চার. মোহ রিপু :
মোহ শব্দটি চিত্তের অন্ধতা, অবিদ্যা, মূর্খতা, মূঢ়তা, নির্বুদ্ধিতা, ভ্রান্তি, মুগ্ধতা, বিবেকহীনতা, মায়া, মূর্ছা, বুদ্ধিভ্রংশ ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আসলে মানব রিপুর মধ্যে এটি অন্যতম একটি রিপু। কাম, ক্রোধ, লোভ, মদ ও হিংসা এসবক’টির উপর মোহ প্রভাব খাঁটিয়ে থাকে। অর্থাৎ মোহ দোষে দূষিত ব্যক্তি বাকি পাঁচটি রিপুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাকে যে কোন রিপু অতি সহজেই গ্রাস করতে পারে। কারণ অজ্ঞতা বা নির্বুদ্ধিতা থেকেই বিবেকশূন্যতার সৃষ্টি হ’তে পারে। মায়া হ’ল মোহ রিপুর একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
অতি মায়া বা দয়া ক্ষেত্র বিশেষে এতই ক্ষতিকর যে তা আর পুষিয়ে নেয়ার কোন উপায় থাকে না। যেমন- জীব হত্যা মহাপাপ। কথাটি ভুল অর্থে জেনে কোন বিষধর সাপকে যদি কেউ মায়া করে ছেড়ে দেয়, তাহ’লে সে সাপটি সুযোগ পেলে তাকে কামড় দিয়ে হত্যা করতে দ্বিধান্বিত হবে না। কাজেই মোহ বা মায়া সর্বত্রই গ্রহণযোগ্যতা পায় না। একজন অধার্মিক বা মুর্খকে তার গুরুতর কোন অপরাধের পর নিঃশর্ত বা শুধু শুধুই ছেড়ে দিলে সে তার মূল্য রক্ষা করে না বা করতে পারে না। কারণ সে মুর্খ বা মোহাবিষ্ট। সে তার নিজের সম্পর্কে; সমাজ, পরিবেশ, প্রতিবেশ সর্ম্পকে না ওয়াকিফহাল। জীবনের প্রতিপাদ্য, জীবনবোধ ইত্যাদি বিষয়ে তার অনুভূতিশক্তি ক্ষীণ। তাই মোহ তাকে সহজেই বেষ্টন করে রাখে।
মোহকে অনেকে ভালবাসা ভেবে ভুল করেন। কোন কিছু পসন্দ হ’লেই মনে করেন এই বুঝি ভালবাসা। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে কোন ভাল লাগা ভালবাসায় পরিণত হয় না। মোহ ও ভালবাসার মধ্যে সূক্ষ্মতম পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তেমনি কিছু বৈশিষ্ট্য নিমেণ তুলে ধরা হ’ল-
১. কোন কিছু চাওয়া-পাওয়ার আশা-আকাংখা নিয়ে মোহ জন্মায়। অন্যদিকে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে ভালবাসা তৈরি হয়।
২. তাৎক্ষণিকভাবে কোন কিছু ভাল লাগার নাম মোহ। পক্ষান্তরে ভালবাসা ধীরে ধীরে জন্ম নেয় ও সুদৃঢ় হয়।
৩. মোহর সঙ্গে বাহ্যিক আকর্ষণ পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে ভালবাসার অনুভূতি জন্ম নেয় হৃদয়ের গভীর থেকে।
৪. মোহের কারণে একপক্ষ অপর পক্ষের প্রতি মুগ্ধ হয়ে মূর্খতাবশত বুদ্ধিভ্রংশ হয়ে পাগলের মতো আচরণ করে। পক্ষান্তরে ভালবাসা মনকে বিবেক দিয়ে পরিচালিত করে ও সান্তনা দেয় এবং উৎসর্গ করতে সাহায্য করে।
৫. মোহের আকর্ষণ এতই তীব্র হয় যে, এর স্থায়ীত্ব খুবই কম হয়ে থাকে। অন্যদিকে ভালবাসার অনুভূতি বিজ্ঞতা দ্বারা স্থায়ী হয়।
৬. মোহ আবেগকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে মূর্খতায় নিমজ্জিত করে ধ্বংসের মধ্যে নিপতিত হয়। পক্ষান্তরে ভালবাসা অনেক বেশী নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সূচারুভাবে সঠিক ও সত্যের দিকে ধাবিত হয়।
৭. মোহের সাথে যেকোনো উদ্দেশ্য ও সূক্ষ্ম চাতুরতা জড়িত থাকে। অন্যদিকে ভালবাসা হয় চাতুরতা মুক্ত চির সরল।
৮. মোহ হিংসাপরায়ণ ও চিত্তের অন্ধতাবশত আসক্ত করে তোলে। পক্ষান্তরে ভালবাসা একে অপরকে বিবেক দ্বারা অনুধাবন করতে সাহায্য করে এবং বিশ্বাস স্থাপনে সর্বদা নির্বুদ্ধিতা ও মূর্খতাকে এড়িয়ে চলে।
৯. মোহগ্রস্থতা সংকীর্ণতার প্রাচীর স্থাপন করে। অন্যদিকে ভালবাসা তীব্র মুগ্ধতায় গভীর মায়া বাড়ায়।
১০. মোহ স্বার্থপর ও হিংস্র বানায়। অন্যদিকে ভালবাসা দয়ালু ও মহৎ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
১১. মোহ যে কোন প্রকারে আধিপত্যপ্রবণ করে তোলে। পক্ষান্তরে ভালবাসা বিনয়ী ও নম্র করে গড়ে তোলে।
১২. মোহ একে অপরের প্রতি শত্রুতা পোষণকে সহজতর করে তোলে। অন্যদিকে ভালবাসা ক্ষমাশীল ও উৎসর্গ পরায়ণ করে তোলে।
১৩. মোহ নির্দিষ্ট ও পরিমিত সময় পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকে। পক্ষান্তরে ভালবাসার কোন পরিসীমা নেই এবং তা অমর ও চিরন্তন।
১৪. মোহ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাপ্রলয়ের দিকে ধাবিত হয়। অন্যদিকে ভালবাসা দৃঢ়তার মাধ্যমে চিরন্তন আধিপত্য বিস্তার করে।
মোহ কয়েক প্রকার হ’তে পারে। যেমন :
ক. দুনিয়ার প্রতি মোহ : দুনিয়ার প্রতি মোহ রাখা বোকামী বৈ কিছুই নহে। কারণ এই দুনিয়া অতিব স্বল্পকালীন ও মূল্যহীন। দুনিয়া অভিশপ্ত, মরীচিকা ও লোভনীয় বস্ত্ত মাত্র। সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার জন্য দুনিয়া করে, সে স্রেফ দুনিয়া পায়, কিন্তু আখেরাত হারায়। আর যে ব্যক্তি দ্বীনের জন্য দুনিয়া করে, সে দ্বীন-দুনিয়া দু’টিই পায়। কিন্তু যে ব্যক্তি দুনিয়ার জন্য দ্বীন করে, সে দ্বীন-দুনিয়া দু’টিই হারায়। মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য হ’ল স্রষ্টার ইবাদত করা। তাঁর ইবাদত করলে দুনিয়া এমনিতেই চলে আসবে। জ্বিন ও ইনসান সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ، مَا أُرِيْدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍ وَّمَا أُرِيْدُ أَن يُّطْعِمُوْنِ، إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِيْنُ– ‘আমি জিন ও ইনসান সৃষ্টি করেছি কেবল এজন্য যে, তারা আমার ইবাদত করবে। আমি তাদের নিকট থেকে কোন রিযিক চাই না এবং চাইনা যে তারা আমাকে আহার যোগাবে’ (যারিয়াত ৫১/৫৬-৫৮)।
আল্লাহর ইবাদতকারী মুমিন বান্দাকে আল্লাহ তা‘আলা যেমন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন, তেমনি জীবিকাতে প্রাচুর্য দান করেন। এ বিষয়ে আনাস বিন মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ كَانَتِ الآخِرَةُ هَمَّهُ جَعَلَ اللهُ غِنَاهُ فِىْ قَلْبِهِ وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِىَ رَاغِمَةٌ وَمَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ جَعَلَ اللهُ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَفَرَّقَ عَلَيْهِ شَمْلَهَ وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلاَّ مَا قُدِّرَ لَهُ– ‘যার জীবনের লক্ষ্য হবে আখিরাত আল্লাহ তার অন্তরকে ধনী করে দিবেন। তার সব সুযোগ-সুবিধা একত্রিত করে দিবেন এবং দুনিয়া (ধন-সম্পদ) তার পায়ে লুটিয়ে পড়বে। আর যার জীবনের লক্ষ্য হবে দুনিয়া আল্লাহ তা‘আলা দরিদ্রকে তার নিত্যসঙ্গী করে দিবেন। তার গোছানো বিষয় ছিন্নভিন্ন করে দিবেন এবং তার জন্য যতটুকু বরাদ্দ তার বাইরে সে দুনিয়ার কিছুই পাবে না’।[1]
অথচ আমরা দুনিয়াতে এসে কি করছি? ফেৎনাময় দুনিয়া নিয়ে সদাব্যস্ত রয়েছি। দুনিয়া ও নারী হ’ল ফেৎনা। এই মর্মে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ الدُّنْيَا حُلْوَةٌ خَضِرَةٌ، وَإِنَّ اللهَ مُسْتَخْلِفُكُمْ فِيهَا، فَيَنْظُرُ كَيْفَ تَعْمَلُونَ، فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاءَ، فَإِنَّ أَوَّلَ فِتْنَةِ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَانَتْ فِي النِّسَاءِ وَفِي حَدِيثِ ابْنِ بَشَّارٍ: لِيَنْظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ – ‘নিশ্চয়ই দুনিয়া মিষ্ট সবুজ (সুস্বাদু দর্শনীয়), আল্লাহ তা‘আলা সেখানে তোমাদের খলীফা হিসাবে পাঠিয়েছেন। অতঃপর তিনি দেখেন তোমরা কি কর? অতএব তোমরা দুনিয়া ও নারী থেকে সাবধান থাক। কেননা বনী ইসরাঈলদের মধ্যে যে প্রথম ফেৎনা দেখা দিয়েছিল তা ছিল নারীকে কেন্দ্র করে’।[2]
দুনিয়া হ’ল মরীচিকাতুল্য, স্বয়ং লা‘নত প্রাপ্ত। দুনিয়া যে অভিশপ্ত সে সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন,الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ، مَلْعُونٌ مَا فِيهَا، إِلَّا ذِكْرَ اللهِ، وَمَا وَالَاهُ، أَوْ عَالِمًا، أَوْ مُتَعَلِّمًا ‘নিঃসন্দেহে দুনিয়া অভিশপ্ত। অভিশপ্ত তার মধ্যে যা কিছু আছে (সবই)। তবে আল্লাহর যিকর এবং তার সাথে সম্পৃক্ত জিনিস, আলেম ও তালেবে-ইলম ব্যতীত’।[3]
দুনিয়া অত্যন্ত তুচ্ছ। এর মূল্যমান মৃত ছাগলের চেয়েও নগণ্য। এ মর্মে জাবের (রাঃ) হ’তে হাদীছে বলা হয়েছে, مَرَّ بِالسُّوقِ، دَاخِلًا مِنْ بَعْضِ الْعَالِيَةِ، وَالنَّاسُ كَنَفَتَهُ، فَمَرَّ بِجَدْيٍ أَسَكَّ مَيِّتٍ، فَتَنَاوَلَهُ فَأَخَذَ بِأُذُنِهِ، ثُمَّ قَالَ أَيُّكُمْ يُحِبُّ أَنَّ هَذَا لَهُ بِدِرْهَمٍ؟ فَقَالُوا مَا نُحِبُّ أَنَّهُ لَنَا بِشَيْءٍ، وَمَا نَصْنَعُ بِهِ؟ قَالَ : أَتُحِبُّونَ أَنَّهُ لَكُمْ؟ قَالُوا وَاللهِ لَوْ كَانَ حَيًّا، كَانَ عَيْبًا فِيهِ، لِأَنَّهُ أَسَكُّ، فَكَيْفَ وَهُوَ مَيِّتٌ؟ فَقَالَ فَوَاللهِ لَلدُّنْيَا أَهْوَنُ عَلَى اللهِ، مِنْ هَذَا عَلَيْكُمْ–
‘একদা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আলিয়া (অঞ্চল) হ’তে মদীনায় আসার পথে এক বাযার দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর উভয় পার্শ্বে বেশ লোকজন ছিল। যেতে যেতে তিনি ক্ষুদ্র কান বিশিষ্ট একটি মৃত বকরীর বাচ্চার নিকট পৌঁছলেন। অতঃপর তিনি এর কান ধরে বললেন, তোমাদের কেউ কি এক দিরহামের বিনিময়ে এটা নিতে আগ্রহী হবে। তখন উপস্থিত লোকেরা বলল, কোন কিছুর বিনিময়ে আমরা উহা নিতে আগ্রহী নই এবং এটি নিয়ে আমরা কি করব? তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, (বিনা পয়সায়) তোমরা কি উহা নিতে আগ্রহী? তারা বলল, এ যদি জীবিত থাকতো তবুও তো এটা দোষী। কেননা এর কান হচ্ছে ক্ষুদ্র। আর এখন তো তা মৃত, কিভাবে আমরা তা গ্রহণ করব? অতঃপর রাসূল (ছাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! এ ছাগলটি তোমাদের নিকট যতটা তুচ্ছ, আল্লাহর নিকটে দুনিয়া এর চেয়েও অধিক তুচ্ছ’।[4]
খ. নারীর প্রতি মোহ : পৃথিবীতে নারীর প্রতি মোহ অতিব ফেৎনাকর। মন্দ নারী মায়াবিনী ও ছলনাময়ী। এরা সর্বদা শয়তানের কুপরামর্শে পুরুষকে ফাঁদে ফেলতে উদগ্রীব হয়। কিন্তু মুমিন বান্দাকে মহান আল্লাহ সর্বদা হেফাযত করে থাকেন। আল্লাহ তা‘আলা ইউসুফ (আঃ)-কে মিশরীয় মন্ত্রীর স্ত্রীর কুপ্রস্তাব থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে তাঁকে পাপাচার ও অন্যায়ের পাঁকে পড়তে হয়নি। আল্লাহ বলেন, وَلَقَدْ هَمَّتْ بِهِ وَهَمَّ بِهَا لَوْلاَ أَنْ رَأَى بُرْهَانَ رَبِّهِ كَذَلِكَ لِنَصْرِفَ عَنْهُ السُّوءَ وَالْفَحْشَاءَ إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُخْلَصِينَ – ‘উক্ত মহিলা তার বিষয়ে কুচিন্তা করেছিল এবং সেও তার প্রতি কল্পনা করত যদি না সে স্বীয় পালনকর্তার প্রমাণ অবলোকন করত। এভাবেই এটা একারণে যাতে আমরা তার থেকে যাবতীয় মন্দ ও অশ্লীল বিষয় সমূহ সরিয়ে দেই। নিশ্চয়ই সে ছিল আমাদের মনোনীত বান্দাগণের অন্তর্ভুক্ত’ (ইউসুফ ১২/২৪)।
পুরুষেরা নারীদের হ’তে সর্বাত্মকভাবে বেঁচে থাকবে। এ বিষয়ে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা দুনিয়া ও নারী থেকে সাবধান থাক। কেননা বনী ইসরাঈলদের মধ্যে যে প্রথম ফেৎনা দেখা দিয়েছিল তা ছিল নারীকে কেন্দ্র করে’।[5] অন্যত্র বলেন, দুনিয়াতে পুরুষের জন্য সবচেয়ে বড় ফেৎনা হ’ল (দুষ্টু) নারী’।[6]
নারীর মাধ্যমে পুরুষেরা ফেৎনায় মধ্যে পড়ে। বিশেষ করে যখন নারী সুন্দরী হয় এবং তার সাথে হাসি-তামাশা ও রসিকতায় লিপ্ত হয়, যেমন অধিকাংশ পর্দাহীন মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘটে। বলা হয়ে থাকে, نظرة … فسلام، فكلام فموعد فلقاء ‘দর্শন, তারপর সালাম, এরপর বাক্যালাপ, অতঃপর ডেটিং, তারপর সাক্ষাৎ’। আর শয়তান তো মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে চলে। সুতরাং অনেক বাক্যালাপ, হাসি-তামাশা, আনন্দ-উল্লাস পুরুষের হৃদয়কে নারীর প্রতি আকৃষ্ট করে। অনুরূপ নারীর অন্তরকেও পুরুষের প্রতি আকর্ষিত করে। এর মাধ্যমে এমন কিছু অনিষ্টতা ঘটে যা অপ্রতিরোধ্য। এছাড়াও নারী যখন পর্দাহীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষেত্রে নিজেকে পুরুষের সমকক্ষ ভাববে, তখন সে লজ্জাশীলা থাকবে না এবং পুরুষের ভীড়েও লাজনম্র হবে না। আর এর মধ্যেই রয়েছে বড় ফেৎনা এবং সীমাহীন বিপর্যয়। একদিন রাসূল (ছাঃ) মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখলেন যে, মহিলারা পুরুষদের সাথে মিলে মিশে পথ চলছে, তখন রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে বলেন, اسْتَأْخِرْنَ فَإِنَّهُ لَيْسَ لَكُنَّ أَنْ تَحْقُقْنَ الطَّرِيْقَ عَلَيْكُنَّ بِحَافَّاتِ الطَّرِيْقِ فَكَانَتِ الْمَرْأَةُ تَلْتَصِقُ بِالْجِدَارِ حَتَّى إِنَّ ثَوْبَهَا لَيَتَعَلَّقُ بِالْجِدَارِ مِنْ لُصُوْقِهَا بِهِ ‘আমি তোমাদের দূরত্ব কামনা করছি। কেননা তোমাদের উচিত হবে না রাস্তাকে আঁকড়ে ধরা। রাস্তার এক পাশে চলা তোমাদের জন্য আবশ্যক’। এরপর মহিলারা রাস্তার প্রাচীর ঘেঁষে চলতেন, এমনকি তাদের কারো কাপড় প্রাচীরে আটকে যেত।[7]
আল্লামা ইবনে কাছীর তাঁর তাফসীর গ্রন্থে আল্লাহর এ বাণী উল্লেখ করেন, وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ ‘হে নবী! আপনি মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন চক্ষু অবনমিত রাখে’ (নূর ২৪/৩১)।
লজ্জাহীনা নারী, যারা পরপুরুষকে আকৃষ্টকারীনী তারা জাহান্নামী’।[8]
আর যদি তা অবৈধ হয়, তবে তা হবে নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজ। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পথ’ (বনু ইস্রাঈল ১৭/৩২)। প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে কোনভাবেই এই অশ্লীলতার নিকটে গমন করা যাবে না। এসম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ ‘তোমরা প্রকাশ্য বা গোপন কোন অশ্লীলতার নিকটবর্তী হবে না’ (আন‘আম-৬/১৫১)।
গ. ধন-সম্পদের মোহ : ঋণ হ’তে দূরে থাকুন! শয়তান দারিদ্রতার ভয় দেখায়। ইমাম শাফেঈর দারিদ্রতা সম্পর্কে আমর ইবন সাওদ বলেন, كان الشافعى اسخر الناس على الدينار و الدرهم و الطعام فقال لى الشافعى أفلست من دهرى ثلاث افلاسات فكنت ابيع قليلى و كثيرى حتى حلى بنتى و زوجتى و لم أرهن قط ‘ইমাম শাফেঈ দীনার, দিরহাম ও খাদ্য অধিক দান করতেন। তিনি একদা আমাকে বলেন, জীবনে আমি তিনবার দারিদ্রতায় পতিত হয়েছি। তখন আমি আমার স্বল্প-বিস্তর সবকিছু বিক্রি করেছি। এমনকি আমার কন্যা ও স্ত্রীর অলংকারও বিক্রি করেছি কিন্তু আমি কখনো ঋণ করিনি’।[9]
দুনিয়া ও ধন-সম্পদ বিমুখ ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা যেমন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন, তেমনি জীবিকাতে প্রাচুর্য দান করেন। এ বিষয়ে আনাস বিন মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ كَانَتِ الآخِرَةُ هَمَّهُ جَعَلَ اللهُ غِنَاهُ فِىْ قَلْبِهِ وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِىَ رَاغِمَةٌ وَمَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ جَعَلَ اللهُ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَفَرَّقَ عَلَيْهِ شَمْلَهَ وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلاَّ مَا قُدِّرَ لَهُ– ‘যার জীবনের লক্ষ্য হবে আখিরাত আল্লাহ তার অন্তরকে ধনী করে দিবেন। তার সব সুযোগ-সুবিধা একত্রিত করে দিবেন এবং দুনিয়া (ধন-সম্পদ) তার পায়ে লুটিয়ে পড়বে। আর যার জীবনের লক্ষ্য হবে দুনিয়া আল্লাহ তা‘আলা দরিদ্রকে তার নিত্যসঙ্গী করে দিবেন। তার গোছানো বিষয় ছিন্নভিন্ন করে দিবেন এবং তার জন্য যতটুকু বরাদ্দ তার বাইরে সে দুনিয়ার কিছুই পাবে না’।[10]
ঘ. সুখ্যাতির মোহ : মানুষের লক্ষ্য হবে দ্বীনের খেদমত এবং সর্বাবস্থায় সৃষ্টির কল্যাণ সাধন করা। কিন্তু মানুষ দুনিয়ার সুখ্যাতির প্রতি ঝুঁকে পড়ে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, قَالَ تَعِسَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَعَبْدُ الدِّرْهَمِ وَعَبْدُ الْخَمِيصَةِ، إِنْ أُعْطِىَ رَضِىَ، وَإِنْ لَمْ يُعْطَ سَخِطَ، تَعِسَ وَانْتَكَسَ، وَإِذَا شِيكَ فَلاَ انْتَقَشَ، طُوبَى لِعَبْدٍ آخِذٍ بِعِنَانِ فَرَسِهِ فِى سَبِيلِ اللهِ، أَشْعَثَ رَأْسُهُ مُغْبَرَّةٍ قَدَمَاهُ، إِنْ كَانَ فِى الْحِرَاسَةِ كَانَ فِى الْحِرَاسَةِ، وَإِنْ كَانَ فِى السَّاقَةِ كَانَ فِى السَّاقَةِ، إِنِ اسْتَأْذَنَ لَمْ يُؤْذَنْ لَهُ، وَإِنْ شَفَعَ لَمْ يُشَفَّعْ– ‘দীনারের দাস ধ্বংস হোক, দিরহামের দাস ধ্বংস হোক, রেশমী বস্ত্রের দাস ধ্বংস হোক। তাকে দেওয়া হ’লে সে খুশী হয়। আর না দেওয়া হ’লে নাখোশ হয়। সে ধ্বংস হোক, ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তার পায়ে কাঁটা ফুটলে তা বের করা না যাক। সুখময় হোক সেই মানুষের জীবন, যে তার ঘোড়ার লাগাম ধরে আল্লাহর পথে সংগ্রাম ও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তার মাথার চুলগুলি হয়ে যায় আলু-থালু, আর পা দু’টো হয়ে যায় ধূলিমাখা। যদি সে নিরাপত্তারক্ষী দলে থাকে তো সেই দলেই থাকে, আবার পশ্চাৎবাহিনীতে থাকে তো পশ্চাৎ বাহিনীতেই থাকে। (সে এতটাই অখ্যাত যে) সে কোন কিছুর অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেওয়া হয় না এবং কোন সুপারিশ করলে তার সুপারিশ গৃহীত হয় না’।[11]
ইবনু রজব বলেছেন, বিদ্যা ও কর্মের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা লাভের চেষ্টা একটি অনভিপ্রেত বিষয়। ব্যক্তির বিদ্যাবুদ্ধি, সাধনা ও দ্বীন-ধার্মিকতা চর্চার মাধ্যমে প্রসিদ্ধি লাভের মোহ খুবই গর্হিত বিষয়। অনুরূপভাবে লোকের দো‘আ, বরকত লাভের আশায় কিংবা হাতে চুমু খাওয়ার উদ্দেশ্যে দলে দলে তার সাক্ষাৎ প্রার্থী হবে বলে সেই লক্ষ্যে কাজ করা, কথা-বার্তা বলা এবং কারামত যাহির করাও গর্হিত কাজ। কিন্তু খ্যাতির মোহে অন্ধজন এসব গর্হিত ও অবাঞ্ছিত কাজ করতে ভালবাসে। নিষ্ঠার সাথে এগুলি করে এবং এসবের উপকরণ যোগাতে চেষ্টা করে। এতেই তার যত আনন্দ। এ কারণেই সালাফে ছালেহীন খ্যাতিকে ভীষণভাবে অপসন্দ করতেন। তাঁদের মাঝে রয়েছেন আইয়ূব সাখতিয়ানী, ইবরাহীম নাখঈ, সুফিয়ান ছাওরী, আহমাদ বিন হাম্বল প্রমুখ বিদ্বান এবং ফুযাইল বিন আইয়ায, দাঊদ তাঈ প্রমুখ ছূফী। তাঁরা খুব আত্মনিন্দা করতেন এবং নিজেদের আমল সমূহকে মানুষের দৃষ্টির আড়ালে রাখতেন’।[12]
ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, ইচ্ছাপূর্বক মিথ্যা বলার নানাবিধ কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে নেত্বের মোহ ও লোভ একটি’।[13]
ঙ. প্রশংসা অর্জনের মোহ : ইবনু রজব বলেছেন, ক্ষমতাবান ও প্রতিপত্তিশালীরা মানুষের মুখ থেকে প্রশংসা শুনতে ভালবাসে। তারা জনগণের কাছে তা দাবীও করে। যারা তাদের প্রশংসা করে না তাদেরকে তারা নানাভাবে কষ্ট দেয়। অনেক সময় তারা একাজে এতটাই বাড়াবাড়ি করে বসে যে প্রশংসা থেকে নিন্দাই তাদের বেশী পাওনা হয়ে দাঁড়ায়। আবার কোন কোন সময় তারা তাদের দৃষ্টিতে ভাল কাজ করছে বলে যাহির করে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে তাদের মন্দ অভিপ্রায় কাজ করে। এভাবে মিথ্যাকে সত্যের আবরণে আচ্ছাদিত করতে পেরে তারা উৎফুল্ল হয় এবং লোকদের থেকে প্রশংসা লাভ ও তাদের মাঝে তাদের নাম ছড়িয়ে পড়ার আকাংখা পোষণ করে। এমন লোকদের প্রসঙ্গেই আল্লাহ বলেন, لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَفْرَحُونَ بِمَا أَتَوْا وَيُحِبُّونَ أَنْ يُحْمَدُوا بِمَا لَمْ يَفْعَلُوا فَلَا تَحْسَبَنَّهُمْ بِمَفَازَةٍ مِنَ الْعَذَابِ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‘যেসব লোকেরা তাদের মিথ্যাচারে খুশী হয় এবং তারা যা করেনি, এমন কাজে প্রশংসা পেতে চায়। তুমি ভেব না যে, তারা শাস্তি থেকে বেঁচে যাবে। বস্ত্ততঃ তাদের জন্য রয়েছে মর্মান্তিক আযাব’ (আলে ইমরান ৩/১৮৮)। এ আয়াত এরূপ বিনা কর্মে প্রশংসার জন্য লালায়িতদের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। অথচ মানবকুল থেকে প্রশংসা তলব করা, প্রশংসা পেয়ে খুশি হওয়া এবং প্রশংসা না করার দরুন শাস্তি দেওয়া কেবলমাত্র লা শরীক আল্লাহর জন্যই মানায়। এজন্যই সৎপথপ্রাপ্ত ইমামগণ তাদের কাজ-কর্মের দরুন তাদের প্রশংসা করতে নিষেধ করতেন। এক আল্লাহর প্রশংসা করতে তারা বেশী বেশী উদ্বুদ্ধ করতেন। কেননা সকল প্রকার নে‘মত ও অনুগ্রহের মালিক তো তিনিই।
খলীফা ওমর বিন আব্দুল আযীয এ ব্যাপারে খুবই সংযত ছিলেন। একবার তিনি হজ্জে আগত লোকদের পড়ে শোনানোর জন্য একটি পত্র প্রেরণ করেন। তাতে তিনি তাদের উপকার করতে আদেশ দেন এবং তাদের উপর যে যুলুম-নিপীড়ন জারী ছিল তা বন্ধ করতে বলেন। ঐ পত্রে এও ছিল যে, এসব কল্যাণ প্রাপ্তির দরুন তোমরা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো প্রশংসা কর না। কেননা তিনি যদি আমাকে আমার নিজের হাতে সোপর্দ করতেন তাহ’লে আমি অন্যদের মতই হ’তাম।
তাঁর সঙ্গে সেই মহিলার ঘটনা তো সুপ্রসিদ্ধ, যে তার ইয়াতীম মেয়েদের জন্য খলীফার নিকট ভাতা বরাদ্দের আবেদন জানিয়েছিল। মহিলাটির চারটি মেয়ে ছিল। খলীফা তাদের দু’জনের ভাতা বরাদ্দ করেছিলেন। ঐ মহিলা আল্লাহর প্রশংসা করে। কিছুকাল পর তিনি তৃতীয়জনের জন্য ভাতা নির্ধারণ করেন। এবারও মহিলা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। তার শুকরিয়া প্রকাশের কথা জেনে খলীফা তাকে বলেন, আমরা তাদের জন্য ভাতা বরাদ্দ করতে পেরেছি। আপনার এভাবে প্রশংসার প্রকৃত হকদারের প্রশংসা করার জন্যেই। এখন আপনি ঐ তিনজনকে বলবেন, তারা যেন চতুর্থজনের প্রতি সহমর্মিতা দেখায়। তিনি এর দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন যে, রাষ্ট্রের নির্বাহী পদাধিকারী কেবলই আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়নে নিযুক্ত। তিনি আল্লাহর বান্দাদেরকে তাঁর আনুগত্যের হুকুমদাতা এবং তাঁর নিষিদ্ধ জিনিসগুলি থেকে নিষেধকারী মাত্র। আল্লাহর বান্দাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবান জানানোর মাধ্যমে তিনি তাদের কল্যাণকামী। তার বিশেষ চাওয়া-পাওয়া যে, দ্বীন সর্বতোভাবে আল্লাহর জন্য হোক এবং ইযযত-সম্মান সব আল্লাহর হোক। তারপরও তার সদাই ভয় হ’ত যে, তিনি আল্লাহর হক আদায়ে কতইনা ত্রুটি করে ফেলছেন।[14]
অতএব সকল প্রকার মোহ সর্বদা বর্জনীয়। এটা এমন একটি বিষয় যা খুব সহজেই মানুষকে বশ করে ফেলে। কারণ এর চাকচিক্যতা যেমন আকর্ষনীয়, ঠিক তেমনি ভঙ্গুর বা ক্ষণস্থায়ী। মোহ ও লোভ পরস্পর সম্পূরক। কেননা মোহের সাথে লোভ মিশ্রিত থাকে সেটা প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে হোক।[15] প্রত্যেক ব্যক্তির ভেতরে এই মোহের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা বিরাজমান। কিন্তু মুমিন জ্ঞানীরা ব্যতীত। তাই আমরা এই মিথ্যে মোহের জাল ভেদ করে যেন মুমিন হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারি। মহান আল্লাহ আমাদের সেই তাওফীক দান করুন- আমীন! (ক্রমশ)
[লেখক : যশপুর, তানোর, রাজশাহী]
[1]. তিরমিযী হা/২৪৬৫; দারেমী হা/২২৯; ছহীহাহ হা/৯৪৯।
[2]. মুসলিম হা/২৭৪২।
[3]. ইবনু মাজাহ হা/৪১১২, হাসান ।
[4]. মুসলিম হা/২৯৫৭; মিশকাত হা/৫১৫৭।
[5]. মুসলিম হা/২৭৪২।
[6]. বুখারী হা/৫০৯৬; মুসলিম হা/২৭৪১; মিশকাত হা/৩০৮৫।
[7]. আবুদাঊদ হা/৫২৭৪; মিশকাত হা/৪৭২৭।
[8]. মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২৪ ‘ক্বিছাছ’ অধ্যায়; মিরক্বাত ৭/৯৬।
[9]. সিয়ার, ১০ম খন্ড, পৃ. ৩৭।
[10]. তিরমিযী হা/২৪৬৫; দারেমী হা/২২৯; ছহীহাহ হা/৯৪৯।
[11]. বুখারী হা/২৮৮৭।
[12]. শারহু হাদীছি মা যি’বানে জাই’আন, পৃ. ৬৮।
[13]. ইবনু তায়মিয়া, মাজমু‘ ফাতাওয়া ১৮/৪৬।
[14]. শারহু হাদীছি মা যি’বানে জাই’আন, পৃ.৪১-৪৩।
[15]. আল-ফাওয়াইদ, পৃ. ১০০।