কারনে । অথচ রসুল (ছঃ) বলেছেন, صلوا كما رايتموني أصلي অর্থঃ “তোমরা
সেভাবেই ছালাত আদায় কর, যে ভাবে তোমরা আমাকে ছালাত আদায় করতে দেখ ”
(বুখারী, আযান অধ্যায় 1/88 পৃষ্ঠা মিশকাত ‘আযান ‘ অধ্যায় হা 683 )
তাহলে রসুল (ছঃ) কি চার মাযহাবের জন্য চার ধরনের ছালাত আদায় করেছেন ।
কেননা হানাফী মাযহাবের মতে পুরুষ নাভীর নিচে এবং নারীরা বুকের উপরে, মালিকী
মাযহাবের মতে উভয় হাত ছেড়ে দিয়ে ছলাত আদায় করতে হবে, শাফী ও হাম্বলি কেউ
গলার সামান্য নিচে কেউ বুক এবং পেটের মাঝখানে অর্থাৎ হৃদয়ের উপরে ।
তাহলে কি চার পদ্ধতি একসাথে সঠিক ।
হাদিস কি বলে, “নাসর ইবনে
আলী. …….. আব্দুর রহমান হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি ইবনুয যুবায়ের
(রাঃ ) কে বলতে শুনেছি, ছলাতে দুই পা সামনে রাখা এবং এক হাতের উপর অন্য
হাত রাখা সুন্নাত।”( সুনানে আবু দাউদ 754, আবু দাউদ 1 খন্ড 52 পৃষ্ঠা ।)
“মুহম্মদ ইবনে মাহবুব. ………….. আবু জুহাইফা (রাঃ ) থেকে বর্ণিত ।
আলী (রাঃ ) বলেন, ছলাত রত অবস্থায় নাভীর নীচে বাম হাতের তালুর উপর ডান
হাতের তালু রাখা সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত । (সুনানে আবু দাউদ 756 )
আসুন দেখেন এই হাদিস এর দুর্বলতা। হনাফি মযহাবে নাভীর নিচে হাত রাখা কে
প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে কিছু যালীয়াতি করেছে অর্থাৎ ভারতীয় ছাপা আবু দাউদ
থেকে 757, 758, এবং 759 নং হাদিস থেকে ইমাম আবু দাউদ এর বক্তব্য
তুলে দেওয়া হয়েছে । এখন দেখুন 757, 758, 759, হাদিস থেকে কি পাওয়া যাবে । “মুহম্মদ ইবন কুদামা ………… ইবনে জুরাইজ থেকে তার পিতার সূত্রে
বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ ) কে ছলাতে নাভীর উপরে ডান হাত দিয়ে
বাম হাতের কব্জি ধরে রাখতে দেখেছি । ইমাম আবু দাউদ (রহঃ ) বলেন, সাঈদ
ইবনে জুবাইর থেকে “নাভীর উপরে ” বর্ণিত আছে । আর আবু মিজলায বলছেন,
“নাভীর নিচে ” । আবু হুরায়রা (রাঃ ) থেকেও অনুরূপ হাদিস বর্ণিত আছে,
কিন্তু তা তেমন শক্তিশালী নয়। (সুনানে আবু দাউদ 757 ) “মুসাদ্দাদ.
………. আবু ওয়ায়েল থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আবু হুরায়রা (রাঃ )
বলেছেন -আমি ছলাতে নাভীর নিচে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখি । ইমাম আবু দাউদ
(রহঃ ) বলেন, আমি ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল (রহঃ ) কর্তৃক আব্দুর রহমান
ইবন ইসহাক আল কুফীকে দুর্বল রাবী হিসাব অভিহিত করতে শুনেছি । (সুনানে আবু দাউদ 758 )
“আবু তাওবা ……..তাউস (রহঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রসুল ( ছঃ )
ছলাত রত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর
বেধে রাখতেন । (সুনানে আবু দাউদ 759 ) এ হাদিসে ইমাম আবু দাউদ এর কোন মন্তব্য নেই । তাহলে এটাই গ্রহনযোগ্য । “সাহল ইবনু সাদ (রাঃ ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, লোকদের নির্দেশ দেওয়া
হত যে, ছলাতে প্রত্যেক ডান হাত বাম হাতের উপর রাখবে । আবু হাযিম (রহঃ )
বলেন, সাহল বিন সাদ এই আদেশ টিকে রসুল ( ছঃ ) এর দিকে সম্পর্কিত করতেন
বলেই জানি । ইসমাইল (রহঃ ) বলেন, এ হাদিস টি নবী ( ছঃ ) হতেই বর্ণনা
করা হতো । তবে তিনি এমন বলেননি যে, সাহল নবী ( ছঃ ) হতে বর্ণনা করতেন। (
সহীহুল বুখারী 1/ 1 02 পৃষ্ঠা , বুখারী তাওহীদ পাবলিকেশন 740, ইসলামী
ফাউন্ডেশন 704, আধুনিক প্রকাশনী 696 )
বুখারী র উল্লেখিত হাদিস টি
তে হানাফী মাযহাবের পক্ষে নেওয়ার জন্য আধুনিক প্রকাশনীর 696 হাদিসের
অনুবাদে জালিয়াতি করা হয়েছে । বুখারী র হাদীসের আরবী ইবারতে “ذراعه ”
শব্দের বাংলা অনুবাদ করেছেন হাতের কব্জি । পৃথিবীতে এমন কোন অভিধান নেই
যেখানে ذراعه শব্দের অনুবাদ কব্জি করা হয়েছে । কব্জি বাংলা শব্দ যার
আরবী শব্দ হচ্ছে رسغ । আরবী অভিধানে ذراعه শব্দের অর্থ পরিমাপ বিশিষ্ট হাত, বাহু, গজ । হানাফি আলেম গন ذراعه শব্দের অর্থ স্থান কাল ভেদে তাদের সুবিধা মত অনুবাদ করেছেন । কিছু নমুনা নিম্নে দেওয়া হলো, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত বুখারী 2 খন্ড পৃষ্ঠা 9 হা 507 ذراعه
শব্দের অর্থ করা হয়েছে বাহু । অর্থাত সিজদাতে তোমরা কুকুরের মত তোমাদের
বাহু বিছিয়ে দিও না । একই খন্ডের 102 পৃষ্ঠা হাদিস 704 এখানে ذراعه
শব্দের অর্থ করা হয়েছে কব্জি । ” লোকদের নির্দেশ দেওয়া হত যে, ছলাতে
প্রত্যেক ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে ।
আবার ইসলামিক
ফাউন্ডেশন বুখারী অধ্যায় ওজু “উভয় হাতের বাহু পর্যন্ত ধৌত কর । এখানেও
ذراعه শব্দের অর্থ বাহু করা হয়েছে । শুধু তাই নয় বাংলাদেশের
অনুবাদিত কুরআন সুরা হাক্কাহ আয়াত নং 32 এখানেও ذراعه শব্দের
অর্থ হাত বা গজ করা হয়েছে । ثم فى سلسلة ذرعها سبعون “ذراعا” فاسلكوه
অর্থঃ পুনরায় সত্তর হাত (গজ ) দীর্ঘ এক শৃঙ্খলে তাকে শৃঙ্খলিত কর । আসল কথা হলো অন্য সমস্ত জায়গাই ذراعه শব্দের অর্থ বাহু কিন্তু ছলাতে
কেন এর অর্থের বৈষম্য । কারন হাতটাকে নাভীর নিচে নিতে হবে । হাদিস
অনুযায়ী বাম হাতের বাহু উপরে ডান বাহু রাখতে হবে অর্থাৎ কুনুই থেকে
আংগুলের প্রান্ত পর্যন্ত কে বলা হয় বাহু । আর এক বাহু র উপর আর এক
বাহু রাখলে হাত কখনই নাভীর নিচে নেওয়া সম্ভব নাই । সমস্যা তো এখানেই । “অয়েল বিন হুজুর (রাঃ ) বলেন, আমি রসুল ( ছঃ ) এর সাথে ছলাত আদায় করলাম
।এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপরে
রাখলেন । (সহীহুল ইবনে খুযায়মা হা / 479 পৃষ্ঠা, তিরমিযী 59 পৃষ্ঠা ।
নাসাঈ 141 পৃষ্ঠা । ইবনু মাজাহ 58. 59 পৃষ্ঠা, মেশকাত 75 পৃষ্ঠা । মুয়াত্তা
মালিক 174 পৃষ্ঠা । মুয়াত্তা মুহাম্মদ 160 পৃষ্ঠা ।প্রকোষ্ঠের
উপর প্রকোষ্ঠ রাখার আদেশ একথাও প্রমাণ করে যে, হাত বুকের উপরেই বাঁধা হবে ।
নচেৎ তার নিচে ঐভাবে রাখা সম্ভব নয় ।আলবানী (রহঃ ) বলেন, বুকের উপরে
হাত বাঁধা সুন্নাহতে প্রমানিত । আর এর অন্যথা হয় যয়ীফ , না হয় ভিত্তিহীন ।
(সিফাতু স্বালাতিন নাবী ( ছঃ ) আলবানী 88 পৃষ্ঠা ) বুকে রয়েছে
হৃদয় । যার উপর হাত রাখলে অনন্ত প্রশান্তি, একান্ত বিনয় ও নিতান্ত আদব
অভিব্যক্ত হয় । ( স্বালাতে মুবাশশির 84 পৃষ্ঠা ।
Ma Sha Allah
Right
right
Right