বিশুদ্ধ অন্তর দেহে স্থাপন করুন!

আল্লাহ তাআলা বলেন, اِلَّا مَنۡ اَتَی اللّٰهَ بِقَلۡبٍ سَلِیۡمٍ ‘কেবল (সাফল্য লাভ করবে) সে ব্যক্তি যে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট আসবে’ (শুআরা ২৬/৮৯)।

বিশুদ্ধ অন্তর বলতে শিরক-বিদআত, হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, দম্ভ-অহংকার, এমনকি দুনিয়াপ্রীতি থেকে মুক্ত ও অল্পে তুষ্ট পাখিদের মত আত্মা এমন মুমিন ব্যক্তির অন্তরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা কাফের ও মুনাফিকের অন্তর হয় অসুস্থ রোগাক্রান্ত ব্যাধীযুক্ত। আর এসবের মাধ্যমে পার্থিব ভোগ-বিলাসী হয়ে পড়ে এবং মূর্খতার অন্ধকার ও নৈতিক অধঃপতনে জড়িয়ে পড়ে। কারণ মু’মিনের অন্তর উক্ত সকল প্রকার রোগ-ব্যাধী ও নিফাক্বীর অপবিত্রতা থেকে মুক্ত থাকেন। মুমিন সর্বদা নিজেকে এসব থেকে পবিত্র রাখতে সদা আল্লাহর নিকট আশ্রয় কামনা করেন। এদের বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত করা প্রয়োজন, যেমন আন্তরিকতা, জ্ঞান, নিশ্চিততা, সৎকর্মের প্রতি ভালোবাসা এবং তার হৃদয়ে এর শোভা, এবং তার ইচ্ছা ও ভালোবাসাকে আল্লাহর ভালোবাসার অধীনস্থ করা এবং তার আকাঙ্ক্ষাগুলিকে আল্লাহর কাছ থেকে আসা জিনিসের অধীনস্থ করা।

ইবনে আব্বাস বলেন: (যে ব্যক্তি সুস্থ হৃদয় নিয়ে আল্লাহর কাছে আসে) সেই ব্যক্তি ব্যতীত যে সাক্ষ্য দেয় যে আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই।

সাঈদ বিন আল-মুসায়েব বলেন: সুস্থ অন্তরই সুস্থ, আর তা হলো মুমিনের হৃদয়, কারণ কাফের ও মুনাফিকের হৃদয় অসুস্থ। আল্লাহ তাআলা বলেন: “তাদের অন্তরে রোগ আছে” (সূরা বাকারা: ১০) ।

মুহাম্মদ ইবনে সিরীন বলেন: সুস্থ হৃদয় হলো সেই ব্যক্তি যে জানে যে আল্লাহ সত্য, কেয়ামত আসবে সন্দেহাতীতভাবে এবং আল্লাহ কবরস্থদের পুনরুত্থিত করবেন।

“কিয়ামতের দিন, কেবল সুস্থ হৃদয়, ঈমানে সুস্থ এবং অবাধ্যতা ও পাপ থেকে মুক্ত, মানুষের কোন উপকারে আসবে, সম্পদ ও সন্তানসন্ততি নয়। কারণ সম্পদ ও সন্তানসন্ততি কেবল তখনই কাজে আসবে যখন একজন সুস্থ হৃদয়ের অধিকারী হবে। সম্পদ তখনই কাজে আসবে যখন কেউ তা আল্লাহর জন্য আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততার সাথে ব্যয় করবে, অন্যথায় একজন কোটিপতিও সেখানে দরিদ্র হবে। সন্তানরাও ততটুকুই সাহায্য করবে যতটুকু একজন ব্যক্তি তাদের ঈমান ও সদাচারে তার সর্বোচ্চ ক্ষমতায় শিক্ষিত করতে পারে; অন্যথায় পুত্র নবী হলেও, তার পিতা যদি অবিশ্বাসী অবস্থায় মারা যান, তাহলে তিনি শাস্তি থেকে রেহাই পাবেন না, কারণ এমন পিতার তার সন্তানদের কল্যাণে কোন অংশ থাকবে না।”

যে অন্তরে প্রচুর্যতা বিদ্যমান :

মনের সুখই তো প্রকৃত সুখ। আর অন্তরের ধনাঢ্যতাই প্রকৃত সম্পদশালী। রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ، وَلَكِنَّ الْغِنَىْ غِنَى النَّفْسِ ‘ধনের আধিক্য হ’লেই ধনী হয় না, বরং অন্তরের ধনীই হ’ল প্রকৃত ধনী’। [মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫১৭০। ] অন্যত্র বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,  বাহ্যিক ঐশ্বর্যে যে ধনী মূলতঃ সে ধনী নয়। কেবল মনের ধনীই বড় ধনী।  আল্লাহ যখন তাঁর কোন বান্দার কল্যাণ চান, তখন তিনি তার অন্তর অভাবমুক্ত করে দেন এবং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি দান করেন। আর যখন আল্লাহ কোন বান্দার অকল্যাণ চান, তখন তিনি তার দু’চোখের মাঝে দারিদ্রতা স্থাপন করেন’। (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৬২১৭, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৩৫০)।

ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : মনের প্রাচুর্যতাই হলো প্রশংসনীয় মহান এবং উপকারী ধনী।

ইবনু হাজার ‘আসক্বালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মনের ধনাঢ্যতা অর্জন হয় অন্তর তথা কলবের ধনাঢ্যতা থেকে। অর্থাৎ সে সকল বিষয়ে তার রবের মুখাপেক্ষী হবে। আর সে নিশ্চিতভাবে জানবে যে তার রবই তাকে দান করে থাকেন। আর না দিলেও তিনি দেন না। বিধায় তার রবের ফায়সালার উপর সে রাজি খুশি থাকে। তাই নিআমাত পেয়ে সে তার রবের শুকরিয়া আদায় করে। আর বিপদে পতিত হয়ে সে তার রবেরই অভিমুখী হয়। অতএব রবের মুখাপেক্ষিতাই তাকে অন্যের দ্বারস্থ হওয়া থেকে যথেষ্ট করে দেয়।  (মিক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১১শ খণ্ড, হা, ৬৪৪৬)

পাখির মত অন্তর :

একটি পাখির অন্তরের সাথে জন্নাতী বান্দার অন্তরের মিল রয়েছে। যাদের অন্তর নরম, ভীত, কোমল, কৃতজ্ঞ, তাক্বওয়াীল ও সর্বদা আল্লাহর উপর  ভরসা রাখে, অল্পে তুষ্ট হয় এবং নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সকল কাজ সম্পাদন করে। অর্থাৎ- আখিরাতের কথা চিন্তা করে বিচরণ করে দুনিয়াতে। আবূ হুরাইরাহ্ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, এমন কিছু লোক জান্নাতে যাবে, যাদের অন্তর পাখীর অন্তরের মতো’ (মুসলিম হা/৭০৫৪)।

আর অন্তর কলুষিত হলে তা অনুভূতিহীন হয়ে পড়ে। কুপ্রবৃত্তির আধিপত্যের কারণে মানুষ যখন মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে, তখন সে পাশবিক যেকোনো আচরণে কুণ্ঠাবোধ করে না। আল্লাহ বলেন, ‘কখনো নয়; বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের হৃদয়ে মরিচা ধরিয়েছে। ’ (মুতাফফিফিন, : ১৪)

আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে যারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিহার করবে, তারাই সফল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সে-ই সফলকাম হবে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করবে। আর সে-ই ব্যর্থ হবে, যে নিজেকে কলুষিত করবে।’ (শামস : ১০-১১)

অন্তর পরিশুদ্ধ করার কতিপয় উপায় :

আবু আবদুল্লাহ নোমান বিন বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘নিশ্চয় হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। এ দুইয়ের মধ্যে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, বেশির ভাগ মানুষ সেগুলো জানে না। অতঃপর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বিষয় থেকে বেঁচে থাকে, সে নিজের দ্বিন ও সম্মানকে ত্রুটিমুক্ত রাখে। আর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক কাজে লিপ্ত হলো সে হারামে লিপ্ত হলো। যেমন কোনো রাখাল, তার (গবাদি) পশু সংরক্ষিত এলাকার আশপাশে চরায়। আর তখন আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, যেকোনো সময় কোনো পশু তার মধ্যে ঢুকে পড়বে। সাবধান! প্রত্যেক বাদশাহরই সংরক্ষিত এলাকা থাকে। আর আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হচ্ছে তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো। সাবধান! নিশ্চয়ই মানবদেহে একখণ্ড গোশতের টুকরো আছে, যখন তা সুস্থ হয়ে যায় গোটা শরীরটাই সুস্থ হয়ে যায় এবং যখন তা অসুস্থ হয়ে যায় গোটা শরীরই অসুস্থ হয়ে যায়। জেনে রেখো! এটাই হচ্ছে কলব।’ (মুসলিম হা/৪১৭৮)

১.  অন্তরের পবিত্রতার জন্য দোয়া করা : অন্তরের ব্যাধির ব্যাপারে নিজেকে বেশী বেশী অপরাধী মনে করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই মানুষের অন্তর আল্লাহর দুই আঙুলের মধ্যে অবস্থিত, তিনি তা যেমন ইচ্ছা পরিবর্তন করেন।’ (মুসলিম হা/৬৯২১)।

 তাছাড়া অন্তরের পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধির জন্য এবং আল্লাহর বিধান পালনে তার দৃঢ়তার জন্য আল্লাহর কাছে দোআ করা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া করতেন, ‘হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে আপনার আনুগত্যে দৃঢ় করে দেন।’ (মুসনাদে আহমদ হা/৯৪২০)। অন্যত্র বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সুস্থ অন্তর (কলব) কামনা করছি।’ (মুসনাদে আহমদ হা/১৭১১৪)।

২. কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে আত্মশুদ্ধি করা : আত্মশুদ্ধির বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! রাসুল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহবান করেন যা তোমাদের প্রাণবন্ত করে, তখন তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ডাকে সাড়া দেবে। জেনে রেখো! আল্লাহ মানুষ ও তার অন্তরের মধ্যবর্তী হয়ে থাকেন।’(সুরাঃ আনফাল : ২৪)

৩. আল্লাহর স্মরণ অন্তর নরম করে : আল্লাহর জিকিরে মানব হৃদয় প্রশান্ত ও নরম হয়। এতে আত্মার পরিশুদ্ধি লাভ হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘জেনে রেখো! আল্লাহর জিকিরেই অন্তর প্রশান্ত হয়।’ (রাআদ : ২৮)

৪. এতিম অসহায় মানুষের পাশে থাকা : হাদিস শরিফে এসেছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে তার অন্তরের কঠোরতা সম্পর্কে অভিযোগ করল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘যখন তুমি তোমার অন্তরকে নরম করার ইচ্ছা করবে তখন এতিমের মাথায় হাত বোলাবে এবং মিসকিনকে খানা খাওয়াবে।’ (মুসনাদ আহমদ হা/৯০১৮) অধিকাংশ গরীব ও মিসকিন মানুষ জান্নাতি। রাসূল (ছাঃ) গরীব ও অসহায় মিসকিনদের সাথে হাশর নাশর করার জন্য দোআ করতেন। দুনিয়ার দারিদ্রতা আপনার জন্য কিয়ামতের দিনে কল্যাণ। শর্ত আপনাকে প্রকৃত মুমিন হতে হবে। মুমিনের জীবনে অভাব থাকবে কিন্ত চাহিদা থাকবে না। আবার অল্পে তুষ্ট থাকবে, কিন্তু হতাশাগ্রস্থ হবে না।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আমি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম। দেখলাম, যারা জান্নাতে প্রবেশ করছে তাদের অধিকাংশই গরীব-মিসকীন। আর ধনীদেরকে (হিসাবের জন্য) আটকে রাখা হয়েছে …।মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৩৩। অন্যত্র তিনি বলেন, আমি জান্নাতে উঁকি মেরে দেখলাম যে, এর অধিকাংশ অধিবাসী হ’ল গরীব-মিসকীন …। মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৩৪।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে বিবাদ হ’ল। জাহান্নাম বলল, আমার মধ্যে উদ্ধত অহংকারী লোকেরা থাকবে। আর জান্নাত বলল, আমার মধ্যে দুর্বল ও দরিদ্র ব্যক্তিরা থাকবে। অতঃপর আল্লাহ উভয়ের মধ্যে ফায়ছালা করলেন এইভাবে যে, তুমি জান্নাত আমার রহমত, তোমার দ্বারা আমি যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করব। আর তুমি জাহান্নাম আমার শাস্তি, তোমার দ্বারা আমি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিব। তোমাদের উভয়কেই পরিপূর্ণ করা আমার দায়িত্ব’। আহমাদ হা/১১৭৫৪; আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৬১৫, সনদ ছহীহ।

৫. মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণ করা : মৃত্যুর স্মরণের মাধ্যমে মানুষের অন্তর আল্লাহমুখী হয়। আর তা স্মরণে আসে কবরের পাশে থেকে নিজেকে কবরবাসীদের অন্তর্ভূক্ত মনে করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা তা জিয়ারত করো। কেননা নিশ্চয়ই তা আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয় এবং অন্তরের উন্নতি ঘটায়।’ (মুসনাদে আহমদ হা/২৩০০৫)

৬. অন্তরের কঠোরতা দূর করা : আল্লাহ তাআলা একাধিক স্থানে কঠোর হৃদয়ের নিন্দা করেছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে সত্য গ্রহণ করার এবং সঠিক পথ অবলম্বন করার সুমতি লাভ করেছে, অতঃপর সে তার অন্তরের প্রশস্ততার কারণে আল্লাহর দ্বীনের আলোর উপর প্রতিষ্ঠিত, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান হতে পারে, যার অন্তর ইসলামের প্রতি কঠোর, তার বক্ষ সংকীর্ণ এবং ভ্রষ্টতার অন্ধকারে নিমজ্জিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন ফলে সে তার রাবের দেয়া নূরের উপর রয়েছে, সে কি তার সমান যে এরূপ নয়? অতএব দুর্ভোগ সে কঠোর হৃদয় ব্যক্তিদের জন্য, যারা আল্লাহর স্মরণ বিমুখ! তারা স্পষ্ট বিভ্ৰান্তিতে আছে (জুমার : ২২)।

৭. অন্তরকে কলুষমুক্ত রাখা : পরিশুদ্ধ অন্তর রাখতে গেলে সত্য ভাষী হওয়া এবং নিষ্কলুষ চরিত্র অর্জন করা। আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন,  রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলা হলো, কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি বলেন, প্রত্যেক বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী সত্যভাষী ব্যক্তি। (ইবনে মাজাহ: হা/৪২১৬) হাদিসের শেষাংশে রাসুল (স.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, সত্যভাষীকে তো আমরা চিনি, কিন্তু বিশুদ্ধ অন্তরের ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, সে হলো পূত-পবিত্র নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ, যার কোনো গুনাহ নেই, নেই কোনো দুশমনি, হিংসা-বিদ্বেষ, আত্ম-অহমিকা ও কপটতা। (ইবনে মাজাহ: হা/৪২১৬)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) কলুষিত আত্মার পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, ‘সাবধান! নিশ্চয়ই মানবদেহে একখণ্ড গোশতের টুকরো আছে, যখন তা সুস্থ হয়ে যায় গোটা শরীরটাই সুস্থ হয়ে যায় এবং যখন তা অসুস্থ হয়ে যায় গোটা শরীরই অসুস্থ হয়ে যায়। জেনে রেখো! এটাই হচ্ছে কলব।’ (মুসলিম হা/৪১৭৮)

মানুষের মন হল ফাকা ময়দানে পড়ে থাকা এক টুকরা হাল্কা পালকের মত। বাতাসের সামান্য দোলায় সে মন দুলতে থাকে, হিলতে থাকে, ছুটতে থাকে। মন হল পরিবর্তনশীল। সে মন থাকে আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মাঝে। তিনি মানুষের মন ঘুরিয়ে ও ফিরিয়ে থাকেন। অতএব এ বলেও দোআ করো তার কাছে, يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ

অর্থাৎ, হে মনের গতি পরিবর্তনকারী! আমার মনকে তোমার দ্বীনের উপর স্থির রাখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loader-image

Scroll to Top