দ্বীনী ইলমে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

‘আক্বীদাহ ও দ্বীনী বিষয়ের ‘ইলম ছাড়াই সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা ও রাজনৈতিক কাজ-কর্মে লিপ্ত হওয়ার দ্বারা ব্যক্তির কোনো উপকার হয় না। বরং অহেতুক কাজে সময় অপচয় করা হয় মাত্র। সে হক্ব ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে না। অনেক ‘আক্বীদাহ জ্ঞানহীন ব্যক্তি এসকল কাজে লিপ্ত হয়ে নিজে পথভ্রষ্ট হয় এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করে।

তাদের নিকট সুস্পষ্ট কোনো ‘ইলম না থাকার কারণে তারা মানুষকে সংশয়ে ফেলে দেয়। এটা বিশেষ করে রাজনৈতিক আন্দোলনকারী দলবাদীরা যারা তাদের আলোচনা, বক্তৃতায়, বাণী ও লিখনিতে বিভিন্ন মুসলিম সমাজে রাজনৈতিক গোলযোগ সৃষ্টি করে। আমরা আল্লাহর নিকট তাদের জন্য হিদায়াত ও সঠিক দ্বীনের উপর অটল থাকা কামনা করি।

তাদের নিকট ভালো মন্দ নিরূপণ করা, কোনো বিষয় গ্রহণযোগ্য নাকি পরিত্যাজ্য, কোন কাজ কীভাবে সমাধান করতে হবে এ সংক্রান্ত কোন ‘ইলম নেই।

‘আক্বীদাহ ও দ্বীন সম্পর্কে বিশুদ্ধ ‘ইলম না থাকা সত্ত্বেও সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে লিপ্ত হওয়ার কারণে তাদের অনেকের নিকট সন্দেহ-সংশয়ের অবতারণা ঘটে। তারা হককে বাতিল এবং বাতিলকে হক্ব মনে করে।

তামীম আদ দারী (রহঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “‏ الدِّينُ النَّصِيحَةُ‏” ‘সদুপদেশ দেয়াই দ্বীন’। আমরা আরয করলাম, কার জন্য উপদেশ? তিনি বললেন, ‏”‏ لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ ‏” ‘আল্লাহ ও তার কিতাবের, তার রাসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের’ (মুসলিম হা/৫৫)।

ব্যাখ্যা :

* তামীম আদ দারী (রাযিঃ) হতে বুখারীতে কোন হাদীছ বর্ণনা নেই আর মুসলিমে এটা ব্যতীত নেই। “নাসীহাত” একটি আরাবী ও অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। যার একটি অর্থ সমস্ত কল্যাণ একত্রে করা। ঐরূপ কালাহ’ শব্দ, এটাও দু’রকম কল্যাণকে বুঝায়। কারও মতে, “নাসীহাত” এর আরেকটি অর্থ কারও ভিতর ত্রুটি থাকায় তাকে সংশোধনের — লক্ষ্যে আলোচনা করা। যেমন نصح الرجل ثوبه “উমুক ব্যক্তি তার ছেড়া কাপড় সেলাই করেছেন, যাতে তা পরার উপযুক্ত হয়।” তেমনি কারও ভিতর কোন ত্রুটি থাকায় নাসীহাত করার অর্থ হলো সংশোধন করা, যা তার জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর হয়।

প্রথমতঃ আল্লাহর দিকে নাসীহাত। অর্থাৎ- আল্লাহর প্রতি ঈমানের দিকে প্রত্যাবর্তন করা ও তার সঙ্গে শিরক না করার উপদেশ দেয়া।

দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর কিতাব “নাসীহাত” হলো এটা আল্লাহর কথা হিসেবে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করা তিনি অবতীর্ণ করেছেন মানুষের রচিত নয়, আর তার মত তৈরি করা পৃথিবীতে আল্লাহ ব্যতীত সকলে একত্রিত হয়েও পারবে না।

তৃতীয়তঃ তাঁর রসূলের দিকে “নাসীহাত” আল্লাহ তাকে মানুষের হিদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন বিশ্বাস করা। রাসূলের আদেশ ও নিষেধকে মেনে চলা, বিশ্বাস করা যে, তিনি শেষ নাবী ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

চতুর্থতঃ “নাসীহাত” মুসলিম শাসকের আনুগত্য করা যতক্ষণ কুরআন হাদীছ মুতাবিক নির্দেশ দিবে। জিহাদ যুদ্ধে শরীক হওয়া, তার পিছনে ছালাত আদায় করা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loader-image

Scroll to Top