ধৈর্য মু’মিন বান্দার জন্য অপরিহার্য

বিপদে হতাশ বা অধৈর্য হয়ে পড়া একদিকে যেমন ঈমানের পরিপন্থী, অপরদিকে তা মানবীয় ব্যক্তিতেরব চরম পরাজয়। হতাশা, অস্থিরতা বা উৎকণ্ঠা বিপদ দূর করেনা, বিপদের কষ্ট কমায় না বা বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার পথ দেখায় না। সর্বোপরি হতাশা বা ধৈর্যহীনতা স্বয়ং একটি কঠিন বিপদ যা মানুষকে আরো অনেক কঠিন বিপদের মধ্যে নিপতিত করে। পক্ষান্তরে ধৈর্য বিপদ দূর না করলেও তা বিপদ নিয়ন্ত্রণ করে, বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য শান্তভাবে চিন্তা করার সুযোগ দেয় এবং অস্থিরতা জনিত অন্যান্য বিপদের পথরোধ করে। সর্বোপরি বিপদে কষ্টে ধৈর্যের মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর নিকট মহান মর্যাদা, সাওয়াব, জাগতিক বরকত ও পারলৌকিক মুক্তি অর্জন করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা এবং ধনসম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্য পরীক্ষা করব। আর আপনি শুভ সংবাদ প্রদান করুন ধৈর্যশীলদেরকে, যারা তাদের উপর বিপদ আপতিত হলে বলে, ‘আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তণকারী।” (বাক্বারাহ ২/১৫৫-১৫৬)

ধৈর্য হলো কর্মময় স্থিরচিত্ততা ও হতাশামুক্ত সুদৃঢ় মনোবল। মুমিন দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিজের কল্যাণ ও স্বার্থ অর্জনের জন্য চেষ্টা করবেন। বিপদে আপদে কখনোই অতীতের ভুলভ্রান্তি নিয়ে হতাশা বা আফসোস করে সময় নষ্ট করবেন না বা মনের মধ্যে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও হতাশার অনুপ্রবেশের দরজা খুলে দিবেন না। বরং যা ঘটার আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটেছে এই বিশ্বাস নিয়ে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং দৃঢ় মনোবল নিয়ে কর্মের পথে এগোতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছা.) বলেন, أفضل الإيمان الصبر والسماحة ‘সর্বোত্তম ঈমান হ’ল ধৈর্য ও উদারতা’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৯৫; ছহীহুল জামি‘ হা/২৭৯৫)।

মন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সহজেই অত্যন্ত বেশি সাওয়াব অর্জনের অন্যতম মাধ্যম সবর বা ধৈর্যধারণের গুণ অর্জন করা। ধৈর্য মুমিনের জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধৈর্য বলতে নিষ্ক্রিয় নির্জীবতা বুঝানো হয় না, বরং সক্রিয় আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বুঝানো হয়। পারিপার্শিক অবস্থা বা অন্যের আচরণ দ্বারা নিজের আচরণ প্রভাবিত না করে নিজের স্থির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নিজেকে পরিচালিত করার ক্ষমতা। 

ধৈর্য প্রধানত তিন প্রকার :

(১) বিপদ-আপদে ধৈর্য।

(২) পাপে ও লোভে ধৈর্য।

(৩) ক্রোধ সংবরণে ধৈর্য।

মু’মিন বান্দার ধৈর্যধারন, গুণাহ মোচনের কারণ :

আল্লাহ তাঁর মনোনীত বান্দার ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। সে কি অসন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহর প্রতি নাফারমানী করছেন না-কি দৃঢ়তার সাথে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছেন? আবার সে মানুষের নিকটে  মুখাপেক্ষী না-কি আল্লাহর নিকটে মুখাপেক্ষী? তাই আল্লাহ বান্দাকে ভালো মন্দ দ্বারা পরীক্ষা করে থাকেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ قَطَّعۡنٰهُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اُمَمًا ۚ مِنۡهُمُ الصّٰلِحُوۡنَ وَ مِنۡهُمۡ دُوۡنَ ذٰلِکَ ۫ وَ بَلَوۡنٰهُمۡ بِالۡحَسَنٰتِ وَ السَّیِّاٰتِ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ‘আর যমীনে আমি তাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতিতে। তাদের কেউ নেককার আর কেউ অন্যরূপ এবং আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি ভাল ও মন্দ দ্বারা, হয়তো তারা ফিরে আসবে’ (আরাফ ৭/১৬৮)

আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে, ‘আমি ভাল-মন্দ অবস্থার দ্বারা তাদের পরীক্ষা করেছি যেন তারা নিজেদের গহিত আচার-আচরণ থেকে ফিরে আসে।’ ‘ভাল অবস্থার দ্বারা’-এর অর্থ হল এই যে, তাদেরকে ধন-সম্পদের প্রাচুর্য ও ভোগবিলাসের উপকরণ দান। আর ‘মন্দ অবস্থার দ্বারা’-এর অর্থ হয় লাঞ্ছনা-গঞ্জনার সে অবস্থা যা যুগে যুগে বিভিন্নভাবে তাদের উপর নেমে এসেছে, অথবা কোন কোন সময়ে তাদের উপর আপতিত দুর্ভিক্ষ ও দারিদ্র্য। [তাবারী; ইবন কাসীর] 

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “‏ مَا يَزَالُ الْبَلاَءُ بِالْمُؤْمِنِ وَالْمُؤْمِنَةِ فِي نَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَمَالِهِ حَتَّى يَلْقَى اللَّهَ وَمَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ ‏”‏  ‘মুমিন নারী-পুরুষের উপর, তার সন্তানের উপর ও তার ধন-সম্পদের উপর অনবরত বিপদাপদ লেগেই থাকে। অবশেষে আল্লাহ্ তা’আলার সাথে সে গুনাহমুক্ত অবস্থায় মিলিত হয়’ (তিরমিযী হা/২৩৯9)।

অন্যত্র বলেন, মুসআব ইবনু সা’দ (রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (সাদ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। মানুষের মাঝে কার বিপদের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন হয়? তিনি বললেন, নবীদের বিপদের পরীক্ষা, তারপর যারা নেককার তাদের, এরপর যারা নেককার তাদের বিপদের পরীক্ষা। মানুষকে তার ধর্মানুরাগের অনুপাত অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। তুলনামূলকভাবে যে লোক বেশি ধাৰ্মিক তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে কঠিন হয়ে থাকে। আর যদি কেউ তার দ্বীনের ক্ষেত্রে শিথিল হয়ে থাকে তাহলে তাকে সে মোতাবিক পরীক্ষা করা হয়। অতএব, বান্দার উপর বিপদাপদ লেগেই থাকে, অবশেষে তা তাকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দেয় যে, সে যমীনে চলাফেরা করে অথচ তার কোন গুনাহই থাকে না  (তিরমিযী হা/২৩৯৮)।

মু’মিন বান্দাকে দুঃখ-কষ্ট ঘিরে থাকে :

মু’মিনের শরীরে অনেক দুঃখ-যন্ত্রণা রয়েছে অথবা তার পরিবারে এবং তার সম্পদে আর যা গুনাহ মিটানো ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ। পক্ষান্তরে মুনাফিক্ব ও কাফিরের ক্ষেত্রে দুঃখ-যন্ত্রণা মুসীবাত স্বল্প আর যদিও তা আসে তাহলে তার কোন গুনাহ মিটিয়ে যায় না বরং ক্বিয়ামাতে তার জন্য বড় শাস্তি নিয়ে আসে। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «مَثَلُ الْمُؤْمِنِ كَمَثَلِ الزَّرْعِ لَا تزَال لاريح تميله وَلَا يزَال الْمُؤمن يصبيه الْبَلَاءُ وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ كَمَثَلِ شَجَرَةِ الْأَرْزَةِ لَا تهتز حَتَّى تستحصد» ‘মু’মিনের দৃষ্টান্ত হলো এক শস্য ক্ষেতের মতো। শস্য ক্ষেতকে যেভাবে বাতাস সবসময় ঝুঁকিয়ে রাখে, ঠিক এভাবে মু’মিনকে বিপদাপদ দোলায়। বালা-মুসীবত ঘিরে থাকে। আর মুনাফিক্বের দৃষ্টান্ত হলো, পিপুল গাছের মতো। পিপুল গাছ বাতাসের দোলায় ঝুঁকে না পড়লেও পরিশেষে শিকড়সহ উপড়ে যায়। (বুখারী হা/৫৬৪৪, মুসলিম হা/২৮০৯, আহমাদ হা/৭১৯২, মিশকাত হা/১৫৪২)।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ)হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, «مَثَلُ الْمُؤْمِنِ كَمَثَلِ الْخَامَةِ مِنَ الزَّرْعِ تُفَيِّئُهَا الرِّيَاح تصرعها مرّة وتعدلها أُخْرَى حَتَّى يَأْتِيهِ أَجَلُهُ وَمَثَلُ الْمُنَافِقِ كَمَثَلِ الْأَرْزَةِ الْمُجْذِيَةِ الَّتِي لَا يُصِيبُهَا شَيْءٌ حَتَّى يَكُونَ انْجِعَافُهَا مَرَّةً وَاحِدَة»  ‘মু’মিনের দৃষ্টান্ত হলো, ক্ষেতের তরতাজা ও কোমল শস্য শাখার মতো, যাকে বাতাস এদিক-ওদিক ঝুঁকিয়ে ফেলে। একবার এদিকে কাত করে। আবার সোজা করে দেয়। এভাবে তার আয়ু শেষ হয়ে যায়। আর মুনাফিক্বের দৃষ্টান্ত হলো শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পিপুল গাছের মতো। একেবারে ভূমিতে উপড়ে পড়ার আগে এ গাছে ঝটকা লাগে না। (বুখারী হা/৫৬৪3, মুসলিম হা/২৮10, মিশকাত হা/১৫৪1)। 

বাতাস শস্যকে ডান ও বাম দিকে পরিবর্তন করে দেয়। যখন উত্তরের বাতাস দক্ষিণ দিকে কোমল তৃণ হেলে পড়ে। আর দক্ষিণা বাতাস উত্তর দিকে হেলে পড়ে আর পূবের বাতাস হলে পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে আর পশ্চিমা বাতাস হলে পূর্ব দিকে হেলে পড়ে।

ইবনু হাজার আসকালানী (রহিঃ) বলেন, বাতাস যদি প্রবল আকারে হয় তাহলে উত্তর দক্ষিণে হেলে পড়ে এবং পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। আর বাতাস যদি স্থির হয়ে থাকে স্থির অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকে।

মুহলিব (রহিঃ) বলেন, তুলনার কারণ হল মু’মিন ব্যক্তির নিকট যখনই আল্লাহর আদেশ আসে তখনই যে তার অনুগত হয় এবং তার প্রতি সন্তুষ্ট হয় তার জন্য যদি কল্যাণ আসে তাহলে খুশী হয় এবং যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আর যদি অকল্যাণ আসে তাহলে ধৈর্য ধারণ করে এবং কল্যাণ ও প্রতিদানের আশা করে। যখন এ (নি‘আমাত) দূরীভূত হয় তারপরে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশে অবিচল থাকে।

আবুল ফারাজ ইবনু জাওযী (রহিঃ) বলেন, মানুষেরা এ ব্যাপারে কয়েক প্রকার। যথা-

১. তাদের মধ্যে কেউ বিপদাপদের প্রতিদানের অপেক্ষা করে তার ওপর বিপদ সহজ হয়।

২. তাদের মধ্যে কেউ মনে করে, এই বিপদাপদ আল্লাহ তার রাজত্বে নিয়ন্ত্রণ করেন। সুতরাং সে গ্রহণ করে এবং এতে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে না।

৩. আবার কেউ আল্লাহর ভালবাসায় বিপদাপদ উঠিয়ে নেয়ার আবেদন করা হতে যাকে বিরত রেখেছে। এটা ইতিপূর্বের চেয়ে বেশী ভাল।

৪. তাদের মধ্যে কেউ মুসীবাত আলিঙ্গন করাকে স্বাদ মনে করে, এরা সর্বোচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন। কেননা তারা আল্লাহর ইচ্ছা ও পছন্দে লালিত হয়ে উঠে।

পিপুল পরিচিত এক প্রকার গাছ যাকে বলা হয় أرْزُنْ যা এক প্রকার শক্ত কাঠ বিশিষ্ট বৃক্ষ যা দ্বারা লাঠি তৈরি হয়। আর যে গাছটি অনেক দিন ধরে বেঁচে থাকে যা খুব বেশী পাওয়া যায় লিবিয়ার পাহাড়ে।

সাদৃশ্যের কারণ যে মুনাফিক্ব ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা তাকে কোন কিছু হারান না, তার কোন কিছু খোয়া যায় না। বরং দুনিয়া তার জন্য সহজসাধ্য হয় যাতে আখিরাতে তার অবস্থা ভয়াবহ হয়। যখন আল্লাহ তার ধ্বংসের ইচ্ছে করেন তাকে তছনছ করে দেন তার মৃত্যু হয় কঠিন শাস্তি হিসেবে আর আত্মা বের হওয়ার সময় ভীষণ ব্যথা পায়।

কারও মতে মু’মিন ব্যক্তি দুনিয়ার বিপদাপদের সাক্ষাত পায় দুনিয়ার স্বল্প অংশ অর্জিত হয় বলে যে কোমল তৃণের ন্যায় যাকে বাতাস খুব এদিক সেদিক ঘুরায় তার কান্ড দুর্বল হওয়ার কারণে। কিন্তু মুনাফিক্ব এর বিপরীত।

মু’মিন বান্দা সর্বদা সবরের সাথে নিরাপত্তা চায় :

সবরকারীগণের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা বিপদের সম্মুখীন হলে – ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করে। এর দ্বারা প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে যে, কেউ বিপদে পড়লে যেন এ দোআটি পাঠ করে। কেননা, এরূপ বলাতে একাধারে যেমন অসীম সওয়াব পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি যদি এ বাক্যের অর্থের প্রতি যথার্থ লক্ষ্য রেখে তা পাঠ করা হয়, তবে বিপদে আন্তরিক শান্তি লাভ এবং তা থেকে উত্তরণও সহজতর হয়ে যায়। দোআটির অর্থ হচ্ছে, “নিশ্চয় আমরা তো আল্লাহরই। আর আমরা তার দিকেই প্রতীবর্তন করব।” সুতরাং আল্লাহ্ তা’আলা যদি আমাদের কোন কষ্ট দেন তবে তাতে কোন না কোন মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। তার উদ্দেশ্যকে সম্মান করতে পারা একটি মহৎ কাজ। আর এটাই হচ্ছে, সবর।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক লোককে বলতে শুনেছেন যে, “হে আল্লাহ! আমাকে সবরের শক্তি দান কর। তখন তিনি বললেন, তুমি বিপদ কামনা করেছ, সুতরাং তুমি নিরাপত্তা চাও।” [মুসনাদে আহমাদ হা/২৩৫] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, মুমিনের উচিত নয় নিজেকে অপমানিত করা। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, কিভাবে নিজেকে অপমানিত করে? রাসূল বললেন, এমন কোন বালা-মুসিবতের সম্মুখীন হয় যা সহ্য করার ক্ষমতা তার নেই”। [তিরমিযী হা/২২৫৪]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মুমিনের কর্মকাণ্ড আশ্চর্যজনক। তার সমস্ত কাজই ভাল। মুমিন ছাড়া আর কারও জন্য এমনটি হয় না। যদি তার কোন খুশীর বিষয় সংঘটিত হয় তবে সে শুকরিয়া আদায় করে, ফলে তা তার জন্য কল্যাণের হয়। আর যদি তার কোন ক্ষতিকর কিছু ঘটে যায় তবে সে সবর করে, ফলে তাও তার জন্য কলাণকর হয়।” [মুসলিম হা/২৯৯৯] অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে কেউ বিপদ-মুসিবতে পড়ে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন’ বলবে, এবং বলবে, হে আল্লাহ আমাকে এ মুসিবত থেকে উদ্ধার করুন এবং এর থেকে উত্তম বস্তু ফিরিয়ে দিন” অবশ্যই আল্লাহ তাকে উত্তম কিছু ফিরিয়ে দিবেন।” [মুসলিম হা/৯১৮]

পরিশেষে এই দোআ বলে শেষ করতে চায়, رَبِّنَا لَمَّا جَآءَتۡنَا ؕ رَبَّنَاۤ اَفۡرِغۡ عَلَیۡنَا صَبۡرًا وَّ تَوَفَّنَا مُسۡلِمِیۡنَ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ধৈর্য ও দৃঢ়তা অবলম্বনের গুণে অভিষিক্ত কর আর মুসলমান হিসেবে আমাদের মৃত্যু দান কর’ (আরাফ ৭/১২৬)। 

আল্লাহ তার বান্দার সাধ্যাতীত কিছু চাপিয়ে দেন না। তিনি বড়ই রহমশীল ও দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মুমিন হিসেবে কবূল করুন এবং কৃত পরীক্ষায় সবুর করার তাওফীক্ব দান করুন, আমীন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loader-image

Scroll to Top