দুনিয়াতে যার যা প্রাপ্য তাকে সেই প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার নাম যুলুম। কারো অধিকার হরণ, বিনা অপরাধে নির্যাতন, আর্থিক, দৈহিক ও মর্যাদার ক্ষতিসাধন, মানহানিকর অপবাদ দেওয়া, দুর্বলের ওপর নৃশংসতা চালানো, নির্যাতন করা, অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ হরণ, উৎপীড়ন বা যন্ত্রণা ইত্যাদি কাজ যুলুমের অন্তর্ভুক্ত।
কবীরা গুণাহর মধ্যে অন্যতম মহাপাপ যুলুম করা। এই মারাত্মক কবীরা গুনাহ। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৃথিবীজুড়ে চলছে যুলুমের ভয়ংকর প্রতিযোগিতা। চারদিকে প্রকাশ পাচ্ছে দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার। আর যে ব্যক্তি অত্যাচারিত ও উৎপীড়িত তাকে মযলুম বলা হয়।
আল্লাহ কারো প্রতি যুলুম করেন না :
আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি প্রতি সদা দয়া ও ক্ষমাশীল। কিন্তু তারা ব্যতীত যারা আল্লাহর প্রতি ও নিজেদের প্রতি যুলুম করে থাকে। আল্লাহ একমাত্র প্রভু যিনি কারু প্রতি যুলুম করেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তো কণামাত্রও যুলুম করেন না” (আন-নিসা ৪/৪০)। তিনি আরো বলেন, আর আল্লাহ সৃষ্টিজগতের প্রতি যুলুম করতে চান না। (আলে-ইমরান ৩/১০৮)। তিনি অন্যত্র বলেন, তারপর প্রত্যেককে, যা সে অর্জন করেছে তা পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হবে। তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না।
কিয়ামতের দিন তাদের এই মৌখিক দাবী এবং ভ্রান্ত ধারণা কোন কাজে আসবে না। সেদিন মহান আল্লাহ তাঁর সূক্ষ্ণ সুবিচারের মাধ্যমে প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেবেন। কারো উপর কোন প্রকার যুলুম করা হবে না। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলনে, ‘হে আমার বান্দাগণ! আমি আমার ওপর যুলুম করাকে হারাম করে দিয়েছি। (মুসলমি হা/২৫৭৭)
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল যে, সমস্ত মানুষই ঈমান আনুক এবং তার অনুসরণ করে হিদায়াত প্রাপ্ত হউক। তাই আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করে এটা জানিয়ে দিলেন যে, ঈমান আনা ও হিদায়াতপ্রাপ্ত হওয়া আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল নয়। পূর্বে যার জন্য সৌভাগ্য লিখা হয়েছে সেই ঈমান আনবে। আর যার জন্য দূর্ভাগ্য লিখা হয়েছে সে পথভ্রষ্ট হবে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
বান্দাও কারো প্রতি যুলুম করবে না :
যুলুম অতিব হীনতা সম্পূর্ণ ও উর্দ্ধতাপূর্ণ গির্হিত কাজ। নির্দয় যালেম ব্যতীত মুমিন বান্দা দ্বারা সম্পন্ন হওয়া আশা করা যায় না। মানুষ শয়তানের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে এগেন গর্হিত কাজ করে থাকে। তাই আল্লাহ এসব গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। যেন তাদের প্রতি আল্লাহও সদয় থাকেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, لَا تَظۡلِمُوۡنَ وَ لَا تُظۡلَمُوۡنَ ‘তোমরা যুলুম করবে না এবং তোমাদের উপরও যুলুম করা হবে না’ (বাক্বারাহ ২/২৭৯)। অন্যত্র বলেন, প্রত্যেককে তাদের অর্জিত কাজের প্রতিদান পূর্ণভাবে দেয়া হবে। আর তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না। (আলে-ইমরান ৩/২৫)।
হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলনে, ‘হে আমার বান্দাগণ! আমি তোমাদের জন্যও যুলুম করা হারাম করে দিলাম। অতএব তোমরা (পরস্পররে প্রতি) যুলুম করো না’।(মিশকাত হা/২৩২৬)
মযলুমের দোআ আল্লাহ দ্রুত কবুল করেন :
অত্যাচারিত মযলুম ব্যক্তির দোআ আল্লাহ দ্রুত কবুল করেন এবং এ সময় আল্লাহ ও বান্দার মাঝে কোন প্রকার পর্দা থাকে না, যদিও মযলুম ব্যক্তি কাফের হয়। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন লোকের দু’আ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। (১) সায়িমের দো’আ- যখন সে ইফতার করে, (২) ন্যায়পরায়ণ শাসকের দো’আ এবং (৩) মাযলূমের বা অত্যাচারিতের দো’আ’। (তিরমিযী হা/৩৫৯৮, মিশকাত হা/২২৪৯)। আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, মাযলূমের দু‘আ আল্লাহ কবূল করে থাকেন যদিও সে পাপাচারী এমনকি কাফিরও হয়।
যুলুমের শিকার হয়ে মানুষ অনকে সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিকে কিছু বলতে পারে না, তার প্রতি কৃত যুলুমরে প্রতিকার করতে পারে না, নিতে পারে না প্রতিশোধ। পেশী শক্তি বাহুবল, জনবল প্রভাবে অনকে মানুষ নীরবে অশ্রু ঝরায়, ন্যায় কিচারক মহান আল্লাহর কাছে তার মনের আকুতি পেশ করে ও বিচার দায়রে করে। আল্লাহও তার দো‘আ কবুল করনে। রাসূল (ছাঃ) বলছেনে, وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ، فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ. ‘আর মাযলূমরে বদদো‘আ থেকে বেঁচে থাকবে। কেননা তার (বদদো‘আ) এবং আল্লাহর মাঝে কোন র্পদা থাকে না’। (বুখারী হা/১৪৯৬, ৪৩৪৭; মুসলমি হা/১৯; মিশকাত হা/১৭৭২।)
যালেমের যুলুম সম্পর্কে আল্লাহ বেখবর নয় :
যালেম যত বড়ই ক্ষমতাধর হোক না কেন আল্লাহ তাদের সম্পর্কে বেখবর থাকেন না এবং তাদেরকে পাকড়াও করে থাকেন। যুলুম হলো কবীরা গুণাহ। তাই দুনিয়া ও আখেরাতে যালেম শাস্তি ভোগ করবে। যুলুমরে শাস্তি সর্ম্পকে আল্লাহ বলনে, وَمَنْ يَظْلِمْ مِنْكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِيْرًا، ‘বস্ত্ততঃ তোমাদরে মধ্যে যারা সীমালংঘন করবে, আমরা তাদরে বড় শাস্তরি স্বাদ আস্বাদন করাব’ (ফুরক্বান ২৫/১৯)। তিনি আরো বলনে, وَالظَّالِمُوْنَ مَا لَهُمْ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيْرٍ، ‘আর যালমেদরে কোন বন্ধু নেই বা কোন সাহায্যকারী নেই’ (শূরা ৪২/৮)।
হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলনে,يَا عِبَادِىْ إِنِّىْ حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِىْ وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلاَ تَظَالَمُوْا، ‘হে আমার বান্দাগণ! আমি আমার ওপর যুলুম করাকে হারাম করে দিয়েছি। তাই আমি তোমাদের জন্যও যুলুম করা হারাম করে দিলাম। অতএব তোমরা (পরস্পররে প্রতি) যুলুম করো না’।(মুসলমি হা/২৫৭৭; ছহীহুল জামি’ হা/৪৩৪৫; মিশকাত হা/২৩২৬।)
ইমাম ত্বীবী ও নাব্বী (রহঃ) বলেন, (حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلٰى نَفْسِىْ) এর অর্থ হল যুলম বা অবিচার আমার জন্য হারাম করেছি। অর্থাৎ- আমি অন্যায় থেকে পবিত্র। আর আল্লাহর ক্ষেত্রে যুলুম অসম্ভব। আর আল্লাহ কিভাবে সীমালঙ্ঘন করবেন অথচ তার ওপর এমন কেউ নেই যার আনুগত্য তাকে করতে হবে, আর কিভাবে তিনি অন্যের মালিকানাতে হস্তক্ষেপ করবেন অথচ সমগ্র বিশ্ব তার মালিকানাতে। আভিধানিক অর্থে তাহরীমের মূল হল বিরত থাকা। কোন কিছু থেকে বিরত থাকার সাথে হারামের সাদৃশ্য থাকার কারণে অবিচার থেকে আল্লাহর পবিত্র হওয়াকে হারাম বলা হয়েছে।
আরকেটি হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِى مُوسَى رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ لَيُمْلِى لِلظَّالِمِ حَتَّى إِذَا أَخَذَهُ لَمْ يُفْلِتْهُ قَالَ ثُمَّ قَرَأَ (وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهْىَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ).
আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) হ’তে র্বণতি, তিনি বলনে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলছেনে, ‘আল্লাহ যালমিদরে অবকাশ দিয়ে থাকনে। অবশেষে যখন তাকে ধরনে, তখন আর ছাড়নে না। (রাবী বলনে,) এরপর নবী করীম (ছাঃ) এ আয়াত পাঠ করনে, ‘আর এরকমই বটে আপনার রবরে পাকড়াও, যখন তিনি কোন জনপদবাসীকে পাকড়াও করনে তাদরে যুলুমরে দরুন। নিঃসন্দেহে তাঁর পাকড়াও বড় যন্ত্রণাদায়ক, অত্যন্ত কঠনি’ (হূদ ১১/১০২)। (বুখারী হা/৪৬৮৬; মিশকাত হা/৫১২৪; ছহীহাহ হা/৩৫১২।)
কিন্তু যখন তাকে পাকড়াও করার ইচ্ছা করেন তখন আর তাকে সুযোগ দেন না। তাকে ধ্বংস করে দেন। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৬৮৬; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
যুলুম বান্দার হক্বের সাথে সম্পৃক্ত :
বান্দা যখন অপর কোন জীবের প্রতি যুলুম করে, তখন এর গুণাহ বান্দার সাথে সম্পর্কিত হয়ে যায়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ كَانَتْ عِنْدَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهَا، فَإِنَّهُ لَيْسَ ثَمَّ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ مِنْ قَبْلِ أَنْ يُؤْخَذَ لأَخِيهِ مِنْ حَسَنَاتِهِ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ أَخِيهِ، فَطُرِحَتْ عَلَيْهِ،
যে ব্যাক্তি তার ভাই এর ওপর যুলুম করেছে সে যেন তা থেকে মাফ নিয়ে নেয়, তার ভাই এর জন্য তার কাছ থেকে নেকী কেটে নেওয়ার পূর্বে। কেননা সেখানে (হাশরের ময়দানে) কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি নেকী না থাকে তবে তার (মাযলুম) ভাই এর গোনাহ এনে তার উপর ছুঁড়ে মারা হবে। (বুখারী হা/৬৫৩৪, ২৪৪৯।)
নিজের প্রতি যুলুমকারীকে আল্লাহ ক্ষমা করেন :
যখন কোন ব্যক্তির গুনাহ করবে অতঃপর তাওবাহ্ করবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করবে তখন সে যা ইচ্ছা তা যেন করে। কেননা যখনই সে গুনাহ করবে তখন তার তাওবাহ্ ও ক্ষমা প্রার্থনা তার ঐ গুনাহ মোচনের কারণ হবে, তখন গুনাহ তার ক্ষতি সাধন করবে না। এই জন্য ইখলাছপূর্ণ অঙ্গিকারসহ তওবাহকে আল্লাহ পসন্দ করেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন এক ব্যক্তি গোনাহ করার পর বললঃ হে আল্লাহ! আমি গোনাহ করেছি সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বললেনঃ আমার বান্দা গোনাহ করেছে এবং এটা জেনেছে যে, তার একজন রব আছে যিনি তার গোনাহ মাফ করবে ও তাকে পাকড়াও করবে; আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। তারপর সে আবার আরেকটি গোনাহ করে আবারও বললঃ হে রব! আমি গোনাহ করেছি সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দাও। তখন আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ আমার বান্দা গোনাহ করেছে এবং এটা জেনেছে যে, তার একজন রব আছে যিনি তার গোনাহ মাফ করবে ও তাকে পাকড়াও করবে; আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। তারপর সে আবার আরেকটি গোনাহ করে আবারও বললঃ হে রব! আমি গোনাহ করেছি সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দাও। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বললেনঃ আমার বান্দা গোনাহ করেছে এবং এটা জেনেছে যে, তার একজন রব আছে যিনি তার গোনাহ মাফ করবে ও তাকে পাকড়াও করবে; আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম, সে যাই করুক না কেন। [বুখারী হা/৭৫০৭, মুসলিম হা/২৭৫৮]
‘‘আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম, সুতরাং সে যা চায় তা করুক।’’ অত্র হাদীসে আল্লাহর তরফ থেকে বান্দাকে হারাম ও অপরাধে লিপ্ত হওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয়নি।
হাদীসটি কেবল ঐ ব্যাপারে প্রমাণ বহন করে যে, বান্দাকে ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা করে দেয়া হবে যতক্ষণ সে গুনাহ করার পর তাওবাহ্ করতে থাকবে। আর এ বান্দাকে এ ক্ষমার ব্যাপারে নির্দিষ্ট করার কারণ হল, আল্লাহ এ বান্দার ব্যাপারে জেনে নিয়েছেন যে, সে কোন গুনাহের উপর স্থায়ী হবে না। বরং যখন সে পাপ করবে তখনই তাওবাহ্ করবে। এমনিভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন অথবা খবর দিয়েছেন যে, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ ধরনের উক্তি থেকে ঐ সাহাবী বা অন্য কোন সাহাবী এ ধরনের মনে করেননি যে, তাকে তার গুনাহ এবং অবাধ্যতা ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে এবং ওয়াজিবসমূহ ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে তার প্রতি উদারতা প্রকাশ করা হয়েছে। বরং এ সুসংবাদ পাওয়ার পরে পূর্বাপেক্ষা চেষ্টা, সাধনা, সতর্কতা ও ভয়ে আরো বেশি কঠোর ছিল। যেমন জান্নাতের সংবাদ প্রাপ্ত দশজন। আর এদের মাঝে আবূ বাকর ছিলেন অধিক সতর্ক ও ভয়কারী, এমনিভাবে ‘উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। কারণ তারা জানতেন সাধারণ সুসংবাদ কিছু শর্ত এবং মরণ অবধি সেগুলোর উপর স্থায়ী হওয়ার দ্বারা গন্ডিবদ্ধ এবং সেগুলোর প্রতিবন্ধকসমূহ থেকে বিরত থাকা। তাদের কেউ এ ক্ষেত্রে কর্মে স্বেচ্ছাচারিতার ব্যাপারে অনুমতি প্রদান বুঝেননি।
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাকে আবু বকর হাদীস শুনিয়েছে। আর আবু বকর সত্য বলেছে। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন, “কোন লোক যদি গুনাহ করে, তারপর পাক-পবিত্র হয় এবং সালাত আদায় করে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। তারপর তিনি উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করলেন।” [তিরমিযী হা/৪০৬; ইবন মাজাহ হা/১৩৯৫; আবু দাউদ হা/১৫২১]
অন্যত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “তোমরা দয়া কর, তোমাদেরকেও রহমত করা হবে, তোমরা ক্ষমা করে দাও আল্লাহও তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন, যারা কোন কথা না শোনার জন্য নিজেদেরকে বন্ধ করে নিয়েছে তাদের জন্য ধ্বংস, যারা অন্যায় করার পর জেনে-বুঝে বারবার করে তাদের জন্যও ধ্বংস।” [মুসনাদে আহমাদ: ২/১৬৫]
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে যালিমের যুলুম থেকে হেফাযত করুন!