে। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ قَعَدَ مَقْعَدًا لَمْ يَذْكُرِ اللهَ فِيْهِ
كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللهِ تِرَةً وَمَنِ اضْطَجَعَ مَضْجَعًا لاَ يَذْكُرُ
اللهَ فِيهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللهِ تِرَةً‘যে
ব্যক্তি কোন স্থানে বসেছে আর সেখানে আল্লাহর স্মরণ করেনি, আল্লাহর
হুকুম অনুযায়ী সে বসা তার জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এমনিভাবে
যে ব্যক্তি কোন শোয়ার স্থানে শুয়েছে অথচ সেখানে আল্লাহকে স্মরণ করেনি, আল্লাহর
হুকুম অনুযায়ী সেই শোয়া তার জন্য ক্ষতি বা আফসোসের কারণ হবে’।[23]
ও হাদীছের বহু স্থানে বিভিন্নভাবে যিকর করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আল্লাহর
যিকর করার পুরস্কার যেমন ঘোষিত হয়েছে তেমনি না করারও পরিণাম বর্ণনা করা হয়েছে। রাসূল
(ছাঃ) বলেন, مَنْ قَعَدَ مَقْعَدًا لَمْ يَذْكُرِ اللهَ فِيْهِ
كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللهِ تِرَةً وَمَنِ اضْطَجَعَ مَضْجَعًا لاَ يَذْكُرُ
اللهَ فِيهِ كَانَتْ عَلَيْهِ مِنَ اللهِ تِرَةً‘যে
ব্যক্তি কোন স্থানে বসেছে আর সেখানে আল্লাহর স্মরণ করেনি, আল্লাহর
হুকুম অনুযায়ী সে বসা তার জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এমনিভাবে
যে ব্যক্তি কোন শোয়ার স্থানে শুয়েছে অথচ সেখানে আল্লাহকে স্মরণ করেনি, আল্লাহর
হুকুম অনুযায়ী সেই শোয়া তার জন্য ক্ষতি বা আফসোসের কারণ হবে’।[23]
সুতরাং
আমরা যে স্থানে উপবেশন করি না কেন তা হবে আল্লাহর যিকরপূর্ণ। সেখানে
সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ
ইত্যাদি তাসবীহ পড়তে হবে। অথবা কোন ভাল কথা বলতে হবে
কিংবা বিসমিল্লাহ বলে সে স্থানে বসতে হবে। অনুরূপভাবে
শোয়া যদি ঘুমের জন্য হয় তবে ঘুমের দো‘আ
পড়তে হবে। আর যদি বিশ্রামের জন্য হয় তবে বিসমিল্লাহ বলে
শুতে হবে। যাবতীয় ভাল কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু
করতে হবে।
আমরা যে স্থানে উপবেশন করি না কেন তা হবে আল্লাহর যিকরপূর্ণ। সেখানে
সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ
ইত্যাদি তাসবীহ পড়তে হবে। অথবা কোন ভাল কথা বলতে হবে
কিংবা বিসমিল্লাহ বলে সে স্থানে বসতে হবে। অনুরূপভাবে
শোয়া যদি ঘুমের জন্য হয় তবে ঘুমের দো‘আ
পড়তে হবে। আর যদি বিশ্রামের জন্য হয় তবে বিসমিল্লাহ বলে
শুতে হবে। যাবতীয় ভাল কাজ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু
করতে হবে।
অন্যত্র
রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا مِنْ قَوْمٍ يَقُوْمُوْنَ مِنْ مَجْلِسٍ لاَ
يَذْكُرُوْنَ اللهَ فِيْهِ إِلاَّ قَامُوْا عَنْ مِثْلِ جِيْفَةِ حِمَارٍ وَكَانَ
لَهُمْ حَسْرَةً ‘যে
কোন দল আল্লাহর স্মরণ না করে কোন মজলিস হ’তে
উঠল, তারা
নিশ্চয়ই গাধার মরা খেয়ে উঠল। সে মজলিস তার আক্ষেপের কারণ হবে’।[24]
রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا مِنْ قَوْمٍ يَقُوْمُوْنَ مِنْ مَجْلِسٍ لاَ
يَذْكُرُوْنَ اللهَ فِيْهِ إِلاَّ قَامُوْا عَنْ مِثْلِ جِيْفَةِ حِمَارٍ وَكَانَ
لَهُمْ حَسْرَةً ‘যে
কোন দল আল্লাহর স্মরণ না করে কোন মজলিস হ’তে
উঠল, তারা
নিশ্চয়ই গাধার মরা খেয়ে উঠল। সে মজলিস তার আক্ষেপের কারণ হবে’।[24]
রাসূল
(ছাঃ) আরো বলেন, مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللهَ
فِيْهِ وَلَمْ يُصَلُّوْا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلاَّ كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً
فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ ‘যখন কোন একদল লোক কোন মজলিসে বসল অথচ
আল্লাহকে স্মরণ করল না এবং নবীর প্রতিও দরূদ পড়ল না নিশ্চয়ই সে বৈঠক তার জন্য
ক্ষতির কারণ হবে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের শাস্তি দিতে পারেন
অথবা ইচ্ছা করলে ক্ষমাও করতে পারেন’।[25]
(ছাঃ) আরো বলেন, مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللهَ
فِيْهِ وَلَمْ يُصَلُّوْا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلاَّ كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً
فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ ‘যখন কোন একদল লোক কোন মজলিসে বসল অথচ
আল্লাহকে স্মরণ করল না এবং নবীর প্রতিও দরূদ পড়ল না নিশ্চয়ই সে বৈঠক তার জন্য
ক্ষতির কারণ হবে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের শাস্তি দিতে পারেন
অথবা ইচ্ছা করলে ক্ষমাও করতে পারেন’।[25]
উল্লিখিত
হাদীছগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, কোন মজলিসে বসে যদি যিকর না করা হয় তবে
সফলকাম হওয়া যাবে না। সফলতা অর্জন করতে হ’লে পারিবারিক, সামাজিক বা ধর্মীয় যে কোন মজলিসই হৌক না কেন
সেখানে অবশ্যই আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে।
হাদীছগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, কোন মজলিসে বসে যদি যিকর না করা হয় তবে
সফলকাম হওয়া যাবে না। সফলতা অর্জন করতে হ’লে পারিবারিক, সামাজিক বা ধর্মীয় যে কোন মজলিসই হৌক না কেন
সেখানে অবশ্যই আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে।
যিকর করার পদ্ধতি :
শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে
সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর করা যায়। আল্লাহ বলেন,الَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ قِيَامًا وَقُعُوْدًا وَعَلَى
جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّنَا مَا
خَلَقْتَ هَذَا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর
সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করে ও বলে, ‘হে আমাদের
প্রতিপালক! তুমি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করনি, তুমি পবিত্র। আমাদেরকে
জাহান্নামের শাস্তি হ’তে রক্ষা কর’
(আলে ইমরান ১৯১)।
সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর করা যায়। আল্লাহ বলেন,الَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ قِيَامًا وَقُعُوْدًا وَعَلَى
جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِيْ خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّنَا مَا
خَلَقْتَ هَذَا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর
সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করে ও বলে, ‘হে আমাদের
প্রতিপালক! তুমি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করনি, তুমি পবিত্র। আমাদেরকে
জাহান্নামের শাস্তি হ’তে রক্ষা কর’
(আলে ইমরান ১৯১)।
কারো
কারো ধারণা অপবিত্র শরীরে যিকির করা যায় না। তাদের ধারণা
ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর
করতেন। শুধুমাত্র পেশাব-পায়খানারত অবস্থায় আল্লাহর
যিকর করা যাবে না।[26] এছাড়া
সর্বাবস্থায় মুমিনের জন্য তাসবীহ পাঠ করা উচিত। যেমন
মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, كَانَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ اللهَ
عَلَى كُلِّ أَحْيَانِهِ ‘রাসূল
(ছাঃ) সর্বদা আল্লাহর যিকর করতেন’।[27]
কারো ধারণা অপবিত্র শরীরে যিকির করা যায় না। তাদের ধারণা
ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর
করতেন। শুধুমাত্র পেশাব-পায়খানারত অবস্থায় আল্লাহর
যিকর করা যাবে না।[26] এছাড়া
সর্বাবস্থায় মুমিনের জন্য তাসবীহ পাঠ করা উচিত। যেমন
মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, كَانَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ اللهَ
عَلَى كُلِّ أَحْيَانِهِ ‘রাসূল
(ছাঃ) সর্বদা আল্লাহর যিকর করতেন’।[27]
যিকরের
শব্দগুলো নীরবে ও ভীতি সহকারে পড়তে হবে। আল্লাহ বলেন, وَاذْكُرْ رَبَّكَ فِيْ نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيْفَةً وَدُوْنَ
الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ وَلَا تَكُنْ مِنَ
الْغَافِلِيْنَ ‘তুমি
তোমার প্রতিপালককে মনে মনে, ভীতি সহকারে, চুপে চুপে, নিম্নস্বরে সকাল-সন্ধ্যায় স্মরণ কর। আর
তুমি গাফেল হয়ো না’ (আ‘রাফ ২০৫)। আবূ
মূসা আশ‘আরী (রাঃ)
বলেন, আমরা
এক সফরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। লোকেরা
উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর বলছিল। রাসূল (ছাঃ) বললেন, হে লোক সকল!
তোমরা নিজেদের প্রতি রহম কর। তোমরা বধির কিংবা অনুপস্থিতকে
ডাকছ না। তোমরা যাকে ডাকছ তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্ববিষয়ে
অবগত। তোমরা যাকে ডাকছ তিনি তোমাদের সাথেই রয়েছেন। তিনি
তোমাদের বাহনের ঘাড় অপেক্ষা অধিক নিকটবর্তী। আবূ মূসা
(রাঃ) বলেন, আমি
তখন রাসূল (ছাঃ)-এর পিছনে চুপে চুপে বলছিলাম, ‘লা হাওলা
ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।[28] হাদীছ থেকে
বুঝা যায়, আল্লাহর
যিকির হবে নিম্নস্বরে। উচ্চৈঃস্বরে যিকরকারীদের যিকরকে
রাসূল (ছাঃ) পসন্দ করেন নি। তিনি তাদেরকে কোমল স্বরে যিকর
করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
শব্দগুলো নীরবে ও ভীতি সহকারে পড়তে হবে। আল্লাহ বলেন, وَاذْكُرْ رَبَّكَ فِيْ نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيْفَةً وَدُوْنَ
الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ وَلَا تَكُنْ مِنَ
الْغَافِلِيْنَ ‘তুমি
তোমার প্রতিপালককে মনে মনে, ভীতি সহকারে, চুপে চুপে, নিম্নস্বরে সকাল-সন্ধ্যায় স্মরণ কর। আর
তুমি গাফেল হয়ো না’ (আ‘রাফ ২০৫)। আবূ
মূসা আশ‘আরী (রাঃ)
বলেন, আমরা
এক সফরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। লোকেরা
উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর বলছিল। রাসূল (ছাঃ) বললেন, হে লোক সকল!
তোমরা নিজেদের প্রতি রহম কর। তোমরা বধির কিংবা অনুপস্থিতকে
ডাকছ না। তোমরা যাকে ডাকছ তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্ববিষয়ে
অবগত। তোমরা যাকে ডাকছ তিনি তোমাদের সাথেই রয়েছেন। তিনি
তোমাদের বাহনের ঘাড় অপেক্ষা অধিক নিকটবর্তী। আবূ মূসা
(রাঃ) বলেন, আমি
তখন রাসূল (ছাঃ)-এর পিছনে চুপে চুপে বলছিলাম, ‘লা হাওলা
ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।[28] হাদীছ থেকে
বুঝা যায়, আল্লাহর
যিকির হবে নিম্নস্বরে। উচ্চৈঃস্বরে যিকরকারীদের যিকরকে
রাসূল (ছাঃ) পসন্দ করেন নি। তিনি তাদেরকে কোমল স্বরে যিকর
করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
যে
সমস্ত যিকরের ক্ষেত্রে হাদীছে সংখ্যা উল্লেখ আছে যেমন- ৩ বার, ৭ বার, ৩৩/৩৪ বার, ১০০ বার
ইত্যাদি বলা হয়েছে এগুলো তাবসীহ দানা বা অন্য কিছুতে গণনা করা উচিত নয়। এগুলো
আঙ্গুলে গণনা করতে হবে। ইউসায়রা (রাঃ) বলেন, তিনি ছিলেন
মুহাজির নারী, একদিন
রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে বলেন, তোমাদের ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, সুবহানাল
মালিকিল কুদ্দুস’ পড়া উচিত। এগুলো
আঙ্গুলে গুনবে। কেননা ক্বিয়ামতের দিন এগুলোকে জিজ্ঞেস করা
হবে এবং বলার শক্তি প্রদান করা হবে।[29]
সমস্ত যিকরের ক্ষেত্রে হাদীছে সংখ্যা উল্লেখ আছে যেমন- ৩ বার, ৭ বার, ৩৩/৩৪ বার, ১০০ বার
ইত্যাদি বলা হয়েছে এগুলো তাবসীহ দানা বা অন্য কিছুতে গণনা করা উচিত নয়। এগুলো
আঙ্গুলে গণনা করতে হবে। ইউসায়রা (রাঃ) বলেন, তিনি ছিলেন
মুহাজির নারী, একদিন
রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে বলেন, তোমাদের ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, সুবহানাল
মালিকিল কুদ্দুস’ পড়া উচিত। এগুলো
আঙ্গুলে গুনবে। কেননা ক্বিয়ামতের দিন এগুলোকে জিজ্ঞেস করা
হবে এবং বলার শক্তি প্রদান করা হবে।[29]
উল্লেখ্য, যিকর হবে
শুধু আল্লাহর নামে। রাসূল (ছাঃ), তার ছাহাবী
বা অন্য কোন বুযুর্গের নামে যিকর করা শিরক। এজন্য ইয়া
নবী, ইয়া
রাসূল, ইয়া
আলী (আলী (রাঃ) উদ্দেশ্য করে) ইত্যাদি বলে যিকর করা যাবে না। অনুরূপভাবে
শুধু আল্লাহ, আল্লাহ, হুয়া, হু অথবা
একজন লা ইলাহা অপর পক্ষে কিছু লোক ইল্লাল্লাহ এভাবেও যিকর করা যাবে না। এ
পদ্ধতির যিকর বিদ‘আতের
অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে উচ্চৈঃস্বরে চিল্লিয়েও যিকর করা
যাবে না। মদীনার মসজিদে একদল মুছল্লীকে গোলাকার হয়ে
বসে হাতে রাখা কংকর সমূহের মাধ্যমে গণনা করে ১০০ বার ‘আল্লা-হু আকবার’,
১০০ বার ‘লা ইলাহা
ইল্লাল্লা-হ’ ও ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’
একজন বক্তার সাথে পাঠ করার দৃশ্য দেখে জলীলুল ক্বদর ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু
মাস‘উদ (রাঃ) বলেছিলেন, وَيْحَكُمْ يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ مَا أَسْرَعَ هَلَكَتَكُمْ ‘নিপাত যাও হে মুহাম্মাদের উম্মতগণ! কত দ্রুত
তোমাদের ধ্বংস
এসে গেল? এর
জবাবে উক্ত যিকরে উপস্থিত মুছল্লীরা বলল, وَاللهِ يَا
أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَا أَرَدْنَا إِلاَّ الْخَيْرَ ‘আল্লাহর কসম হে আবূআব্দুর রহমান! এর দ্বারা
আমরা নেকী ব্যতীত অন্য কিছু আশা করিনি। উত্তরে ইবনু
মাস‘উদ বললেন, كَمْ مِنْ مُرِيْدٍ لِلْخَيْرِ لَنْ يُصِيْبَهُ ‘বহু নেকীর প্রত্যাশী লোক আছে, যারা তা পায়
না। কেননা রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে হাদীছ শুনিয়েছেন أَنَّ قَوْماً يَقْرَءُوْنَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ
تَرَاقِيَهُمْ ‘একদল
লোক রয়েছে, যারা
কুরআন পাঠ করে। কিন্তু তা কন্ঠনালী অতিক্রম করে না। আমর
ইবনু সালামাহ বলেন, উক্ত
হালকবায়ে যিকরের অধিকাংশ লোককে আমরা দেখেছি, পরবর্তীতে তারা খারেজীদের দলভুক্ত হয়ে আমাদের
বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেছে’।[30] অতএব বিদ‘আতী যিকর হ’তে
বেঁচে থাক আবশ্যক।
শুধু আল্লাহর নামে। রাসূল (ছাঃ), তার ছাহাবী
বা অন্য কোন বুযুর্গের নামে যিকর করা শিরক। এজন্য ইয়া
নবী, ইয়া
রাসূল, ইয়া
আলী (আলী (রাঃ) উদ্দেশ্য করে) ইত্যাদি বলে যিকর করা যাবে না। অনুরূপভাবে
শুধু আল্লাহ, আল্লাহ, হুয়া, হু অথবা
একজন লা ইলাহা অপর পক্ষে কিছু লোক ইল্লাল্লাহ এভাবেও যিকর করা যাবে না। এ
পদ্ধতির যিকর বিদ‘আতের
অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে উচ্চৈঃস্বরে চিল্লিয়েও যিকর করা
যাবে না। মদীনার মসজিদে একদল মুছল্লীকে গোলাকার হয়ে
বসে হাতে রাখা কংকর সমূহের মাধ্যমে গণনা করে ১০০ বার ‘আল্লা-হু আকবার’,
১০০ বার ‘লা ইলাহা
ইল্লাল্লা-হ’ ও ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’
একজন বক্তার সাথে পাঠ করার দৃশ্য দেখে জলীলুল ক্বদর ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু
মাস‘উদ (রাঃ) বলেছিলেন, وَيْحَكُمْ يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ مَا أَسْرَعَ هَلَكَتَكُمْ ‘নিপাত যাও হে মুহাম্মাদের উম্মতগণ! কত দ্রুত
তোমাদের ধ্বংস
এসে গেল? এর
জবাবে উক্ত যিকরে উপস্থিত মুছল্লীরা বলল, وَاللهِ يَا
أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ مَا أَرَدْنَا إِلاَّ الْخَيْرَ ‘আল্লাহর কসম হে আবূআব্দুর রহমান! এর দ্বারা
আমরা নেকী ব্যতীত অন্য কিছু আশা করিনি। উত্তরে ইবনু
মাস‘উদ বললেন, كَمْ مِنْ مُرِيْدٍ لِلْخَيْرِ لَنْ يُصِيْبَهُ ‘বহু নেকীর প্রত্যাশী লোক আছে, যারা তা পায়
না। কেননা রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে হাদীছ শুনিয়েছেন أَنَّ قَوْماً يَقْرَءُوْنَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ
تَرَاقِيَهُمْ ‘একদল
লোক রয়েছে, যারা
কুরআন পাঠ করে। কিন্তু তা কন্ঠনালী অতিক্রম করে না। আমর
ইবনু সালামাহ বলেন, উক্ত
হালকবায়ে যিকরের অধিকাংশ লোককে আমরা দেখেছি, পরবর্তীতে তারা খারেজীদের দলভুক্ত হয়ে আমাদের
বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেছে’।[30] অতএব বিদ‘আতী যিকর হ’তে
বেঁচে থাক আবশ্যক।
উপসংহার :
যিকরকে চাকুরীজীবীর কল্যাণ ফান্ডের সাথে তুলনা করা
যায়। যেখানে অল্প
অল্প সম্পদ জমা হয়ে বিশাল পরিমাণ হয়ে যায়। যিকরও মুমিনের পরকালীন ডিপোজিট। চলতে ফিরতে যিকর করলে একদিকে যেমন বাড়তি
সময়ের প্রয়োজন হয় না, তেমনি আশা করা যায় যে, আমলনামাও হবে মনঃপূত। যেখানে পরকালীন জীবনের তুলনায় পার্থিব জীবনকে একটি সকাল বা
একটি সন্ধ্যার সাথে (নাযি‘আত ৪৬) তুলনা করা
হয়েছে সেখানে মানুষ পার্থিব জীবনের পিছনে সর্বশক্তি ব্যয় করছে। অথচ তার উচিত পরকালের
অবস্থান নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা এবং এজন্য অধিক সময় ব্যয় করা। রাসূল (ছাঃ)-এর ভাষায় সর্বাধিক বিচক্ষণ
মুমিন সেই, যে মুমিন মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং
পরবর্তী জীবনের জন্য সবচেয়ে সুন্দর প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে।[31] সুতরাং আসুন! যে সময়টা আমরা অনর্থক কথা, গীবত কিংবা অন্যভাবে ব্যয় করি সে সময়ে আল্লাহর যিকর, তাসবীহ-তাহলীলের মাধ্যমে ব্যয় করে নিজের নাম বুদ্ধিমান
মুমিনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি। আল্লাহ আমাদের আমল-আখলাককে তার পসন্দ অনুযায়ী গড়ে তোলার তাওফীক দান করুন- আমীন।
যায়। যেখানে অল্প
অল্প সম্পদ জমা হয়ে বিশাল পরিমাণ হয়ে যায়। যিকরও মুমিনের পরকালীন ডিপোজিট। চলতে ফিরতে যিকর করলে একদিকে যেমন বাড়তি
সময়ের প্রয়োজন হয় না, তেমনি আশা করা যায় যে, আমলনামাও হবে মনঃপূত। যেখানে পরকালীন জীবনের তুলনায় পার্থিব জীবনকে একটি সকাল বা
একটি সন্ধ্যার সাথে (নাযি‘আত ৪৬) তুলনা করা
হয়েছে সেখানে মানুষ পার্থিব জীবনের পিছনে সর্বশক্তি ব্যয় করছে। অথচ তার উচিত পরকালের
অবস্থান নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা এবং এজন্য অধিক সময় ব্যয় করা। রাসূল (ছাঃ)-এর ভাষায় সর্বাধিক বিচক্ষণ
মুমিন সেই, যে মুমিন মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং
পরবর্তী জীবনের জন্য সবচেয়ে সুন্দর প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে।[31] সুতরাং আসুন! যে সময়টা আমরা অনর্থক কথা, গীবত কিংবা অন্যভাবে ব্যয় করি সে সময়ে আল্লাহর যিকর, তাসবীহ-তাহলীলের মাধ্যমে ব্যয় করে নিজের নাম বুদ্ধিমান
মুমিনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি। আল্লাহ আমাদের আমল-আখলাককে তার পসন্দ অনুযায়ী গড়ে তোলার তাওফীক দান করুন- আমীন।