‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর তাৎপর্য

লেখক : নাফিয আল-মাহমূদ
(‘আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী’-এর দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র)
সম্পাদনা : লিলবর আল-বারাদী

ভূমিকা : আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতীকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর একত্ববাদে সাক্ষ্য দেয়া ও ইবাদত করা জন্য। আমলের পূর্বে ঈমানের মজবুতি সুদৃঢ় করা উচিৎ। আর সেই ঈমানের প্রধান শাখা হ’ল لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ. অর্থাৎ- ‘নেই কোন ইলাহ্ (সত্য উপাস্য) আল্লাহ ব্যতীত’। এই বাক্যটির তাৎপর্য অপরিসীম। যা নিচে তুলে ধরা হ’ল-

১. নবী-রাসূলগণের দাওয়াতের প্রথম ধাপ :
প্রত্যেক যুগের মানুষ যখনই তাওহীদ থেকে দীরে গিয়ে শিরকের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে, তখনই আল্লাহ তা‘আলা সেই জাতির জন্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। আর নবী-রাসূলগণের প্রথম দাওয়াত ছিল لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ. (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ)। আর এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘(হে নবী) তোমার পূর্বে যে রাসূলই আমরা পাঠিয়েছি, তার প্রতি অহি পাঠিয়েছি এই কথা বলে যে, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ অর্থাৎ- ‘নেই কোন ইলাহ্ (সত্য উপাস্য) আল্লাহ ব্যতীত’। অতএব, তোমরা কেবল আমারই ইবাদত করো’ (আম্বিয়া ২১/২৫)

২. দ্বীনের দাওয়াতের প্রথম বাক্য :
কোন অমুসলিম যদি ইসলাম গ্রহণ করতে চায়, তাহলে তাকে এ কালেমার সাক্ষ্য দিতে হয়। রাসূল (ছাঃ) যখন কোন অমুসলিম দেশে দ্বীনের দাওয়াতের জন্য দাঈ পাঠাতেন, তখন তিনি সর্বপ্রথম এই কালেমার দাওয়াত দিতে নির্দেশ করতেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, মু‘আয (রাঃ)-কে ইয়ামান দেশে (শাসক হিসেবে) প্রেরণ করেন। অতঃপর বললেন, সেখানকার অধিবাসীদেরকে এ সাক্ষ্য দানের প্রতি আহবান করবে যে, لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ‘আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহ্র রাসূল’…।১

৩. ঈমানের সবচেয়ে উত্তম শাখা :
‘ঈমান’ হ’ল অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের সমন্বিত নাম। পৃথিবীতে মানুষে মানুষে ধর্মীয় মূল পার্থক্য হ’ল ঈমান। আর এই শাখা সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, أَلَمْ تَرَ كَيْفَ ضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا كَلِمَةً طَيِّبَةً كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِي السَّمَاءِ. ‘তুমি কি দেখ না, আল্লাহ কীভাবে উপমা পেশ করেছেন? কালিমা ত্বাইয়্যিবা, যা একটি ভাল বৃক্ষের ন্যায়, যার মূল সুস্থির আর শাখা-প্রশাখা আকাশে’ (ইবরাহীম ১৪/২৪)
সবচেয়ে উত্তম শাখা হ’ল ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ شُعْبَةً فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ. ‘ঈমানের সত্তরের অধিক শাখা রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বোত্তম হ’ল তাওহীদের ঘোষণা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং সর্বনিম্ন হ’ল রাস্তা হ’তে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা। আর লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা’।২

ঈমানের মধ্যে অনেক স্বভাব বা কার্যাবলী বিদ্যমান। এটি সর্বজনবিদিত যে, শাখা, পাতা ও ফল গাছের অংশ। গাছ বিদ্যমান থাকলে তার শাখা, পাতা ও ফল থাকতেও পারে, নাও পারে। অনুরূপ মূল ঈমান বিদ্যমান থাকলেও ‘আমল থাকতেও পারে নাও থাকতে পারে। অতএব ঈমানের সাথে ‘আমলের সম্পর্ক হলো গাছের সাথে শাখা, পাতা ও ফলের সম্পর্কের ন্যায়।

শারী‘আতের পরিভাষায় এমন স্বভাবকে হায়া বা লজ্জা বলা হয় যা মানুষকে কোন খারাপ কাজ হতে দূরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করে এবং প্রাপকের প্রাপ্য দানে কোন প্রকার অলসতা থেকে বিরত রাখে। এজন্যেই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে ‘‘লজ্জার পুরাটাই কল্যাণকর’’।

৪. পাপের কাফ্ফারায় উত্তম আমল :
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। দুনিয়াতে মানুষ ভুলে শয়তানের ফাঁদে পড়ে পাপের কাজে জড়িয়ে পড়ে। আর তাই এই কালেমা পাপের কাফ্ফারা স্বরূপ সবচেয়ে উত্তম আমলও বটে। একদা আবূ যার (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ)-কে বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, إِذَا عَمِلْتَ سَيِّئَةً فَأَتْبِعْهَا حَسَنَةً تَـمْحُهَا ‘পাপ কাজ করার সাথে সাথেই সৎ আমল করবে, তাহ’লে এটা তোমার পাপকে মিটিয়ে দিবে’। বর্ণনাকারী বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলা কি সৎ আমল’? তিনি বললেন, هِيَ أَفْضَلُ الْـحَسَنَاتِ ‘এটা তো সর্বোৎকৃষ্ট সৎ আমল’।৩

অপেশাদার চোর ও যেনাকারী ব্যক্তিও জান্নাতে যাবে, যদি সে ইখলাছের সাথে এ কালেমা পাঠ করে। আবূ যার (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে এসে দেখি তিনি সাদা কাপড় জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছেন। এরপরে আবার ফিরে এসে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখি। অতঃপর আবার এসে দেখি তিনি জাগ্রত হয়েছেন। আমি রাসূল (ছাঃ)-এর পাশে বসি। তখন তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তি বলে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ এবং এর ওপর মৃত্যুবরণ করে, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ কথা শুনে আবূ যার (রাঃ) বললেন, সে যদি যিনা করে ও চুরি করে তবুও? রাসূল (ছাঃ) বলেন, সে যদি যিনা করে ও চুরি করে তবুও জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবূ যার (রাঃ) এভাবে রাসূল (ছাঃ)-কে তিনবার জিজ্ঞাসা করেন, প্রতিবারই তিনি একই জবাব দেন। অতঃপর চতুর্থবার একই প্রশ্নের জওয়াবে তিনি বললেন, আবূ যারের নাক ধুলোই মলিন হোক’।৪

৫. কিয়ামতের দিনে শাফায়াতের উছিলা :
কিয়ামতের কঠিন দিনে রাসূল (ছাঃ)-এর শাফায়াত প্রয়োজন হবে। আর তারাই শাফায়াত লাভে সফল হবে, যারা এ কালেমা ইখলাছের সাথে পাঠ করবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ خَالِصًا مِنْ قَلْبِهِ أَوْ نَفْسِهِ. ‘ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান হবে ঐ ব্যক্তি, যে খালেছ অন্তরে বলে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’।৫ অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলবে এই কালিমা ঐ সময় মুক্তি দিবে, যখন তার উপর মুছীবত আসবে’।৬

কিয়ামতের দিন আল্লাহর নবীর শাফা’আত পাওয়ার মূল যোগ্যতা ও শর্ত হবে ঈমান, যার মূলমন্ত্র হলো ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ। ঈমান বাড়ে এবং কমে। অতএব এক যাররা পরিমাণ ঈমান থাকলেও সে সর্বশেষে শাফা’আতের আওতায় পড়বে। যে ব্যক্তি খালেস অন্তরে এই ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করবে যাতে কোন প্রকার লৌকিকতা, কপটতা, সন্দেহ এবং শির্ক থাকবে না; কিয়ামতের দিন প্রথম পর্যায়েই সে শাফা’আত পেয়ে ধন্য হবে।
মু’মিনেরা প্রত্যেকেই শাফা’আতের সৌভাগ্য লাভ করবে, কিন্তু হাদীসে বর্ণিত খালেস অন্তরের মু’মিনগণ শাফা’আতের অধিক মাত্রা পেয়ে ধন্য হবে। তারা হাশরের ময়দানের মহাভীতিকর পরিস্থিতিতে (আরশের ছায়াতলে অথবা বিশেষ রহমতের আশ্রয় পাওয়ার) সুপারিশপ্রাপ্ত হবে, যা অন্যেরা পাবে না।

কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আহলে তাওহীদ ছাড়া কেউ শাফা’আতের মর্যাদা লাভ করতে পারবে না। অথবা এর দ্বারা উদ্দেশ্য ঐ ব্যক্তি যার ‘আমলের দ্বারা রহমত প্রাপ্তির অধিকারী এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। সে আমার শাফা’আত পেয়ে ধন্য হবে।
আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইতোপূর্বে অতিবাহিত হয়েছে যে, শাফা’আত লাভের সৌভাগ্য তথা ঈমানের ফলশ্রুতিতে এবং তার জন্য অধিক আশা রাখার কারণে হবে অথবা আমলের কারণে হবে।
আর ‘আমল এবং ইয়াক্বীনের মারাতিব বা স্তর বিভিন্ন রয়েছে। অতএব স্তর ভিত্তিতেই মর্যাদার কম বেশি হবে। এজন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকেই যদি লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ হয় তবে সে শাফাআতের সর্বোচ্চ সৌভাগ্য লাভ করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১ম খণ্ড হা. ৯৯, ২৩৫ পৃ.)।

৬. এ কালেমা পাঠে আসমানের দরজা খুলে যায় :
যদি কোন ব্যক্তি এ কালেমা ইখলাছের সাথে পাঠ করে এবং কবীরা গুণাহ থেকে বেঁচে থাকে, তবে তার জন্য আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং তা আরশে পৌঁছে যায়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَا قَالَ عَبْدٌ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ قَطُّ مُخْلِصًا، إِلَّا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ، حَتَّى تُفْضِيَ إِلَى العَرْشِ، مَا اجْتَنَبَ الكَبَائِرَ. ‘কোন বান্দা একনিষ্ঠতার সাথে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করলে তার জন্য আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। ফলে সেই কালেমা আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে’।৭

৭. জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম চাবি :
জান্নাতের চাবি হ’ল ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যার শেষ কালেমা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।৮

মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশ করবে খাস করে শাস্তির পূর্বে অথবা তাকে তার পাপনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে তার পরে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তবে প্রথমটিই বেশি প্রাধান্য অন্য মু’মিনের সাথে পার্থক্য সৃষ্টির জন্য যাদের শেষ বাক্য এই কালিমা ছিল না ।

ইবনে রাসলান বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের বিষয়টি যদি সে পাপী হয় এবং তাওবাকারী না হয় তাহলে প্রথমবারেই (জান্নাতে প্রবেশ) আল্লাহর ইচ্ছার সাথে সংশ্লিষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন অথবা শাস্তির পরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। দ্বিতীয়তঃ সম্ভাবনা রয়েছে তার শেষ বাক্য কালিমার জন্য সম্মান স্বরূপ তাকে ক্ষমা করে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। যা অন্য মু’মিন ব্যক্তির ক্ষেত্রে শেষ বাক্য কালিমা পড়ার তাওফীক হয়নি। আমি ভাষ্যকার এর নিকট দ্বিতীয় মতটিই গ্রহণযোগ্য।

ওয়াহাব বিন মুনাবিবহ (রহঃ)-কে বলা হ’ল, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ কি জান্নাতের চাবি নয়? তিনি বললেন, অবশ্যই। তবে প্রত্যেক চাবিরই দাঁত থাকে। যদি তুমি দাঁতওয়ালা চাবি নিয়ে যাও, তবে তোমার জন্য জান্নাত খোলা হবে। অন্যথায় তা তোমার জন্য খোলা হবেনা’ (কালেমার দাঁত হ’ল নেক আমল)।৯ অন্যত্র এসেছে, জাবির (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ (مخَلِصًا) دَخَلَ الْجَنَّةَ. ‘যে ব্যক্তি ইখলাছের সাথে বলবে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।১০

ব্যাখ্যা: ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ জান্নাতের চাবী’’ তবে কেউ যেন এ ধোঁকায় পতিত না হয় যে, শুধুমাত্র এ কালিমাহ্ পাঠ করলেই তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হবে। আর কোন ‘আমল ছাড়াই প্রথম শ্রেণীর জান্নাতীদের সাথে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রত্যেক চাবীরই দাঁত থাকে যা দ্বারা দরজা খোলা যায়? অতএব তুমি যদি এমন চাবী নিয়ে আসতে পারো যাতে দাঁত আছে তাহলেই দরজা খুলবে। আর দাঁত দ্বারা উদ্দেশ্য এমন সৎ ‘আমল যার সাথে কোন অসৎ ‘আমল মিশ্রিত থাকবে না। এ হাদীসে সৎ ‘আমলকে চাবীর দাঁতের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আর যদি দন্তহীন চাবী নিয়ে আসো তাহলে তোমার জন্য দরজা খোলা হবে না। ফলে তুমি প্রথম শ্রেণীর লোকেদের সাথে জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না। আর এটা অধিকাংশের বেলায় প্রযোজ্য। আর সঠিক কথা হলো কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহে জড়িত ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। এটাই সালাফী আলেমদের অভিমত।

ছালাত জান্নাতের চাবি মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ।১১

পরিশেষে, আমরা খালেছ অন্তরে এই কালেমা সর্বদা পাঠ করব এবং এর যাথাযথ সম্মান রক্ষা করব। আর আমাদের মৃত্যুর সময় যেন এই কালেমা শেষ বাক্য হয় এই কামনা করি। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন, আমীন।

———————————–

১. বুখারী হা/১৩৯৫।
২. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৫।
৩. আহমাদ হা/ ২১৪৮৭; আত-তারগীব হা/ ৩১৬২; সনদ ছহীহ।
৪. বুখারী হা/৫৮২৭; মুসলিম হা/১৫৪; মিশকাত হা/২৬; আহমাদ হা/২১৫০৪।
৫. বুখারী হা/৯৯; আহমাদ হা/৮৮৪৫; মিশকাত হা/৫৫৭৪।
৬. সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৯৩২; সনদ ছহীহ।
৭. তিরমিযী হা/৩৫৯০; ছহীহুল জামি‘ হা/৫৬৪৮; সনদ হাসান।
৮. আবুদাঊদ হা/৩১১৬; মিশকাত হা/১৬২১।
৯. বুখারী, মিশকাত, হা/৪৩ ‘ঈমান’ অধ্যায়।
১০. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৩৫৫।

১১. তিরমিযী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৬০৯।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loader-image

Scroll to Top