মুসলমানদের অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে। যেমন মুমিন, ইবাদুল্লাহ (আল্লাহর বান্দা), হিযবুল্লাহ (আল্লাহর দল)। তদ্রূপ ছাহাবা, তাবেঈন, তাবে তাবেঈন, মুহাজির, আনছার ইত্যাদি নামসমূহ। ঠিক তেমনিভাবে ঐসকল গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে ‘আহলেহাদীছ’ ও ‘আহলে সুন্নাত’ উপাধিদ্বয় ‘খায়রুল কুরূন’ বা সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ হ’তে সাব্যস্ত রয়েছে। মুসলমানদের মাঝে উভয় গুণবাচক উপাধির ব্যবহার নির্দ্বিধায় প্রচলিত আছে। বরং এর বৈধতার পক্ষে মুসলিম উম্মাহর ইজমা রয়েছে। ‘আহলেহাদীছ’ এবং ‘আহলে সুন্নাত’ দু’টি সমার্থবোধক গুণবাচক নাম। যার দ্বারা ছহীহ আক্বীদা সম্পন্ন মুসলমানদের অর্থাৎ সাহায্য ও নাজাতপ্রাপ্ত দলের পরিচয় পাওয়া যায়। ‘আহলেহাদীছ’ এই গুণবাচক নাম এবং প্রিয় উপাধি দ্বারা দুই শ্রেণীর ছহীহ আক্বীদাসম্পন্ন মুসলমান উদ্দেশ্য।
কতিপয় ব্যক্তি নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য নিজেকে আহলেহাদীছ বলেন না। বরং তারা নিজেকে আহলেহাদীছ বলে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করেন এবং বিভিন্ন নামে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করে থাকেন। আবার কেউ কেউ গায়ের আহলেহাদীছদের বিরোধিতার কারণে ‘আহলেহাদীছ’ নাম বলতে ভয় পান। আবার কেউ নিজেকে ‘আহলে ছহীহ হাদীছ’ ইত্যাদি বলে বিশ্বাস করাতে চেষ্টা করে থাকেন। এ ধরনের কাজ-কারবার ও ছলচাতুরি ভ্রান্তি বৈ কিছুই নয়। হকপন্থীদের বৈশিষ্ট্যগত নাম সমূহের মধ্যে আহলে সুন্নাত, আহলেহাদীছ, সালাফী, আছারী ইত্যাদি অনেক সুন্দর সুন্দর উপাধি রয়েছে। তবে এসবের মধ্যে ‘আহলেহাদীছ’ নামটি সর্বশ্রেষ্ঠ। এ নামটির জায়েয হওয়ার ব্যাপারে সালাফে ছালেহীনের ইজমা রয়েছে। আল-হামদুলিল্লাহ।
আহলেহাদীছ প্রসঙ্গে শায়খ আলবানী (রহিঃ) এর মতামত :
(ক) একবার পাকিস্তানের আহলেহাদীছগণ একটি দাওয়াতী সম্মেলনে শায়খ আলবানীকে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু তিনি তাতে অংশগ্রহণে আগ্রহী হ’লেন না। তখন তারা তাঁর ছাত্র শায়খ হাশেমীকে অনুরোধ করলেন শায়খ আলবানীর সাথে কথা বলার জন্য। কিন্তু শায়খ আলবানী আবারও ওযর পেশ করে বললেন যে, তার না যাওয়ার কারণ হ’ল, পাকিস্তানের আহলেহাদীছ ভাইয়েরা তার প্রতি ভালোবাসায় বাড়াবাড়ি করছেন। অতঃপর শায়খ হাশেমী যখন তাঁকে সেখানকার কিছু আহলেহাদীছ ওলামায়ে কেরামের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন, তখন আলবানী শায়খ হাসান বিন মুহাম্মাদের চরণটি আবৃত্তি করলেন, أَهْلُ الْحَدِيْثِ هُمْ أَهْلُ النَّبِيْ + وَإِنْ لَمْ يَصْحَبُوْا نَفْسَهْ أَنْفَاسُهُ صَحِبُوْا অর্থাৎ ‘আহলেহাদীছগণ তো নবী করীম (ছাঃ)-এর পরিবার। যদি তারা স্বয়ং সাথী নাও হন, তবুও তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস তাদের সাথী’। অতঃপর বললেন, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি। তিনি যেন আমাকে কিয়ামতের দিন তাদের সাথেই পুনরুত্থিত করেন। একথা বলতে বলতে তিনি কেঁদে ফেললেন (মুহাম্মাদ বাইয়ূমী, ইমাম আলবানী হায়াতুহু দাওয়াতুহু ওয়া জুহূদুহু ফী খিদমাতিস সুন্নাহ, পৃঃ ১৩৮)।
(খ) শায়খ আলবানী তাঁর বিখ্যাত ‘সিলসিলা ছহীহাহ’ গ্রন্থের ২৭০ নং হাদীছে ফেরক্বা নাজিয়ার পরিচয় দিতে গিয়ে আহলেহাদীছগণ সম্পর্কে ওলামায়ে কেরামের ও আইম্মায়ে এযামের মন্তব্য তুলে ধরার পর বলেন, ইমামগণ আহলেহাদীছদেরকে নাজী ফেরক্বা ও বিজয়ী দল হিসাবে চিহ্নিত করায় কিছু মানুষ বিব্রত বোধ করে থাকে। মূলতঃ এটা অস্বাভাবিক মনে করার কোন কারণ থাকবে না যদি নিম্নোক্ত বিষয়গুলি আমরা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেই।
প্রথমতঃ আহলেহাদীছগণ হাদীছ গবেষণা ও এতদসংক্রান্ত বিষয়াবলী যেমন রাবীদের জীবনী, হাদীছের দোষ-ত্রুটি ও তার বিভিন্ন সূত্র সম্পর্কে পান্ডিত্য হাছিলের দিক থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত, তার পথনির্দেশ, তাঁর চরিত্র, যুদ্ধাভিযান ও ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞান রাখে।
দ্বিতীয়তঃ মুসলিম উম্মাহ বিভিন্ন ফেরক্বা ও মাযহাবে বিভক্ত হয়েছে যা ১ম শতাব্দীতে ছিল না।[1] আর প্রত্যেক মাযহাবেরই নিজস্ব মূলনীতি ও শাখা-প্রশাখা রয়েছে। রয়েছে এমন হাদীছসমূহ, যা থেকে তারা দলীল পেশ করেন ও যার উপর তারা নির্ভর করেন। এসব মাযহাবের মধ্যে কোন একটিকে অনুসরণকারী মুকাল্লিদ কেবল সেই মাযহাবেরই অন্ধ অনুসরণ করে এবং সে মাযহাবের সকল সিদ্ধান্তকে অাঁকড়ে থাকে। ঐ ব্যক্তি অন্য মাযহাবের দিকে ভ্রূক্ষেপও করে না। অথচ হয়তবা সেখানে সে এমন হাদীছ খুঁজে পেত, যা তার অনুসৃত মাযহাবে পায়নি। বিদ্বানদের এটা একটা স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার যে, প্রত্যেক মাযহাবেই এমন অনেক সুন্নাত ও হাদীছ রয়েছে যা অন্য মাযহাবে পাওয়া যায় না। ফলে সুনির্দিষ্ট একটি মাযহাবের অনুসারী ব্যক্তি অন্য মাযহাবসমূহে সংরক্ষিত বিপুলসংখ্যক হাদীছের প্রতি আমল করা থেকে বিস্মৃত থেকে যায়। কিন্তু আহলেহাদীছগণ এর ব্যতিক্রম। কেননা তারা বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত সকল হাদীছই গ্রহণ করে থাকেন, তা সে যে মাযহাবের হৌক না কেন। তার বর্ণনাকারী যে দলেরই হৌক না কেন, যতক্ষণ তিনি বিশ্বস্ত মুসলিম হন। এমনকি বর্ণনাকারী হানাফী, মালেকী বা অন্য মাযহাব দূরে থাক, যদি শী‘আ, ক্বাদারী, খারেজীও হন, তবুও সে হাদীছ তারা গ্রহণ করেন। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) এটাই স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন তাঁর বক্তব্যে। তিনি ইমাম আহমাদ-কে লক্ষ্য করে বলেন, أنتم أعلم بالحديث مني، فإذا جاءكم الحديث صحيحا فأخبرني به حتى أذهب إليه سواء كان حجازيا أم كوفيا أم مصريا ‘আপনি হাদীছ সম্পর্কে আমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। অতএব যখনই আপনার নিকটে কোন ছহীহ হাদীছ পৌঁছবে, তখনই আপনি আমাকে তা অবহিত করবেন। যাতে আমি সেদিকে যেতে পারি। হৌক বর্ণনাকারী হেজাযী, কূফী কিংবা মিসরী।’ কিন্তু আহলেহাদীছগণ- আল্লাহ আমাদেরকে হাশরের ময়দানে তাদের সাথে সমাবেত করুন- তারা মুহাম্মাদ (ছাঃ) ব্যতীত অন্য কারু বক্তব্যের অন্ধ অনুসরণ করে না, যতই শ্রেষ্ঠ বা মহান ব্যক্তি হৌক না কেন। অথচ অন্যেরা যারা হাদীছ ও তার উপর আমলের প্রতি সম্বন্ধ করে না, তারা ইমামগণের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও স্ব স্ব ইমামের বক্তব্যের অন্ধ অনুসরণ করে থাকে। যেমনভাবে আহলেহাদীছগণ নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছের অনুসরণ করে থাকে। উপরোক্ত আলোচনার পর এতে কোন বিস্ময়ের অবকাশ থাকে না যে, আহলেহাদীছগণই বিজয়ী দল এবং নাজী ফেরক্বা। বরং তারাই হ’ল সেই মধ্যপন্থী উম্মত যারা (কিয়ামতের দিন) সমগ্র সৃষ্টির উপর সাক্ষী হবেন।
সালাফী পরিচয় দেয়া প্রসঙ্গে বর্তমান জামানার আমিরুল মুমিনিনা ফিল হাদীছ শায়খ আলবানী রাহ এর মন্তব্য পড়ুন!
পরবর্তী যুগের মানুষ হিসাবে অবশ্যই আমাদেরকে কুরআন, হাদীছ এবং পূর্ববর্তী মুমিন বান্দাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে। আমাদের জন্য একথা বলা জায়েয হবে না যে, আমরা সালাফে ছালেহীনের মাসলাক অনুসরণ ব্যতীতই কুরআন ও হাদীছকে বুঝে অনুসরণ করব। এ যুগে সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্যমন্ডিত নিসবত গ্রহণ করা ব্যতীত উপায় নেই। আমাদের এটা বলা যথেষ্ট হবে না যে, আমি একজন মুসলিম অথবা ‘আমার মাযহাব ইসলাম’। কারণ রাফেযী, ইবাযী, কাদিয়ানী সকল ফেরকাই একথা বলে থাকে। কিসে তাদের থেকে তোমাকে পার্থক্য করবে?
যদি তুমি বল, ‘আমি কিতাব ও সুন্নাহর অনুসারী মুসলিম’। এটাও যথেষ্ট নয়। কারণ বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠী, আশ‘আরী, মাতুরীদী সকলেই একই দাবী করে থাকে। নিঃসন্দেহে এক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পষ্ট ও বৈশিষ্টমন্ডিত নামকরণ হবে এই যে, তুমি বলবে আমি কুরআন, হাদীছ এবং সালাফে ছালেহীনের বুঝের অনুসারী। যেটা সংক্ষেপে তুমি বলবে, ‘আমি একজন সালাফী’। এক্ষেত্রে তিনি একটি চমৎকার পংক্তি উল্লেখ করতেন তা হ’ল-
وكل خير في اتباع من سلف + وكل شر في ابتداع من خلف
অর্থাৎ ‘সালাফে ছালেহীনের অনুসরণেই সকল কল্যাণ। পরবর্তীদের সৃষ্ট বিদ‘আতের মধ্যেই সকল অকল্যাণ’। তারপর তিনি সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তর্কের খাতিরে যদি আমরা কেবল ‘মুসলিম’ হিসাবেই নিজেদের নামকরণ করি; যদিও ‘সালাফী’ সম্বন্ধটি একটি সঠিক এবং মর্যাদাপূর্ণ নাম। তাহ’লে তারা কি নিজেদের দল, মাযহাব বা তরীকার নামকরণ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন? যে সকল নাম আদতেই শরীআতসম্মত নয়?
এরপর তিনি বলেন, فحسبكم هذا التفاوتُ بيننا + وكلُّ إناءٍ بما فيه ينضَحُ তোমাদের সাথে আমাদের মধ্যকার এই পার্থক্যই যথেষ্ট। প্রত্যেক পাত্র তাই-ই নিঃসরণ করে, যা তার মধ্যে থাকে’।
আহলেহাদীছ সম্পর্কে অন্যদের মতামত :
সালাফে ছালেহীন-এর আছার হ’তে নিম্নে ৫০টি উদ্ধৃতি পেশ করা হ’ল। যেগুলোর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় যে, আহলেহাদীছ উপাধি ও গুণবাচক নামটি সম্পূর্ণ সঠিক। আর এর উপরেই ইজমা রয়েছে।
১. বুখারী : ইমাম বুখারী (মৃঃ ২৫৬ হিঃ) ‘ত্বায়েফাহ মানছূরাহ’ বা সাহায্যপ্রাপ্ত দল সম্পর্কে বলেছেন, يعني أَهْلُ الْحَدِيثِ অর্থাৎ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘আহলেহাদীছ’।[1]
ইমাম বুখারী (রহঃ) ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ আল-ক্বাত্তানের (মৃঃ ১৯৮ হিঃ) সূত্রে একজন রাবী (বর্ণনাকারী) সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, لم يكن من أهل الحديث ‘তিনি আহলেহাদীছদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না’।[2]
২. মুসলিম : ইমাম মুসলিম (মৃঃ ২৬১ হিঃ) ‘মাজরূহ’ বা সমালোচিত রাবীদের সম্পর্কে বলছেন, هم عند أهل الحديث متهمون ‘তারা আহলেহাদীছদের নিকটে (মিথ্যার দোষে) অপবাদগ্রস্ত’।[3]
ইমাম মুসলিম (রহঃ) আরো বলেছেন, وقد شرحنا من مذهب الحديث وأهله، ‘আমরা হাদীছ ও আহলেহাদীছদের মাযহাব-এর ব্যাখ্যা করেছি’।[4]
ইমাম মুসলিম আইয়ূব আস-সিখতিয়ানী, ইবনে আওন, মালেক বিন আনাস, শু‘বাহ বিন হাজ্জাজ, ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ আল-ক্বাত্তান, আব্দুর রহমান বিন মাহদী এবং তাদের পরে আগতদেরকে আহলেহাদীছদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত (من أهل الحديث) বলে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।[5]
৩. শাফেঈ : একটি দুর্বল বর্ণনার ব্যাপারে ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশ-শাফেঈ (মৃঃ ২০৪ হিঃ) বলেছেন, لا يثبت أهل الحديث مثله، ‘এ জাতীয় বর্ণনাকে আহলেহাদীছগণ প্রমাণিত মনে করেন না’।[6]
ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেছেন, إذا رأيت رجلا من أصحاب الحديث فكأني رأيت النبي صلى الله عليه وسلم حيا، ‘আমি যখন আহলেহাদীছ-এর কোন ব্যক্তিকে দেখি, তখন যেন আমি রাসূল (ছাঃ)-কেই জীবিত দেখি’।[7]
৪. আহমাদ বিন হাম্বল : ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (মৃঃ ২৪১ হিঃ)-কে ‘ত্বায়েফাহ মানছূরাহ’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হ’লে তিনি বলেন, إن لم تكن هذه الطائفة المنصورة أصحاب الحديث فلا أدري من هم؟ ‘সাহায্যপ্রাপ্ত এই দলটি যদি আছহাবুল হাদীছ (আহলেহাদীছ) না হয়, তবে আমি জানি না তারা কারা’?[8]
৫. ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ আল-ক্বাত্তান : ইমাম ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ আল-ক্বাত্তান (মৃঃ ১৯৮ হিঃ) সুলাইমান বিন ত্বারখান আত-তায়মী সম্পর্কে বলেছেন, كان التيمي عندنا من أهل الحديث، ‘আমাদের নিকট তায়মী আহলেহাদীছদের অন্যতম ছিলেন’।[9]
হাদীছের একজন রাবী ইমরান বিন কুদামাহ আল-‘আম্মী সম্পর্কে ইয়াহ্ইয়া আল-ক্বাত্তান বলেছেন,ولكنه لم يكن من أهل الحديث، ‘কিন্তু তিনি আহলেহাদীছদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না’।[10]
৬. তিরমিযী : আবু যায়েদ নামক একজন রাবীর ব্যাপারে ইমাম তিরমিযী (মৃঃ ২৭৯ হিঃ) বলেছেন, وأبو زيد رجل مجهول عند أهل الحديث، ‘আহলেহাদীছদের নিকটে আবু যায়েদ একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি’।[11]
৭. আবুদাঊদ : ইমাম আবুদাঊদ আস-সিজিস্তানী (মৃঃ ২৭৫ হিঃ) বলেছেন, عند عامة أهل الحديث ‘সাধারণ আহলেহাদীছদের নিকটে…’।[12]
৮. নাসাঈ : ইমাম নাসাঈ (মৃঃ ৩০৩ হিঃ) বলেছেন, ومنفعةً لأهل الإسلام ومن أهل الحديث والعلم والفقه والقرآن، ‘ইসলামের অনুসারীগণ, আহলেহাদীছ, আহলে ইলম, আহলে ফিক্বহ এবং আহলে কুরআন-এর উপকারিতার জন্য’।[13]
৯. ইবনে খুযায়মাহ : ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইসহাক্ব ইবনে খুযায়মাহ নিশাপুরী (মৃঃ ৩১১ হিঃ) একটি হাদীছের ব্যাপারে বলেছেন, لم نر خلافا بين علماء أهل الحديث أن هذا الخبر صحيح من جهة النقل، ‘আমরা আহলেহাদীছ আলেমদের মাঝে কোন মতানৈক্য দেখিনি যে, এই হাদীছটি বর্ণনার দিক থেকে ছহীহ’।[14]
১০. ইবনু হিববান : হাফেয মুহাম্মাদ ইবনে হিববান আল-বুসতী (মৃঃ ৩৫৪ হিঃ) একটি হাদীছের উপর নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ বেঁধেছেন : ذكر خبر شنع به بعض المعطلة على أهل الحديث، حيث حرموا توفيق الإصابة لمعناه، ‘ঐ হাদীছের বর্ণনা, যার মাধ্যমে কতিপয় মু‘আত্তিলা (নির্গুণবাদী) আহলেহাদীছদের প্রতি দোষারোপ করেছে। কেননা এরা এ হাদীছের সঠিক মর্ম অনুধাবনের তেŠফিক থেকে বঞ্চিত হয়েছে’।[15]
অন্য এক জায়গায় হাফেয ইবনু হিববান আহলেহাদীছদের এই গুণ বর্ণনা করেছেন যে, ينتحلون السنن ويذبون عنها ويقمعون من خالفها، ‘তারা হাদীছের প্রতি আমল করেন, এর হেফাযত করেন এবং সুন্নাত বিরোধীদের মূলোৎপাটন করেন’।[16]
১১. আবু ‘আওয়ানাহ : ইমাম আবু ‘আওয়ানাহ আল-ইসফারাইনী (মৃঃ ৩১৬ হিঃ) একটি মাসআলা সম্পর্কে ইমাম মুযানী (রহঃ)-কে বলছেন, اختلاف بين أهل الحديث ‘এ বিষয়ে আহলেহাদীছদের মাঝে মতভেদ রয়েছে’।[17]
১২. ইজলী : ইমাম আহমাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন ছালেহ আল-ইজলী (মৃঃ ২৬১ হিঃ) ইমাম সুফিয়ান বিন উয়াইনা সম্পর্কে বলেন, وكان بعض أهل الحديث يقول هو أثبت الناس في حديث الزهري، ‘কতিপয় আহলেহাদীছ বলতেন যে, তিনি যুহরীর হাদীছ সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী বিশবস্ত’।[18]
১৩. হাকেম : আবু আব্দুল্লাহ আল-হাকেম নিশাপুরী (মৃঃ ৪০৫ হিঃ) ইয়াহ্ইয়া ইবনে মাঈন (রহঃ) সম্পর্কে বলেছেন, إمام أهل الحديث ‘তিনি আহলেহাদীছদের ইমাম’।[19]
১৪. হাকেম কাবীর : আবু আহমাদ আল-হাকেম আল-কাবীর (মৃঃ ৩৭৮ হিঃ) شعار أصحاب الحديث ‘আহলেহাদীছদের নিদর্শন’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এই গ্রন্থটির অনুবাদ লেখকের তাহকীক সহ প্রকাশিত হয়েছে।[20]
১৫. ফিরইয়াবী : মুহাম্মাদ বিন ইউসুফ আল-ফিরইয়াবী (মৃঃ ২১২ হিঃ) বলেছেন, رأينا سفيان الثوري بالكوفة وكنا جماعة من أهل الحديث، ‘আমরা সুফিয়ান ছাওরীকে কুফাতে দেখেছি। এমতাবস্থায় আমরা আহলেহাদীছদের একটা জামা‘আত ছিলাম’।[21]
১৬. ফিরইয়াবী : জা‘ফর বিন মুহাম্মাদ আল-ফিরইয়াবী (মৃঃ ৩০১ হিঃ) ইবরাহীম বিন মূসা আল-ওয়াযদূলী (রহঃ) সম্পর্কে বলেছেন, وله ابن من أصحاب الحديث يقال له اسحاق ‘তার এক আহলেহাদীছ পুত্র রয়েছে। যার নাম ইসহাক্ব’।[22]
১৭. আবু হাতিম আর-রাযী : আসমাউর রিজালের প্রসিদ্ধ ইমাম আবু হাতিম আর-রাযী (মৃঃ ২৭৭ হিঃ) বলেছেন, واتفاق أهل الحديث على شيء يكون حجة، ‘কোন বিষয়ের উপরে আহলেহাদীছদের ঐক্যমত হুজ্জাত বা দলীল হিসাবে গণ্য হয়’।[23]
১৮. আবু ওবাইদ : ইমাম আবু ওবাইদ ক্বাসেম বিন সাল্লাম (মৃঃ ২২৪ হিঃ) একটি আছার সম্পর্কে বলেছেন, وقد يأخذ بهذا بعض أهل الحديث، ‘কতিপয় আহলেহাদীছ এই আছারটি গ্রহণ করেছেন’।[24]
১৯. আবুবকর বিন আবুদাঊদ : ইমাম আবুদাঊদ আস-সিজিস্তানীর অধিকাংশের নিকট বিশ্বস্ত পুত্র আবুবকর বিন আবুদাঊদ বলছেন,
ولا تك من قوم تلهو بدينهم * فتطعن في أهل الحديث وتقدح
‘তুমি ঐ লোকদের দলভুক্ত হয়ো না, যারা স্বীয় দ্বীনকে নিয়ে খেল-তামাশা করে। নতুবা তুমিও আহলেহাদীছদেরকে তিরষ্কার ও দোষারোপ করবে’।[25]
২০. ইবনু আবী আছিম : ইমাম আহমাদ বিন আমর বিন আয-যাহহাক বিন মাখলাদ ওরফে ইবনে আবী আছিম (মৃঃ ২৮৭ হিঃ) একজন রাবী সম্পর্কে বলছেন, رجل من أهل الحديث ثقة ‘তিনি আহলেহাদীছদের অন্তর্ভুক্ত একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি’।[26]
২১. ইবনু শাহীন : হাফেয আবু হাফছ ওমর বিন শাহীন (মৃঃ ৩৮৫ হিঃ) ইমরান আল-‘আম্মী সম্পর্কে ইয়াহ্ইয়া আল-ক্বাত্তবানের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন, ولكن لم يكن من أهل الحديث ‘কিন্তু তিনি (ইমরান) আহলেহাদীছদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না’।[27]
২২. আল-জাওযাজানী : আবু ইসহাক্ব ইবরাহীম বিন ইয়াকূব আল-জাওযাজানী (মৃঃ ২৫৯ হিঃ) বলেছেন, ثم الشائع في أهل الحديث ‘অতঃপর আহলেহাদীছদের মাঝে প্রসিদ্ধ রয়েছে…’।[28]
২৩. আহমাদ বিন সিনান আল-ওয়াসিত্বী : ইমাম আহমাদ বিন সিনান আল-ওয়াসিত্বী (মৃঃ ২৫৯ হিঃ) বলেছেন, ليس في الدنيا مبتدع إلا وهو يبغض أهل الحديث، ‘দুনিয়াতে এমন কোন বিদ‘আতী নেই, যে আহলেহাদীছদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে না’।[29]
প্রতীয়মান হ’ল যে, যে ব্যক্তি আহলেহাদীছদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ পোষণ করে অথবা আহলেহাদীছদেরকে মন্দ নামে ডাকে, সে ব্যক্তি পাক্কা বিদ‘আতী।
২৪. আলী বিন আব্দুল্লাহ আল-মাদীনী : ইমাম বুখারী ও অন্যান্যদের উস্তাদ ইমাম আলী বিন আব্দুল্লাহ আল-মাদীনী (মৃঃ ২৩৪ হিঃ) একটি হাদীছের ব্যাখ্যায় বলছেন, يعني أهل الحديث ‘অর্থাৎ তারা হ’লেন আহলেহাদীছ (আছহাবুল হাদীছ)’।[30]
২৫. কুতায়বা বিন সাঈদ : ইমাম কুতায়বা বিন সাঈদ (মৃঃ ২৪০ হিঃ) বলেছেন, إذا رأية الرجل يحب أهل الحديث … فإنه على السنة ‘যদি তুমি কোন ব্যক্তিকে দেখ যে সে আহলেহাদীছদেরকে ভালোবাসে, তবে বুঝবে সে সুন্নাতের উপরে আছে’।[31]
২৬. ইবনু কুতায়বা দীনাওয়ারী : বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী মুহাদ্দিছ ইমাম ইবনু কুতায়বা আদ-দীনাওয়ারী (মৃঃ ২৭৬ হিঃ)। ‘তাবীলু মুখতালাফিল হাদীছ ফির রদ্দি আলা আ‘দায়ে আহলিল হাদীছ’ (تأويل مختلف الحديث في الرد على أعداء أهل الحديث) নামে একটি গ্রন্থ লিখেছেন। এই গ্রন্থে তিনি আহলেহাদীছ-এর দুশমনদের কঠিনভাবে জবাব প্রদান করেছেন।
২৭. বায়হাক্বী : আহমাদ ইবনুল হুসাইন আল-বায়হাক্বী (মৃঃ ৪৫৮ হিঃ) মালেক বিন আনাস, আওযাঈ, সুফিয়ান ছাওরী, সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা, হাম্মাদ বিন যায়েদ, হাম্মাদ বিন সালামাহ, শাফেঈ, আহমাদ বিন হাম্বল, ইসহাক্ব বিন রাহওয়াইহ প্রমুখকে আহলেহাদীছদের অন্তর্ভুক্ত (من أهل الحديث) লিখেছেন।[32]
২৮. ইসমাঈলী : হাফেয আবু বকর আহমাদ বিন ইবরাহীম আল-ইসমাঈলী (মৃঃ ৩৭১ হিঃ) একজন রাবী সম্পর্কে বলেছেন, لم يكن من أهل الحديث، ‘তিনি আহলেহাদীছ ছিলেন না’।[33]
২৯. খত্বীব : খত্বীব বাগদাদী (মৃঃ ৪৬৩ হিঃ) আহলেহাদীছদের ফযীলত সম্পর্কে ‘শারফু আছহাবিল হাদীছ’ (شرف أصحاب الحديث) নামে একখানা গ্রন্থ রচনা করেছেন। যেটি প্রকাশিত। ‘নাছীহাতু আহলিল হাদীছ’ (نصيحة أهل الحديث) নামক গ্রন্থখানাও খত্বীবের দিকে সম্পর্কিত।[34]
৩০. আবু নু‘আইম ইস্পাহানী : আবু নু‘আইম ইস্পাহানী (মৃঃ ৪৩০ হিঃ) একজন রাবী সম্পর্কে বলেছেন, لا يخفى على علماء أهل الحديث فساده، ‘আহলেহাদীছ আলেমদের নিকটে তার ফাসাদ গোপন নয়’।[35]
তিনি বলেছেন, وذهب الشافعي مذهب أهل الحديث ‘ইমাম শাফেঈ আহলেহাদীছের মাযহাবের অনুকূলে গেছেন’।[36]
৩১. ইবনুল মুনযির : হাফেয মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম ইবনুল মুনযির আন-নায়সাপুরী (মৃঃ ৩১৮ হিঃ) স্বীয় সঙ্গী-সাথী এবং ইমাম শাফেঈ ও অন্যান্যদেরকে আহলেহাদীছ বলেছেন।[37]
৩২. আজুর্রী : ইমাম আবু বকর মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন আল-আজুর্রী (মৃঃ ৩৬০ হিঃ) আহলেহাদীছদেরকে নিজ ভাই সম্বোধন করে বলেছেন, نصيحة لإخواني من أهل القرآن وأهل الحديث وأهل الفقه وغيرهم من سائر المسلمين، ‘আমার ভ্রাতৃমন্ডলী আহলে কুরআন, আহলেহাদীছ, আহলে ফিক্বহ এবং অন্যান্য সকল মুসলিমের প্রতি আমার নছীহত’।[38]
সতর্কীকরণ : হাদীছ অস্বীকারকারীদেরকে আহলে কুরআন বা আহলে ফিক্বহ বলা ভুল। আহলে কুরআন, আহলেহাদীছ, আহলে ফিক্বহ প্রভৃতি উপাধি ও গুণবাচক নাম একই জামা‘আতের নাম। আল- হামদুলিল্লাহ।
৩৩. ইবনু আব্দিল বার্র : হাফেয ইউসুফ বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল বার্র আল-আন্দালুসী (মৃঃ ৪৬৩ হিঃ) বলেছেন, وقالت طائفة من أهل الحديث، ‘আহলেহাদীছদের একটি দল বলেছে…’।[39]
৩৪. ইবনু তায়মিয়া : হাফেয ইবনু তায়মিয়া আল-হার্রানী (মৃঃ ৭২৮ হিঃ) একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، أَمَّا الْبُخَارِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ فَإِمَامَانِ فِي الْفِقْهِ مِنْ أَهْلِ الِاجْتِهَادِ. وَأَمَّا مُسْلِمٌ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَه وَابْنُ خُزَيْمَةَ وَأَبُو يَعْلَى وَالْبَزَّارُ وَنَحْوُهُمْ فَهُمْ عَلَى مَذْهَبِ أَهْلِ الْحَدِيثِ. لَيْسُوا مُقَلِّدِينَ لِوَاحِدٍ بِعَيْنِهِ مِنَ الْعُلَمَاءِ وَلَا هُمْ مِنَ الْأَئِمَّةِ الْمُجْتَهِدِينَ عَلَى الْإِطْلَاقِ- ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। ইমাম বুখারী ও আবুদাঊদ ফিক্বহের ইমাম ও মুজতাহিদ (মুত্বলাক্ব) ছিলেন। পক্ষান্তরে ইমাম মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে খুযায়মাহ, আবু ই‘য়ালা, বাযযার প্রমুখ আহলেহাদীছ মাযহাবের উপরে ছিলেন। তারা কোন নির্দিষ্ট আলেমের মুক্বাল্লিদ ছিলেন না। আর তারা মুজতাহিদ মুত্বলাক্বও ছিলেন না’।[40]
সতর্কীকরণ : উক্ত বড় বড় মুহাদ্দিছ ইমামগণের সম্পর্কে ইমাম ইবনে তায়মিয়ার এমনটা বলা যে, ‘তারা কোন মুজতাহিদ মুত্বলাক্ব ছিলেন না’ অগ্রহণযোগ্য।
৩৫. ইবনে রশীদ : ইবনে রশীদ আল-ফিহরী (মৃঃ ৭২১ হিঃ) ইমাম আইয়ূব আস-সিখতিয়ানী এবং অন্যান্য বড় বড় আলেমদের সম্পর্কে বলেছেন, من أهل الحديث ‘তারা আহলেহাদীছদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন’।[41]
৩৬. ইবনুল ক্বাইয়িম : হাফেয ইবনুল কবাইয়িম (মৃঃ ৭৫১ হিঃ) স্বীয় প্রসিদ্ধ ‘ক্বাছীদা নূনিয়া’তে লিখেছেন, يا مبغضا أهل الحديث وشاتما * أبشر بعقد ولاية الشيطان
‘হে আহলেহাদীছদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ও গালি প্রদানকারী! তুমি শয়তানের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনের সুসংবাদ গ্রহণ কর’।[42]
৩৭. ইবনু কাছীর : হাফেয ইসমাঈল ইবনে কাছীর আদ-দিমাশক্বী (মৃঃ ৭৭৪ হিঃ) সূরা বনু ইসরাঈলের ৭১ আয়াতের তাফসীরে বলেছেন, وقال بعض السلف: هذا أكبر شرف لأصحاب الحديث؛ لأن إمامهم النبي صلى الله عليه وسلم. ‘কতিপয় সালাফ বলেছেন, আহলেহাদীছদের জন্য এটি সবচেয়ে বড় মর্যাদা। কেননা তাদের ইমাম হ’লেন নবী করীম (ছাঃ)’।[43]
৩৮. ইবনুল মুনাদী : ইমাম ইবনুল মুনাদী আল-বাগদাদী (মৃঃ ৩৩৬ হিঃ) ক্বাসেম বিন যাকারিয়া ইয়াহ্ইয়া আল-মুতার্রিয সম্পর্কে বলেছেন, وكان من أهل الحديث والصدق ‘তিনি আহলেহাদীছ ও সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন’।[44]
৩৯. শীরাওয়াইহ আদ-দায়লামী : দায়লামের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক ইমাম শীরাওয়াইহ (মৃঃ ৫০৯ হিঃ) বিন শাহারদার আদ-দায়লামী আব্দূস (আব্দুর রহমান) বিন আহমাদ বিন আববাদ আছ-ছাক্বাফী আল-হামাদানী সম্পর্কে স্বীয় ইতিহাস গ্রন্থে বলেছেন, روى عنه عامت أهل الحديث ببلدنا وكان ثقت متقنا- ‘আমাদের এলাকার আম আহলেহাদীছগণ তার থেকে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ছিলেন’।[45]
৪০. মুহাম্মাদ বিন আলী আছ-ছূরী : বাগদাদের প্রসিদ্ধ ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আলী বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আছ-ছূরী (মৃঃ ৪৪১ হিঃ) বলেছেন,
قل لمن عاند الحديث * وأضحى عائبا أهله ومن يدعيه
أبعلم تقول هذا، أبن لي * أم بجهل فالجهل خلق السفيه
أيعاب الذين هم حفظوا * الدين من الترهات والتمويه-
‘হাদীছের সাথে শত্রুতা পোষণকারী এবং আহলেহাদীছদেরকে দোষারোপকারীদেরকে বলে দাও! আমাকে বল যে, তুমি কি জেনে-বুঝে নাকি অজ্ঞতাবশে এমনটি বলছ? আর অজ্ঞতা তো নির্বোধের স্বভাব। তাদেরকে কি দোষারোপ করা যায়, যারা দ্বীনকে বাতিল ও ভিত্তিহীন কথাবার্তা থেকে হেফাযত করেছে’?[46]
৪১. সুয়ূত্বী : يَوْمَ نَدْعُو كُلَّ أُنَاسٍ بِإِمَامِهِمْ ‘(স্মরণ কর) যেদিন আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদের নেতা (অর্থাৎ নবী অথবা আমলনামা সহ) আহবান করব’ (বনু ইসরাঈল ৭১) আয়াতের ব্যাখ্যায় জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (মৃঃ ৯১১ হিঃ) বলেন, ليس لأهل الحديث منقبة أشرف من ذلك لأنه لا إمام لهم غيره- ‘আহলেহাদীছদের জন্য এর চাইতে অধিক ফযীলতপূর্ণ বক্তব্য আর নেই। কেননা মুহাম্মাদ (ছাঃ) ছাড়া আহলেহাদীছদের কোন ইমাম নেই’।[47]
৪২. ক্বিওয়ামুস সুন্নাহ : ক্বিওয়ামুস সুন্নাহ (হাদীছের ভিত্তি) খ্যাত ইসমাঈল বিন মুহাম্মাদ ইবনুল ফযল (মৃঃ ৫৩৫ হিঃ) ইস্পাহানী বলেছেন, ذكر أهل الحديث وأنهم الفرقة الظاهرة على الحق إلى أن ةقوم الساعة- ‘আহলেহাদীছদের বর্ণনা। আর এরাই ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত হক্বের উপরে বিজয়ী থাকবে’।[48]
৪৩. রামহুরমুযী : কাযী হাসান বিন আব্দুর রহমান বিন খাল্লাদ আর-রামহুরমুযী (মৃঃ ৩৬০ হিঃ) বলেছেন, وقد شرف الله الحديث وفضل أهله ‘আল্লাহ হাদীছ ও আহলেহাদীছদেরকে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন’।[49]
৪৪. হাফছ বিন গিয়াছ : হাফছ বিন গিয়াছ (মৃঃ ১৯৪ হিঃ)-কে আছহাবুল হাদীছ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, هم خير أهل الدنيا ‘তারা (আহলেহাদীছ) দুনিয়ার মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি’।[50]
৪৫. নাছর বিন ইবরাহীম আল-মাক্বদেসী : আবুল ফাতহ নাছর বিন ইবরাহীম আল-মাক্বদেসী (মৃঃ ৪৯০ হিঃ) লিখেছেন, باب فضيلة أهل الحديث، ‘আহলেহাদীছদের মর্যাদা সম্পর্কে অনুচ্ছেদ’।[51]
৪৬. ইবনু মুফলিহ : আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন মুফলিহ আল-মাক্বদেসী (মৃঃ ৭৬৩ হিঃ) বলেছেন, أهل الحديث هم الطائفة الناجية القائمون على الحق- ‘আহলেহাদীছরাই মুক্তিপ্রাপ্ত দল। যারা হক্বের উপরে প্রতিষ্ঠিত আছেন’।[52]
৪৭. আল-আমীর আল-ইয়ামানী : মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-আমীর আল-ইয়ামানী (মৃঃ ১১৮২ হিঃ) বলেছেন, عليك بأصحاب الحديث الأفاضل تجد عندهم كل الهدي والفضائل- ‘মর্যাদাবান আহলেহাদীছদেরকে অাঁকড়ে ধরবে। তুমি তাদের নিকটে সব ধরনের হেদায়াত ও গুণাবলী পাবে’।[53]
৪৮. ইবনুছ ছালাহ : ছহীহ হাদীছের সংজ্ঞা প্রদানের পরে হাফেয ইবনুছ ছালাহ আশ-শাহরাযূরী (মৃঃ ৮০৬ হিঃ) লিখেছেন, فهذا هو الحديث الذي يحكم له بالصحة بلا خلاف بين أهل الحديث، ‘এটি ঐ হাদীছ, যাকে ছহীহ হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে আহলেহাদীছদের মাঝে কোন মতভেদ নেই’।[54]
৪৯. আছ-ছাবূনী : আবূ ইসমাঈল আব্দুর রহমান বিন ইসমাঈল আছ-ছাবূনী (মৃঃ ৪৪৯ হিঃ) عقيدة السلف أصحاب الحديث ‘সালাফ : আহলেহাদীছদের আক্বীদা’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন । এতে তিনি বলেছেন, ويعتقد أهل الحديث ويشهدون أن الله سبحانه وتعالى فوق سبع سماوات على عرشه- ‘আহলেহাদীছগণ এ আক্বীদা পোষণ করেন এবং (এ কথার) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সাত আসমানের উপরে তাঁর আরশের উপরে রয়েছেন’।[55]
৫০. আব্দুল ক্বাহির আল-বাগদাদী : আবূ মানছূর আব্দুল ক্বাহির বিন ত্বাহের বিন মুহাম্মাদ আল-বাগদাদী (মৃঃ ৪২৯ হিঃ) সিরিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের সীমান্তবর্তী অধিবাসীদের সম্পর্কে বলেছেন, كلهم على مذهب أهل الحديث من أهل السنة ‘তারা সকলেই আহলুস সুন্নাহ-এর মধ্য থেকে আহলুল হাদীছ-এর মাযহাবের উপরে আছেন’।[56]
উক্ত ৫০টি উদ্ধৃতি দ্বারা প্রমাণিত হ’ল যে, মুহাজির, আনছার এবং আহলে সুন্নাত-এর মতই মুসলমানদের অন্যতম গুণবাচক নাম ও উপাধি হ’ল ‘আহলেহাদীছ’। এই (আহলেহাদীছ) উপাধিটি জায়েয হওয়ার ব্যাপারে মুসলিম উম্মাহর ইজমা রয়েছে। কোন একজন ইমামও আহলেহাদীছ নাম ও উপাধিকে কখনো ভুল, নাজায়েয বা বিদ‘আত বলেননি। এজন্য কতিপয় খারেজী এবং তাদের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিদের আহলেহাদীছ নামটিকে অপসন্দ করা, এটাকে বিদ‘আত এবং দলবাজি বলে আখ্যায়িত করে হাসি-ঠাট্টা করা আসলে সকল মুহাদ্দিছ এবং মুসলিম উম্মাহর ইজমার বিরোধিতা করার শামিল।[57]
এগুলো ব্যতীত আরো অসংখ্য উদ্ধৃতি রয়েছে। যেগুলোর দ্বারা ‘আহলুল হাদীছ’ বা ‘আছহাবুল হাদীছ’ প্রভৃতি গুণবাচক নামসমূহের প্রমাণ পাওয়া যায়। সম্মানিত মুহাদ্দিছগণের উক্ত সুস্পষ্ট বক্তব্য সমূহ ও ইজমা দ্বারা প্রমাণিত হ’ল যে, আহলেহাদীছ ঐ সকল ছহীহ আক্বীদা সম্পন্ন মুহাদ্দিছ ও সাধারণ জনগণের উপাধি, যারা তাক্বলীদ ছাড়াই সালাফে ছালেহীনের বুঝের আলোকে কুরআন ও সুন্নাহর উপরে আমল করেন। আর তাদের আক্বীদা সম্পূর্ণরূপে কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার অনুকূলে। স্মর্তব্য যে, আহলেহাদীছ ও আহলে সুন্নাত একই দলের গুণবাচক নাম।
কতিপয় বিদ‘আতী একথা বলে যে, শুধু মুহাদ্দিছগণকেই ‘আহলেহাদীছ’ বলা হয়ে থাকে। চাই তিনি (মুহাদ্দিছ) আহলে সুনণাতের মধ্য থেকে হোন বা বিদ‘আতীদের মধ্য থেকে হোন। তাদের এ বক্তব্য সালাফে ছালেহীনের বুঝের বিপরীত হওয়ার কারণে পরিত্যাজ্য। বিদ‘আতীদের উক্ত বক্তব্য দ্বারা একথা মেনে নেয়া আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায় যে, পথভ্রষ্ট লোকদেরকেও ‘ত্বায়েফাহ মানছূরাহ’ বলে অভিহিত করতে হবে। অথচ এ ধরনের বক্তব্য বাতিল হওয়ার বিষয়টি সাধারণ জনগণের কাছেও পরিষ্কার। কতিপয় রাবীর ব্যাপারে স্বয়ং মুহাদ্দিছগণ একথা সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন যে, তিনি আহলেহাদীছের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।[58]
দুনিয়ার প্রত্যেক বিদ‘আতী আহলেহাদীছদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে। তবে কি প্রত্যেক বিদ‘আতীই নিজের প্রতিও ঘৃণা-বিদ্বেষ পোষণ করে? অতএব হক এটাই যে, ‘আহলেহাদীছ’-এর বৈশিষ্ট্যগত নাম ও উপাধির হকদার স্রেফ দু’শ্রেণীর লোক। ১. হাদীছ বর্ণনাকারীগণ (মুহাদ্দিছগণ)। ২. হাদীছের উপরে আমলকারীগণ (মুহাদ্দিছগণ এবং তাঁদের অনুসারী সাধারণ জনগণ)। হাফেয ইবনু তায়মিয়াহ (৬৬১-৭২৮ হিঃ) বলছেন,ونحن لا نعني بأهل الحديث المقتصرين على سماعه أو كتابته أو روايته بل نعني بهم : كل من كان أحق بحفظه ومعرفته وفهمه ظاهراً وباطناً واتباعه باطناً وظاهراً وكذلك أهل القرآن- ‘আমরা আহলেহাদীছ বলতে কেবল তাদেরকেই বুঝি না যারা হাদীছ শুনেছেন, লিপিবিদ্ধ করেছেন বা বর্ণনা করেছেন। বরং আমরা আহলেহাদীছ দ্বারা ঐ সকল ব্যক্তিকে বুঝিয়ে থাকি, যারা হাদীছ মুখস্থকরণ এবং গোপন ও প্রকাশ্যভাবে তার জ্ঞান লাভ ও অনুধাবন এবং অনুসরণ করার অধিক হকদার। অনুরূপভাবে আহলে কুরআনও’।[59] হাফেয ইবনে তায়মিয়ার উক্ত বক্তব্য দ্বারা প্রতীয়মান হ’ল যে, আহলেহাদীছ দ্বারা মুহাদ্দিছগণ এবং তাদের অনুসারী সাধারণ জনগণ উদ্দেশ্য।
পরিশেষে নিবেদন এই যে, আহলেহাদীছ কোন বংশানুক্রমিক ফিরক্বা নয়। বরং এটি একটি আদর্শিক জামা‘আত। প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি আহলেহাদীছ, যিনি কুরআন, হাদীছ ও ইজমার উপরে সালাফে ছালেহীনের বুঝের আলোকে আমল করেন এবং এর উপরেই স্বীয় বিশ্বাস পোষণ করেন। আর নিজেকে আহলেহাদীছ (আহলে সুন্নাত) বলার অর্থ আদৌ এটা নয় যে, এখন এই ব্যক্তি জান্নাতী হয়ে গেছে। এখন নেক আমল সমূহ বর্জন, প্রবৃত্তির অনুসরণ এবং নিজের মন মতো জীবন যাপন করা যাবে। বরং ঐ ব্যক্তিই সফলকাম, যিনি আহলেহাদীছ (আহলে সুন্নাত) নামের মর্যাদা রক্ষা করে স্বীয় পূর্বসূরীদের মতো কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন যাপন করবেন। প্রকাশ থাকে যে, মুক্তির জন্য কেবল নামের লেবেলই যথেষ্ট নয়। বরং হৃদয় ও মস্তিষ্কের পবিত্রতা এবং ঈমান ও আক্বীদার পরিশুদ্ধিতার সাথে সাথে সৎ কর্ম সমূহের উপরেই কেবল নাজাত নির্ভরশীল। এরূপ ব্যক্তিই আল্লাহর অনুগ্রহে চিরস্থায়ী মুক্তির হকদার হবে ইনশাআল্লাহ।
——————- লেখক : আহমাদুল্লাহ সৈয়দপুরী
[1]. খত্বীব বাগদাদী, মাসআলাতুল ইহতিজাজ বিশ-শাফেঈ, পৃঃ ৪৭, সনদ ছহীহ; আল-হুজ্জাহ ফী বায়ানিল মাহাজ্জাহ, ১/২৪৬।
[2]. আত-তারীখুল কাবীর, ৬/৪২৯; আয-যু‘আফাউছ ছাগীর, পৃঃ ২৮১।
[3]. ছহীহ মুসলিম, ভূমিকা, পৃঃ ৬ (প্রথম অনুচ্ছেদের আগে); অন্য আরেকটি সংস্করণ, ১/৫।
[4]. ঐ।
[5]. ছহীহ মুসলিম, ভূমিকা, পৃঃ ২২, ‘মু‘আন‘আন’ হাদীছ দ্বারা দলীল পেশ করার বিশুদ্ধতা’ অনুচ্ছেদ; অন্য আরেকটি সংস্করণ, ১/২৬; তৃতীয় আরেকটি সংস্করণ, ১/২৩।
[6]. ইমাম বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা, ১/২৬০, সনদ ছহীহ।
[7]. খত্বীব বাগদাদী, শারফু আছহাবিল হাদীছ, পৃঃ ৮৫, সনদ ছহীহ।
[8]. হাকেম, মা‘রিফাতু উলূমিল হাদীছ, পৃঃ ২, হা/২, সনদ হাসান; ইবনু হাজার আসক্বালানী এটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ ফাৎহুল বারী, ১৩/২৯৩, হা/৭৩১১-এর ব্যাখ্যা।
[9]. মুসনাদু আলী ইবনুল জা‘দ, হা/১৩৫৪, ১/৫৯৪; সনদ ছহীহ; আরেকটি সংস্করণের হাদীছ নং ১৩১৪; ইবনু আবী হাতিম, আল-জারহু ওয়াত তা‘দীল, ৪/১২৫, সনদ ছহীহ।
[10]. আল-জারহু ওয়াত তা‘দীল, ৬/৩০৩, সনদ ছহীহ।
[11]. তিরমিযী, হা/ ৮৮।
[12]. রিসালাতু আবী দাঊদ ইলা মাক্কা ফী ওয়াছফি সুনানিহি, পৃঃ ৩০; পান্ডুলিপি, পৃঃ ১।
[13]. নাসাঈ, হা/৪১৪৭, ৭/১৩৫; আত-তা‘লীক্বাতুস সালাফিইয়াহ, হা/৪১৫২। [এখানে হাদীছকে অস্বীকারকারী প্রচলিত ‘আহলে কুরআন’ নামক ভ্রান্ত দলটিকে বুঝানো হয়নি। আর যারা হাদীছকে অস্বীকার করে তাদেরকে আহলে কুরআন বলে সম্বোধন করাও ঠিক নয়। কারণ তারা কুরআনের অনুসরণ করে না; বরং তারা প্রবৃত্তিপূজারী-অনুবাদক]।
[14]. ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ, হা/৩১, ১/২১।
[15]. ছহীহ ইবনে হিববান, আল-ইহসান, হা/৫৬৬; আরেকটি সংস্করণ, হা/ ৫৬৫; [যারা মহান আল্লাহর ছিফাতসমূহকে অস্বীকার করে তাদেরকে মু‘আত্তিলা বলা হয়।-অনুবাদক]।
[16]. ছহীহ ইবনে হিববান, আল-ইহসান, হা/৬১২৯; অন্য আরেকটি সংস্করণ, হা/৬১৬২; আরো দেখুন : আল-ইহসান, ১/১৪০, ৬১ নং হাদীছের পূর্বে।
[17]. মুসনাদু আবী ‘আওয়ানাহ, ১/৪৯।
[18]. মা‘রিফাতুছ ছিক্বাত, ১/৪১৭; নং ৬৩১; আরেকটি সংস্করণের নং ৫৭৭।
[19]. আল-মুস্তাদরাক, হা/৭১০, ১/১৯৮।
[20]. দেখুন: মাসিক ‘আল-হাদীছ’, ৯ম সংখ্যা, পৃঃ ৪-২৮।
[21]. আল জারহু ওয়াত তা‘দীল, ১/৬০, সনদ ছহীহ।
[22]. ইবনে আদী, আল-কামিল, ১/২৭১; আরেকটি সংস্করণ, ১/৪৪০, সনদ ছহীহ।
[23]. কিতাবুল মারাসীল, পৃঃ ১৯২, অনুচ্ছেদ ৭০৩।
[24]. আবু ওবাইদ, কিতাবুত তুহূর, পৃঃ ১৭৪; ইবনুল মুনযির, আল-আওসাত্ব, ১/২৬৫।
[25]. মুহাম্মাদ ইবনুল হুসাইন আল-আজুর্রী, কিতাবুশ শরী‘আহ, পৃঃ ৯৭৫, সনদ ছহীহ।
[26]. আল-আহাদ ওয়াল মাছানী, ১/৪২৮, হা/৬০৪।
[27]. ইবনে শাহীন, তারীখু আসমাইছ ছিক্বাত, হা/১০৮৪।
[28]. আহওয়ালুর রিজাল, পৃঃ ৪৩, রাবী নং ১০। আরো দেখুন : পৃঃ ২১৪।
[29]. মা‘রিফাতু উলূমিল হাদীছ, পৃঃ ৪, নং ৬, সনদ ছহীহ।
[30]. তিরমিযী, হা/২২২৯; আরিযাতুল আহওয়াযী, ৯/৭৪।
[31]. শারফু আছহাবিল হাদীছ, হা/১৪৩, সনদ ছহীহ।
[32]. বায়হাক্বী, কিতাবুল ই‘তিকাদ ওয়াল হিদায়াহ ইলা সাবীলির রাশাদ, পৃঃ ১৮০।
[33]. মুহাম্মাদ বিন জিবরীল আন-নিসবী, কিতাবুল মু‘জাম, ১/৪৬৯, নং ১২১।
[34]. তারীখু বাগদাদ, ১/২২৪, নং ৫১।
[35]. আল-মুস্তাখরাজ আলা ছহীহ মুসলিম, ১/৬৭, অনুচ্ছেদ ৮৯।
[36]. হিলয়াতুল আওলিয়া, ৯/১১২।
[37]. দেখুন: আল-আওসাত্ব, ২/৩০৭, হা/৯১৫-এর আলোচনা।
[38]. আশ-শারী‘আহ, পৃঃ ৩; অন্য আরেকটি সংস্করণ, পৃঃ ৭।
[39]. আত-তামহীদ, ১/১৬।
[40]. মাজমূঊ ফাতাওয়া, ২০/৪০।
[41]. আস-সুনানুল আবয়ান, পৃঃ ১১৯, ১২৪।
[42]. আল-কাফিয়াতুশ শাফিয়াহ ফিল ইনতিছার লিল ফিরক্বাতিন নাজিয়াহ, পৃঃ ১৯৯, ‘নিশ্চয়ই আহলেহাদীছরাই রাসূল (ছাঃ)-এর সাহায্যকারী এবং তাদের বৈশিষ্ট্য’ অনুচ্ছেদ।
[43]. ইবনে কাছীর, ৪/১৬৪।
[44]. তারীখু বাগদাদ, ১২/৪৪১, নং ৬৯১০, সনদ হাসান।
[45]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১৪/৪৩৮। আল-হামাদানীর দ্বারা দলীল গ্রহণ করা সঠিক। কারণ যাহাবী তার কিতাব হ’তে বর্ণনা করেন।
[46]. যাহাবী, তাযকিরাতুল হুফফায, ৩/১১১৭, নং ১০০২, সনদ হাসান; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১৭/৬৩১; ইবনুল জাওযী, আল-মুন্তাযাম, ১৫/৩২৪।
[47]. তাদরীবুর রাবী, ২/১২৬, ২৭তম প্রকার।
[48]. আল-হুজ্জাহ ফী বায়ানিল মাহাজ্জাহ ওয়া শারহু আক্বীদাতি আহলিস সুন্নাহ, ১/২৪৬।
[49]. আল-মুহাদ্দিছুল ফাছিল বাইনার রাবী ওয়াল ওয়া‘ঈ, পৃঃ ১৫৯, নং ১।
[50]. মা‘রিফাতু উলূমিল হাদীছ, পৃঃ ৩, হা/৩, সনদ ছহীহ।
[51]. আল-হুজ্জাতু ‘আলা তারিকিল মাহাজ্জাহ, ১/৩২৫।
[52]. আল-আদাবুশ শারঈয়াহ, ১/২১১।
[53]. আর-রাওযুল বাসিম ফিয যাবিব আন সুন্নাতি আবিল ক্বাসিম, ১/১৪৬।
[54]. মুক্বাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ (ইরাকীর ব্যাখ্যা সহ), পৃঃ ২০।
[55]. আক্বীদাতুস সালাফ আছহাবিল হাদীছ, পৃঃ ১৪।
[56]. উছূলুদ দ্বীন, পৃঃ ৩১৭।
[57]. এই সাথে পাঠ করুন বিগত যুগের ৩০৪ জন শ্রেষ্ঠ আহলেহাদীছ বিদ্বানগণের তালিকা মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বিরচিত ডক্টরেট থিসিস ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ’ পৃঃ ৫০-৫২ এবং ৬৬-৭৩।-অনুবাদক।
[58]. ৫, ২১ ও ২৮ নং উদ্ধৃতি দ্রঃ।
[59]. ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ৪/৯৫।