আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য। ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত হিসাবে পবিত্রতা অর্জন করা অপরিহার্য। পবিত্রতা ছাড়া ইবাদত হয় না, এমন একটি ইবাদত হলো ছালাত। ছালাতে দাঁড়ানোর পূর্বেই ওযূর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ ‘তোমার পোষাক-পরিচ্ছদ পবিত্র রাখ’ (মুদ্দাছছির ৪)। অন্যত্র তিনি বলেন, إِنَّ اللهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيْنَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِيْنَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী ও অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ ২/২২২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لاَ تُقْبَلُ صَلاَةٌ بِغَيْرِ طُهُوْرٍ وَلاَ صَدَقَةٌ مِنْ غُلُوْلٍ ‘পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত কারো ছালাত কবুল হয় না এবং হারাম মালের ছাদাক্বা কবুল হয় না’ । আর মুসলমান সর্বদা পবিত্র এবং মুশরিকগণ অপবিত্র সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِنَّمَا الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ ‘হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক বা অপবিত্র’ (তওবা ২৮)।
পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হলো- ওযূ, গোসল ও তায়াম্মুম। সোনামণিদের এ বিষয়ে বিশেষ ভাবে শিক্ষা নিতে হবে। তাদের জেনে রাখা অতিব যরুরী ভেবে নিচে সংক্ষিপ্ত ভাবে আলোচনা করা হলো-
১. ওযূর ফযীলত :
ওযূর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে হয়। আর এই পবিত্রতার গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, اَلطُّهُوْرُ شَطْرُ الإِيْمَانِ ‘পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক’ ।
ক. ওযূ হলো ছালাতের চাবি :
ছালাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর ছালাতে দাঁড়ানোর পূর্বে উত্তমরূপে ওযূ করা প্রয়োজন। কেননা ছালাতের চাবি হলো ওযূ। এ সম্পর্কে আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, عَنْ عَلِىٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ مِفْتَاحُ الصَّلاَةِ الطُّهُوْرُ وَتَحْرِيْمُهَا التَّكْبِيْرُ وَتَحْلِيْلُهَا التَّسْلِيْمُ ‘ছালাতের চাবি হ’ল ওযূ, যা তাকবীরে তাহরীমা দ্বারা শুরু হয় ও সালাম দ্বারা শেষ হয়’ ।
খ. ওযূর পানিতে ছোট পাপ ঝরে যায় :
ওযূর মাধ্যমে যে সকল স্থান ধৌত করা হয় এবং সেই ধৌতকৃত পানির অবশিষ্টগুলো ফোটায় ফোটায় যেভাবে মাটিতে ঝরে পড়ে। অনুরূপ ভাবে মানুষের পাপ রাশি ঝরে পড়ে এবং সে পাপ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কার হয়ে যায়। এ মর্মে হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِذَا تَوَضَّأَ الْعَبْدُ الْمُسْلِمُ أَوِ الْمُؤْمِنُ فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيْئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، فَإِذَا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيْئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ الْمَاءِ، أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيْئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلاَهُ مَعَ الْمَاءِ، أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيًّا مِنَ الذُّنُوْبِ. ‘কোন মুসলিম অথবা মুমিন বান্দা ওযূ করার সময় যখন মুখমন্ডল ধুয়ে ফেলে তখন তার চোখ দিয়ে অর্জিত পাপ পানির সাথে অথবা (তিনি বলেছেন,) পানির শেষ বিন্দুর সাথে বের হয়ে যায়। যখন সে উভয় হাত ধৌত করে তখন তার দু’হাতের স্পর্শের মাধ্যমে অর্জিত পাপ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়। অতঃপর যখন সে উভয় পা ধৌত করে তখন তার দু’পা দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত পাপ পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে যায়। এইভাবে সে যাবতীয় পাপ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়’ ।
গ. ওযূতে গুনাহ ক্ষমা ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে :
ওযূর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার গুনাহসমূহ ক্ষমা করেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, أَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الْخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ. قَالُوْا بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ إِسْبَاغُ الْوُضُوْءِ عَلَى الْمَكَارِهِ وَكَثْرَةُ الْخُطَا إِلَى الْمَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ. ‘আমি কি তোমাদেরকে (এমন কাজ) জানাবো না, যা করলে আল্লাহ বান্দার গুনাহসমূহ ক্ষমা করেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন? লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বলুন। তিনি বললেন, কষ্টকর অবস্থায় থেকেও পূর্ণাঙ্গরূপে ওযূ করা, ছালাতের জন্য মসজিদে বার বার যাওয়া এবং এক ছালাতের পর আর এক ছালাতের জন্য অপেক্ষা করা। আর এই কাজগুলোই হ’ল সীমান্ত প্রহরা’ । অন্যত্র এসেছে, ওছমান (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাস হুমরান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ওছমান ইবনু আফ্ফান (রাঃ)-এর জন্য ওযূর পানি নিয়ে আসলে তিনি ওযূ করে বললেন, লোকেরা রাসূল (ছাঃ) থেকে বেশ কিছু হাদীছ বর্ণনা করে থাকে। ঐ হাদীছগুলো কি তা আমার জানা নেই। তবে আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আমার এই ওযূর ন্যায় ওযূ করতে দেখেছি। তারপর তিনি বলেছেন, مَنْ تَوَضَّأَ هَكَذَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَكَانَتْ صَلاَتُهُ وَمَشْيُهُ إِلَى الْمَسْجِدِ نَافِلَةً. ‘যে ব্যক্তি এভাবে ওযূ করে তার পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। ফলে তার ছালাত ও মসজিদে যাওয়া অতিরিক্ত আমল হিসাবে গণ্য হয়’ ।
ঘ. ওযূতে শয়তানের গিঁট খুলে :
ঘুম থেকে জেগে ওযূ করলে শয়তানের গিঁট খুলে যায়। এ সম্পর্কে আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيْةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلاَثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيْلٌ فَارْقُدْ فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَأَصْبَحَ نَشِيْطًا طَيِّبَ النَّفْسِ وَإِلاَّ أَصْبَحَ خَبِيْثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ. ‘তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পশ্চাদাংশে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাক। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে তাহ’লে একটি গিঁট খুলে যায়। পরে ওযূ করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। অতঃপর ছালাত আদায় করলে আরেকটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয় উৎফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথা সে সকালে উঠে কলুষ কালিমা ও আলস্য সহকারে’ ।
ঙ. ওযূর স্থান দেখে কিয়ামতের মাঠে রাসূল (ছাঃ) তাঁর উম্মতদের চিনবেন :
কিয়ামতের মাঠে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের মধ্যে রাসূল (ছাঃ) তাঁর উম্মতের লোকদের চিনবেন ওযূর বদওলতে তাদের ধবধবে সাদা কপাল ও সাদা হাত-পা অবস্থায় সেখানে উপস্থিত হবেন। এমর্মে হাদীছে এসেছে, ছাহাবীগণ বললেন, كَيْفَ تَعْرِفُ مَنْ لَمْ يَأْتِ بَعْدُ مِنْ أُمَّتِكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَالَ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً لَهُ خَيْلٌ غُرٌّ مُحَجَّلَةٌ بَيْنَ ظَهْرَىْ خَيْلٍ دُهْمٍ بُهْمٍ أَلاَ يَعْرِفُ خَيْلَهُ. قَالُوْا بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ. قَالَ فَإِنَّهُمْ يَأْتُوْنَ غُرًّا مُحَجَّلِيْنَ مِنَ الْوُضُوْءِ وَأَنَا فَرَطُهُمْ عَلَى الْحَوْضِ. ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার উম্মাতের এমন লোকদের কিভাবে চিনবেন যারা এখনও দুনিয়াতেই আসেনি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, বল দেখি, যদি কোন ব্যক্তির নিকট কাল এক রঙ্গা বহু ঘোড়ার মধ্যে একদল ধবধবে সাদা কপাল ও সাদা হাত-পা বিশিষ্ট ঘোড়া থাকে, সে কি তার ঘোড়া সমূহ চিনতে পারবে না? তারা বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আমার উম্মতের লোকেরও ওযূর কারণে (ক্বিয়ামতের দিন) সেইরূপ ধবধবে সাদা কপাল ও সাদা হাত-পা অবস্থায় উপস্থিত হবে। আর আমি হাউযে কাওছারের নিকট তাদের অগ্রগামী হিসাবে উপস্থিত থাকব’ ।
২. ওযূর নিয়ম-পদ্ধতি :
(১) প্রথমে মনে মনে ওযূর নিয়ত করা।
(২) ‘বিসমিল্লাহ’ বলা।
(৩) ডান হাতে পানি নিয়ে উভয় হাত কব্জি সমেত ধৌত করা ও আঙ্গুল সমূহ খিলাল করা।
(৪) ডান হাতে পানি নিয়ে ভালভাবে কুলি করা, নাকে পানি দেওয়া ও নাক ঝাড়া বা পরিষ্কার করা।
(৫) সমস্ত মুখম-ল ধৌত করা ও দাড়ি (থাকলে) খিলাল করা।
(৬) দুই হাত (প্রথমে ডান ও পরে বাম) কনুই সমেত ধৌত করা।
(৭) সম্পূর্ণ মাথা এবং কানের ভিতর অংশ ও পিছন অংশ মাসাহ করা।
(৮) দুই পা টাখনু সমেত ধৌত করা ও বাম হাতের আঙ্গুল দ্বারা পায়ের আঙ্গুল সমূহ খিলাল করা।
(৯) ওযূ শেষে বাম হাতে কিছু পানি নিয়ে লজ্জাস্থান বরাবর ছিটিয়ে দেয়া।
(১০) ওযূ শেষে দো‘আ পাঠ করা।
(ক) ওযূ শেষে পঠিতব্য দো‘আ :
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ، اللَّهُمَّ اجْعَلْنِيْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ وَاجْعَلْنِيْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنَ-
‘অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে তওবাকারীদের ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন’ (তিরমিযী)।
এ দো‘আর গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীছে এসেছে, ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, عَنْ عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ أَوْ فَيُسْبِغُ الْوُضُوْءَ ثُمَّ يَقُوْلُ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ . ‘যে ব্যক্তি পূর্ণভাবে ওযূ করবে ও কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। যেটা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে’ (মুসলিম হা/২৩৪; মিশকাত হা/২৮৯)।
(খ) ওযূ শেষে পঠিতব্য বিশেষ দো‘আ ও ফযীলত :
سُبْحَانَكَ أللهمّ وَبِحَمْدِكَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَّآ إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ.
উচ্চারণ : ‘সুবাহা-নাকা আল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লা আন্তা আস্তাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা’।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র এবং তোমার প্রশংসা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি তোমার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করে তোমার দিকে ফিরে যাচ্ছি’। (ছহীহ আত-তারগীব হা/২২৫)।
ফযীলত : আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ওযূ শেষে এই দো‘আটি পাঠ করে, سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أنت، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ، অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র এবং তোমার প্রশংসা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি তোমার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করে তোমার দিকে ফিরে যাচ্ছি’। দো‘আটি একটি বিশেষ মোহর দ্বারা মোহরাঙ্কিত করা হয়। অতঃপর সেটা আরশের নিচে রাখা হয়, ক্বিয়ামত পর্যন্ত সেই মোহর খোলা হয় না। (ছহীহ আত-তারগীব হা/২২৫)।
অন্যত্র দো‘আটির ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, সেই দো‘আটি তার জন্য একটি কাগজে লেখা হয় এবং তাতে সীল মেরে দেওয়া হয়, যা ক্বিয়ামত দিবস পর্যন্ত খোলা হয় না। বিশেষ করে এই দো‘আটি ‘মজলিসের কাফ্ফারা’ রূপে পরিচিত, যা কোন বৈঠকের শেষে পাঠ করলে উক্ত বৈঠকের মাঝে কৃত ভুলগুলোর ক্বাফ্ফারা হয়ে যায়। (আবূদাঊদ হা/৪৮৫৯; ছহীহ আত-তারগীব হা/১৫১৭)।