কিয়ামতের মাঠে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জ্বিন জাতিকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, وَ یَوۡمَ یَحۡشُرُهُمۡ جَمِیۡعًا ۚ یٰمَعۡشَرَ الۡجِنِّ قَدِ اسۡتَكۡثَرۡتُمۡ مِّنَ الۡاِنۡسِ ۚ وَ قَالَ اَوۡلِیٰٓؤُهُمۡ مِّنَ الۡاِنۡسِ رَبَّنَا اسۡتَمۡتَعَ بَعۡضُنَا بِبَعۡضٍ وَّ بَلَغۡنَاۤ اَجَلَنَا الَّذِیۡۤ اَجَّلۡتَ لَنَا ؕ قَالَ النَّارُ مَثۡوٰىكُمۡ خٰلِدِیۡنَ فِیۡهَاۤ اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰهُ ؕ اِنَّ رَبَّكَ حَكِیۡمٌ عَلِیۡمٌ আর যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্র করবেন এবং বলবেন, হে জিন সম্প্রদায়! তোমরা তো অনেক লোককে পথভ্রষ্ট করেছিলে এবং মানুষের মধ্য থেকে তাদের বন্ধুরা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক অপর কিছু সংখ্যক দ্বারা লাভবান হয়েছে এবং আপনি আমাদের জন্য যে সময় নির্ধারিত করেছিলেন, এখন আমরা তাতে উপনীত হয়েছি। আল্লাহ বলবেন, ‘আগুনই তোমাদের বাসস্থান, তোমরা সেখানে স্থায়ী হবে, যদি না আল্লাহ অন্য রকম ইচ্ছে করেন। নিশ্চয় আপনার রব প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ’ (আনআম ৬/১২৮)।
হাশরের ময়দানে সব জিন ও মানবকে একত্রিত করার পর উভয় দলের সম্পর্কে একটি প্রশ্ন ও উত্তর বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা শয়তান জিনদেরকে সম্বোধন করে তাদের অপরাধ ব্যক্ত করবেন এবং বলবেন, তোমরা মানব জাতিকে পথভ্রষ্ট করার কাজে ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছ। তাদেরকে তোমরা আল্লাহর পথ থেকে দূরে রেখেছ। আর তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলে। তোমরা মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করেছ। সুতরাং আজ তোমাদের উপর আমার লা’নত অবশ্যম্ভাবী, আমার শাস্তি অপ্রতিরোধ্য। তোমাদের অপরাধ অনুপাতে আমি তোমাদেরকে শাস্তি দিব। কিভাবে তোমরা আমার নিষিদ্ধ বিষয়ে অগ্রগামী হলে?
কিভাবে আমার রাসূল ও নেক বান্দাদের বিরোধিতায় লিপ্ত হলে? অন্যদের পথভ্রষ্ট করার ব্যাপারে তোমাদের কোন ওজর আপত্তি শোনা হবে না। আজ তোমাদের পক্ষে সুপারিশ করারও কেউ নেই। তখন তাদের উপর যে শাস্তি, অপমান ও লাঞ্ছনা আপতিত হবে সেটা অবর্ণনীয়। এর উত্তরে জিনরা কি বলবে, কুরআন তা উল্লেখ করেনি। তবে এটা বোঝা যায় যে, মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ তা’আলার সামনে স্বীকারোক্তি করা ছাড়া গতি নেই। কিন্তু তাদের স্বীকারোক্তি উল্লেখ না করার মধ্যেই ইঙ্গিত রয়েছে যে, এ প্রশ্ন শুনে তারা এমন হতবাক হয়ে যাবে যে, উত্তর দেয়ার জন্য মুখই খুলতে পারবে না। [সা’দী]
এরপর মানব শয়তান অর্থাৎ দুনিয়াতে যে সমস্ত মানব শয়তানদের অনুগামী ছিল, নিজেরাও পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অপরকেও পথভ্রষ্ট করেছে, তাদের পক্ষ থেকে আল্লাহর দরবারে একটি উত্তর বর্ণনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উপরোক্ত প্রশ্ন যদিও তাদেরকে করা হয়নি; কিন্তু প্রসঙ্গক্রমে তাদেরকেও যেন সম্বোধন করা হয়েছিল। কেননা, তারাও শয়তান জিনদের কাজ অর্থাৎ পথভ্রষ্টতাই প্রচার করেছিল। এ প্রাসঙ্গিক সম্বোধনের কারণে তারা উত্তর দিয়েছে। কিন্তু বাহ্যতঃ বোঝা যায় যে, মানবরূপী শয়তানদেরকেও প্রশ্ন করা হয়ে থাকবে। তা স্পষ্টতঃ এখানে উল্লেখ করা না হলেও অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছেঃ “হে আদম সন্তানরা! আমি কি তোমাদেরকে নবীগণের মাধ্যমে অঙ্গীকার নেইনি যে, শয়তানের ইবাদাত (অনুসরণ) করো না”? (ইয়াসীন ৬০) এতে বোঝা যায় যে, এ সময়ে মানুষ শয়তানদেরকেও প্রশ্ন করা হবে।
তারা উত্তরে স্বীকার করবে যে, নিঃসন্দেহে আমরা শয়তানদের কথা মান্য করার অপরাধ করেছি। তারা আরো বলবেঃ হ্যাঁ, জিন শয়তানরা আমাদের সাথে এবং আমরা তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে পরস্পর পরস্পরের দ্বারা ফল লাভ করেছি। মানুষ শয়তানরা তাদের কাছ থেকে এ ফল লাভ করেছে যে, দুনিয়ার ভোগ-বিলাস আহরণের উপায়াদি শিক্ষা করেছে এবং কোথাও কোথাও জিন শয়তানদের দোহাই দিয়ে কিংবা অন্য পন্থায় তাদের কাছ থেকে সাহায্যও লাভ করেছে; যেমন, মূর্তিপূজারীর মধ্যে বরং বিশেষ ক্ষেত্রে অনেক মূৰ্খ মুসলিমের মধ্যেও এ পন্থা প্রচলিত আছে, যা দ্বারা শয়তান ও জিনদের কাছ থেকে কোন কোন কাজে সাহায্য নেয়া যায়।
জিন শয়তানরা মানুষদের কাছ থেকে যে ফল লাভ করেছে, তা এই যে, তাদের কথা অনুসরণ করা হয়েছে এবং তারা মানুষকে অনুগামী করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি তারা মৃত্যু ও আখেরাতকে ভুলে গিয়েছে। এই মুহুর্তে তারা স্বীকার করবে যে, শয়তানের বিপথগামী করার কারণে আমরা যে মৃত্যু ও আখেরাতকে ভুলে গিয়েছিলাম, এখন তা সামনে এসে গেছে। এখন আপনি যে শাস্তি দিতে চান তা দিতে পারেন। কারণ এখন আপনারই একচ্ছত্র ক্ষমতা। এভাবে তারা যেন আল্লাহর কৃপাই পেতে চাইবে। কিন্তু এটা কৃপা করার সময় নয়। তাই এ স্বীকারোক্তির পর আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ তোমরা উভয় দলের অপরাধের শাস্তি এই যে, তোমাদের বাসস্থান হবে অগ্নি, যাতে সদা-সর্বদা থাকবে। তবে আল্লাহ কাউকে তা থেকে বের করতে চাইলে তা ভিন্ন কথা। কুরআনের অন্যান্য আয়াত সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ তা’আলা তাও চাইবেন না। তাই অনন্তকালই সেখানে থাকতে হবে। [সা’দী]
অপর বর্ণনায় এসেছে, জ্বিন ও মানুষরা একে অপর থেকে কি উপকারিতা অর্জন করেছে? এর দু’টি অর্থ বলা হয়েছে।
প্রথম অর্থ হল, মানুষের কাছ থেকে জ্বিনদের উপকারিতা অর্জন করা হল, তাদেরকে নিজেদের অনুসারী বানিয়ে তৃপ্তি লাভ করা। আর জ্বিনদের কাছ থেকে মানুষের উপকারিতা অর্জন করা হল, শয়তানদের পাপকর্মসমূহকে তাদের জন্য সুন্দর আকারে পেশ করা এবং তাদের তা গ্রহণ করে নিয়ে পাপের তৃপ্তি লাভে মত্ত থাকা।
দ্বিতীয় অর্থ হল, মানুষ সেই সব খবরকে বিশ্বাস করত, যা শয়তান ও জ্বিনদের পক্ষ হতে ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে প্রচার করা হত। অর্থাৎ, জ্বিনরা মানুষকে বেওকুফ বানিয়ে উপকারিতা অর্জন করে। আর মানুষের লাভবান হওয়া হল, মানুষ জ্বিনদের মিথ্যা ও ধারণাপ্রসূত কথাগুলো থেকে বড়ই তৃপ্তি পেত এবং গণক শ্রেণীর লোকেরা তাদের মাধ্যমে পার্থিব স্বার্থ চরিতার্থ করত। (আয়সারুত তাফাসীর)
জ্বিন সম্পর্কে সম্যক ধারনা :
জিন্ন আল্লাহ তা’আলার এক প্রকার শরীরী আত্মাধারী ও মানুষের ন্যায় জ্ঞান এবং চেতনাশীল সৃষ্টজীব। জিন এর শাব্দিক অর্থ গুপ্ত। তারা মানুষের দৃষ্টিগোচর নয়। এ কারণেই তাদেরকে জিন বলা হয়। জিন ও ফেরেশতাদের অস্তিত্ব কুরআন ও সুন্নাহর অকাট্য বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত। এটা অস্বীকার করা কুফর। মানব সৃষ্টির প্রধান উপকরন যেমন মৃত্তিকা তেমনি জিন সৃষ্টির প্রধান উপকরণ অগ্নি। এই জাতির মধ্যেও মানুষের ন্যায় নর ও নারী আছে এবং সন্তান প্রজননের ধারা বিদ্যমান আছে।
পবিত্র কুরআনে যাদেরকে শয়তান বলা হয়েছে, তারা জিন্নদের দুষ্ট শ্রেনীর নাম। অধিকাংশ আলেমের মতে, সমস্ত জিনই শয়তানের বংশধর। তাদের মধ্যে কাফের ও মুমিন দু’শ্রেণী বিদ্যমান। যারা ঈমানদার তাদেরকে জিন বলা হলেও তাদের মধ্যে যারা কাফির তাদেরকে শয়তান বলা হয়। তবে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে যে, জিন্নরা ভিন্ন প্ৰজাতি, তারা শয়তানের বংশধর নয়। তারা মারা যায়। তাদের মধ্যে ঈমানদার ও কাফির দু শ্রেণী রয়েছে। পক্ষান্তরে ইবলীসের সন্তানদেরকে শয়তান বলা হয়, তারা ইবলীসের সাথেই মারা যাবে, তার আগে নয়। [কুরতুবী; ড. উমর সুলাইমান আল-আশকার: আলামুল জিন্ন ওয়াশ শায়াতীন]
নাম ও কাজ অনুযায়ী জ্বিনদের কিছু পরিচয় :
(তথ্যসূত্র দুর্বল)
- ইবলিস: এই জ্বীন আদম আঃ কে সিজদা/সালাম করতে অস্বীকার করেছিল বলে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। মুসলিমরা বিশ্বাস করে, এই জ্বীন জান্নাতে থাকাকালে আদম আঃ কে আল্লাহর আদেশ অমান্য করতে প্ররোচিত করেছিল এবং পৃথিবীতেও সে মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে।
- খানজাব: এই জ্বীন সালাতরত মানুষের মনে নানারকম চিন্তা ঢুকিয়ে সালাত থেকে অমনোযোগী ও উদাসীন করে তুলে।এর ফলে তারা সালাতে ভুল করে, কত রাকাত পড়েছে মনে থাকেনা, কোনটা কি করছে সন্দেহে পড়ে যায়। এর কারণে সওয়াবও কমে যায়। তাই আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে যথাযথ খুশু ও খুজু সহকারে মনোযোগী হয়ে সালাত আদায় করার জন্য।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “নামাযের জন্য আযান দেওয়ার সময় শয়তান সশব্দে বায়ু ছাড়িতে ছাড়িতে পালায়, যেন সে আযানের শব্দ না শোনে। আযান শেষ হইলে সে আবার আসে। ইকামত আরম্ভ হইলে আবার পলায়ন করে। ইকামত বলা শেষ হইলে পূনরায় উপস্থিত হয় এবং ওয়াসওয়াসা ঢালিয়া নামাযী ব্যক্তি ও তাঁহার অভীষ্ট লক্ষ্যের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টী করে। যে সকল বিষয় তাহার স্বরণ ছিল না সেই সবের প্রতি আকৃষ্ট করিয়া সে বলিতে থাকেঃ অমুক বিষয় স্বরণ কর, অমুক বিষয় স্বরণ কর। ফলে সেই ব্যাক্তি কত রাকাআত নামায পড়য়াছে এমনকি সেটাও ভুলিয়া যায় ।(বিঃদ্রঃ নামাযে ওয়াসওয়াস প্রদাওনকারী শয়তানের নাম হচ্ছে “খানজাব”) [মুয়াত্তা মালিক :স্বলাত অধ্যায় ৩, হাদিস ১৫২] এ থেকে বাচার উপায়ঃ নামাযে কিরাত পড়া শুরু করার আগে “আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম” পড়বেন। আ’উযুবিল্ললাহ শুধু প্রথম রাকাতেই পড়তে হয়, এর পরের রাকাতগুলোর শুরুতে পড়তে হয়না। এই দুয়া পড়ে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়, কারণ নামাযে দাড়ালে খানজাব নামের শয়তান কুমন্ত্রনা দিয়ে নামাযকে নষ্ট বা ক্ষতি করতে চায়। নামাযের মাঝখানে সুরা-কেরাতে বা কত রাকাত, রুকু সেজদা নিয়ে শয়তান খুব বেশি ওয়াসওয়াসা দেয়/সন্দেহে ফেলে দেয় তাহলে কি করতে হবে? সালাতে ও কেরাতের মাঝে শয়তানের কুমন্ত্রণায় পতিত ব্যক্তি যেই দো‘আ করবেঃ “আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম” এই দুয়া বলে তারপর বাম দিকে তিনবার থুতু ফেলবে (থুতু ফেলার মতো করে নিঃশব্দে ফু দিবে, কিন্তু থুতু ফেলবেনা)। উসমান ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! শয়তান আমার ও আমার নামাযের মাঝে অনুপ্রবেশ করে এবং কিরাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সেটা (উপরে যা বলা হয়েছে) বলার নির্দেশ দেন, তিনি সেটা করার পর আল্লাহ তাঁকে সেটা থেকে মুক্ত করেন। [মুসলিম ৪/১৭২৯, ২২০৩]
- ওলহান: এরা হচ্ছে একপ্রকার শয়তান জ্বীন যারা মানুষকে ওযুর সময় ওয়াসওয়াসা দেয়।ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ মানুষেরা ওযুতে ভুল করে বেশি, এক কাজ কয়েকবার করে, তবুও মনে সন্দেহ থেকে যায় ওযুর অমুক অংগ ধোয়া হয়েছে কিনা? এরা পানি বেশি অপচয় করে। কি করতে হবে? এই ওয়াসওয়াসায় যারা আক্রান্ত তারা মনোযোগের সাথে কোন পাত্রে নির্দিষ্ট পানি নিয়ে ওযু করবেন, টেপ ছেড়ে দিয়ে অমনোযোগী হলে শয়তান সহজেই ওয়াসওয়াসা দিবে। অবশ্যই আল্লাহর নাম ‘বিসমিল্লাহ’ বলে আস্তে ধীরে ওযু শুরু করবেন, অবশ্যই তাড়াহুড়া করবেন না। প্রতিটা অংগ মনোযোগের সাথে উত্তমরুপে ধৌত হচ্ছে কিনা সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আর কোন অংগ ধৌত করতে ভুলে গেলে নিশ্চিত হলে মেজাজ খারাপ না করে ঐ অংগ থেকে ধোয়া শুরু করবেন। আর ওয়াসওয়াসা পড়লে এই দুয়া পড়বেনঃ “আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম” – এই দুয়া পড়ে শয়তান মনে কি ওয়াসওয়াসা দেয় সেইদিকে কোন লক্ষ্য করবেন না। যেই অংগ থেকে ভুল করেছেন সেখান থেকে ওযু সম্পূর্ণ করবেন। আস্তে আস্তে মনোযোগী হয়ে ওযু করার অভ্যাস গড়ে তুললে আস্তে আস্তে শয়তানের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে পারবেন ইনশা’আল্লাহ।
- ”’ক্বারীন”’: ক্বারিন অর্থ হচ্ছে সঙ্গী, প্রত্যেক মানুষের সাথেই শয়তান জ্বীন লেগে থাকে, সঙ্গী হিসেবে। এরা সবসময় বান্দার অন্তরে খারাপ চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়ে পাপ কাজ করতে উৎসাহিত করে।ক্বুরানে আল্লাহ এদের কথা উল্লেখ করেছেন সুরাতুল ক্বাফে। আ’উযু বিল্লাহি মিনাশ-শাইতানির রাযীম “মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেইতো তুমি টালবাহানা করতে। এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন। প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে। তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী। তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলে। এখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন। তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই। তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ বিরুদ্ধবাদীকে, যে বাধা দিত মঙ্গলজনক কাজে, সীমালঙ্ঘনকারী, সন্দেহ পোষণকারীকে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য গ্রহণ করত, তাকে তোমরা কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর। ‘ক্বারীন’ (তার সঙ্গী শয়তান) বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমি তাকে অবাধ্যতায় লিপ্ত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রান্তিতে লিপ্ত। আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাকবিতন্ডা করো না, আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ভয় প্রদর্শন করেছিলাম। আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই।
- গইলান: এরা হচ্ছে যাদুকর জ্বীন এরা মানুষের পথ বদলে দেয়। হযরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস রা. বলেন “আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে আমরা গইলান দেখলে যেন আযান দেই”।
- মাতিয়ানাক:- এরা হচ্ছে শক্তিশালী ও অনেক ভয়ংকর জ্বীন, মানুষের সন্তান হয়ে জন্মগ্ৰহণ করে।
- সান্ডেকালা:-এরা হচ্ছে শক্তিশালী ও অনেক ভয়ংকর জ্বীন, সন্ধ্যা হলেই বাচ্চাদের ধরে নিয়ে মরে যায়।সান্ডেকালা,আনজার ও মাতিয়ানাক প্রজাতির জ্বীনেরা দুষ্ট জ্বীন এবং এরা ইবলিস শয়তানের অনুসারী হয়ে থাকে।
- আনজার:-এরা হচ্ছে শক্তিশালী, অনেক ভয়ংকর ও হিংস্র পশুর ন্যায় স্বভাবের জ্বীন, এদের কোন কাজে ব্যাঘাত ঘটলে সব মানুষের বংশের সবার উপরে আছড় করে ও রূপের প্রলোভন দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং বেছে বেছে প্রাপ্তবয়স্ক সুদর্শন পুরুষ ও মহিলা যারা দাইয়্যূস প্রকৃতির মানুষ।
- সাবরাদ:-সাবরাদ দায়িত্বে আছে বিপদাপদে ধৈর্য হারানোর কাজ। মানুষের বিপদ বিপর্যয়ের সময় এই শয়তান তাকে অধৈর্য্য হয়ে মৃত্যুকে ডাকতে, জামাকাপড় ছিঁড়তে, বুক মুখ চাপড়াতে এবং ইসলাম-বিরোধী অজ্ঞসূচক কথাবার্তা বলতে প্ররোচিত করে।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের প্রথম সন্তান।
- আঊর:- আঊরের দায়িত্বে আছে জিনা-ব্যাভিচার। এই শয়তান মানুষকে জিনা-ব্যাভিচারের নির্দেশ দেয় এবং ওই কাজের দিকে আকৃষ্ট করে।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের দ্বিতীয় সন্তান।
- মাসূত:- মাসূতের দায়িত্বে আছে মিথ্যা সংবাদ রটানো। যেমন, এই শয়তান মিথ্যা কথা শুনে অন্য লোককে তা বলে। সে আবার তার এলাকার লোকেদের কাছে গিয়ে বলে- একজন আমাকে এইসব কথা বলেছে। তার নাম জানি না বটে, তবে সে আমার মুখচেনা।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের তৃতীয় সন্তান।
- দাসিম:-দাসিমের কাজ হলো মানুষের সাথে সাথে তার বাড়িতে আসা এবং বাড়ির লোকেদের দোষের কথাগুলো বলে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে তাকে ক্ষেপিয়ে তোলা।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের চতুর্থ সন্তান।
- আর যিলনাবূর:-আর যিলনাবুরের দায়িত্বে আছে হাট-বাজার। সে তার (গুমরাহীর) পতাকা পুঁতে রেখেছে হাটে বাজারে।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের পঞ্চম সন্তান।
- ঘৌল:-এরা উত্তর থেকে পশ্চিম দিকে ভ্রমণ করে। ঘৌল জ্বীনদেরকে আদমখোর জ্বীন বলা হয়।এরা বড়দের চেয়ে শিশু ও বালেগ-প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং দাইয়্যুস কিশোর-কিশোরীদেরকে বেশি আক্রমণ করে।ঘৌল জ্বীন সাধারণত কবরস্থানে বা তার আশেপাশে পরিত্যক্ত অন্ধকার স্থানে থাকতে বেশি পছন্দ করে।যেসব মানুষের বাসস্থান মাটির নিচে বা পাতালে, তাদের এ জাতের জ্বীন বেশি আছড় করে।এ জাতের মেয়ে জ্বীন বা পরী অনেক ভয়ংকর হয়ে থাকে,যাদের ঘৌলা বলা হয়।এসব ঘৌলা পরীরা সুন্দরী বালিকা রূপ ধারণ করে বালেগ পুরুষ বা কিশোর ছেলেদের আকর্ষণ করে বিয়ে করার জন্য।বিয়ে করা কিশোর ছেলেরা এসব ঘৌলা পরীদের খাবারে পরিণত হয়।ঘৌল হচ্ছে বিশেষ প্রজাতির এক জ্বীন। এরা নিজেদের রুপ পরিবর্তন করতে পারা ছাড়াও মানুষের মাংস ভোক্ষণ ও রক্ত পান করে থাকে। এরা মূলত ভ্রমণপিপাসু,যৌনপিপাসু ও শিশুদেরকে তাদের লক্ষ্যবস্তু করে থাকে। এছাড়া এরা কবর থেকেও মানুষের লাশ চুরি করে।বিভিন্ন বই-পুস্তকে বলা হয়েছে, ঘৌলরা হলো জ্বীন জাতির মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতির। এদের মধ্যে নারী ঘৌলরা মানুষের রুপ ধারণ করতে পারে। তারা সাধারণ নারীর রুপ ধারণ করে পুরুষদের শিকার করে থাকে এবং চাইলে মানুষের সাথে জোরজবরদস্তি করে প্রচুর পরিমাণে শারীরিক সম্পর্ক করে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে।ফারসি বিভিন্ন বইয়ে বলা হয়েছে যে, ঘৌলদের বাস্তব রুপে গাধার মতো পা ও ছাগলের মতো শিং থাকে।
- জ্যান: জ্যানরা মূলত মরুভূমি অঞ্চলে বসবাস করে থাকে। এরা সাধারণত ঘূর্ণিবায়ু বা সাদা উটের বেশ ধারণ করে চলাফেরা করে।জ্যানদের সঙ্গে ঘৌলদের চরম শত্রুতা রয়েছে। তারা মানুষের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে থাকে। এছাড়া বলা হয়ে থাকে, জ্যানরা হলো জ্বীন জাতির মধ্যে সর্বপ্রথম যারা মানবজাতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলো।এরা মানুষের বন্ধু হয়ে থাকে।এরা অন্যান্য জ্বীন থেকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী, খুবই পরোপকারী, আল্লাহওয়ালা বা আল্লাহভীরু ও বন্ধুত্বপরায়ণ এবং ন্যায়পরায়ণ জ্বীন হয়ে থাকে।
- শিক:-জ্বীন জাতির মধ্যে অন্যতম একটি প্রজাতি হলো শিক। এরা কিছুটা দানবীয় আকৃতির হলেও তুলনামূলক ভাবে দূর্বল হয়ে থাকে। এ কারণে শিকদের নিম্ন প্রজাতির জ্বীন বলে গণ্য হয়। এরা ঘৌল জ্বীনদের ন্যায় মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে।
- নাসনাস:-এরা ভিন্ন শক্তিশালী জ্বীন। এরা অর্ধেক জ্বীন এবং অর্ধেক পশু হয়। অর্ধেক জ্বিন হয় আর বাকি অর্ধেক কোন পশুপাখি, গাছপালা ইত্যাদি মত মত। এরা নোংরা জায়গায় বেশি থাকে। অর্ধেক দেখা যায় আর বাকি অর্ধেক অদৃশ্য থাকে। এরা বরাবরই মানুষের ক্ষতি করে থাকে এবং বড় বড় ক্ষমতা না থাকা সত্য না জানার খবর দেয়। এরা আমাকে বলা খুব পটু।জ্বীনদের মধ্যে দূর্বল আরেকটি প্রজাতি হলো নাসনাস। শিক ও মানুষের মিলনের ফলে এদের সৃষ্টি বলে বলা হয়ে থাকে। এরা দেখতে অর্ধেক মানুষের মত ও বাকি অর্ধেক পশুর মতো।‘এক হাজার এক রাত’ বইয়ে বলা হয়েছে যে, নাসনাসদের মুখমণ্ডলের একাংশ, এক হাত ও এক পা মানুষের মত হয়ে থাকে। বাকিটা হয়ে থাকে পশুর মতো।
- ইফরিত:-ইফরিতরা নিজেদের ক্ষমতা ও চতুরতার জন্য সুপরিচিত। এদের বিশাল আগুনের ডানা থাকে ও এরা আগুন ছুঁড়তে সক্ষম। এরা সাধারণত স্বভাবে হিংস্র ও দুষ্ট হয়ে থাকে।ইফরিতরা ভূগর্ভে বসবাস করে বলে বলা হয়। এরা সাধারণত অন্যান্য জ্বীনদের বিয়ে করলেও কখনো কখনো মানুষদেরও বিয়ে করে থাকে।এরা কালোজাদুর ব্যবহার করতে পারে।এরা খারাপ আত্মা। মানুষের মতো সমাজব্যবস্থা রয়েছে এদের। সাধারণ কোনো অস্ত্র তাদের ক্ষতি করতে পারেনা। তবে মানুষ চেষ্টা করলে তাদের বশে আনতে পারে, এমনকি সাদাজাদুর মাধ্যমে হত্যাও করতে পারে।সাদাজাদু মানুষ করতে পারেন।ইফরিত জ্বীনদেরকে জুহান্না অর্থাৎ দোযখ, জাহান্নাম বা সিজ্জিনের শয়তান বলা হয়।
- মারিদ:-মারিদ হলো জ্বীনদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজাতি। ইসলাম পূর্ববর্তী সময়কাল থেকেই আরবের বিভিন্ন লোককথায় এর অস্তিত্বের কথা জানা যায়।আরবি ভাষায় ‘মারিদ’ শব্দের অর্থ হলো –দানব। সুবিশাল আকৃতি ও শক্তিমত্তার জন্য তাদেরকে এই নামে ডাকা হয়। তারা নিজেদের খেয়াল-খুশী মতো সবকিছু করে থাকে। তবে এরা প্রচন্ড শক্তিশালী ও বিশাল আকৃতির হওয়া সত্ত্বেও এদেরকে বশ করার মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নেয়া যায়।এ মারিদ জ্বীনদের মারাত্মক একটি রূপ ধারণ করতে পারে। এরা হচ্ছে শয়তানের অনুসারী হয়ে থাকে।
- হিন:-এরা জ্বিনের মধ্যে এমন এক জাতির অদ্ভুত প্রকৃতির হয়। এরা বড়ই আক্রমণের শিকার হয়। এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। হিন জ্বীনদের মুখটা শিয়ালের মতো কখনও কখনও ইঁদুরের মতো, হাতের আঙ্গুল তিনটা করে থাকে, তার গা রঙ কুৎসিত। এরা বোকা প্রকৃতির হয়। এরা সাধারণ শয়তান এবং ইবলিশের অনুসারী। মহাপ্রধান কাজ চালান করা।হিন হচ্ছে এমন এক প্রজাতির জ্বীন যারা দেখতে অনেকটা পশুর মতো হয়ে থাকে। এরা সাধারণত কুকুরের বেশে চলাফেরা করে। মুসলিম দার্শনিক জাকারিয়া ইবনে মুহাম্মাদ আল-কাজওয়ানি তার ‘দ্য বুক অব জ্বীন’ –এ দাবি করেছেন যে, তিনি সৌদি আরব, পারস্য ও ভারতে অনেকবার হিন দেখেছেন।বিশ্বজাহান ও সমগ্ৰ মাখলুকাতের মালিক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বান্দা ফেরেশতারা ইবলিস শয়তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে তখন এ হিন ও জ্যান জ্বীনরা ফেরেশতাদের পক্ষ হয়ে ইবলিস সয়তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
- সিলাত:-জ্বিনদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী জ্বিন হচ্ছে সিলাত জ্বিন। এরা দ্রুত আকৃতি পরিবর্তন করতে সক্ষম। বরাবরই মেয়ে জ্বিন বা পরী হয়। অত্যন্ত বুদ্ধিমান বলে মনে হয়। এরা খুব কমই মানুষের কাছে আসে। এরা সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে বরং পরোপকার করে থাকে। তবে এরা অনেক সময়ই বিভিন্নভাবে সাহায্য করে।
- পালিস(পালিশ):-সাধারণত এরা মরুভূমিতে বেশি থাকে। দেখতে প্রচন্ড কুৎসিত, শরীর খুব দুর্গন্ধময় এবং অন্ধকার ও জনমানবহীন জায়গায় বেশি থাকে। এরা বসবাসের জন্য অন্য লুকানোর জন্য জায়গা পছন্দ করে। মানুষের ক্ষতি করতে পারে এবং ভয় দেখাতেও বেশি অ্যাক্সপার্ট হতে পারে।পালিস জ্বীনরা ঘুমন্ত অবস্থায় মানুষদের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের পা ও অন্যান্য শরীরের অংশ থেকে চেটেপুটে রক্ত খায়।এরা অনেক বোকা টাইপের জ্বীন হয়ে থাকে এবং এদের সহজে বোকা বানানো যায়।পালিসরা সাধারণত মরুভূমিতে বসবাস করে। এরা মানুষকে ঘুমের মধ্যে আক্রমণ ও পায়ের পাতা চাটার মাধ্যমে রক্ত শোষণ করে থাকে বলে বলা হয়। এদের বুদ্ধিমত্তা খুবই কম থাকায় খুব সহজেই এদের বোকা বানানো যায়।
- ভেতালা(ভেটালা):-ভেতালা দিয়ে মত ভ্যাম্পায়ার ও জম্বিদের আলোচনা করা হয়। তারা মানুষের মৃতদেহ ধারণ করে ও অনায়াসে মানুষের মৃতদেহ ঢুকতে পারে এবং তাদের মৃতদেহ পচনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে প্রতিরোধ করতে পারে এবং তাদের বিশ্বাসকে তিরস্কার করে সাধারণ মানুষ বলে। এরা মানুষের রক্তের সাথে খুব মিশে যেতে পারে এবং মানুষের শরীর থেকে রক্ত দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে। এরা প্রচন্ড জ্বীন হয়। ভেতালা জ্বীনও অন্যান্য জ্বীনদের মতো আকৃতি পরিবর্তনে সক্ষম। অনেক সময়কে মনের ভবিষ্যতবাণী করতে পারে ও এদের আধ্যাত্নিক ক্ষমতা রয়েছে এবং অতীতে কোনো তথ্য লাভ করতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। এরা মানুষের ব্রেইনে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের একে জম্বি বলে অভিহিত করা হয়।
- খান্নাস (খাবাইস): খান্নাস বিশেষ এক জ্বিন। এরা সাধারণ ব্যবসায় ভূতাবিষ্ট না ক্ষতি করে। এদের কে অনেক সময় খাবাইস বলা হয় এবং এদের পরীদের কে খুবসি বলা হয়।এরা অপবিত্র জায়গায় এবং পানিতে পরিবার বেশি পছন্দ করে। আমাদের ওয়াশরুমে খান্নাস সময় জ্বিন থাকে। এরা সকলেই শয়তান টাইপ হয়। পশ্চিমা বিশ্বের একে সুকুবাস ও ইনকিউবাস বলে অভিহিত করে।
- যাথুম (যথুমে): যাথুম জ্বিনকে ওভারপাওয়ারড জ্বিন বলা হয়। এরা ভয়ংকর জ্বীন। মুখ্য প্রধান আবাস বটবৃক্ষ। এরা যদি কোনো অজান্তে একবার ভূতাবিষ্ট করে তাহলে আমার ছাড়ানো বেশ কঠিন। কোনো প্রকার তাবিজে কাজ হবে না গারা টি। এরা মেয়েকে বেশি ভূতাবিষ্ট করে। এরা মানুষের যদি থাকে তাদের কাছে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে। এরা মানুষের ক্ষতি করার পাশাপাশি মানুষের ব্যবস্থাও করে থাকে।
- হামজাদ:-হামজাদ জ্বীন একটি জনপ্রিয় ধারণা যা উপমহাদেশের লোকবিশ্বাসে বিদ্যমান। বলা হয়, প্রতিটি মানুষের সঙ্গে তার জন্ম থেকে একটি হামজাদ জ্বীন থাকে, যাকে ডপেলগেঞ্জার বা ছায়া জ্বীন বলা যায়। এই জ্বীনটি নাকি মানুষের মতো দেখতে হয় এবং তার মতোই আচরণ করে। হামজাদ জ্বীন মানুষের মনোভাব, অভ্যাস এবং চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত থাকে এবং কখনো কখনো তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।হামজাদ জ্বীনেরা সাধারণত ইবলিস শয়তানের অনুসারী হয়ে থাকে। (উপরোক্ত পরিচয়ের অধিকাংশ তথ্যসূত্র দুর্বল)
মানুষ যখন আল্লাহকে স্মরণ করা ভুলে যায় তখন শয়তান তার সঙ্গী ও অনুচর হয়। সুতরাং আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে জ্বিন জাতির কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করুন এবং দ্বীনের আমল ও যিকিরে সদা মশগুল রাখুন, আমীন।