আমি আগে অনেকবার হিজবুল্লাহর নাম শুনেছি। যে দল নাকি ঈসরাইলকে লেবাননে পরাজিত করেছিল। তখন থেকে আমি হিজবুল্লাহর প্রতি খুব আকৃষ্ট ছিলাম কিন্তু ইদানিং যখন সিরিয়ায় সরকার হঠানোর যুদ্ধ শুরু হল, তখন হিজবুল্লাহর আসল চেহারা দেখতে পেলাম। হিজবুল্লাহ কমিউনিস্ট আসাদের পক্ষ নিয়ে মুসলমানদেরকে খুবই নির্মম ভাবে হত্যা করছে। নিচে আমি হিজবুল্লাহ এবং শিয়ারা কেন কাফের তা বর্ণনা করেছি। যারা শিয়াকে মুসলমান বলে দাবি করেন বা মুসলমান ভাই বলেন তাদেরকে নোটটি ভাল ভাবে পড়ার জোর অনুরোধ করছি–
শিয়াদেরকে রাফেজীও বলা হয়। কারো মতে শিয়া বা রাফেজীরা ২০ দলে বিভক্ত, কারো মতে ৩২ দলে বা শাখায় বিভক্ত। দল যতটাই হোক না কেন, তারা মূলে এক আক্বীদাতেই বিশ্বাসী। তাদের মূল দল হলো- ইছনা আশারিয়াহ শিয়া। খোমেনীসহ বর্তমান ক্ষমতাশীন দল এ ফেরকারই অন্তর্ভূক্ত। নিম্নে শিয়াদের মূল দল ইছ্না আশারিয়া সম্প্রদায়ের কতিপয় জঘণ্য ও কুফরী আক্বীদা তুলে ধরা হলো-
শিয়া ইমাম সম্পর্কে খোমেনীর আক্বীদা وان من ضور ريات مذهبنا ان الانمتنا مقاما لايبلغه ملك مقرب ولا نبى مرسل= (الحكومةالاسلامية صفه52) অর্থঃ- আমাদের (শিয়া ইছনা আশারিয়া) মায্হাবের জরুরী আকায়েদের অন্যতম এই যে, আমাদের ইমামদের এমন মর্তবা ও স্তর অর্জিত আছে, যে মর্তবা বা স্তর কোন নৈকট্যশীল ফেরেশ্তা এবং নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরও নাই। (আল হুকুমাতুল ইসলামিয়াহ, পৃষ্ঠা-৫২)
হযরত সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের সম্পর্কে ইছ্না আশারিয়া শিয়াদের আক্বীদা كان الناس اهل ردة بعد النبى صلى الله عليه وسلم الا ثلثة فقلت ومن الاثلاثة قال المقداد بن الاسود وابو ذر الغفارى وسلمان الفارسى رحمة الله عليهم وبركاته (الجامع الكافى- الروضة صفه115) অর্থঃ- রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওফাতের পর তিনজন ব্যতীত (সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সকলেই মুরতাদ, ধর্মত্যাগী হয়ে যান। (রাবী বলে) আমি আরজ করলাম সেই তিনজন কে? তিনি বলেন, মেকদাদ ইবনুল আস্ওয়াদ, আবূজর গিফারী এবং সালমান ফার্সী, তাদের প্রতি আল্লাহর রহমত ও বরকত হোক। (আল জামিউল কাফী- কিতাবুর রওজা, পৃষ্ঠা-১১৫)
হযরত আবূ বকর ও হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে শিয়াদের বিশিষ্ট ইমাম ও মুজ্তাহিদ খোমেনীর আক্বীদা অর্থঃ- সে (হযরত আবূ বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইহুদির কথা অনুসারে কলেমায়ে তাওহীদ ও কলেমায়ে রেসালত প্রকাশ্যে মূখে উচ্চারণ করেছিল এই আশায় ও লোভে যে, সম্ভবতঃ রাসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত করবেন। মনের মধ্যে সে কাফেরই ছিল। (আয়াতে বাইয়্যিনাত পৃষ্ঠা-৮৫ অনুরূপ রজয়্যিাহতে উল্লেখ আছে)
অর্থঃ- যদি তুমি বল যে, কুরআন শরীফ-এ স্পষ্টভাবে (হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ইমামতের কথা উল্লেখ করা হলে শায়খাইন (হযরত আবূ বকর ও হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিরোধিতা করতে পারতো না, তারা এর বিরোধিতা করতে চাইলে সাধারণ মানুষ কুরআন শরীফ-এর বিপরীতে তাদের কথা কবুল করতো না। (খোমেনী বলে) এ ধারণা ভ্রান্ত, কেননা আমরা এ বিষয়ে কয়েকটি উদাহরণ পেশ করেছি, যার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আবু বকর ও ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কুরআন শরীফ-এর সুস্পষ্ট বিধানের খেলাফ কাজও করেছেন। এবং সাধারণ মুসলমানগণ তা মেনে নিয়েছেন। (এরপর খোমেনী হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক নবী ওয়ারিছ সত্ব বাতিল ও হযরত ওমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক মুত্য়া বিবাহ নিষিদ্ধ করণের সমালোচনা করে) (কাশফুল আসরার পৃষ্ঠা-১১৫)
বাংলাদেশস্থ ইরানী দুতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগ থেকে প্রকাশিত তাদের “নিউজ লেটারে” উল্লেখ আছে- “হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত ফাতেমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে বিবাহ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু উনাদের চরিত্র খারাপ বিধায়, হযরত ফাতেমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে উনাদের নিকট বিবাহ দেয়া হয়নি।” (নাউযুবিল্লাহ)]
মুত্য়া বিবাহ সম্পর্কে শিয়াদের আক্বীদা من تمتع مرة فدرجته كدرجة الحسين (ع) ومن تمتع مرتين فدرجته كدرجة الحسن (ع) ومن تمتع ثلاث مرات فدرجته كدرجة على (ع) ومن تمتع اربع مرات فدرجته كدرجتى- (ايرائى انقلاب اور امام خمينى)
অর্থঃ- (শিয়াদের মতে হাদীসে আছে) যে ব্যক্তি একবার মুত্য়া করবে, সে হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার মর্তবা পাবে। যে দুইবার মুত্য়া করবে, সে ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা পাবে, যে তিনবার মুত্য়া করবে, সে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মর্তবা পাবে, যে চারবার মুত্য়া করবে, সে আমার (অর্থাৎ রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মর্যাদা পাবে। (ইরানী ইনক্বিলাব আওর ইমাম খোমেনী পৃষ্ঠা-২৭) নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক।
হযরত ওসমান যিন্ নুরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে খোমেনীর আক্বীদা অর্থঃ- আমরা এরূপ মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করি এবং তাকেই মান্য করি, যার সকল কাজ বিবেক ও জ্ঞান অনুযায়ী হয়, আমরা এমন মহান আল্লাহ পাক উনাকে মানিনা, যে মহান আল্লাহ পাক অর্চনা, ইন্ছাফ, দ্বীনদারীর এক আলীশান প্রাসাদ তৈরী করে, অতঃপর ইয়াযীদ, মুয়াবিয়া ও ওসমানের ন্যায় জালেম, দুশ্চরিত্রদেরকে শাসন ক্ষমতা প্রদান করে নিজেই তা বরবাদ বা ধ্বংস করে দেয়। (কাশফুল আসরার পৃষ্ঠা-১০৭)
হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে শিয়াদের জঘণ্য কুফরী আক্বীদার প্রমাণ শ্রেষ্ঠ মায্হাব, হানাফী মায্হাবের ইমাম, ইমামে আযম, সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট এক শিয়া এসে বললো, হুযূর আমার দু’টি মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে, আপনার নিকট তো অনেক লোকজন এসে থাকে, যদি দয়া করে দু’টো ভাল ছেলের ব্যবস্থা করে দিতেন তবে খুব উপকৃত হতাম। ইমামে আযম, হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ঠিক আছে তুমি কিছুদিন পরে এসো। ইমামে আযম, আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথামত উক্ত শিয়া কিছুদিন পর উনার সাথে দেখা করলো। তখন ইমামে আযম, আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, তোমার মেয়ের জন্যে দু’টি ছেলে ঠিক করেছি। সে বললো- তারা কোন বাড়ীর? ইমামে আযম, আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, অমুক বাড়ীর। তখন শিয়া লোকটি আশ্চর্য হয়ে বললো- হুযূর বলেন কি, তারা তো ইহুদী! তার একথার জবাবে ইমামে আযম, আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “কেন, অসুবিধা কি? স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি এক ইহুদীর (হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) উনার নিকট দু’ মেয়েকে বিয়ে দিতে পারেন তবে তুমি পারবেনা কেন?
তোমরা (শিয়ারা) না বলে থাক, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার দু’মেয়েকে ইহুদীর নিকট অর্থাৎ হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট বিয়ে দিয়েছেন। একথা শুনে শিয়া লোকটি লজ্জিত হলো এবং শিয়া মতবাদ থেকে খালেছ তওবা করলো। (সীরতে ইমামে আযম) উপরোক্ত ঘটনার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, শিয়াদের আক্বীদা মতে হযরত ওসমান জিন নুরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হলেন, ইহুদী। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)
ইমাম লালাকায়ী শু’বা থেকে বর্ননা করেছেন,তিনি (শু’বা) বলেন, “আমি ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে রাফিদীদের উপর দুটি বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রাধান্য দিয়েছি। ইয়া’হু’দীদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলো, তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ লোক কারা? তারা বললঃ মূসা (আ.) এর সাথীগণ।খ্রিস্টানদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলঃ তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ লোক কারা? তারা বললঃ ঈসা (আ.) এর হাওয়ারিগণ।আর (রাফেদী)শিয়াদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলোঃতোমাদের উম্মাহর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ লোক কারা?তারা বললঃ মুহাম্মাদ ﷺ এর সাহাবীগণ!ফলে যখন তাদেরকে ইস্তেগফার করার আদেশ করা হলো, তখন তারা তাদেরকে গালি দেওয়া শুরু করলো।(ইমাম লালাকায়ি:শারহু উসুলি ই’তিক্বাদি আহলিস-সুন্নাহ ওয়াল জামাআত,খন্ড:৮, পৃষ্ঠা:১৫৫১;আরো দেখুন ইবনু তাইমিয়া;মিনহাজুস সুন্নাহ;খন্ড:১ পৃষ্ঠা;২৭)
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] রাফিদ্বী শিয়াদের ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন,
أن كفرهم أغلظ من كفر اليهود والنصارى، لأن أولئك عندهم كفار أصليون وهؤلاء مرتدون وكفر الردة أغلظ بالإجماع من الكفر الأصلي، ولهذا السبب يعاونون الكفار على الجمهور من المسلمين فيعاونون التتار على الجمهور
“তাদের কুফর ই-হুদি-নাসা-রাদের কুফরের চেয়েও গুরুতর। কেননা ইহুদি-খ্রি-ষ্টান-রা হলো সত্ত্বাগত কাফির। পক্ষান্তরে তারা (রাফিদ্বীরা) হলো দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়া মুরতাদ। আর মুরতাদ হওয়ার কুফর ইজমা‘র (মতৈক্য) ভিত্তিতে সত্ত্বাগত কুফরের চেয়েও গুরুতর। এজন্যই তারা মুসলিম জনসাধারণের বিরুদ্ধে কা-ফি-রদের সহযোগিতা করে। যেমন তারা মুসলিম জনগণের বিরুদ্ধে (মুসলিম জনপদে গণহত্যা পরিচালনাকারী) তাতার সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করছে।”(মাজমূ‘উ ফাতাওয়া,খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ৪২১)
.
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) আরো বলেন:- “রাফিজীদের মাজহাব ধর্মত্যাগী (দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়া মুরতাদ) খারেজীদের মাজহাবের চেয়েও নিকৃষ্ট , কারণ খাওয়ারিজদের লক্ষ্য হল উসমান ও আলী এবং তাঁদের ভক্তদের কাফের ঘোষণা করা, আর রাফিজীদের লক্ষ্য হল আবু বকর, ওমর, উসমান এবং প্রথম পর্যায়ের সাহাবীদেরকে কা-ফের ঘোষণা করা। তারা খারেজিদের চেয়েও বেশি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নতকে অস্বীকার করে । তাদের মধ্যে রয়েছে মিথ্যা , অপবাদ , বাড়াবাড়ি এবং নাস্তিকতা যা খারেজিদের মধ্যে নাই। মুসলমানদের বিরুদ্ধে কা-ফের-দেরকে সহযোগিতা করার বিষয়টি তাদের মধ্যে রয়েছে যা খারেজিদের মধ্যে নাই। রাফিজিরা তাতার এবং তাদের রাষ্ট্রকে ভালোবাসে। কারণ এটি তাদের গৌরব নিয়ে আসে যা একটি মুসলিম রাষ্ট্রে ঘটে না এবং তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুশ-রিক, ই-হু-দি এবং খ্রি-স্টান-দের সহযোগিতা করে। খোরাসান ইরাক এবং শামের ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তাতারদের প্রবেশের বিষয়ে তারা ছিল সবচেয়ে বড় মাধ্যম। যার ফলে ইসলামী রাষ্ট্রগুলো ছিনিয়ে নিতে, মুসলিমদের হত্যা করতে, বন্দী করতে তারা ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেছিল। ইবনে আলকামা এবং তার তার সহযোগিদের সাথে যা ঘটেছিল এবং দুধওয়ালার সাথে দুধের বিষয়ে যা ঘটেছিল তা সাধারণ মানুষের জানা। ঠিক তেমনিভাবে মুসলিম এবং নাসারাদের যুদ্ধের মাঝেও মুসলিমদের বিরুদ্ধে রাফিজিদের সহযোগিতা থাকবে এটা মানুষ জানতো। তারা দেশ কেড়ে নিতে তাদেরকে সহযোগিতা করেছিল। যখন তাতার রা আসবে আর রাফিজিদের অপদস্ত করবে তখন আক্কা এবং অন্যান্য গোত্রগুলো বিজয় লাভ করবে। যখন নাসারা এবং মু-শ-রিকদের উপরে মুসলিমরা বিজয় লাভ করবে তখন রাফিজিরা চরম অপমান হবে। মুসলমানদের উপরে নাছার এবং মু-শ-রি-করা যখন বিজয় লাভ করবে তখন রাফিজিদের নিকটে সেই দিনটি হবে খুব আনন্দের উল্লাসের । আর রাফিজিদের অন্তর্ভুক্ত ছিল নুসাইরি এবং ইসমাইলীদের নাস্তিক ও বিধর্মীরা, খোরাসান, শাম এবং ইরাকদের থেকে তাদের মতই অকট্য নাস্তি-করা। রাফিজিরা হল জাহমি কাদরিয়্যাহ । যাদের মাঝে ছিল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর মিথ্যা অপবাদ যা খারেজিদের চেয়েও অনেক ভয়ানক। যাদের সাথে আল্লাহর অনুমতি ক্রমে আমিরুল মুমিনিন আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এবং অন্যান্য সাহাবীগণ যুদ্ধ করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তারা শরীয়তের বিধি-বিধানগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছিল যেটা ছিল তাদের চেয়েও বেশি ভয়াবহ যারা যাকাত অস্বীকার করেছিল। আর যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে আবুবকর এবং অন্যান্য সাহাবীগণ যু-দ্ধ করেছিলেন”।(ইবনু তাইমিয়্যাহ মাজমুউ ফাতাওয়া, খণ্ড: ১৩; পৃষ্ঠা: ৫২৭)
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা সম্পর্কে খোমেনীপন্থী শিয়াদের আক্বীদা অর্থঃ- যখন আমাদের ক্বায়েম (মেহদী আলাইহিস সালাম) আত্মপ্রকাশ করবেন, তখন আয়েশা সিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে জীবিত করে শাস্তি দিবেন এবং আমাদের ফাতেমার প্রতিশোধ নিবেন। (হক্কুল ইয়াক্বীন, পৃষ্ঠা-১৩৯, অনুরূপ ইলালুশ্ শারায়েতে উল্লেখ আছে।
খোমেনী তার কাশফুল আসরার কিতাবে উক্ত কিতাবদ্বয়ের প্রশংসা করে ও কিছু রেওয়ায়েত উল্লেখ করে উক্ত বক্তব্যকে সমর্থন করে। পবিত্র কুরআন শরীফ-এর ব্যাপারে খোমেনীপন্থী শিয়াদের আক্বীদা
ان القران الذى جاء به جبرئيل عليه السلام الى محمد صلى الله عليه واله وسلم سبعة عشرالف اية- (اسول الكافى باب فضل القران صفه 671)
অর্থঃ- জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম যে কুরআন নিয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নাযিল হয়েছিলেন, তাতে সতর হাজার আয়াত ছিল। (উছূলুল কাফী, ফাদলুল কুরআন অধ্যায় পৃঃ-৬৭১)
ما ادعى احد من الناس انه جمع القران كله كما انزل الا كذاب وما جمعه وحفظه كما انزله الله الا على بن ابى طالب والائمة من بعده- (اصول الكافى صفه139)
অর্থঃ- যে ব্যক্তি দাবী করে যে, তার নিকট সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ রয়েছে যেভাবে তা নাযিল হয়েছিল, সে মিথ্যাবাদী। মহান আল্লাহ পাক উনার নাযিলকৃত কুরআন শরীফ শুধু আলী ইব্নে আবী তালিব এবং তার পরে ইমামগণই সংকলন ও সংরক্ষণ করেছেন। (উছূলুল কাফী পৃষ্ঠা-১৩৯)
ومن يطع الله ورسوله فقد فاز فوزا عظيما.
অর্থঃ- “যে কেউ মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করবে, সে বিরাট সফলতা লাভ করবে।” এ আয়াত শরীফ প্রসঙ্গে উছূলে কাফীর ২৬২নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে, উক্ত আয়াত খানা এভাবে নাযিল হয়েছিল-
ومن يطع الله ورسوله فى ولاية على والائمة من بعده فقد فاز فوزأ عظيما.
অর্থঃ- যে কেউ আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও উনার পরবর্তী ইমামগণের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করবে, সে বিরাট সফলতা লাভ করবে। এ ব্যাপারে তাদের আক্বীদা বা বক্তব্য হলো- এ আয়াতে হযরত আলী ও তার পরবর্তী সকল ইমামের ইমামত বর্ণিত হয়েছিল। কিন্তু উক্ত আয়াত থেকে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও উনার পরবর্তী ইমামগণের কথাগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে, যা বর্তমান কুরআন শরীফ-এ নেই। (নাউযুবিল্লাহ)
নামাজের মাসয়ালা সম্পর্কে খোমেনীপন্থী শিয়াদের আক্বীদা
ثانيها التكفير وهو وصنع احدى اليدين على الاخرى نحوما يصنعه عنيو يا ولا باس حال التقيه= (تحرير الوسيلة ج صفه186)
অর্থঃ- দ্বিতীয় যে কাজ নামাযকে বাতিল করে দেয়, তা হচ্ছে- নামাজে এক হাতের উপর অপর হাত রাখা, যেমন আমাদের শিয়ারা ব্যতীত অন্যরা করে, তবে তাকিয়ার অবস্থায় এরূপ করলে দোষ নেই। (তাহরীরুল উসীলাহ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৮৬)
تاسعها تعمد قول امين بعد اتمام الفاتحة الامع التقيه فلا باس به. (تحرير الوسيلة ج1 صفه. 19)
অর্থঃ- নবম যে কাজ দ্বারা নামায বাতিল হয়ে যায়, তা হচ্ছে- সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইচ্ছাকৃতভাবে “আমীন” বলা তবে তাকিয়ার জন্যে বললে দোষ নেই। (তাহরীরুল উসীলাহ ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-১৯০)
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি শিয়াদের সুক্ষ্ম কুফরী তোহমত এটা স্পষ্ট প্রমাণিত যে, শিয়ারা নামায পড়ার সময় আরদ্ বা মাটির উপর সিজ্দা করে থাকে, যার কারণে তারা পকেটে এক টুকরা মাটি বা পাথর রেখে দেয়। নামায পড়ার সময় উক্ত মাটি বা পাথরের টুকরাখানা সিজ্দার স্থানে রেখে উহার উপর সিজ্দা দেয়। এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য হলো- “র্আদ বা মাটির উপর সিজ্দা না করলে নামায হবে না।” মূলতঃ শিয়াদের উপরোক্ত বক্তব্যখানা সাইয়্যদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সুক্ষ্ম কুফরীর নামান্তর অর্থাৎ তারা উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা এটাই বুঝাতে চাচ্ছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাটাইর উপর, চটের উপর, কম্বলের উপর, চাদরের উপর, চামড়ার তোশকের উপর, কাঠের উপর নামায আদায় করেছেন। অতএব, উনি যে নামাযগুলো র্আদ বা মাটিতে আদায় করেননি, উনার সেই নামাযগুলো হয়নি। (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)
উপরোক্ত বক্তব্যসমূহের দ্বারা তারা মানুষের মধ্যে সুক্ষ্মভাবে এ কুফরী প্রবেশ করাচ্ছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নামায হয়নি। কারণ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, তিনি নামাজে হাতের উপর হাত রেখেছেন এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর “আমীন” বলেছেন এবং র্আদ বা মাটির উপর সিজ্দা দেননি। সুতরাং হয় উনার নামায হয়নি অথবা উনি তাকিয়া বা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। (নাউযুবিল্লাহ মিন্ যালিক)
শিয়াদের নিকট তাক্বিয়ার গুরুত্ব “তাক্বিয়া” শিয়াদের নিকট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিয়ারা নিজের দোষ গোপন রাখার জন্যে এবং অপরকে ধোকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে যেকোন সময় যেকোন স্থানে “তাক্বিয়া” বা মিথ্যার আশ্রয় নেয়। তাদের ইমামরাও স্থান বিশেষে তাক্বিয়ার আশ্রয় নেয়। তাই শিয়া মায্হাবে তাক্বিয়া করা জায়েয তো বটেই বরং স্থান বিশেষে অবশ্য কর্তব্য। অথচ হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, من غش فليس منا অর্থঃ- “যে ধোকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
হাদীস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে,
الكذب لكل ذنوب ام.
অর্থঃ- “মিথ্যা সকল গুণাহর মা বা মূল।”
শরীয়তের ফায়সালা হলো- ধোকা দেওয়া ও মিথ্যা বলা হারাম, আর হারামকে হালাল বা জায়েয মনে করা কুফরী। অতএব, “তাক্বিয়া” বিশ্বাস করা ও “তাক্বিয়া”কে জায়েয মনে করা কুফরী।
প্রাণীর ছবি সম্পর্কে শিয়াদের আক্বীদা “শিয়াদের মতে প্রাণীর ছবি আঁকা হারাম আর তোলা জায়েয।” আর উক্ত তোলা ছবি ঘরে রাখা, তার উপস্থিতিতে নামায পড়াও জায়েয। তাই শিয়ারা তাদের ইমামদের ছবি ঘরে, অফিস-আদালতে এমনকি মসজিদেও লটকিয়ে রাখে।
অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য বা আক্বীদা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার সম্পূর্ণ খেলাফ। কারণ আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হলো- প্রাণীর ছবি আঁকা, তোলা, ঘরে রাখা সম্পূর্ণই হারাম। যা অসংখ্য, অগণিত সহীহ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। আর পূর্বেই বলা হয়েছে, হারামকে হালাল আর হালালকে হারাম বলা কুফরী।
অতএব প্রাণীর ছবি সম্পর্কে শিয়াদের উপরোক্ত আক্বীদাও কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। উপরে বর্ণিত শিয়াদের কুফরী আক্বীদাসমূহের মূল বিষয় বস্তু হচ্ছে-
১। তাদের ইমামদের মর্যাদা নবী ও রাসূল আলাইহিস সালামগণ উনাদের, এমনকি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতেও বেশী। (নাউযুবিল্লাহ)
২। হযরত আলী, মেকদাদ ইব্নুল আস্ওয়াদ, আবূজর গিফারী ও সালমান ফার্সী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ ব্যতিত সকল সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ কাফের। (নাউযুবিল্লাহ)
৩। বিশেষ করে হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন দুশ্চরিত্রসম্পন্ন, ক্ষমতালোভী ও মুনাফিক। যার কারণে প্রস্তাব দেওয়া সত্বেও উনাদের নিকট হযরত ফাতেমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বিবাহ দেওয়া হয়নি। (নাউযুবিল্লাহ)
৪। উম্মুল মু’মিনীন, হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত হাফ্সা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হত্যাকারিনী। কারণ উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিষ খাওয়ায়ে শহীদ করেছেন। (নাউযুবিল্লাহ)
৫। বর্তমান কুরআন শরীফ পরিবর্তীত ও বিকৃত। মূলতঃ আসল কুরআন শরীফে সতর হাজার আয়াত ছিল, যাতে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ইমামতের কথা ছিল, সেগুলো কুরআন শরীফ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। (নাউযুবিল্লাহ)
৬। মুত্য়া (বা কন্ট্রাক বিবাহ) জায়েয তো অবশ্যই বরং মর্যাদা লাভের কারণ। হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইহা হারাম বলার কারণে প্রকাশ্য কুরআন শরীফ-এর বিরোধিতা করে কাফের হয়েছেন। (নাউযুবিল্লাহ)
৭। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন, ইমাম, মুজ্তাহিদ তথা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারী কোন ব্যক্তির নামায হয়নি বা হয়না, কারণ উনারা নামাজে হাতের উপর হাত রাখেন ও সেচ্ছায় সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর আমীন বলেন এবং র্আদ বা মাটির উপর সিজ্দা করেন না। (নাউযুবিল্লাহ)
৮। নিজের পরিচয় বা দোষ গোপন করা এবং অপরকে ধোকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে “তাক্বিয়া” বা মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া জায়েয।
৯। প্রাণীর ছবি আকা হারাম, আর তোলা জায়েয। উক্ত তোলা ছবি ঘরে রাখা ও তার উপস্থিতিতে নামায পড়াও জায়েয।
অতএব, শিয়াদের উপরোক্ত কুফরী আক্বীদাসমূহের ভিত্তিতে এটাই প্রমাণিত হয় যে, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ভিত্তিতে, ইছনা আশারা দল উপদল সকলই কাফের। কারণ তারা সকলেই উল্লেখিত কুফরী আক্বীদাসমূহে পূর্ণ বিশ্বাসী।
শিয়া বা রাফেজীদের সম্পর্কে স্বয়ং হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বক্তব্য নিম্নরূপ –
অর্থঃ- হযরত আবূ সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত যে, “শেষ যামানায় একদল লোক আমার পক্ষীয় এবং বন্ধু বলে দাবী করবে, খারাপ কাজ করবে এবং রাফেজী (শিয়া) বলে পরিচয় দিবে, তারা কখনো আমার পক্ষীয় বন্ধু নহে। তাদের (মূল) পরিচয় হলো- তারা আমীরুল মু’মিনীন, হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে খারাপ বলবে। তোমরা তাদেরকে যেখানে পাবে হত্যা করবে, কারণ তারা মোশরেক।” (তালবীসে ইবলীস লি ইবনে জাওযী পৃষ্ঠা-১৩৬)
সুতরাং অকাট্য ও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, শিয়া বা রাফেজী সম্প্রদায়ের সকলেই কাফের। ৭২টি বাতিল ও জাহান্নামী দলের একটি। নিম্নলিখিত কিতাবগুলোতেও শিয়া-রাফেজীদের কুফরী আক্বীদাসমূহ উল্লেখ আছে- বেলায়েতে ফক্বীহ, ফাছলুল খিতাব ফী ইছবাতি তাহরীফি কিতাবি রাব্বিল আরবাব, মোস্তাদ্রেকুল ওসায়েল, হামলা হায়দারী, ইহতিজাজে তবরিযী, নহজুল বালাগাহ, রিজালকুশী, হায়াতুল কুলূব, তাফসীরে ছাফী, হক্বুল ইয়াক্বীন, জিলাউল উয়ূন, উছূলুল কাফী, ফুরুয়ে কাফী, আল জামিউল কাফী, যাদুল মায়াদ লি মজলিসী, তারীখে তরাযে মাযহাবে শিয়া, মাওয়ায়েনে হুসাইনিয়াহ, তোহফাতুল আওয়াম, মিরআতুল উকূদ, দিস্তানে মাযাহেব, বেহারুল আনোয়ার (২৫ খন্ড), মিনহাজুল কিরামাহ ফী মা’রিফাতিল ইমামাহ, তাজাল্লিয়াতে সাদাকাত, আহসানুল ফাওয়ায়িদ ফী শরহিল আকাঈদ, তাফসীরে জামিউল বয়ান।
উপরোল্লিখিত কিতাবসমূহে বর্ণিত শিয়া বা রাফেজীদের কুফরী আক্বীদাসমূহের ভিত্তিতে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুস্বরণীয় ইমাম, মুজ্তাহিদগণের সর্বসম্মত মতে- “শিয়া বা রাফেজীরা কাফের” হওয়ার অকাট্য প্রমাণ-
১। ইমাম ইবনে হাযম আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত- খৃষ্টানদের বক্তব্য- “রাফেজীরা দাবী করে, কুরআন শরীফ বিকৃত বা পরিবর্তীত হয়েছে” -খৃষ্টানদের এ কথার জবাব এই যে, “রাফেজীরা/ শিয়ারা মুসলমান নয়, তারা আসলে অমুসলিম” (আল ফাস্ল লি ইব্নে হাযম ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-৭৮)
২। ক্বাজী আয়ায মালেকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত- “যে ব্যক্তির কথা দ্বারা সকল উম্মত গোমরাহ এবং সকল হযরত সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ কাফের বলে প্রতিয়মান হয়, তাকে আমরা নিঃসন্দেহে কাফের হিসাবে গণ্য করবো।” (কিতাবুশ শেফা ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৮৬)
তিনি আরো বলেন, “তেমনিভাবে আমরা ঐ ব্যক্তিকেও অকাট্যরূপে কাফের বলে সাব্যস্ত করবো, যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ অস্বীকার করে, এর কোন হরফ (অক্ষর) অস্বীকার করে, এর কোন শব্দ বদলে দেয় অথবা এতে কোন কিছু সংযোগ করে।” (কিতাবুশ শেফা ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৮৯)
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো লিখেন- “এবং অনুরূপভাবে আমরা ঐ গালী শিয়াদেরকেও অকাট্য কাফের সাব্যস্ত করবো, যারা তাদের ইমামদের মর্যাদা নবী আলাইহিস সালামগণের চেয়ে বেশী বলে আক্বীদা পোষণ করে।” (কিতাবুশ শেফা ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৯০)
এখানে উল্লেখ্য যে, ইছনা আশারিয়া শিয়া বা খোমেনীপন্থী শিয়ারা একান্তভাবে উল্লেখিত কুফরী আক্বীদাসমূহে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী। যেটা পূর্বে বর্ণিত শিয়াদের কিতাবের বর্ণনা দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অতএব, আল্লামা ক্বাজী আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে শিয়ারা কাফের।
৩। আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত- “আর যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ অথবা এর কোন সূরা বা আয়াত শরীফই হোক অবিশ্বাস করে, সে ইসলামের গন্ডি বহির্ভূত। মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মিরকাত শরহে মিশকাতের বরাত দিয়ে “মোযাহেরে হক্বের” পরিশিষ্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এরা (শিয়ারা) আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত তথা অধিকাংশ হযরত সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে কাফের বলে বিশ্বাস করে, অতএব এদের কাফের হওয়া সম্পর্কে সকলেই একমত, এতে কোন দ্বিমত নেই।
৪। আল্লামা কামালুদ্দীন ইব্নুল হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত- “রাফেজীদের (শিয়াদের) সম্পর্কে শরীয়তের বিধান এই যে, তারা যদি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে প্রথম তিন খলীফার চেয়ে কেবল বেশী মর্যাদাবান মনে করে, তবে তারা বিদ্য়াতী। আর তারা যদি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফতকে অস্বীকার করে, তবে তারা কাফের।” (ফাতহুল ক্বাদীর ১ম জিঃ পৃষ্ঠা-৩০৪)
৫। ফতওয়ায়ে আলমগীরীর রায়- “এরা (রাফেজী/শিয়ারা) দ্বীন ইসলাম বহির্ভূত এবং শরীয়তে তাদের বিধান মুরতাদের ন্যায়। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৬৮-২৬৯)
৬। আল্লামা ইব্নে আবেদীন শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অভিমত- “যে দুরাচার! উম্মুল মু’মিনীন, হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার প্রতি অপবাদ দেয় অথবা হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাহাবিত্বকে অস্বীকার করে, তাকে নিঃসন্দেহে কাফের বলা যায়। (রদ্দুল মোহতার ২য় জিঃ পৃষ্ঠা-২৯৪)
৭। ইমাম আবূ হানীফাহ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর সবচেয়ে প্রিয় ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃ.১৮২ হি.] বলেন,, لا أصلي خلف جهمي، ولا رافضي، ولا قدري “আমি কোন জাহমী, রাফেযী শী‘আ ও তাক্বদীর অস্বীকারকারী ক্বাদারিয়াদের পিছনে সালাত আদায় করি না”(শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ, ৪/৭৩৩ পৃ.)।
৮। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ২৫৬ হি.] তাঁর খালকু আফ‘আলিল ‘ইবাদ গ্রন্থে বলেন; ما أبالي صليت خلف الجهمي والرافضي أم صليت خلف اليهود والنصارى ولا يسلم عليهم ولا يعادون ولا يناكحون ولا يشهدون ولا تؤكل ذبائحهم
“আমি কোন পরওয়া করি না, আমি জাহমী ও রাফেযীর পিছনে সালাত পড়লাম, নাকি ই-হু-দী ও খ্রী-ষ্টা-নের পিছনে সালাত পড়লাম। তাদেরকে সালাম দেয়া যাবে না, তারা অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া যাবে না, তাদেরকে বিয়ে করা যাবে না, তারা মারা গেলে তাদের জানাযায় শরীক হওয়া যাবে না এবং তাদের যবহেকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া যাবে না’ (খালকু আফ‘আলিল ইবাদ, পৃষ্ঠা; ১২৫)।আব্দুল করীম শহরাস্তানী [মৃ:৫৪৮ হি.] বলেন,শী‘আদের দাবীসমূহ কুরআনের উপরও দলীল নির্ভর নয়, মুসলিমদের উপরও নয়। কারণ শী‘আরা মুসলিমদের অন্তর্ভুুক্ত নয়’ (আল-মিলাল ওয়ান নিহাল,খন্ড:২পৃষ্ঠা: ৭৮)।
তাছাড়াও তাফসীরে ইব্নে কাছীর, খাযেন, বাগবী, ইতেছাম, মুসাওয়া, শরহে মুয়াত্তা, মিন্হাজুস সুন্নাহ, আস্ সারিমুল মাসলূল, রদ্দে রাওয়াফেজ, গুনিয়াতুত তালেবীন, ফাওয়াতিহুর রাহমূত, তালবীসুল ইবলীস, ইমদাদুল ফতওয়া, ফতওয়ায়ে আযিযী, আল মাজুয়াতুস্ সুন্নিয়া, ইযালাতুল খফা, কুররাতুল আইনাইন, তোহফায়ে ইছনা আশারিয়া, মিলাল ওয়ান নেহাল ইত্যাদি কিতাবসমূহে রাফেজী বা শিয়াদেরকে অমুসলিম ও জাহান্নামী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য ও অকাট্য কিতাবসমূহের বর্ণনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ইজ্মা বা ঐক্যমতে শিয়া, ইছনা আশারী শিয়া, খোমেনীপন্থী শিয়ারা কাফের। সুতরাং যারা অকাট্য দলীলের ভিত্তিতে কাফের প্রমাণিত, তাদের মুসলমান ভাই বলাও কুফরী। কারণ শরীয়তের বিধান হলো- বিনা দলীলে কোন মুসলমানকে কাফের বলা যেরূপ কুফরী, তদ্রুপ অকাট্যভাবে প্রমাণিত কোন কাফেরকে মুসলমান বলাও কুফরী। অতএব, কেউ যদি শিয়াদেরকে মুসলমান ভাই বলে, তবে সেও কাফের হবে। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহিঃ) বলেন, যে ব্যক্তির দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান আছে সে জানে, শিয়া মতবাদ একটি ইসলাম বিরোধী মতবাদ। (মিনহাজুস সুন্নাহ, ৮ম খন্ড, পৃ: ৪৭৯)
পরিশেষে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন,তারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবার নিয়েই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে। (মুসনাদে আহমাদ হা/৬৩০২; বুখারী হা/৩৭৫৩; সিলসিলা সহীহাহ হা/২৪৯৪-এর ব্যাখ্যা)। পরবর্তীতে শিয়া ফিতনার বিকাশ হয়েছে ইসলাম ও মুসলিমের শত্রু অভি-শপ্ত ই-হু-দী আব্দুল্লাহ ইবনু সাবা ও তার অনুসারী যুরারা, আবূ বাসীর, আব্দুল্লাহ ইবনু ই‘য়াফুর, আবূ মিখনাফ লূত ইবনু ইয়াহইয়া প্রমুখ মিথ্যাবাদীদের দ্বারা। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে শী‘আদের ভ্রান্ত আক্বীদা ও অনিষ্ট থেকে হেফাযত করুন আমীন!