ঈমান বর্ধক ঘটনা

ইরাকের সমৃদ্ধ নগরী ‘হীরা’ অবরোধকালে সেখানকার আরব খৃষ্টান নেতা ইবনু বাক্বীলাহ সেনাপতি খালেদের নিকট নীত হন। খালেদ তার থলির মধ্যে একটা বিশেষ কৌটা পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কেন? সে বলল, পরাজয়ের আশংকা দেখা দিলে ধূত হবার চাইতে আত্মহত্যা করাকেই আমি অধিক পসন্দ করি’। তখন খালেদ সেটি হাতে নিয়ে বললেন, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে কোন প্রাণীই মরতে পারে না। অতঃপর তিনি বলেন, বিসমিল্লাহি খায়রিল আসমা, রবিবল আরযে ওয়াসসামা, আল্লাযী না ইযাযু’রু মা‘আ ইসমিহী দা-উন, আর রহমা-নুর রহীম’। একথা শুনে অন্য সেনাপতিরা তাঁকে বিরত রাখতে দ্রুত এগিয়ে আসেন। কিন্তু তার আগেই তিনি তা গিলে ফেলেন।

এ দৃশ্য দেখে খৃষ্টান নেতা ইবনু বাক্বীলাহ বলে উঠলেন, হে আরবগণ! তোমাদের মধ্যে একজন বেঁচে থাকলেও তোমরাই বিজয়ী হবে। অতঃপর তিনি হীরাবাসীদের উদ্দেশ্যে বললেন, আজকের চাইতে স্পষ্ট সৌভাগ্যের দিন আমি দেখিনি। অতঃপর তিনি তাদেরকে আহবান করলেন এবং তারা এসে খালেদের নিকট সন্ধি প্রার্থনা করল। এভাবে বিনা যুদ্ধে জয় হ’ল (আল- বিদায়াহ… ৬/৩৫১)। এ ঘটনা সত্য হ’লে এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, বস্তুর নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই, আল্লাহর হুকুম ব্যতীত। যে ভাবে ইবরাহীম (আঃ)-এর জন্য আগুন ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। যদিও সেটা সকলের ক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় প্রযোজ্য নয়।

কেননা আল্লাহ বলেন, তুমি আল্লাহর নিয়মের কোন ব্যতিক্রম পাবে না (ফাত্বির ৪৩)। ‘তিনি যেটা ইচ্ছা করেন, কেবল সেটাই হয়ে থাকে’ (বুরূজ ১৬)। তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছুই করার ক্ষমতা মানুষের নেই (দাহর ৩০)

মানুষ তার তাক্বদীর অতিক্রান্ত করতে পারে না। তাক্বদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্যতম একটি রুকন’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কোন বান্দাই মুমিন হ’তে পারবে না যতক্ষণ না এই চারটি কথায় বিশ্বাস করবে,-

১. এ সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল। তিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন।

২. মৃত্যুতে বিশ্বাস করবে।

৩. মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস করবে।

৪. তাক্বদীরে বিশ্বাস করবে’।

(তিরমিযী হা/২১৪৫; ইবনু মাজাহ হা/৮১; মিশকাত হা/১০৪, সনদ ছহীহ)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loader-image

Scroll to Top