ভূমিকা : দেশে বিভিন্ন দল ও উপদল রয়েছে। এদের উদ্ভব ভিন্ন ভিন্ন কারণে। বস্ত্তবাদী ও
অনৈসলামিক দলের পাশাপাশি ইসলামের নামেও দেশে বহু দল রয়েছে। যাদের সকলের
ধর্ম ইসলাম, ধর্মগ্রন্থ কুরআন, লক্ষ্য জান্নাত। কিন্তু তাদের অনেকের
আক্বীদা ইসলাম বিরোধী, কর্ম কুরআন-হাদীছ পরিপন্থী এবং তরীক্বা বিদ‘আতী। তাই
এসব দলের মধ্য থেকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীমের উপরে প্রতিষ্ঠিত দলকে বেছে নিয়ে
সেই দলের সাথে থাকা মুসলিমের কর্তব্য। আর হকপন্থী দল বা সংগঠনের পরিচয়
তুলে ধরাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য।
অনৈসলামিক দলের পাশাপাশি ইসলামের নামেও দেশে বহু দল রয়েছে। যাদের সকলের
ধর্ম ইসলাম, ধর্মগ্রন্থ কুরআন, লক্ষ্য জান্নাত। কিন্তু তাদের অনেকের
আক্বীদা ইসলাম বিরোধী, কর্ম কুরআন-হাদীছ পরিপন্থী এবং তরীক্বা বিদ‘আতী। তাই
এসব দলের মধ্য থেকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীমের উপরে প্রতিষ্ঠিত দলকে বেছে নিয়ে
সেই দলের সাথে থাকা মুসলিমের কর্তব্য। আর হকপন্থী দল বা সংগঠনের পরিচয়
তুলে ধরাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য।
দল বিভক্তির সূচনা :
৪র্থ
খলীফা আলী (রাঃ)-এর খেলাফতকালে ছিফফীনের যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ সংক্রান্ত
রাজনৈতিক মতভেদের ফলে সর্বপ্রথম খারিজী দলের উদ্ভব ঘটে। তার খেলাফতের
অবসানে উমাইয়া শাসনামলে শী‘আ ও মুরজিয়া প্রভৃতি দলের সূত্রপাত হয়। দিনে
দিনে ব্যক্তি, গোষ্ঠির মতাদর্শের ভিন্নতায় নতুন নতুন দল জন্ম লাভ করে।[1]
এরপর উমাইয়া, আববাসিয়া, ফাতিমিয়া, সেলজুকিয়া রাজত্বকালে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশে ব্যক্তি প্রভাবে, তাক্বলীদে শাখছীর প্রভাবে কত যে দল-মতের উদ্ভব
হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই।
খলীফা আলী (রাঃ)-এর খেলাফতকালে ছিফফীনের যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ সংক্রান্ত
রাজনৈতিক মতভেদের ফলে সর্বপ্রথম খারিজী দলের উদ্ভব ঘটে। তার খেলাফতের
অবসানে উমাইয়া শাসনামলে শী‘আ ও মুরজিয়া প্রভৃতি দলের সূত্রপাত হয়। দিনে
দিনে ব্যক্তি, গোষ্ঠির মতাদর্শের ভিন্নতায় নতুন নতুন দল জন্ম লাভ করে।[1]
এরপর উমাইয়া, আববাসিয়া, ফাতিমিয়া, সেলজুকিয়া রাজত্বকালে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশে ব্যক্তি প্রভাবে, তাক্বলীদে শাখছীর প্রভাবে কত যে দল-মতের উদ্ভব
হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই।
রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন,إِنَّ بَنِى
إِسْرَائِيلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ مِلَّةً
وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِى عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً كُلُّهُمْ فِى
النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً قَالُوا وَمَنْ هِىَ يَا رَسُوْلَ اللهِ
قَالَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِى- ‘বনু ইস্রাঈলগণ ৭২ দলে বিভক্ত
হয়েছিল, আমার উন্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ব্যতীত এদের সবাই
জাহান্নামে যাবে। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সে দল কোনটি? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বললেন, আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে আছি, তার উপরে যে দল থাকবে। হাকেম-এর
বর্ণনায় এসেছে যে, ‘আমি ও আমার ছাহাবীগণ আজকের দিনে যার উপরে আছি’।[2] অন্য
বর্ণনায় এসেছে, وَهِىَ الْجَمَاعَةُ ‘সেটি হ’ল জামা‘আত’।[3]
إِسْرَائِيلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِيْنَ مِلَّةً
وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِى عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً كُلُّهُمْ فِى
النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً قَالُوا وَمَنْ هِىَ يَا رَسُوْلَ اللهِ
قَالَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِى- ‘বনু ইস্রাঈলগণ ৭২ দলে বিভক্ত
হয়েছিল, আমার উন্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি দল ব্যতীত এদের সবাই
জাহান্নামে যাবে। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সে দল কোনটি? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বললেন, আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে আছি, তার উপরে যে দল থাকবে। হাকেম-এর
বর্ণনায় এসেছে যে, ‘আমি ও আমার ছাহাবীগণ আজকের দিনে যার উপরে আছি’।[2] অন্য
বর্ণনায় এসেছে, وَهِىَ الْجَمَاعَةُ ‘সেটি হ’ল জামা‘আত’।[3]
ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে এযাম এর যুগে দুনিয়ার সকল প্রান্তের মুসলিম এলাকা আহলেহাদীছ ছিল।[4]
হিজরী ৪র্থ শতকের আগ পর্যন্ত দুনিয়ার বুকে (কোন দল, কোন মানুষ) নির্দিষ্ট
একটি মাযহাবের অন্ধ অনুসারী ছিল না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ভাষায় নিন্দিত
৪র্থ শতাব্দী হিজরীতে তাক্বলীদে শাখছী বা ইমামদের অন্ধ অনুসরণের বিদ‘আত
চরমে পৌঁছে, এমনকি চার মাযহাব মান্য করা ফরয ঘোষণা করা হয়। মাযহাবী
তাক্বলীদের বাড়াবাড়ির পরিণামে হানাফী, শাফিঈ, শী‘আ, সুন্নীর দ্বন্দ্বে ৬৫৬
হিজরীতে হালাকু খাঁর আক্রমণে বাগদাদে আববাসীয় খেলাফত ধ্বংস হয়। পরে মিসরের
সুলতান রুকুনুদ্দীন বায়বারাসের আমলে ৬৫৮ হিজরীতে মিসরের রাজধানীতে
সর্বপ্রথম চার মাযহাবের লোকের জন্য চারজন পৃথক ক্বাযী নিয়োগ করা হয়। চার
মাযহাব বর্হিভূত কোন মাসআলা কুরআন-হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হ’লেও তা অনুসরণ
নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর বুরুজী মামলূক সুলতান ফরজ বিন বারকুক ৮০১
হিজরীতে মাযহাবী আলেমদের সন্তুষ্ট করার জন্য কা‘বা ঘরের চার পাশে চার
মুছাল্লা কায়েম করেন। ফলে মুসলিম উম্মাহ অন্ততঃ ছালাতের সময় এক হওয়ার সুযোগ
হ’তেও বঞ্চিত হয়। যারা এই বিভক্তির বিরোধী ছিল, তাদেরকে সরকারীভাবে
লাঞ্ছিত করা হয়, সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়, তাদেরকে ‘লা মাযহাবী’ বলে গালিও
দেওয়া হয় এবং ওয়াহাবী নামে আখ্যায়িত করে রাজনৈতিক ফায়েদা হাছিলের অপচেষ্টা
চালানো হয়।[5]
একটি মাযহাবের অন্ধ অনুসারী ছিল না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ভাষায় নিন্দিত
৪র্থ শতাব্দী হিজরীতে তাক্বলীদে শাখছী বা ইমামদের অন্ধ অনুসরণের বিদ‘আত
চরমে পৌঁছে, এমনকি চার মাযহাব মান্য করা ফরয ঘোষণা করা হয়। মাযহাবী
তাক্বলীদের বাড়াবাড়ির পরিণামে হানাফী, শাফিঈ, শী‘আ, সুন্নীর দ্বন্দ্বে ৬৫৬
হিজরীতে হালাকু খাঁর আক্রমণে বাগদাদে আববাসীয় খেলাফত ধ্বংস হয়। পরে মিসরের
সুলতান রুকুনুদ্দীন বায়বারাসের আমলে ৬৫৮ হিজরীতে মিসরের রাজধানীতে
সর্বপ্রথম চার মাযহাবের লোকের জন্য চারজন পৃথক ক্বাযী নিয়োগ করা হয়। চার
মাযহাব বর্হিভূত কোন মাসআলা কুরআন-হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হ’লেও তা অনুসরণ
নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়। এরপর বুরুজী মামলূক সুলতান ফরজ বিন বারকুক ৮০১
হিজরীতে মাযহাবী আলেমদের সন্তুষ্ট করার জন্য কা‘বা ঘরের চার পাশে চার
মুছাল্লা কায়েম করেন। ফলে মুসলিম উম্মাহ অন্ততঃ ছালাতের সময় এক হওয়ার সুযোগ
হ’তেও বঞ্চিত হয়। যারা এই বিভক্তির বিরোধী ছিল, তাদেরকে সরকারীভাবে
লাঞ্ছিত করা হয়, সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়, তাদেরকে ‘লা মাযহাবী’ বলে গালিও
দেওয়া হয় এবং ওয়াহাবী নামে আখ্যায়িত করে রাজনৈতিক ফায়েদা হাছিলের অপচেষ্টা
চালানো হয়।[5]
এভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক যুলুম সত্ত্বেও প্রতি যুগে
এমন কিছু হকপন্থী মুসলমান ছিলেন বা আছেন যারা কোন অবস্থাতেই ছহীহ হাদীছের
ঊর্ধ্বে কোন ব্যক্তিগত মতামতকে এক মুর্হূতের জন্যও মেনে নিতে রাযী নন। বলা
বাহুল্য এরাই ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে এ পর্যন্ত ‘আহলেহাদীছ’ নামে
পরিচিত।
এমন কিছু হকপন্থী মুসলমান ছিলেন বা আছেন যারা কোন অবস্থাতেই ছহীহ হাদীছের
ঊর্ধ্বে কোন ব্যক্তিগত মতামতকে এক মুর্হূতের জন্যও মেনে নিতে রাযী নন। বলা
বাহুল্য এরাই ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে এ পর্যন্ত ‘আহলেহাদীছ’ নামে
পরিচিত।
বাংলাদেশে প্রচলিত আন্দোলন :
বাংলাদেশে বর্তমানে
মূলতঃ দু’ধরনের আন্দোলন চলছে। ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘ইসলামী’। প্রত্যেকটিই
দু’ভাগে বিভক্ত। প্রথমতঃ ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির একভাগ ব্যক্তি জীবনে আস্তিক
বা ধর্মভীরু, কিন্তু বৈষয়িক জীবনে নাস্তিক বা ধর্মহীন। ব্যক্তি জীবনে
ধর্মের অনুসারী হ’লেও তারা বৈষয়িক জীবনে ধর্মহীন বিজাতীয় মতাদর্শের অন্ধ
অনুসরণ করে থাকেন। ফলে রাজনীতির নামে ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বৈরাচার এবং
অর্থনীতির নামে সূদ-ঘুষ-জুয়া-লটারী, মওজুদদারী ইত্যাদি পুঁজিবাদী
শোষণ-নির্যাতনকে তারা বৈধ ভেবে নেন, এই কারণে যে এগুলি ধর্মীয় বিষয় নয় বরং
বৈষয়িক ব্যাপার। আর তাই হারাম পয়সা দিয়ে রসগোল্লা কিনে নিজ নিষ্পাপ
সন্তানের মুখে তুলে দিতেও এদের হাত কাঁপে না। রাজনীতির নামে
ধর্মঘট-অবরোধ-হরতাল করে জনগণের ক্ষতি সাধন করতে, সূদ-ঘুষ ও ব্যভিচারের মত
প্রকাশ্য হারামকে হালাল করতে, অন্যদলের লোকের বুকে চাকু বসাতে, রগ কাটতে ও
বন্দুকের গুলীতে তার বুক ঝাঝরা করে দিতে এইসব রাজনীতিকদের বিবেকে একটুও
বাঁধে না। কারণ এসব ধর্ম নয় বরং বৈষয়িক ব্যাপার। এইভাগে লোকের সংখ্যাই
সর্বত্র বেশী।
মূলতঃ দু’ধরনের আন্দোলন চলছে। ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘ইসলামী’। প্রত্যেকটিই
দু’ভাগে বিভক্ত। প্রথমতঃ ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির একভাগ ব্যক্তি জীবনে আস্তিক
বা ধর্মভীরু, কিন্তু বৈষয়িক জীবনে নাস্তিক বা ধর্মহীন। ব্যক্তি জীবনে
ধর্মের অনুসারী হ’লেও তারা বৈষয়িক জীবনে ধর্মহীন বিজাতীয় মতাদর্শের অন্ধ
অনুসরণ করে থাকেন। ফলে রাজনীতির নামে ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বৈরাচার এবং
অর্থনীতির নামে সূদ-ঘুষ-জুয়া-লটারী, মওজুদদারী ইত্যাদি পুঁজিবাদী
শোষণ-নির্যাতনকে তারা বৈধ ভেবে নেন, এই কারণে যে এগুলি ধর্মীয় বিষয় নয় বরং
বৈষয়িক ব্যাপার। আর তাই হারাম পয়সা দিয়ে রসগোল্লা কিনে নিজ নিষ্পাপ
সন্তানের মুখে তুলে দিতেও এদের হাত কাঁপে না। রাজনীতির নামে
ধর্মঘট-অবরোধ-হরতাল করে জনগণের ক্ষতি সাধন করতে, সূদ-ঘুষ ও ব্যভিচারের মত
প্রকাশ্য হারামকে হালাল করতে, অন্যদলের লোকের বুকে চাকু বসাতে, রগ কাটতে ও
বন্দুকের গুলীতে তার বুক ঝাঝরা করে দিতে এইসব রাজনীতিকদের বিবেকে একটুও
বাঁধে না। কারণ এসব ধর্ম নয় বরং বৈষয়িক ব্যাপার। এইভাগে লোকের সংখ্যাই
সর্বত্র বেশী।
ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির অন্য ভাগটি ব্যক্তি ও বৈষয়িক
উভয় জীবনে ‘নাস্তিক’ অর্থাৎ উভয় জীবনে তারা ধর্মহীন বিজাতীয় মতাদর্শের
অনুসারী। যদিও তাদের কেউ কেউ ইসলামী নাম নিয়েই ময়দানে চলাফেরা করেন।
উভয় জীবনে ‘নাস্তিক’ অর্থাৎ উভয় জীবনে তারা ধর্মহীন বিজাতীয় মতাদর্শের
অনুসারী। যদিও তাদের কেউ কেউ ইসলামী নাম নিয়েই ময়দানে চলাফেরা করেন।
দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে ইসলামী দলগুলি। এরা মূলতঃ দু’ভাগে বিভক্ত। একভাগের
দলগুলি তাক্বলীদের অনুসরণে এবং অধিকাংশ জনগণের আচরিত মাযহাব অনুযায়ী
ব্যক্তি ও বৈষয়িক জীবনে ইসলামী আইন ও শাসন চান। এরা বাহ্যিকভাবে বিশেষ একজন
সম্মানিত ইমামের তাক্বলীদের দাবীদার হ’লেও বাস্তবে পরবর্তী ফক্বীহদের রচিত
বিভিন্ন ফিক্বহ এবং পীর-মাশায়েখ, মুরববী ও ইসলামী চিন্তাবিদ নামে পরিচিত
বিভিন্ন ব্যক্তির অনুসারী।
দলগুলি তাক্বলীদের অনুসরণে এবং অধিকাংশ জনগণের আচরিত মাযহাব অনুযায়ী
ব্যক্তি ও বৈষয়িক জীবনে ইসলামী আইন ও শাসন চান। এরা বাহ্যিকভাবে বিশেষ একজন
সম্মানিত ইমামের তাক্বলীদের দাবীদার হ’লেও বাস্তবে পরবর্তী ফক্বীহদের রচিত
বিভিন্ন ফিক্বহ এবং পীর-মাশায়েখ, মুরববী ও ইসলামী চিন্তাবিদ নামে পরিচিত
বিভিন্ন ব্যক্তির অনুসারী।
আর এক ভাগে রয়েছেন তারা, যারা
তাক্বলীদমুক্তভাবে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের ব্যক্তি ও
পারিবারিক জীবন এবং দেশের আইন ও শাসন ব্যবস্থা কামনা করেন। যারা ব্যক্তি ও
বৈষয়িক উভয় ক্ষেত্রে জাতীয় ও বিজাতীয় উভয় প্রকার তাক্বলীদ হ’তে মুক্ত থেকে
নিরপেক্ষভাবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের সার্বিক জীবন
পরিচালনা করতে চান। এরাই হ’লেন ‘আহলেহাদীছ’।[6]
তাক্বলীদমুক্তভাবে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের ব্যক্তি ও
পারিবারিক জীবন এবং দেশের আইন ও শাসন ব্যবস্থা কামনা করেন। যারা ব্যক্তি ও
বৈষয়িক উভয় ক্ষেত্রে জাতীয় ও বিজাতীয় উভয় প্রকার তাক্বলীদ হ’তে মুক্ত থেকে
নিরপেক্ষভাবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের সার্বিক জীবন
পরিচালনা করতে চান। এরাই হ’লেন ‘আহলেহাদীছ’।[6]
এই দলবিভক্তি
সত্ত্বেও ক্বিয়ামত পর্যন্ত একটি দল সর্বদা হকের উপরে টিকে থাকবে। এ
প্রসঙ্গে রাসূল (ছাঃ) বলেন, لاَ تَزَالُ طَائِـفَةٌ مِنْ أُمَّتِى
ظَاهِرِيْنَ عَلَى الْحَقِّ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى
يَأْتِىَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَالِكَ- ‘চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি
দল হক্বের উপরে বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না
এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে’।[7]
সত্ত্বেও ক্বিয়ামত পর্যন্ত একটি দল সর্বদা হকের উপরে টিকে থাকবে। এ
প্রসঙ্গে রাসূল (ছাঃ) বলেন, لاَ تَزَالُ طَائِـفَةٌ مِنْ أُمَّتِى
ظَاهِرِيْنَ عَلَى الْحَقِّ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى
يَأْتِىَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَالِكَ- ‘চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি
দল হক্বের উপরে বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না
এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে’।[7]
আহলেহাদীছের পরিচয় :
ফারসী সম্বন্ধ পদে ‘আহলেহাদীছ’ এবং আরবী সম্বন্ধ পদে ‘আহলুল হাদীছ’-এর
আভিধানিক অর্থ হাদীছের অনুসারী। পারিভাষিক অর্থে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের
নিরপেক্ষ অনুসারী। যারা জীবনের সর্বক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের
সিদ্ধান্তকে নিঃশর্তভাবে মেনে নিবেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে
কেরামের তরীক্বা অনুযায়ী নিজের সার্বিক জীবন গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন, কেবল
তাদেরকেই আহলেহাদীছ বলা হয়।[8] উক্ত পথের প্রচার ও প্রসারের কাজে যে সংগঠন
প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেটি ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’।
আভিধানিক অর্থ হাদীছের অনুসারী। পারিভাষিক অর্থে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের
নিরপেক্ষ অনুসারী। যারা জীবনের সর্বক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের
সিদ্ধান্তকে নিঃশর্তভাবে মেনে নিবেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে
কেরামের তরীক্বা অনুযায়ী নিজের সার্বিক জীবন গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকেন, কেবল
তাদেরকেই আহলেহাদীছ বলা হয়।[8] উক্ত পথের প্রচার ও প্রসারের কাজে যে সংগঠন
প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেটি ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’।
আহলেহাদীছ এমন
একটি গুণবাচক নাম, যা উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য ভূষণ সদৃশ। কর্মের সাথে,
আমলের সাথে, ইচ্ছার সাথে, সাধনার পথে, চিন্তার স্রোতে চেতনার ব্রতে এ নামে
মুসলিম জীবনের সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
একটি গুণবাচক নাম, যা উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য ভূষণ সদৃশ। কর্মের সাথে,
আমলের সাথে, ইচ্ছার সাথে, সাধনার পথে, চিন্তার স্রোতে চেতনার ব্রতে এ নামে
মুসলিম জীবনের সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
বিশ্বে যতগুলি ইসলামী আন্দোলন
রয়েছে, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন এবং নির্ভেজাল হ’ল ‘আহলেহাদীছ
আন্দোলন’। দুনিয়ার মানুষকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের মর্মমূলে জমায়েত
করার জন্য ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে চলে আসা ইসলামী আন্দোলনের নামই হ’ল
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’। পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে মানুষের সার্বিক জীবনকে
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে পরিচালনার গভীর প্রেরণাই আহলেহাদীছ
আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি। এই প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ ও উক্ত নৈতিক ভিত্তির উপরে
দৃঢ়ভাবে দন্ডায়মান হয়ে একজন মুমিন যাতে জান্নাতের পথের পথিক হ’তে পারে
আহলেহাদীছ আন্দোলন মানুষকে সেই পথ দেখায়। ‘আহলেহাদীছ’ তাই কোন মতবাদের নাম
নয়, এটি একটি পথের নাম। যে পথ আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি-র পথ, পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর পথ। সেই হক পথের দিকে আহবান জানায় আহলেহাদীছ
আন্দোলন।
রয়েছে, তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন এবং নির্ভেজাল হ’ল ‘আহলেহাদীছ
আন্দোলন’। দুনিয়ার মানুষকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের মর্মমূলে জমায়েত
করার জন্য ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে চলে আসা ইসলামী আন্দোলনের নামই হ’ল
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’। পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে মানুষের সার্বিক জীবনকে
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে পরিচালনার গভীর প্রেরণাই আহলেহাদীছ
আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি। এই প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ ও উক্ত নৈতিক ভিত্তির উপরে
দৃঢ়ভাবে দন্ডায়মান হয়ে একজন মুমিন যাতে জান্নাতের পথের পথিক হ’তে পারে
আহলেহাদীছ আন্দোলন মানুষকে সেই পথ দেখায়। ‘আহলেহাদীছ’ তাই কোন মতবাদের নাম
নয়, এটি একটি পথের নাম। যে পথ আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি-র পথ, পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর পথ। সেই হক পথের দিকে আহবান জানায় আহলেহাদীছ
আন্দোলন।
আহলেহাদীছের উৎপত্তি :
আহলেহাদীছের উৎপত্তি রাসূল
(ছাঃ)-এর যুগেই। আর ছাহাবায়ে কেরাম হ’লেন জামা‘আতে আহলেহাদীছের প্রথম সারির
সম্মানিত দল, যাঁরা এ নামে অভিহিত হ’তেন। যেমন- (১) প্রখ্যাত ছাহাবী আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) (মৃঃ ৭৪হিঃ) কোন মুসলিম যুবককে দেখলে খুশী হয়ে বলতেন,
مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُوَسِّعَ
لَكُمْ فِي الْمَجْلِسِ وَأَنْ نُفَهِّمَكُمُ الْحَدِيثَ فَإِنَّكُمْ
خُلُوْفُنَا وَأَهْلُ الْحَدِيْثِ بَعْدَنَا- ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অছিয়ত
অনুযায়ী আমি তোমাকে ‘মারহাবা’ জানাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে
তোমাদের জন্য মজলিস প্রশস্ত করার ও তোমাদেরকে হাদীছ বুঝাবার নির্দেশ দিয়ে
গেছেন। কেননা তোমরাই আমাদের পরবর্তী বংশধর ও পরবর্তী ‘আহলেহাদীছ’।[9]
(ছাঃ)-এর যুগেই। আর ছাহাবায়ে কেরাম হ’লেন জামা‘আতে আহলেহাদীছের প্রথম সারির
সম্মানিত দল, যাঁরা এ নামে অভিহিত হ’তেন। যেমন- (১) প্রখ্যাত ছাহাবী আবু
সাঈদ খুদরী (রাঃ) (মৃঃ ৭৪হিঃ) কোন মুসলিম যুবককে দেখলে খুশী হয়ে বলতেন,
مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
أَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُوَسِّعَ
لَكُمْ فِي الْمَجْلِسِ وَأَنْ نُفَهِّمَكُمُ الْحَدِيثَ فَإِنَّكُمْ
خُلُوْفُنَا وَأَهْلُ الْحَدِيْثِ بَعْدَنَا- ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অছিয়ত
অনুযায়ী আমি তোমাকে ‘মারহাবা’ জানাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে
তোমাদের জন্য মজলিস প্রশস্ত করার ও তোমাদেরকে হাদীছ বুঝাবার নির্দেশ দিয়ে
গেছেন। কেননা তোমরাই আমাদের পরবর্তী বংশধর ও পরবর্তী ‘আহলেহাদীছ’।[9]
(১) খ্যাতনামা তাবেঈ ইমাম শা‘বী (২২-১০৪হিঃ) ছাহাবায়ে কেরামের জামা‘আতকে
‘আহলুল হাদীছ’ বলতেন। যেমন একদা তিনি বলেন, لَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ
أَمْرِيْ مَا اسْتَدْبَرْتُ مَا حَدَّثْتُ إِلاَّ مَا أَجْمَعَ عَلَيْهِ
أَهْلُ الْحَدِيْثِ ‘এখন যেসব ঘটছে, তা আগে জানলে আমি কোন হাদীছ বর্ণনা
করতাম না, কেবল ঐ হাদীছ ব্যতীত, যার উপরে ‘আহলুল হাদীছ’ অর্থাৎ ছাহাবায়ে
কেরাম একমত হয়েছেন’।[10]
‘আহলুল হাদীছ’ বলতেন। যেমন একদা তিনি বলেন, لَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ
أَمْرِيْ مَا اسْتَدْبَرْتُ مَا حَدَّثْتُ إِلاَّ مَا أَجْمَعَ عَلَيْهِ
أَهْلُ الْحَدِيْثِ ‘এখন যেসব ঘটছে, তা আগে জানলে আমি কোন হাদীছ বর্ণনা
করতাম না, কেবল ঐ হাদীছ ব্যতীত, যার উপরে ‘আহলুল হাদীছ’ অর্থাৎ ছাহাবায়ে
কেরাম একমত হয়েছেন’।[10]
(৩) ছাহাবায়ে কেরামের শিষ্যমন্ডলী তাবেঈন ও
তাবে-তাবেঈন সকলে ‘আহলেহাদীছ’ ছিলেন। ইবনু নাদীম (মৃঃ ৩৭০ হিঃ) তাঁর
‘কিতাবুল ফিহরিস্ত’ গ্রন্থে, ইমাম খত্বীব বাগদাদী (৩৯২-৪৬৩ হিঃ) স্বীয়
‘তারীখু বাগদাদ’ দ্বাদশ ও চতুর্দশ খন্ডে এবং ইমাম হেবাতুল্লাহ লালকাঈ (মৃঃ
৪১৮ হিঃ) স্বীয় ‘শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদ …’ গ্রন্থে ছাহাবায়ে কেরাম হ’তে
শুরু করে তাঁর যুগ পর্যন্ত তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের
আহলেহাদীছ ওলামায়ে কেরাম ও নেতৃবৃন্দের নামের বিরাট তালিকা দিয়েছেন।
এতদ্ব্যতীত ‘আহলেহাদীছ-এর মর্যাদা’ শীর্ষক ‘শারফু আছহাবিল হাদীছ’ নামে ইমাম
খত্বীব বাগদাদীর একটি পৃথক বইও রয়েছে।
তাবে-তাবেঈন সকলে ‘আহলেহাদীছ’ ছিলেন। ইবনু নাদীম (মৃঃ ৩৭০ হিঃ) তাঁর
‘কিতাবুল ফিহরিস্ত’ গ্রন্থে, ইমাম খত্বীব বাগদাদী (৩৯২-৪৬৩ হিঃ) স্বীয়
‘তারীখু বাগদাদ’ দ্বাদশ ও চতুর্দশ খন্ডে এবং ইমাম হেবাতুল্লাহ লালকাঈ (মৃঃ
৪১৮ হিঃ) স্বীয় ‘শারহু উছূলি ই‘তিক্বাদ …’ গ্রন্থে ছাহাবায়ে কেরাম হ’তে
শুরু করে তাঁর যুগ পর্যন্ত তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের
আহলেহাদীছ ওলামায়ে কেরাম ও নেতৃবৃন্দের নামের বিরাট তালিকা দিয়েছেন।
এতদ্ব্যতীত ‘আহলেহাদীছ-এর মর্যাদা’ শীর্ষক ‘শারফু আছহাবিল হাদীছ’ নামে ইমাম
খত্বীব বাগদাদীর একটি পৃথক বইও রয়েছে।
(৪) ইমাম আবু হানীফা (৮০-১৫০
হিঃ), ইমাম মালেক (৯৩-১৭৯ হিঃ), ইমাম শাফেঈ (১৫০-২০৪ হিঃ), ইমাম আহমাদ বিন
হাম্বল (১৬৪-২৪১ হিঃ) সকলেই ‘আহলেহাদীছ’ ছিলেন। স্বীয় যুগে হাদীছ তেমন
সংগৃহীত না হওয়ার ফলে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) অধিকহারে রায় ও ক্বিয়াসের
আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে তাঁকে إِمَامُ أَهْلِ الرَّأْىِ বা ‘আহলুর রায়দের
ইমাম’ বলা হয়ে থাকে। তিনি নিজে কোন কিতাব লিখে যাননি। বরং শিষ্যদের অছিয়ত
করে গিয়েছেন এই বলে যে, إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ ‘যখন
ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব’।[11]
হিঃ), ইমাম মালেক (৯৩-১৭৯ হিঃ), ইমাম শাফেঈ (১৫০-২০৪ হিঃ), ইমাম আহমাদ বিন
হাম্বল (১৬৪-২৪১ হিঃ) সকলেই ‘আহলেহাদীছ’ ছিলেন। স্বীয় যুগে হাদীছ তেমন
সংগৃহীত না হওয়ার ফলে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) অধিকহারে রায় ও ক্বিয়াসের
আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে তাঁকে إِمَامُ أَهْلِ الرَّأْىِ বা ‘আহলুর রায়দের
ইমাম’ বলা হয়ে থাকে। তিনি নিজে কোন কিতাব লিখে যাননি। বরং শিষ্যদের অছিয়ত
করে গিয়েছেন এই বলে যে, إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ ‘যখন
ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব’।[11]
প্রখ্যাত ছাহাবী আবু
হুরায়রা (রাঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সহচর ছিলেন। যিনি ৫৩৭৪টি হাদীছ
বর্ণনা করে হাদীছের শ্রেষ্ঠ রাবীরূপে বিবেচিত। যার নিকট থেকে ৮ শতাধিক
ছাহাবী ও তাবেঈ হাদীছ গ্রহণ ও শ্রবণ করেছেন। তাঁকে আহলেহাদীছ নামে অভিহিত
করা হ’ত।[12]
হুরায়রা (রাঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সহচর ছিলেন। যিনি ৫৩৭৪টি হাদীছ
বর্ণনা করে হাদীছের শ্রেষ্ঠ রাবীরূপে বিবেচিত। যার নিকট থেকে ৮ শতাধিক
ছাহাবী ও তাবেঈ হাদীছ গ্রহণ ও শ্রবণ করেছেন। তাঁকে আহলেহাদীছ নামে অভিহিত
করা হ’ত।[12]
মশহূর ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) যিনি মহানবী
(ছাঃ) হ’তে ১৬৬০টি হাদীছ বর্ণনা করেছেন। বিপুল সংখ্যক ছাহাবী তার নিকট
থেকে হাদীছ শ্রবণ ও গ্রহণ করেছেন। তাকেও আহলেহাদীছ হিসাবে ভূষিত করা
হয়েছে।[13]
(ছাঃ) হ’তে ১৬৬০টি হাদীছ বর্ণনা করেছেন। বিপুল সংখ্যক ছাহাবী তার নিকট
থেকে হাদীছ শ্রবণ ও গ্রহণ করেছেন। তাকেও আহলেহাদীছ হিসাবে ভূষিত করা
হয়েছে।[13]
প্রখ্যাত তাবেঈ ইমাম শা‘বী যিনি ২২ হিজরীতে জন্মগ্রহণ
করেন এবং ১০৪ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন, তিনি (১) হযরত আবুবকর ছিদ্দীক্ব (২)
ওমর বিন খাত্ত্বাব (৩) ওছমান বিন আফফান (৪) আলী ইবনু আবী ত্বালেব (৫)
যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (৬) সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (৭) সাঈদ বিন যায়েদ (৯)
আব্দুর রহমান বিন আওফ (১০) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (১১) মু‘আয বিন জাবাল (১২)
উবাই বিন কাব (১৩) আব্দুল্লাহ বিন আববাস (১৪) আব্দুল্লাহ বিন ওমর (১৫)
আব্দুললাহ বিন আমর বিন আছ (১৬) আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (১৭) যায়েদ বিন
ছাবিত (১৮) উবাদা বিন ছাবিত (১৯) আবু মূসা আশ‘আরী (২০) ইমরান বিন হুসাইন
(২১) আম্মার বিন ইয়াছির (২২) হুযায়ফা বিন ইয়ামান (২৩) সালমান ফারসী যিনি
৩৫০ বছর বেঁচে ছিলেন, সবাইকে আহলেহাদীছ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।[14]
করেন এবং ১০৪ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন, তিনি (১) হযরত আবুবকর ছিদ্দীক্ব (২)
ওমর বিন খাত্ত্বাব (৩) ওছমান বিন আফফান (৪) আলী ইবনু আবী ত্বালেব (৫)
যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (৬) সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (৭) সাঈদ বিন যায়েদ (৯)
আব্দুর রহমান বিন আওফ (১০) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (১১) মু‘আয বিন জাবাল (১২)
উবাই বিন কাব (১৩) আব্দুল্লাহ বিন আববাস (১৪) আব্দুল্লাহ বিন ওমর (১৫)
আব্দুললাহ বিন আমর বিন আছ (১৬) আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (১৭) যায়েদ বিন
ছাবিত (১৮) উবাদা বিন ছাবিত (১৯) আবু মূসা আশ‘আরী (২০) ইমরান বিন হুসাইন
(২১) আম্মার বিন ইয়াছির (২২) হুযায়ফা বিন ইয়ামান (২৩) সালমান ফারসী যিনি
৩৫০ বছর বেঁচে ছিলেন, সবাইকে আহলেহাদীছ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।[14]
আহলেহাদীছ আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :
সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হ’ল ‘দ্বীনে হক্বের প্রচার ও প্রসারে সংঘবদ্ধভাবে
প্রচেষ্টা চালানো এবং তার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে সরাসরি
জান্নাত লাভের কামনা করা বা পাথেয় সংগ্রহ করা।
প্রচেষ্টা চালানো এবং তার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে সরাসরি
জান্নাত লাভের কামনা করা বা পাথেয় সংগ্রহ করা।
গঠনতন্ত্রের ভাষায়-
‘নির্ভেজাল তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে কিতাব ও
সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আক্বীদা ও
আমলের সংশোধনের মাধ্যমে সমাজের সার্বিক সংস্কার সাধন, আহলেহাদীছ আন্দোলনের
সামাজিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য’। মোটকথা আল্লাহ রাববুল আলামীনকে রাযী-খুশি করার
জন্য আল্লাহ মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামকে আল্লাহর যমীনে প্রতিষ্ঠা করার
জন্য যে আন্দোলন ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে চলে আসছে সেই নির্ভেজাল দ্বীন
প্রতিষ্ঠাই আহলেহাদীছ আন্দোলনের মৌলিক চিন্তাধারা। এ আন্দোলনের লক্ষ্য
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এর ভিত্তি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ। এর কাজ
হ’ল পবিত্র কুরআনে যেভাবে বর্ণিত আছে, ছহীহ হাদীছে যেভাবে বাস্তবে রূপ
দেওয়া হয়েছে তার প্রচার ও পতিষ্ঠা করা।
‘নির্ভেজাল তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে কিতাব ও
সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আক্বীদা ও
আমলের সংশোধনের মাধ্যমে সমাজের সার্বিক সংস্কার সাধন, আহলেহাদীছ আন্দোলনের
সামাজিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য’। মোটকথা আল্লাহ রাববুল আলামীনকে রাযী-খুশি করার
জন্য আল্লাহ মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামকে আল্লাহর যমীনে প্রতিষ্ঠা করার
জন্য যে আন্দোলন ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে চলে আসছে সেই নির্ভেজাল দ্বীন
প্রতিষ্ঠাই আহলেহাদীছ আন্দোলনের মৌলিক চিন্তাধারা। এ আন্দোলনের লক্ষ্য
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এর ভিত্তি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ। এর কাজ
হ’ল পবিত্র কুরআনে যেভাবে বর্ণিত আছে, ছহীহ হাদীছে যেভাবে বাস্তবে রূপ
দেওয়া হয়েছে তার প্রচার ও পতিষ্ঠা করা।
ইসলামের নামে বহু আন্দোলন
বহু কাল ধরে চলে আসছে। আজও চলছে, আগামীতেও চলবে; কিন্তু সব আন্দোলনই অবশেষে
সংকীর্ণ দলীয় রূপ ধারণ করে মুখ থুবড়ে পড়েছে অথবা শেষ পরিণতি অতীব ভয়াবহ
হয়েছে এবং মাযহাবী চক্রজালে আবেষ্টিত হয়েছে। সে কারণে আহলেহাদীছ আন্দোলন
মানব রচিত অসংখ্য মতবাদ, মাযহাব, ইযম ও তরীকার বেড়াজালে আবেষ্টিত মানব
সমাজকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রদর্শিত অভ্রান্ত সত্যের পথে
পরিচালনার দ্বীপশিখা হাতে নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
বহু কাল ধরে চলে আসছে। আজও চলছে, আগামীতেও চলবে; কিন্তু সব আন্দোলনই অবশেষে
সংকীর্ণ দলীয় রূপ ধারণ করে মুখ থুবড়ে পড়েছে অথবা শেষ পরিণতি অতীব ভয়াবহ
হয়েছে এবং মাযহাবী চক্রজালে আবেষ্টিত হয়েছে। সে কারণে আহলেহাদীছ আন্দোলন
মানব রচিত অসংখ্য মতবাদ, মাযহাব, ইযম ও তরীকার বেড়াজালে আবেষ্টিত মানব
সমাজকে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রদর্শিত অভ্রান্ত সত্যের পথে
পরিচালনার দ্বীপশিখা হাতে নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
আহলেহাদীছের বৈশিষ্ট্য :
আহলেহাদীছ অনুপম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এক নির্ভেজাল তাওহীদপন্থী জামা‘আত।
তাদের কতিপয় বৈশিষ্ট্য নিম্নে উপস্থাপন করা হ’ল।- (১) তারা সংস্কারক হবেন
(২) আক্বীদার ক্ষেত্রে সর্বদা মধ্যপন্থী হবেন এবং কখনোই চরমপন্থী বা
শৈথিল্যবাদী হবেন না (৩) আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থের অনুসারী হবেন এবং তারা ছাহাবায়ে
কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করেন (৪) তারা
জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেন এবং কখনোই উদ্ধত ও বিশৃংখলা
সৃষ্টিকারী হন না (৫) তারা কুফর ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ও শক্তিশালী
থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সর্বদা রহমদিল ও আল্লাহর প্রতি বিনীত থাকেন (৬)
তাঁরা যেকোন মূল্যে সুন্নাতকে অাঁকড়ে থাকেন ও বিদ‘আত হ’তে দূরে থাকেন (৭)
তারা সর্বাবস্থায় সমবেতভাবে হাবলুল্লাহ বা আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ করে থাকেন
এবং কখনোই সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হন না। কেউ তাদেরকে ছেড়ে গেলে সে অবস্থায়
তারা আল্লাহর উপর ভরসা করেন ও তাঁর গায়েবী মদদ কামনা করেন।[15]
তাদের কতিপয় বৈশিষ্ট্য নিম্নে উপস্থাপন করা হ’ল।- (১) তারা সংস্কারক হবেন
(২) আক্বীদার ক্ষেত্রে সর্বদা মধ্যপন্থী হবেন এবং কখনোই চরমপন্থী বা
শৈথিল্যবাদী হবেন না (৩) আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা পবিত্র
কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থের অনুসারী হবেন এবং তারা ছাহাবায়ে
কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করেন (৪) তারা
জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেন এবং কখনোই উদ্ধত ও বিশৃংখলা
সৃষ্টিকারী হন না (৫) তারা কুফর ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ও শক্তিশালী
থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সর্বদা রহমদিল ও আল্লাহর প্রতি বিনীত থাকেন (৬)
তাঁরা যেকোন মূল্যে সুন্নাতকে অাঁকড়ে থাকেন ও বিদ‘আত হ’তে দূরে থাকেন (৭)
তারা সর্বাবস্থায় সমবেতভাবে হাবলুল্লাহ বা আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ করে থাকেন
এবং কখনোই সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হন না। কেউ তাদেরকে ছেড়ে গেলে সে অবস্থায়
তারা আল্লাহর উপর ভরসা করেন ও তাঁর গায়েবী মদদ কামনা করেন।[15]
(৮)
তারা খবরে ওয়াহেদের উপরে আমল করেন। আক্বীদা, আহকাম ও ফযীলত সহ দ্বীনের সকল
ক্ষেত্রে খবরে ওয়াহেদের উপরে আমল করা ওয়াজিব মনে করেন, যদি তা ছহীহ সনদে ও
মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হয়।[16]
তারা খবরে ওয়াহেদের উপরে আমল করেন। আক্বীদা, আহকাম ও ফযীলত সহ দ্বীনের সকল
ক্ষেত্রে খবরে ওয়াহেদের উপরে আমল করা ওয়াজিব মনে করেন, যদি তা ছহীহ সনদে ও
মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হয়।[16]
(৯) তারা কোন ব্যক্তির অন্ধ তাক্বলীদ ও
গোঁড়ামি পরিত্যাগ করে কেবল হাদীছের অনুসরণ করেন। সর্বক্ষেত্রে তাঁরা
সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরা ও তার উপরে আমল করার প্রতি আগ্রহী ও সচেষ্ট। এক্ষেত্রে
বড় কোন ইমামের কথা সুন্নাত পরিপন্থী হ’লে তার কথাও তারা ত্যাগ করেন।[17]
গোঁড়ামি পরিত্যাগ করে কেবল হাদীছের অনুসরণ করেন। সর্বক্ষেত্রে তাঁরা
সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরা ও তার উপরে আমল করার প্রতি আগ্রহী ও সচেষ্ট। এক্ষেত্রে
বড় কোন ইমামের কথা সুন্নাত পরিপন্থী হ’লে তার কথাও তারা ত্যাগ করেন।[17]
(১০) যঈফ হাদীছের উপরে আমল করা থেকে বিরত থাকেন। আহকাম ও ফযীলত কোন
ক্ষেত্রেই তারা যঈফ হাদীছের উপর আমল করাকে জায়েয মনে করেন না।[18]
ক্ষেত্রেই তারা যঈফ হাদীছের উপর আমল করাকে জায়েয মনে করেন না।[18]
আহলেহাদীছের নিদর্শন :
আহলেহাদীছদের কতিপয় অনন্য নিদর্শন নিম্নে উপস্থাপন করা হ’ল।-
(১) তারা আক্বীদা, ইবাদত ও আচরণে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নীতির
উপর দৃঢ় থাকেন এবং সর্বদা ছহীহ হাদীছের উপর আমল করেন। তারা মানুষের সাথে
সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন।
উপর দৃঢ় থাকেন এবং সর্বদা ছহীহ হাদীছের উপর আমল করেন। তারা মানুষের সাথে
সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন।
(২) তারা
সকল বিষয়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে ফিরে যান এবং সালাফে ছালেহীন ও
মুহাদ্দিছ বিদ্বানগণের মাসলাক অনুসরণে যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব দেন।
সকল বিষয়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে ফিরে যান এবং সালাফে ছালেহীন ও
মুহাদ্দিছ বিদ্বানগণের মাসলাক অনুসরণে যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব দেন।
(৩) তারা ব্যাখ্যাগত মতভেদ-কে লঘু করে দেখেন এবং কখনোই তাকে দলীয় বিভক্তিতে পরিণত করেন না।
(৪) তারা সর্বদা উত্তম মুমিন হওয়ার জন্য চেষ্টিত থাকেন এবং এজন্য সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন।
(৫) তারা সুন্নাতপন্থী ইমাম, হাদীছের জ্ঞানসম্পন্ন আলেম ও তার সহায়তাকারী
এবং হাদীছপ্রেমীদের সাথে মহববত ও হৃদ্যতা বজায় রাখে। পক্ষান্তরে তারা
বিদ‘আতী ইমাম, জাহান্নামের দিকে আহবানকারী ও জাহান্নামের দিকে পথ
প্রদর্শনকারীদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করেন।[19]
এবং হাদীছপ্রেমীদের সাথে মহববত ও হৃদ্যতা বজায় রাখে। পক্ষান্তরে তারা
বিদ‘আতী ইমাম, জাহান্নামের দিকে আহবানকারী ও জাহান্নামের দিকে পথ
প্রদর্শনকারীদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করেন।[19]
আহলেহাদীছের বাহ্যিক নিদর্শন :
আহলেহাদীছদের বাহ্যিক নিদর্শন বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম আব্দুর রহমান ছাবূনী
(৩৭২-৪৪৯ হিঃ) বলেন, (১) কম হউক বেশী হউক সকল প্রকারের মাদকদ্রব্য ব্যবহার
হ’তে তারা বিরত থাকেন (২) ফরয ছালাতসমূহ আউয়াল ওয়াক্তে আদায়ের জন্য তারা
সদা ব্যস্ত থাকেন (৩) ইমামের পিছনে সূরায়ে ফাতিহা পড়াকে তারা ওয়াজিব মনে
করেন (৪) ছালাতের মধ্যে রুকূ-সুজূদ, ক্বিয়াম-কু‘ঊদ ইত্যাদি আরকানকে
ধীরে-সুস্থে শান্তির সঙ্গে আদায় করাকে তারা অপরিহার্য বলেন এবং এতদ্ব্যতীত
ছালাত শুদ্ধ হয় না বলে তারা মনে করেন (৫) তারা সকল কাজে নবী (ছাঃ),
ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের কঠোর অনুসারী হয়ে থাকেন (৬)
বিদ‘আতীদেরকে তারা ঘৃণা করেন। তারা বিদ‘আতীদের সঙ্গে উঠাবসা করেন না বা
তাদের সঙ্গে দ্বীনের ব্যাপারে অহেতুক ঝগড়া করেন না। তাদের থেকে সর্বদা কান
বন্ধ রাখেন, যাতে তাদের বাতিল যুক্তিসমূহ অন্তরে ধোঁকা সৃষ্টি করতে না
পারে’।[20]
(৩৭২-৪৪৯ হিঃ) বলেন, (১) কম হউক বেশী হউক সকল প্রকারের মাদকদ্রব্য ব্যবহার
হ’তে তারা বিরত থাকেন (২) ফরয ছালাতসমূহ আউয়াল ওয়াক্তে আদায়ের জন্য তারা
সদা ব্যস্ত থাকেন (৩) ইমামের পিছনে সূরায়ে ফাতিহা পড়াকে তারা ওয়াজিব মনে
করেন (৪) ছালাতের মধ্যে রুকূ-সুজূদ, ক্বিয়াম-কু‘ঊদ ইত্যাদি আরকানকে
ধীরে-সুস্থে শান্তির সঙ্গে আদায় করাকে তারা অপরিহার্য বলেন এবং এতদ্ব্যতীত
ছালাত শুদ্ধ হয় না বলে তারা মনে করেন (৫) তারা সকল কাজে নবী (ছাঃ),
ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের কঠোর অনুসারী হয়ে থাকেন (৬)
বিদ‘আতীদেরকে তারা ঘৃণা করেন। তারা বিদ‘আতীদের সঙ্গে উঠাবসা করেন না বা
তাদের সঙ্গে দ্বীনের ব্যাপারে অহেতুক ঝগড়া করেন না। তাদের থেকে সর্বদা কান
বন্ধ রাখেন, যাতে তাদের বাতিল যুক্তিসমূহ অন্তরে ধোঁকা সৃষ্টি করতে না
পারে’।[20]
আহলেহাদীছ আন্দোলন ও অন্যান্য ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে পার্থক্য
আহলেহাদীছ আন্দোলন ও অন্যান্য ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে
কতিপয় পার্থক্য সুস্পষ্টরূপে পরিলক্ষিত হয়। তার মধ্যে কয়েকটি দিক নিম্নে
তুলে ধরা হ’ল।-
কতিপয় পার্থক্য সুস্পষ্টরূপে পরিলক্ষিত হয়। তার মধ্যে কয়েকটি দিক নিম্নে
তুলে ধরা হ’ল।-
১. আক্বীদাগত দিক :
আক্বীদার অপর নাম ঈমান।
যা হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
যা আনুগত্যে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও গোনাহে হরাস প্রাপ্ত হয়। বিশ্বাস হ’ল মূল
এবং কর্ম হ’ল শাখা। যা না থাকলে পূর্ণ মুমিন বা ইনসানে কামেল হওয়া যায় না।
যা হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
যা আনুগত্যে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও গোনাহে হরাস প্রাপ্ত হয়। বিশ্বাস হ’ল মূল
এবং কর্ম হ’ল শাখা। যা না থাকলে পূর্ণ মুমিন বা ইনসানে কামেল হওয়া যায় না।
খারেজীগণ বিশ্বাস, স্বীকৃতি ও কর্ম তিনটিকেই ঈমানের মূল হিসাবে গণ্য করেন।
ফলে তাদের মতে কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি কাফের ও চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং
তাদের রক্ত হালাল। যুগে যুগে সকল চরমপন্থী ভ্রান্ত মুসলমান এই মতের
অনুসারী।
ফলে তাদের মতে কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি কাফের ও চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং
তাদের রক্ত হালাল। যুগে যুগে সকল চরমপন্থী ভ্রান্ত মুসলমান এই মতের
অনুসারী।
পক্ষান্তরে মুরজিয়াগণ কেবল বিশ্বাস অথবা স্বীকৃতিকে ঈমানের
মূল হিসাবে গণ্য করেন। যা কোন কমবেশী হয় না। তাদের মতে আমল ঈমানের অংশ নয়।
ফলে তাদের নিকট কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন। আমলের ব্যাপারে সকল
যুগের মুরজিয়া বা শৈথিল্যবাদী ভ্রান্ত মুসলমানগণ এই মতের অধিকারী।
মূল হিসাবে গণ্য করেন। যা কোন কমবেশী হয় না। তাদের মতে আমল ঈমানের অংশ নয়।
ফলে তাদের নিকট কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি পূর্ণ মুমিন। আমলের ব্যাপারে সকল
যুগের মুরজিয়া বা শৈথিল্যবাদী ভ্রান্ত মুসলমানগণ এই মতের অধিকারী।
আহলেহাদীছদের আক্বীদাহ হ’ল ঐ দুই চরমপন্থী খারেজী ও মুরজিয়ার মধ্যবর্তী।
আহলেহাদীছদের মতে বিশ্বাস ও স্বীকৃতি হ’ল মূল এবং কর্ম হ’ল শাখা। তাই কবীরা
গোনাহগার ব্যক্তি আহলেহাদীছদের নিকটে কাফের নয় কিংবা পূর্ণ মুমিনও নয়। বরং
ফাসেক মুসলমান। সে তওবা না করে মারা গেলেও চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়। আর
এটাই হ’ল পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর মত। আহলেহাদীছগণ আল্লাহর উপর ঈমান রাখেন
‘রব’ হিসাবে, ইলাহ হিসাবে, নাম ও গুণাবলী সহকারে। যা মাখলূকের নাম ও
গুণাবলীর সাথে তুলনীয় নয়। আর এই নির্ভেজাল একত্ববাদকেই বলা হয় ‘তাওহীদ’।
আহলেহাদীছদের মতে বিশ্বাস ও স্বীকৃতি হ’ল মূল এবং কর্ম হ’ল শাখা। তাই কবীরা
গোনাহগার ব্যক্তি আহলেহাদীছদের নিকটে কাফের নয় কিংবা পূর্ণ মুমিনও নয়। বরং
ফাসেক মুসলমান। সে তওবা না করে মারা গেলেও চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়। আর
এটাই হ’ল পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর মত। আহলেহাদীছগণ আল্লাহর উপর ঈমান রাখেন
‘রব’ হিসাবে, ইলাহ হিসাবে, নাম ও গুণাবলী সহকারে। যা মাখলূকের নাম ও
গুণাবলীর সাথে তুলনীয় নয়। আর এই নির্ভেজাল একত্ববাদকেই বলা হয় ‘তাওহীদ’।
পক্ষান্তরে অন্যদের আক্বীদা ভেজাল মিশ্রত। যেখানে আল্লাহকে নিরাকার,
সর্বত্র বিরাজমান, রাসূলকে নূরের তৈরী, হাযির-নাযির বলা ইত্যাদি শিরকী
আক্বীদা বিদ্যমান।
সর্বত্র বিরাজমান, রাসূলকে নূরের তৈরী, হাযির-নাযির বলা ইত্যাদি শিরকী
আক্বীদা বিদ্যমান।
২. আমলের ক্ষেত্রে :
আমলের ক্ষেত্রে এ
আন্দোলন শিরক-বিদ‘আতের সাথে কোন আপোস করে না। পক্ষান্তরে অন্যান্য আন্দোলন
অনুসৃত মাযহাব ও ইমামের রায় অনুযায়ী আমল করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা
কুরআন ও হাদীছের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে অনুসৃত মাযহাব ও ইমামের রায়কে
অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও তা ছহীহ হাদীছের বিরোধী হয়। অথচ ইমামগণ ছহীহ
হাদীছকেই তাদের মাযহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আন্দোলন শিরক-বিদ‘আতের সাথে কোন আপোস করে না। পক্ষান্তরে অন্যান্য আন্দোলন
অনুসৃত মাযহাব ও ইমামের রায় অনুযায়ী আমল করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা
কুরআন ও হাদীছের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে অনুসৃত মাযহাব ও ইমামের রায়কে
অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও তা ছহীহ হাদীছের বিরোধী হয়। অথচ ইমামগণ ছহীহ
হাদীছকেই তাদের মাযহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন।
৩. অর্থনৈতিক দিক :
দেশে প্রচলিত সূদভিত্তিক অর্থনীতির বিপরীতে এ আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে
সূদমুক্ত যাকাত ভিত্তিক অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট। তারা সন্দিগ্ধ
বিষয়গুলি থেকেও নিজেদেরকে দূরে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। তারা রাসূল
(ছাঃ)-এর বাণী ‘সন্ধিগ্ধ বিষয়কে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিসের দিকে ধাবিত
হও’ (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৭৭৩)-কে সর্বদা স্মরণ রাখে। পক্ষান্তরে
অন্যান্য ইসলামী দল খাজনার জমিতে ওশর নেই, অর্ধ ছা‘ ফিৎরা প্রদান ইত্যাদি
হাদীছ বিরোধী মাসআলা দিয়ে স্বচ্ছ ইসলামী অর্থনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে।
সূদমুক্ত যাকাত ভিত্তিক অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট। তারা সন্দিগ্ধ
বিষয়গুলি থেকেও নিজেদেরকে দূরে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। তারা রাসূল
(ছাঃ)-এর বাণী ‘সন্ধিগ্ধ বিষয়কে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিসের দিকে ধাবিত
হও’ (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৭৭৩)-কে সর্বদা স্মরণ রাখে। পক্ষান্তরে
অন্যান্য ইসলামী দল খাজনার জমিতে ওশর নেই, অর্ধ ছা‘ ফিৎরা প্রদান ইত্যাদি
হাদীছ বিরোধী মাসআলা দিয়ে স্বচ্ছ ইসলামী অর্থনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে।
৪. রাজনৈতিক দিক :
আহলেহাদীছ আন্দোলন দেশের আইন ও শাসন ব্যবস্থাকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ
হাদীছের আলোকে ঢেলে সাজাতে চায়। পক্ষান্তরে অন্যান্য ইসলামী আন্দোলন
নিজেদের আচরিত মাযহাব ও অনুসরণীয় ইমামের রায়ের আলোকে দেশের আইন ও শাসন
ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। আহলেহাদীছের রাজনীতি ইমারত ও খেলাফত তথা শূরা
ভিত্তিক। অন্যান্যদের রাজনীতি গণতান্ত্রিক।
হাদীছের আলোকে ঢেলে সাজাতে চায়। পক্ষান্তরে অন্যান্য ইসলামী আন্দোলন
নিজেদের আচরিত মাযহাব ও অনুসরণীয় ইমামের রায়ের আলোকে দেশের আইন ও শাসন
ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। আহলেহাদীছের রাজনীতি ইমারত ও খেলাফত তথা শূরা
ভিত্তিক। অন্যান্যদের রাজনীতি গণতান্ত্রিক।
৫. লক্ষ্য-উদ্দেশ্য :
আহলেহাদীছ আন্দোলন ইহকালীন যাবতীয় কর্মকান্ডের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি
কামনা করে। সুতরাং লক্ষ্য হ’ল পরকালীন। এজন্য তাদের যাবতীয় কর্মসূচী
আখিরাতকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়। পক্ষান্তরে অন্যান্য আন্দোলন ও সংগঠনের
লক্ষ্য পার্থিব স্বার্থসিদ্ধি, দলীয় উন্নয়ন ও যেকোন উপায়ে ক্ষমতা লাভ।
পরকালীন বিষয়টি অনেকক্ষেত্রে তাদের নিকটে গৌণ থাকে।
কামনা করে। সুতরাং লক্ষ্য হ’ল পরকালীন। এজন্য তাদের যাবতীয় কর্মসূচী
আখিরাতকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়। পক্ষান্তরে অন্যান্য আন্দোলন ও সংগঠনের
লক্ষ্য পার্থিব স্বার্থসিদ্ধি, দলীয় উন্নয়ন ও যেকোন উপায়ে ক্ষমতা লাভ।
পরকালীন বিষয়টি অনেকক্ষেত্রে তাদের নিকটে গৌণ থাকে।
৬. আন্দোলনের ক্ষেত্রে :
আহলেহাদীছ আন্দোলন নবী-রাসূলগণের আদর্শ অনুযায়ী ব্যক্তি ও পরিবার সংশোধনের
মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করে। পক্ষান্তরে অন্যান্য আন্দোলন
ক্ষমতা লাভ করে ব্যক্তি সংশোধনের স্বপ্ন দেখে। এ কারণে তারা কর্মীদের মাঝে
বিদ্যমান শত ভুলকে ও সুন্নাতী আমল পরিত্যাগ করাকে তুচ্ছ জ্ঞান ও ছোটখাট
বিষয় বলে মনে করে। আর ক্ষমতা লাভের জন্য অন্যের ভোট ভিক্ষা করে। অথচ ইসলামে
নেতৃত্ব চেয়ে নেয়া হারাম।
মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করে। পক্ষান্তরে অন্যান্য আন্দোলন
ক্ষমতা লাভ করে ব্যক্তি সংশোধনের স্বপ্ন দেখে। এ কারণে তারা কর্মীদের মাঝে
বিদ্যমান শত ভুলকে ও সুন্নাতী আমল পরিত্যাগ করাকে তুচ্ছ জ্ঞান ও ছোটখাট
বিষয় বলে মনে করে। আর ক্ষমতা লাভের জন্য অন্যের ভোট ভিক্ষা করে। অথচ ইসলামে
নেতৃত্ব চেয়ে নেয়া হারাম।
৭. দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে :
আহলেহাদীছ আন্দোলন ইক্বামতে দ্বীন তথা তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য
নবী-রাসূলগণের রেখে যাওয়া তরীকায় কাজ করে। তাদের নিকটে দ্বীন প্রতিষ্ঠার
অর্থ হচ্ছে তাওহীদ প্রতিষ্ঠা। পক্ষান্তরে অন্যান্য সংগঠন হুকুমত তথা
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে। আর ব্যালট বা বুলেট যে কোন
পদ্ধতিতে হোক যে কোন উপায়ে সেটা লাভের জন্য তারা মরিয়া ও উন্মুখ হয়ে থাকে।
নবী-রাসূলগণের রেখে যাওয়া তরীকায় কাজ করে। তাদের নিকটে দ্বীন প্রতিষ্ঠার
অর্থ হচ্ছে তাওহীদ প্রতিষ্ঠা। পক্ষান্তরে অন্যান্য সংগঠন হুকুমত তথা
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে। আর ব্যালট বা বুলেট যে কোন
পদ্ধতিতে হোক যে কোন উপায়ে সেটা লাভের জন্য তারা মরিয়া ও উন্মুখ হয়ে থাকে।
উপসংহার :
পরিশেষে বলা যায়, আহলেহাদীছ আন্দোলনই দেশের একমাত্র নির্ভেজাল ইসলামী
আন্দোলন, যা আক্বীদার ক্ষেত্রে শিরকের বিরুদ্ধে আপোষহীন তাওহীদপন্থী এবং
আমলের ক্ষেত্রে বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীন সুন্নাতপন্থী। অতএব আসুন! আমাদের
ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমরা এ আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী
হই। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন- আমীন!
আন্দোলন, যা আক্বীদার ক্ষেত্রে শিরকের বিরুদ্ধে আপোষহীন তাওহীদপন্থী এবং
আমলের ক্ষেত্রে বিদ‘আতের বিরুদ্ধে আপোষহীন সুন্নাতপন্থী। অতএব আসুন! আমাদের
ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমরা এ আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী
হই। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন- আমীন!
[1]. আহলেহাদীছ আন্দোলন উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিত সহ (পিএইচ.ডি থিসিস), পৃঃ ৫০।
[2]. সনদ হাসান, আলবানী, ছহীহ তিরমিযী হা/২১২৯; ঐ, সিলসিলা ছহীহাহ
হা/১৩৪৮; হাকেম ১/১২৯ পৃঃ; আলবানী, মিশকাত হা/১৭১ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও
সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।
হা/১৩৪৮; হাকেম ১/১২৯ পৃঃ; আলবানী, মিশকাত হা/১৭১ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও
সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।
[3]. আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৭২ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।
[4]. আহসানু